
পৃথিবীর বিরান কোণে নির্বাক নিশ্চুপ শেষ নমষ্কারে নতজানু হয়েছিলাম আদিকালের অন্তিম পর্বের শুরুতে। দিনরাত্রির হিসেব ভুলে গিয়ে বহমান নদীর স্রোতের মত জপেছি প্রেমময় শাব্দিক কাব্যকথা। কালের গহ্বরে পাথুরে গুহার শক্তপোক্ত দেয়ালে অমোচনীয় ছবি এঁকেছি যুগলমিলনের। যার সবই এখন স্মৃতি!
রঙধনুর সাতটি রঙকে চিনেছি প্রেমিকার মুখাবয়বে লাজলজ্জার প্রস্ফুটিত আবর্তে। আমি দেখেছি নিশুতি শ্যামার রুদ্র আস্ফালন। সকাল-সন্ধ্যা বিশ্ব লিপিকার পাতা ভরিয়েছি কবিতায় লেখা ললাটের কালো তিলের সৌন্দর্য। বিশ্ব আমাকে পেয়েছে প্রেমিক রুপে আর তোমাকে ধারণ করেছে এ যুগের ক্লিওপেট্রার তৈলচিত্রে।
পাশাপাশি কাছাকাছি রসনিমগ্ন অমৃতময় মুহূর্তগুলি বিশালাকার সৃষ্টি-স্রোতের মধ্যে নিরর্থক নয়, ক্ষণিকও নয়। তারা নিখিল বিশ্বের একত্র গাঁথা। চাইলেই কি মন থেকে সব মুছে ফেলা যায়? অবচেতন মনের আহাজারি যেন ভিসুভিয়াসের মত তপ্ত। হিমালয়ের ক্ষুরধার শীতলতার কাছে এখন আমি মরচে ধরা একটি খণ্ডমাত্র।
নানা ঋতুর পরিবর্তে আমার কাছে ছায়া হয়ে আসে যে মেঘ ইদানিং আমি নতুন করে তার প্রেমে পড়েছি। বৃষ্টি হয়ে যতবার ঝরে পড়ি বাষ্পাকুল মেঘ আমাকে ততবারই কাছে টানে। এ এক অমোঘ শৃঙ্খল! যেনো কঙ্কালমালী নানা পথে ছড়িয়ে দিয়েছে নিজের শত শত ইতিহাসের অর্ধলুপ্ত অবশেষ। আমি হয়েছি ঢালতলোয়ার বিহীন এক রক্তক্ষরিত সেনাপতি।
যদি মিশে যাই মাটির সাথে জেনো বিদায়কালে রেখে গেলাম প্রেমের শেষ প্রণতি। অবনত দিনাবসানের বেদীতলে অপেক্ষায় থেকো পুস্পবৃষ্টির। চলে গিয়েওতো যাইনি, যেতে পারিনি। তোমার কাছে থেকে যাওয়ার সম্ভাব্য প্রস্তুতি পর্বে আমি নিজের অজান্তেই বলেছিলাম- ভালোবাসি মেঘ!
রোম জ্বলেছে, লাইলী-মজনু অমর হয়েছে। সাহারার বুকে মরীচিকায় ভীত না হয়ে ললিত কঠোরের ভীষণ মধুরা সেজেছি আমি। মেঘের সাথে সন্ধিপত্রে তোমাকেই দিয়ে রেখেছি আমার পাণিপ্রার্থী ক্ষমতার একমাত্র অধিকারিণী। স্বাক্ষর করেছি একটিমাত্র বাক্য- “চাহিবামাত্র ইহার বাহককে ভালোবাসা দিতে বাধ্য থাকিবে!”
৩২টি মন্তব্য
রেহানা বীথি
এ এক অপূর্ব প্রেমোপাখ্যান। ভালোবাসার কখনও মৃত্যু হয় না। যুগে যুগে তা রয়ে যায় প্রেমিকহৃদয়ে। কোনও বাধাই বেঁধে রাখতে পারে না প্রেমিকের মন। মৃত্যুও হয়তো থমকে যায় কিছু সময়ের জন্য।
চমৎকার লিখেছেন ভাই।
তৌহিদ
আপনি অত্যন্ত মনোযোগী পাঠক কিন্তু! মন্তব্যে প্রীত হলাম আপু।
শুভকামনা সবসময়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এতো সুন্দর প্রেমকাব্য। সকাল টাই মোহনীয়, আবেশিত হয়ে গেল প্রেম পরাগে। মৃত্যু কি ভালোবাসাকে স্তব্দ করে দিতে পারে! তাহলে লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদ অমর হতো কি আদৌ! জয়তু ভালোবাসা। শুভ কামনা রইলো অহর্নিশি
তৌহিদ
লেখাটি যে গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন তা আপনার মন্তব্যেই স্পষ্ট প্রতীয়মান। পাঠক হিসেবে আপনি অনন্য।
ভালো থাকুন আপু।
সুপায়ন বড়ুয়া
রোমান্টিক উপাখ্যান দিয়েছে ধরা
তৌহিদ ভাইয়ের মনে
ভালবাসার প্রেম কাব্য রচিত হল
মেঘ বৃষ্টির সনে।
কাকে নিয়ে বেঁধেছ বাসা
মেধা ও মননে।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
তৌহিদ
সুপায়ন দাদার মন্তব্যে হলাম বড্ড প্রীত
এখন আরো লিখবো বেশী, নইকো আমি ভীত!
হয়েছে কি? আপনার মত করে মন্তব্য করা খুব কঠিন দাদা। অনেক ভালোলাগা।
শুভকামনা সবসময়।
সুপায়ন বড়ুয়া
এই তো হলো তবে চালিয়ে যান।
শুভ কামনা।
রেজওয়ানা কবির
স্বাক্ষর করেছি একটিমাত্র বাক্য- “চাহিবামাত্র ইহার বাহককে ভালোবাসা দিতে বাধ্য থাকিবে!”
আপনার লেখা পড়ে যারা এখন পর্যন্ত প্রেমে পড়ে নি তারাও এখন প্রেমে পড়বে।খুব আবেগ দিয়ে লিখেছেন ভাইয়া।শুভকামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ম্যাডাম হয়েছে কি?ধার টার দেন কিছু মিচু!!!!
রেজওয়ানা কবির
জি দিবো,চলে এসো,চলে এসো এক বর্ষায়।
তৌহিদ
এখানে কি মুড়িমুড়কি ধার দেয়ার কথা হচ্ছে! কেউ আমাকেও একটু দিয়েন। ক্ষুধা পাইসে ☺
তৌহিদ
বর্ষায় কি মুড়ি ধার দেয়? আমারতো বৃষ্টি এলেই ঘুম পায়!!
তৌহিদ
প্রেম ছড়িয়ে যাক লোক থেকে লোকান্তরে। সব প্রেমিক খুঁজে পাক মায়াবী শান্তির নীড়।
শুভকামনা সবসময়।
রেজওয়ানা কবির
ভাইয়া আমি রোকসানা আপুকে মুড়ি ধার দিতে চাই নি।ওর মনে প্রেম নাই তাই সেইটা ধার দিতে চাইছি।আর আপনার লেখা পড়েই তো এই আইডিয়া মাথায় আসছে😋😋😋😋😋
তৌহিদ
আমি কিন্তু বুঝতে পেরেছি , তবে আপনাদের সাথে একটি ফান করলাম আপু।
ত্রিস্তান
আধো মেঘ আধো ছায়া বৃষ্টির লুকোচুরি ছলনা
বলি বলি করে আজো ভালোবাসি কভু বলা হলোনা।
তৌহিদ
ভালোবাসা আর ভালো বাসা খুবই কনফিউজিং ভাই। সাধনা শুরু করে দেন। যদি লাইগ্যা যায়!!
হা হা হা…
মজা করলাম ভাই। ভালো থাকুন সবসময়।
আরজু মুক্তা
বৃষ্টি হচ্ছে সবকিছুকে নির্মল করে, সজীব করে তাই হয়তো এমন চাওয়া। সব প্রেম নিয়ে প্রমিকার জন্য নতুন করে অপেক্ষা।
ভালোবাসা ছাড়া আর আছে কি?
তৌহিদ
ভালোবাসা ছাড়া আর কিচ্ছু নেই। ধন্যবাদ আপু।
রোকসানা খন্দকার রুকু
হায় আল্লাহ কত কিছু যে মিস করে যাচ্ছি।এ দেখছি আবেগ ভালোবাসার ছড়াছড়ি॥ভাই কিছু ধার দেন। কোনভাবেই আবেগ আসছে না।
সব ফুলেল হয়ে গেছে। অসাধারণ!!!!!
শুভ কামনা।
তৌহিদ
আবেগ না আসলে বৃষ্টিতে ভিজতে হয় তা কি জানেন? এরফলে হালকা জ্বর আসবে, প্রিয়জনেরা আশেপাশে থাকবে। ব্যাস আবেগের ছড়াছড়ি! কি বুদ্ধিটা ভালো না?
তাই বলে এই সময় এসব করবেন না কিন্তু। চারপাশের অবস্থা ভালোনা আপু। ☺
হা হা হা… মজা করলাম কিন্তু!
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
শামীম চৌধুরী
যদি মিশে যাই মাটির সাথে জেনো বিদায়কালে রেখে গেলাম প্রেমের শেষ প্রণতি।
কথাগুলি হৃদয়ের।
আমি মেঘবালিকাকে ভালোবাসি।
সুন্দর লেখা।
তৌহিদ
পড়েছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইজান। শুভকামনা সবসময়।
সুরাইয়া পারভীন
শুনেছি মৃত্যুর দ্বার মুছে দেয় সমস্ত পাওয়া না পাওয়া
প্রেম বিরহ ভালোবাসা যন্ত্রণা। কিন্তু আপনার লেখায় তো তা মনে হলো না। এখানে ভালোবাসার কাছে হেরে গিয়ে থেমে গেছে মৃত্যুর ভয়াল থাবা।
চমৎকার প্রেমোপাখ্যান
তৌহিদ
বাহ! চমৎকার বললেন আপু। ভালোবাসা অমর হয়ে থাকুক।
শুভকামনা রইলো।
ছাইরাছ হেলাল
সেনাপতি ঢাল তলোয়ার বিহীন হলে কোপ খাওয়া নিশ্চিত,
আর কোপ খেলে তো ক্ষরণ একটু থাকেই, তাই নো চিল্লাচিল্লি , নো আহাজারি।
বাহকেরাই সব পাবে, আপনি থাকেন বা থাকেন।
তৌহিদ
কোপ খাইতেই আছি নিত্যদিন। না হলে ভালোবাসার মর্মজ্বালা কি বোঝা যায়?
ভালো থাকুন ভাই।
আলমগীর সরকার লিটন
সুন্দর বলেছেন তৌহিদ দা অনেক শুভ কামনা জানাই
তৌহিদ
আপনার জন্যেও শুভকামনা রইলো ভাই।
খাদিজাতুল কুবরা
এমন প্রেমানুভূতির জয় হোক যুগ যুগ ধরে। যদিও আমি প্রেমের অস্তিত্বে বিশ্বাস করিনা অর্থাৎ বিশ্বাস করার মতো কোন উপাত্ত পাইনি। আপনার এ লেখাটি পড়ে সত্যি আবার ও ভালো লাগলো প্রেম হয়তো আছে কারও কারও হৃদয়ে।
আরও লিখুন হৃদয়গ্রাহী লেখা।
খুব ভালো লাগলো।
তৌহিদ
প্রেমের অস্তিত্ব স্বীকার না করে উপায় নেই। সৃষ্টকর্তার মনে মানব প্রেম ছিলো বিধায় তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আমরা জন্মগত ভাবেই ভালোবাসার কাঙ্গাল। সেই প্রেমকে কিছু মানুষ বিষময় করেছে তার দায়তো আর আসলে প্রেমিকের নয় তাইনা!
ভালোবাসা ছাড়া মুল্যহীন সবার জীবন। ভালো থাকুন আপু।
খাদিজাতুল কুবরা
আপনি ও খুব ভালো থাকুন। সুন্দয় আনন্দময় জীবনের জন্য অনেক শুভেচ্ছা জানবেন।