
মেয়েটাকে দেখেছিলাম এক হলুদ সন্ধ্যায়। বোরকা পড়া নেকাব দিয়ে ঢাকা মুখটার পঞ্চাশ ভাগ দেখেছিলাম তার নেকাব খোলার সময়। ফুলের মতো মিষ্টি মেয়েটা। যে মিষ্টি চোখের দৃষ্টি পড়লে সবকিছু প্রশান্ত হয়ে যায় তেমন একটা আপন আপন মিষ্টি। আমি বার বার তাকাই তার দিকে বুকটা ছনছন করে ওঠে যেন একটা শান্ত নদীর ঢেউ মিহি বাতাসের দানায় পৃথিবীর সব ঝর্ণা হয়ে আমার উপর গড়িয়ে পড়ে।
আমি সাঁতার কাটি এবং এতো লোকের ভীড়ের মধ্যে নিঃসঙ্গ একা হয়ে যাই কোন এক অজানা কারণ আমাকে একা করে দেয়। কিন্তু পরক্ষণেই মেয়েটাকে দেখলে আবার চঞ্চল হয়ে উঠি। কিন্তু অবাক বিষয় হলো মেয়েটির মুখ সম্পুর্ন দেখতে পারিনি। সম্ভবত ইচ্ছে করেই মেয়েটি সুন্দর আড়াল করে রাখে কখনও কপালের চুল ভাঁজ হয়ে পড়ে থাকে তার গালের উপর আবার কখনো আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখে মুখ। তাই ইচ্ছে থাকলেও তার ছবি নিতে পারলাম না।
কিন্তু এই আড়াল জিনিসটা আমাকে খুব টানে। ওটা শেষ না দেখা পর্যন্ত আমি স্থির থাকতে পারিনা। এটা একধরনের সমস্যা আমার। পরদিন বন্ধু সবুজকে বললাম, অই অলোকসুন্দরী মেয়েটাকে দেখতে চাই। তাই পছন্দ হয়েছে তোর! ডিভোর্সি কিন্তু! ভেবে নে কি করবি ! বললাম চুপ কর! কিন্তু বুকটা আবার চনমন করে উঠলো এতো লক্ষী মেয়েও ডিভোর্সি হয়!আমি বললাম চল আগে দেখি!
পরদিন যে বাড়িতে নিয়ে গেলো সবুজ সে বাড়ি আমি কখনো দেখিনি কিন্তু বাড়ির মানুষগুলোকে শেষ দেখেছিলাম দশবছর আগে। যারা একদিন আমার মতো একটা অপদার্থের জন্য এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে ঢুকেই বিপদে পড়ে গেলাম। সুমার মা গাল ভরে হেসে উঠলেন (অনেক বড়ো ক্ষত লুকিয়ে মানুষ যেভাবে হাসে) যেন কিছুই করিনি আমি
এমন একটা ভাব নিয়ে আন্টি বসতে বললেন। আমি লজ্জায় তেলে ভাঁজা সমাচার মধ্যে ঢুকে গেলাম। মানুষ খুন করলেও বোধহয় এতো খারাপ লাগে না কিছু কিছু খারাপ এতো খারাপ যে, যা কখনও উচ্চারণ করা যায় না। দেয়ালের ছবিগুলোতেও মেয়েটা আছে কিন্তু মুখটা এমনই ঢাকা হাত দিয়ে চুল দিয়ে।
কিন্তু এবার তার পাঠ আমার কাছে পুনরুজ্জীবিত হলো। তবে কী সে কখনও আর মুক্ত হাওয়ায় দেখাতে পারবেনা তার অপরূপ মুখ।আমার মনে পুরাতন অপরাধ জেগে উঠলো। অনেক লেনদেন জীবন্ত হয়ে উঠলো।
একটা রাবার নিয়ে অতীত আঁকলাম, মুছতে চেষ্টা করলাম নিজের অপরাধটাকে কিন্তু সব দাগ মুছা যায় না।
দালান জাহান ৩০.৫.২০
১১টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এসিড ভিকটিম নাকি কোন আঘাতের চিহ্ন! কিসের দাগ সেটা বললেন না। খুব ভালো একটি গল্প পড়লাম। ধন্যবাদ আপনাকে। শুভ কামনা রইলো
দালান জাহান
ধন্যবাদ আপনাকে এসিড প্রয়োগ হলে পরে আর বাহ্যিক অপরূপা কেউ থাকে না। কিছু কিছু খারাপ এতো খারাপযে উচ্চারণ করা যায় না। যা বস্তুত সম্পর্ক ভেঙে গেলে এখনকার ছেলে মেয়েরা করে থাকে। তাতে অনেক সময় মেয়েটির সংসার আর টিকে না।
দালান জাহান
সম্পর্কের দাগ…
রিলেশনের দাগ……
ফিজিক্যাল রিলেশন…..
ফয়জুল মহী
সুচিন্তিত মনোভাবের প্রকাশ, ভালোই হয়েছে।
দালান জাহান
ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন নিরাপদ থাকুন সবসময়
দালান জাহান
ধন্যবাদ আপনাকে এসিড প্রয়োগ হলে পরে আর বাহ্যিক অপরূপা কেউ থাকে না। কিছু কিছু খারাপ এতো খারাপযে উচ্চারণ করা যায় না। যা বস্তুত সম্পর্ক ভেঙে গেলে এখনকার ছেলে মেয়েরা করে থাকে। তাতে অনেক সময় মেয়েটির সংসার আর টিকে না।
সুপায়ন বড়ুয়া
এখন শুধু গল্পই পড়ছি।
কোনটা রেখে কোনটা বলি ভাল
নেকাব পড়া মেয়ের গল্প
লাগলো অনেক ভাল।
শুভ কামনা।
দালান জাহান
ধন্যবাদ ভাই কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, রাবার দিয়ে সব দাগ মুছে ফেলা যায় না।
অনুগল্প ভালো লেগেছে।
অনেক দিন পরে আপনার লেখা পড়লাম,
নিয়মিত লেখুন এখানে।
শুভ কামনা।
দালান জাহান
সম্পর্কের দাগ…
রিলেশনের দাগ……
ফিজিক্যাল রিলেশন…..
এন্ড হাইলাইট ইন সোসাইল মিডিয়া নীল ছবি…
আরজু মুক্তা
গল্পটার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য আছে।
ভালো লাগলো