রায়হান ভাই না কি যেন নাম, একটা অদ্ভুত প্রাণিকে দেখতাম একটা গ্রুপ খুলে কী সব অদ্ভুত অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করত। এসব নাচানাচি দেখার জন্য কত মেয়ে ওখানে ভিড় জমাত। যদিও আমার সন্দেহ আছে, সবগুলো আসলেই মেয়ের আইডি কিনা! ছেলেটা নিজের প্রচার করার জন্যও এসব আইডি ব্যবহার করতে পারে। তবে এত এত মেয়ে আইডি, সব নিশ্চই ফেইক নাহ্। অনেক ছেলে মেয়ে তাকে ফলো করতো। তার একটা গ্রুপ আছে, নাম রায়হান ভাই ফ্যান ক্লাব! মানে সিরিয়াসলি! সে কোথাকার শাহরুখ খান যে তার আবার ফ্যান থাকবে? কিন্তু এটা সত্যি যে তারও ফ্যান ছিলো।তার এই ক্লাবের সদস্য হতে হলে তাকে নিজের নোংরা ছবি পাঠাতে হবে! মেয়েরা তাই করত। তাহলে এবার সহজেই বোঝা যায়, আমাদের যুব সমাজের রুচি কতটা নিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে।
একটা দেশের যুব সমাজ অশ্লীলতাকে আধুনিকতা মনে করে নিজেকে ডুবিয়ে দিচ্ছে। কিছু মেয়ে নিজের আপত্তিকর ছবি তাকে ইনবক্সে পাঠাচ্ছে! কোথায় এদেশের শিক্ষিত একটা যুব সমাজ ভাষা আন্দোলন আর মুক্তি যুদ্ধের চেতনায় আদর্শে গৌরব বোধ করবে, নিজের দেশকে আরও কিভাবে উন্নতির শীর্ষে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই চিন্তা করবে, তা না… তারা ব্যস্ত বেহায়াপনা আর অশ্লীলতা নিয়ে।
এতো গেল যুবকদের কথা৷ শিশুরাও কি বাদ যাচ্ছে?
“আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা”
তোমরা এখন সেই বয়সে পাকনামী করো মেলা।
এই শিশুরা নানা রকম সিনেমার অশ্লীল দৃশ্য দেখে তারাও ঐরকম দৃশ্যে অভিনয় করে ভিডিও বানাচ্ছে! ভাবা যায়? এই বয়সে আমাদের মাথায় কানামাছি, বৌছি, পুতুল, বেলুন, বই, খাতা এসব ঘোরাফেরা করত। আর তাদের মগজে ঘোরে ছেলে মেয়ে একত্রিত হয়ে নোংরামো!
বিভিন্ন জেলা শহরের কুখ্যাত, মানহীন রেস্টুরেন্টগুলা কিভাবে চলে? এইসব ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ করে দিয়ে এরা ব্যবসা করে। এতে দেশ ও জাতীর বড় ধরনের ক্ষতি হলেও তাদের লাভ হচ্ছে। তাদের প্রতিষ্ঠান টিকে থাকছে। আর তৈরি হচ্ছে একটা বেহায়া জাতি!
যারা ছোট বয়স থেকেই এরকম অবাধে মেলামেশা করে অভ্যস্ত তাদের না আছে কোন লজ্জা, না আছে কোন ভয়! এসব ছেলেরা পথে ঘাটে যত মেয়ে দেখে তাদের দিকে নোংরা দৃষ্টিতে তাকায়। তারা চোখে দেখে মানুষ আর মগজ দেখায় ঐ রেস্টুরেন্টের দৃশ্য। ফলে বেড়ে যায় অনাচার, বেড়ে যায় ধর্ষণ।
ইয়াবা, মদ, গাঁজা এসবের সহজলভ্যতার কথা আর কি বলব?একটা উদীয়মান জাতিকে ধ্বংস করার জন্য আর কি চাই? আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম কি সুস্থ সুন্দর মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠছে?
অবশেষে এটাই সত্য আমাদের প্রজন্মের ক্ষেত্রে:
“ছোটবেলায় দেখতাম বড়রা প্রেম করে, আর বড় হয়ে দেখি ছোটরা প্রেম করে!”
শুনতে হাস্যকর শোনালেও এর মর্মবাণী অত্যন্ত গভীরে। এখন থেকেই লাগাম না টানলে এ জাতির ভবিষ্যত অত্যন্ত সংকীর্ণ।
২০টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
“ছোটবেলায় দেখতাম বড়রা প্রেম করে, আর বড় হয়ে দেখি ছোটরা প্রেম করে!” আপনার এই কথার সাথে একমত। অসাধারণ লেগেছে আপনার বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণ। যুব সমাজ টা নোংরামিতে ভরে গেছে ফেসবুক আর আকাশ সংস্কৃতির কবলে পড়ে।
নীরা সাদীয়া
এই যুব সমাজের ভবিষ্যত কি? কি দেবে এরা আমাদের আগামী প্রজন্মকে?
শুভ কামনা জানবেন।
ফয়জুল মহী
অসাধারণ একটি লেখা । তথ্যমূলক ও উপকারী পোষ্ট
নীরা সাদীয়া
ধন্যবাদ আপনাকে।
তৌহিদ
রায়হানের বিষয়টি আজই জানলাম ফেসবুক থেকে। তাজে র্যাব গ্রেফতার করেছে। ঠিকই আছে। অনলাইনে আলতু ফালতু জিনিস দিয়ে ভরে গিয়েছে। আর তাদের দর্শকেরই বা কেমন রুচি!!
সমাজে মাদকমুক্ত হোক এটাই কাম্য। ভালো থাকবেন।
নীরা সাদীয়া
অশ্লীলতামুক্ত একটা সমাজের প্রত্যাশা আমাদের সকলেরই।
শুভ কামনা জানবেন।
ইঞ্জা
রায়হানকে মেয়েরা এইভাবে ছবি পাঠাতো জেনে অবাক হলাম, কি বিকৃত রুচি তাদের, আশ্চর্য।
সত্যই বলেছেন, এ যুগের দোষই, অতি আধুনিকতা আজ কই নিয়ে যাচ্ছে আমাদের আগামী প্রজম্মকে?
দুঃখজনক।
নীরা সাদীয়া
মেয়েরা ছবি পাঠাত, তারপর ছেলেটা তাদেরকে ঐ সব ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেল করত। এবার বোঝেন, নিজের ঘরের চাবি নিজেই তুলে দিলাম পরের হাতে।
ইঞ্জা
ওরে আল্লাহ, ছিঃ ছিঃ ছিঃ, এতো নির্লজ্জ! 😱
কামাল উদ্দিন
“ছোটবেলায় দেখতাম বড়রা প্রেম করে, আর বড় হয়ে দেখি ছোটরা প্রেম করে!” সুপর্ণা ফাল্গুনী আপু দারুণ বলছেন
রায়হানের বিষয়টা আজ প্রথম জানলাম
নীরা সাদীয়া
আপনি যদি আমার পুরো লেখাটা পড়েন, তাহলে দেখতে পাবেন, এই লাইনটা সুপর্না আপুর নয়, আমার লেখার ভেতরেই আছে।
ধন্যবাদ ও আমন্ত্রণ জানাই আমার সামান্য লেখনীর ভূবনে।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, আপনার পুরোনো লেখাগুলো অবসরে পড়ার চেষ্টা করবো।
অপার্থিব
“ছোটবেলায় দেখতাম বড়রা প্রেম করে, আর বড় হয়ে দেখি ছোটরা প্রেম করে!”
হা হা হা…
পোষ্টে লিংক দেওয়া উচিত ছিল। আমার মত অনেকে বিনোদন বঞ্চিত হয়েছে।
নীরা সাদীয়া
কোন লিংক চাচ্ছেন বুঝতে পারিনি।
অনেক শুভকামনা জানবেন।
আরজু মুক্তা
এই প্রথম এমন শুনলাম। ভয়াবহ।
ছেলেমেয়েদের একটু হলেও দ্বিনী শিক্ষা দেয়া উচিত।
নীরা সাদীয়া
এদের সুশিক্ষার অভাব।
শুভ কামনা রইলো।
রেহানা বীথি
গা শিউরে ওঠে এসব দেখলে। কোথায় যাচ্ছে আমাদের সন্তানেরা! খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্ট।
নীরা সাদীয়া
সত্যিই ভাবা যায় কি অবস্থা এ যুব সমাজের?
অনেক শুভ কামনা রইলো।
হালিম নজরুল
সামাজিক অবক্ষয় আর মূল্যবোধের অভাব গিলে ফেলছে আমাদেরকে
নীরা সাদীয়া
ঠিক বলেছেন।
অনেক ধন্যবাদ।