
১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১। টিএসসি থেকে ফিরলাম আরামবাগের দেড় কামরার বাসায়। দুই দেবর আর শাশুড়ি তখন বাসায়। শাশুড়ি মাঝে মাঝে আসেন বেড়াতে ঢাকায়। থাকেন প্রায় ৩/৪ মাস। নতুন বউ আমি তখনো। চেঞ্জ করার আগেই শাশুড়ি কন্ঠ দৃঢ় করে বলে দিলেন , ‘ এহন এইসব সব ছাড়ো। আর কোনো সময় এসব করবা না।’ ——- বুঝলাম : এখানেই সব ইতি টানতে হবে। আর হবেই বা কি এসব লেখালিখি, আবৃত্তি দিয়ে?
পরিবেশ, পরিস্থিতী, সর্বপরি লেখালিখি করা বা আবৃত্তি করার মতো একটা ফ্রেস মন, পারিপার্শ্বিক, এবং খুব কঠোর মনোভাব রাখা খুব দরকার। যার কোনোটার সাহায্যই তখন আমার প্রতিকুলে ছিলো না। খুব সহজেই সহজ হিসেবে চেষ্টাও আসেনি কখনো আর । শুধু পড়ার নেশাটা ছাড়তে পারছিলাম না কোনোভাবে। যেখানেই বইয়ের সাজানো সেল্ফ দেখছি। লোভাতুর নির্লজ্জভাবে চেয়ে নিয়ে এসেছি। অখণ্ড সময় ছিলো তখনো বই পড়ার। বিরুপ বৈরী পরিবেশে একমাত্র নারী প্রাণীকুলই খুব সম্ভবত মানিয়ে চলার শক্তি যুগিয়ে চলতে পারে।
সময়ের বয়ে চলা স্রোতে সময় বদলেছে একে একে অনেকটা। আরামবাগ ছেড়ে রামপুরাতে চলে এলাম দুই বাচ্চা নিয়ে, বিয়ের পাঁচ বছর পরে। বিয়ের সাত বছরে তিন বাচ্চার মা। সংসারে লোকসংখ্যা বেড়েছে।বেড়েছে ততদিনে একটু আধটু জা’য়ে জা’য়ে মত বিভেদের বৈপরিত্য। সত্যি কথা বলতে কি, আমি খুব সহজ হিসেবটা বুঝতে চাইতাম সবসময়, বা এখনো ঘোর প্যাঁচ, ক্রিটিসিজম, মারপ্যাঁচ বস্তবিক প্রাত্যহিক জীবনে বুঝে উঠতে পারিনা। ক্রমশঃ মন মানসিকতা বিগড়াতে থাকে। হাত থেকে কবেই ছুটে গেছে বই! বাচ্চার হাতে তুলে দিয়েছি বর্ণমালার বই। ওকে শেখাতে শুরু করেছি তখন। স্কুলে দিতে হবে। প্রথম শিক্ষা মা’র কাছ থেকেই শিখবে। এমনটাই তো প্রচলন! আজ যখন লিখতে বসি সেসব দিনের কথা! ভাবতে অবাক লাগে নিজের কাছেই। রামপুরার এই যৌথ পরিবারে থাকার পরেও একদিন হঠাৎ মনে হলো আমি লিখব। নিজের মতো করে লিখব নিজের জন্য। মেয়েকে তখন স্কুলে দিয়েছি। আনা নেয়া করতে করতে, এবং ওকে নিয়ে পড়াতে বসতে গেলেই মনে হতো , আমি হয়ত পারবো আবারো লিখতে। একটা খাতা কিনেছিলাম রান্নার রেসিপি লেখার জন্য ওখানে লিখেছিলাম–” আবারো লিখতে চাই সেই আগের মত। জানিনা আর পারব কিনা। তবু চেষ্টা করতে ইচ্ছে করছে নিজের মত”….কিন্তু তবুও আর এগোয়নি। বহুবছর পরে সেদিন একটা চিঠি খুঁজে পেয়েছি অনেক জমানো চিঠির মাঝে , যা লিখেছিলেন আমার আব্বা আমার বিয়ের পর পর তাঁর জামাতাকে। আমি কেঁদেছি সে চিঠি পড়ে। আব্বা কখনো কোনো কাজের প্রশংসা সামনা সামনি কোনোদিন করেন নি। আমার বরকে লেখা চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন আমার লেখার প্রশংসা। যখন লিখছি এ লেখা…. তখনো আমার চোখ ভেজা। হয়ত প্রত্যেক বাবা’ই তাঁর জামাতাকে এমন করেই লেখে- ‘ আমার মেয়েটাকে একটু বুঝিয়ে শুনিয়ে নিও’ – লিখেছেন–
” তোমার কাছে বলা উচিৎ, মেয়েটা আমার বলতে গেলে একেবারেই সরল সোজা, সাহিত্যের প্রতি আকর্ষণ আমারই মত। কবিতাও লেখে, অনেক কবিতা তো আমার চেয়েও ভালো লেখে। সাংসারিক বুদ্ধি সুদ্ধি খুবই কম। জটিলতা বোঝে না। তোমার কাছে অনুরোধ তুমি বুঝিয়ে শুনিয়ে নিও। আমি অবশ্যই তোমাদের উভয়ের সুখ শান্তিময় জীবনের জন্য দোয়া করি ”
আমি ভুলে গেছি সেসময় কি লিখেছি না লিখেছি! অথচ বাবা বললেন, অনেক লেখা তাঁর চেয়ে ভালো লিখতাম। বাবা কোনোদিন কিচ্ছু বলতেন না লেখা বিষয়ে। এ চিঠি পড়ে অঝরে কেঁদেছি। বাবা বাবা বলে অস্ফুটে চিৎকার করে ডেকেছি বাবা’কে। পৃথিবীর কোনো প্রান্ত থেকে জবাব আর আসবে না জেনেও…..।
যাই হোক, বোঝা যাচ্ছিলো ভেতরটা কাঁদত লেখার জন্য। চেষ্টাও করতাম টুকটাক একান্ত নিজের মত খুব গোপনে। খাতাটা খুঁজে পাইনি। দু একটা লেখা ছিলোও সেখানে। তুলে ধরা যেত।
মগবাজারে ছোট খালার বাসা। খুব যেতাম একটা সময় পর্যন্ত। খালাত দুই বোন মাঝে মাঝে বেশ তিরস্কার করে কথা বলতো। ” তুমি কি লিপি আপু? ব্যাকডেটেডই রয়ে গেলা। এই ডিজিটাল যুগে তোমার একটা ফেসবুক এ্যাকাউন্ট নাই, এইটা কিছু হইলো? ” ভ্যাবলির মতো তাকায়া থাকতাম। ফেসবুক এ্যাকাউন্ট দিয়ে করে কি? বুঝুন এবার! কি প্রশ্ন করেছি তিন বছর আগে? ইচ্ছামতো যা খুশি তাই বললো রিংকি, হৃদি।
২০১৭ সাল। খালার প্রয়োজনে আমি মগবাজার। হৃদিকে বললাম -“দে এ্যাকাউন্ট খুলে, দেখি কি হয় ফেসবুকে!” যথারিতী চট করে খুলে দিলো এ্যাকাউন্ট। কিছু মাস আমি একদমই লহইন করিনা । সাহেবের ফোন দিয়ে মাঝে মাঝে যাই ফেসবুকে। পরিচিত এবং আত্মিয় স্বজন সব এ্যাডেড। টাইপিং বা মেসেজ লেখা রিপ্লাই করা পুরোপুরি গণ্ডমূর্খ। এক হারানো বন্ধুকে খুঁজে পেয়ে আমি যারপরনাই আত্মহারা। কোনোরকম যোগাযোগ ছিলোনা যার সাথে। তাঁকে পেলাম ফেসবুকে। আমাদের ঝালকাঠির একজন বড় ভাই আছেন, যিনি সাহিত্য জগত এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সমান সফলতায় বিচরন করছেন, আরিফ হোসেন ভাই। আমার বান্ধবি বললো , “ভাইয়ের ধানসিড়ি পাড়ে একদিন সিরিজে মন্তব্য কর” আরিফ ভাই নেই আমার লিষ্টে। সার্চ দিয়ে রিকোয়েষ্ট পাঠালাম। ভাই এ্যাকসেপ্ট করলেন। ৭৩ তম পোষ্ট থেকে আমি তাঁর লেখা- পড়া শুরু করলাম। ঝালকাঠির হারানো স্মৃতিচারন মূলক লেখা। তখনকার সময়ে , রাজনিতী, আঞ্চিলক প্রবাদ, আঞ্চলিক আতিথেওতা, মোট কথা অনারম্বর ইতিহাস সম্বলিত সিরিজ। ওখানে লাইক কমেন্টের কারনে একে একে যোগ হতে লাগলো বহু পুরোনো বড় ভাই, বান্ধবির বড় ভাই, ছোট ভাই, বড় দিদি, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একসময় যাদের সাথে প্রোগ্রাম করেছি এরকম বহু মানুষজন। এদের মধ্যে একজনার নাম না নিলেই নয়, মেহেদি মর্তুজা। ছোট ভাইয়ের মত। একদিন মন্তব্য না করলেই বলতো ইনবক্সে, আপু আজ আপনি কিছু লিখলেন না যে! আপনি ও লিখুন। প্রায়ই উস্কাতো এই ছেলেটা। খেয়াল করতে শুরু করলাম ফেসবুকিয় লেখালিখি। কাঁচা হাতে আমিও লিখে ফেললাম একদিন ছোটখাটো এক লেখা। পরিচিত সবাই দেখলাম উৎসাহ দিতে শুরু করলো। আমি বুঝে গেছি কবিতা আর আমাকে দিয়ে হবে না। আমি বিকল্প শব্দ খুঁজতে লাগলাম। আমি জানি আমার প্রচণ্ড প্রতিবন্ধকতা আছে। মনখুলে হাত খুলে লেখা আমি লিখতে পারিনা বা পারবো না। সাধারন কথার দ্রোহ বা ঊষ্মা প্রকাশের হাতিয়ার করে নিলাম বিকল্প ঘোরেল শব্দমালা। কারো ওপরে কোনো কারনে বিরক্ত হচ্ছি তাও আমি লিখছি বিকল্প শব্দে। জীবন বোধ নিয়ে স্পর্শ করে যাচ্ছে আমাকে আমার নিজেরই বোধ! আমি লিখতে সাহস যোগাচ্ছি একটু একটু করে এই ফেসবুকের পাতায় যখন যেমন যা আমার দেখা বোঝা বোধে নাড়া দিচ্ছে। আমার পরিচিত বন্ধুরা, বড় ভাই আরিফ ভাই, মর্তুজা, সমানে উস্কে দিয়ে যাচ্ছে, আরিফ ভাই যখন কমেন্ট করেন আমার ভালো লাগে।অমিতা দিদি যখন বলেন -‘বেশ ভালো লেগেছে তোমার লেখা,’ আমি আরো একটু সাহস পাচ্ছি। একদিন লিখে ফেললাম ‘পথচলা’ লিখে বন্ধু হাসি’কে পাঠালাম,-‘দেখতো কেমন হয়েছে?’ হাসি বললো-‘ পোষ্ট দে’ আমার সংকোচ ছিলো। পরে দেব বলতেই খেঁকিয়ে বললো -‘ এক্ষুনি দে’
ওর কথামতো তখনই পোষ্ট দিলাম। এবং যথারিতী মূল্যবান মন্তব্য নিয়ে সবার আগে এলেন আরিফ ভাই। তনি তাঁর মন্তব্যে বললেন’ আমি বুঝিনা, আমাদের এমন ভালো ভালো কবি থাকতে লিখছে না কেন? নাকি কবিরা বোহেমিয়ান? লিপি, খুবই ভালো লিখেছো, নিয়মিত লেখক চাই’ আমি বিনয়ের সাথে আমার প্রতিবন্ধকতার কথা জানালাম। অমিতা দিদি, আলআমিন বাকলাই( কবি), রিনা কর্মকার(এক সময়ের আবৃত্তিকারী,কবি, নারী উন্নয়নের সাংঘটনিক কর্মী, বর্তমানে সিলেট দরগার হাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা) এরা সবাই আমাকে গঠনমূলক এবং উৎসাহ অনুপ্রেরনায় সাহস বাড়িয়ে দিচ্ছেন প্রতিনিয়তঃ। আমিও আমার মতই লিখতে শুরু করেছি মনের তাগিদে…………।
আগামী পর্বে সমাপ্তঃ
৩১টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
লেখায় ফিরে আসার কাহিনী জানছি,
বিস্তারিত মন্তব্য আগামীকাল।
বন্যা লিপি
আচ্ছা,অপেক্ষা…..
আরজু মুক্তা
ধৈর্য্য আছে আপনার। সবকিছুর থেকেই শেখার আছে।
শুভকামনা।
বন্যা লিপি
সে বহুদিন আগের কথা……একজন হুজুরের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন আম্মা আর ছোটখালা আমাকে…….আমার আপদমস্তক জরিপ করে ছোট্ট করে এই কথাটাই বলেছিলো” উনার অনেক ধৈর্য”……বাকি কথা আর বললাম না এখানে। ” আপনার অনেক ধৈর্য”……আপনার এই মন্তব্যে হুজুরের কথাটা মনে পড়ে গেলো।
ভালবাসা।
আরজু মুক্তা
না দেখেও মিলে গেল। আত্মার টান
ইঞ্জা
শুনছি ফিরে আসার গল্প, পড়ছি মন দিয়ে, শুধু বলবো, “স্যালুট”।😊
বন্যা লিপি
কৃতজ্ঞতা ভাইজান। শেষ পর্বে জানাবো সোনেলায় আমি* এবং আমার প্রাপ্তি।ভালো থাকবেন।
ইঞ্জা
অপেক্ষায় রইলাম আপু।
খাদিজাতুল কুবরা
আপু বাবার স্মৃতিচারণে চোখে পানি এসে গেল। আমার বাবা ও বাইরে খুব শক্ত ভেতরটা জলের মতোন। বাবার মতো করে কেউ ভালোবাসে না। বাবাকে নিয়ে আমার একটি কবিতা আছে কোন একসময় পোস্ট করবো। আপনার ফিরে আসার গল্প শুনে ভালো লাগলো তবু ও পেরেছেন শেষঅব্দি। অনেকেই হাল ছেড়ে দেয়। আমার মতে স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়।
আর সেটা অন্য কেউ রাখবেনা।
খুব ভালো লাগছে যে এটা জেনে আপু আপনি একজন লড়াকু।
খুব ভালো থাকুন আপু।
বন্যা লিপি
বাবাকে নিয়ে আলাদা করে কোথাও কখনও কোনোকিছু লিখতে পারিনি আমি। আমি পারিনা লিখতে বাবাকে নিয়ে। ভাবার সাথে টুকটাক স্মৃতিগুলোই শুধু লিখি লেখার মধ্যে। কখনো প্রকাশ করার ভাষাও খুঁজে পাইনা বাবা আমার কাছে কি/কেমন ছিলো।
ভালো থাকুন সবসময়।
সঞ্জয় মালাকার
অসাধারণ লেখা দিদি পড়ে মুগ্ধ হলাম।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো।
বন্যা লিপি
ধন্যবাদ দাদা। শুভ কামনা আপনার জন্যেও।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বাবাকে নিয়ে লেখাগুলো তে চোখ ভিজে গেল । আপনার প্রতিকূল পরিবেশের কথা জানলাম আপনি যে কারো না কারো বদৌলতে লেখার জগতে ফিরে আসতে পেরেছেন এটা খুব ভালো লাগলো। আশা করি এখন আর এমন পরিবেশের মুখোমুখি হতে হবে না। লিখুন আরো। শুভ কামনা রইলো অহর্নিশি। শুভ সকাল
বন্যা লিপি
প্রতিকুল পরিবেশ সবসময়ই বিরাজমান। ধরন বদলে বদলে। তবু লিখছি…মনের শখ আর তাগিদে। কতদিন এ শখ আর লেখার ইচ্ছে টিকিয়ে রাখতে পারবো জানি না।
ইচ্ছেটা নষ্ট হতে দেখছি ক্রমশঃ।
ভালো থাকবেন দিদি।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
আসলে কোনো প্রতিবন্ধকতায় পারে না প্রতিভা নষ্ট করতে হয়তো সাময়িক দমিয়ে রাখতে সক্ষম হয় বটে। আপনি সত্যিই অসাধারণ সোজা সরল মনের অধিকারী আপু। আমি আপনাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি আপনাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েও সাহিত্যাঙ্গণে অবাধ বিচরণ হোক আপু। বাবার চিঠি পড়ে আমারও চোখ ভিজে গেলো।
অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো আপু 💓💓💓
বন্যা লিপি
ভালবাসা সুরু❤❤❤এর চেয়ে বেশিকিছু বলার নেই তোমার মন্তব্যের পরে
শামীম চৌধুরী
বফু,
সোনেলার জন্ম মাসে স্মৃতিচারনে আপনার অনুভুতি এমন করে তুলে ধরেছেন যে বড় ভাইজানের জামাইকে নিয়ে লেখায় যখন পড়তে আসি তখন আমারও নয়ন দুটি সিক্ত হয়ে উঠে। বাবারা সব সময় মেয়েদের মঙ্গলের জন্য সুখের জন্য যানপরনাই চিন্তিত থাকে। আমিও একজন কন্যা সন্তানের বাবা। সে সমাজে ম্যাচুউর ও মান সম্মত ভাবে চাকুরী করছে। আমিও এমন করে মঙ্গল কামনা করে মেয়েকে লিখি। আর এটাই হচ্ছে একজন বাবার মনের ক্ষুধা মিটানোর অংশ।
একান্নবর্তী সংসারে জা’য়ে জা’য়ে ঝুটঝামেলা লেগেই থাকে। সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে স্বামী সংসার ও সন্তানদের নিয়ে থাকতে হয়। আর এটাই বিধির বিধান।
বফু,
আমি প্রায়ই একথাটা বলি। প্রতিটি শিশু কিছু না কিছু প্রতিভা নিয়ে জন্ম নেয়। আর তাঁর প্রতিভাকে ফুঁটিয়ে তোলার দায়িত্বটা পরিবারের নিতে হয়। বাবা-মা প্রথমেই তাঁর নিজের সন্তানের প্রতিভা ধরতে পারেন। আর তখন যদি অভিভাবকরা সন্তানের প্রতিভার দিকে নজর রাখে তবে সেই সন্তান সমাজে আলোকিত হবেই। আপনার বাবার নজর ছিলো আপনার কবিতা লেখার উপর। যার জন্য প্রতিভাটি মরতে পারে নি।
আর প্রতিভা হচ্ছে সাঁতার,গাড়ি,শিক্ষা, সাইকেল চালানোর মতন। কোনদিন ভুলা যায় না। তবে যে যত চচ্চা করবে তার প্রতিভা ততই আলো ছড়াবে।
দারুন অনুভূতি শেয়ার করলেন।
শুভ কামনা রইলো।
বন্যা লিপি
আপনার অনুভূতি লেখাটাকে সমৃদ্ধ করলো শা’চ্চু। দোয়া করবেন আমার জন্য। ভালো থাকবেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে।
ফয়জুল মহী
সুন্দর প্রকাশ।
আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো।
বন্যা লিপি
ধন্যবাদ
ছাইরাছ হেলাল
আপনার কবি/লেখিকা হয়ে ওঠার!! না না, প্রকাশিত হওয়ার কাহিনী
ক্রমান্ময়ে জানছি আর জানছি। জয়তু ফেসবুক।
বন্যা লিপি
না কবি, না লেখিকা…..কোনো তকমায় আমি নিজেকে মাপতে পারছিনা।মন্তব্যে ধন্যবাদ।
সুপায়ন বড়ুয়া
এটাই হয় হারিয়ে খুঁজি তারে
টিএসসির লেখিকা হারিয়ে যায়
সংসারের বাস্তব জীবনে।
ফিরে পাই আবার ফেইসবুক
আর সোনেলার কল্যানে।
এগিয়ে যান আপু, আমরা আছি পাশে।
শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
ধন্যবাদ দাদা। আসির্বাদ রাখবেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
কেঁদেই ফেললাম।বাবারা মেয়েদের সত্যিকারের ভালবাসা॥প্রতিভা জন্মগত।নিজে না চাইলে কেউ আটকাতে পারেনা।আপনার লেখার ভাষা ভঙ্গি সবই চমৎকার।অনেকসময় কমেন্ট করার সাহস কুলায় না সমকক্ষতার ভয়ে।পরেরটুকু পড়তে পারলে ভালো হতো। তারাতারি পাব আশা করি।
শুভ কামনা বড় আপু।
ভালো থাকবেন।
বন্যা লিপি
কেন যেন হঠাৎ করে মনের ওপরে বোঝা বেড়ে গেলো রুকু আপু! মন্তব্যের জবাবে আরো একটু বাড়িয়ে রিপ্লাই দিতে আর ইচ্ছে করছে না।
শুধু বলি, মন্তব্যে ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
আমাদের সমাজের গ্রাম বাংলার পারিপার্শিক সমাজ ব্যবস্থায় শশুর বাড়ী থেকে সাহিত্য চর্চায় উৎসাহ দেয়ার আশা করা যায় না। শুধু গ্রাম কেন, শহুরে শিক্ষিত মানুষের মাঝেই সাহিত্য চর্চায় আছে ব্যাপক অনীহা।
পিতার এমন কম্পলিমেন্ট এ আবেগে আপ্লুত হতেই হয়। মেয়ে জামাইয়ের কাছে সব পিতাই হয়ত এভাবেই অনুরোধ করেন।
লেখার জগত হতে দীর্ঘ বিরতির পরে আবার লেখায় ফিরে আসা কিন্তু অকল্পনীয় ব্যাপার। ফেসবুকে নিজ শহরের পরিচিত মানুষদের পেয়ে এবং তাদের সবার অনুপ্রেরনায় নিজেকে আবার খুঁজে পেয়েছ।
আরীফ, মর্তুজা, অমিতা, রীনা, হাসি এবং অন্যান্যরা ঐ সময়ে তোমার পাশে এসে দাড়িয়েছে বলেই লেখার ভুবনে প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়ে।
স্মৃতিকথাও খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করো তুমি।
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
শুভ কামনা, শুভ ব্লগিং।
বন্যা লিপি
কখনো ফিরতে পারবো বলে ভাবিনি। অথচ বুঝলাম অনেককিছু বলতে ইচ্ছে করে লেখার ভাষায় নিজের মতো করে। সেখান থেকেই হয়তো একটা ধারা বজায় রেখে লিখতে শুরু করা। যখন দেখলাম ধারাটা পছন্দ করে পরিচিতজনরা, তখন সাহস থেকে হাঁটতে শুরু করা।
বলবো বাকি পর্বে আরো।
কৃতজ্ঞতা সহ শ্রদ্ধা জানবেন।
তৌহিদ
আজ জানলাম শত সহস্র বিপত্তি কাটিয়ে আপনার সুপ্ত প্রতিভা পাঠকের সামনে আসার গল্প। ভাগ্যিস ফেসবুক আইডি ওপেন করেছিলেন। তা না হলে আপনাকে আমরা পেতাম না।
আপনি আমাদের নারী ব্লগারদের অনুপ্রেরণা। এই লেখা পড়ে অনেকেই জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে লিখালিখির পথে অবিচল থাকবেন নিশ্চিত।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা আপু।
বন্যা লিপি
যুদ্ধ কখনো শেষ হয়না ভাই। রকম বদলে নেয় শুধু।
আমার পুরোনো অনেক ডায়েরী ভরে আছে নিজের কাছেই অখাদ্য যতসব লেখায়।আমার অতৃপ্তি ফুরাবেনা একজীবনে। আফসোস আরো ভালো কিছু লিখে রাখতে পারছি না বলে।
ফেসবুকে বা ব্লগেও এখনো অনেক লেখা দেইনা, বা দিতে ইচ্ছেই করে না। কারনটাও সেই এক। মর্মার্থ বোঝাতে ব্যার্থ হই আমি। আমারো সৌভাগ্য ফেসবুকে আসার পরে, ভাবিওনি কখনো খুঁজে পাবো এমন অনেককে খুঁজে পাওয়া, যোগাযোগ করতে পারা। এমন কয়েকজনকে নিয়ে লেখার খুব ইচ্ছে আছে আমার।
কৃতজ্ঞতা সহ ধন্যবাদ ভাই।
আলমগীর সরকার লিটন
অনেক অভিনন্দন ও শুভ কামনা লিপি আপু