নদীর নাম যাদুকাটা

কামাল উদ্দিন ১১ এপ্রিল ২০২০, শনিবার, ০৭:৪৮:৩১অপরাহ্ন ভ্রমণ ১৮ মন্তব্য

সিমান্তের ওপাড়ে সুউচ্চ মেঘালয়ের পাহাড়। আর আমাদের সবার তো জানাই আছে বিশ্বের সব থেকে বৃষ্টি প্রবণ এলাকা এই মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি আর মাসিনরাম। অত্যধিক বৃষ্টিপাতের কারণে মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড়ে রয়েছে অনেক চমৎকার সব ঝর্ণা। আর সেই পাহাড়ি ঝর্ণা থেকে উৎপত্তি ছোট্ট নদী যাদুকাটা। এক পাশে লাউরের গড়, যা প্রাচীন লাউর রাজ্যের স্মৃতি বহন করছে ভারত বাংলাদেশের সীমান্তের এই এলাকা। লাউরের গড় পার হয়ে ধুঁধুঁ বালুচর। বালুচরের পরই রয়েছে এই চমৎকার নদী যাদুকাটা। নদীর ওপার ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে ১৫০ ফুট উঁচু বারিক টিলা বা বারিক্কা টিলা। এই টিলার উপর ভারত বাংলাদেশের ১২০৩ নং সিমান্ত পিলার। বারিক্কা টিলায় প্রায় ৪০ টি আদিবাসী পরিবার বাস করে। সবুজে মোড়া এই টিলার একপাশে পাহাড়, অন্যপাশে দেখা মিলবে টাঙ্গুয়ার হাওড়ের আর পায়ের কাছেই তো রয়েছে স্বচ্ছ জলের চমৎকার যাদুকাটা নদী।

যাদুকাটা নদীর নামটার মধ্যেই রয়েছে একটা রোমাঞ্চ ভাব। আর এই নামের পেছনে রয়েছে একটা মর্মান্তিক মিথ। মিথটা এই রকম নদী তীরবর্তি কোন এক গাঁয়ের বধু তার শিশু পুত্র যাদুে কোলে নিয়ে এই নদীর মাছ কাটছিলেন, এক পর্যায়ে অন্যমনস্ক হয়ে মাছের বদলে তার শিশু পূত্রকে কেটে ফেলেন। পরবর্তিতে সেই প্রচলিত কাহিনী থেকেই নদীর নাম হয় যাদুকাটা।

(২) লাউরের গড় পার হয়ে যাদুকাটার তীরে দাঁড়িয়ে তোলা ছবি, ওপাড়ে বারিক টিলা দেখা যাচ্ছে।

 

(৩/৪) শীতে নদীতে পানি কম থাকে বলে এই নদীতে পাথর সংগ্রহের ধুম পড়ে যায়। বর্ষায় ওপারের পাহাড় থেকে পাহাড়ি ঢলের পানির সাথে চলে আসে প্রচুর পাথর।

 

(৫) সুনামগঞ্জ থেকে বাইক নিয়া এসে এই নদী এভাবেই পাড়ি দিতে হয়।

 

(৬/৭) বারিক টিলায় উঠার পাকা রাস্তা এটি। দুই দিক থেকেই এই টিলায় উঠার জন্য রয়েছে এমন পাকা রাস্তা।

 

(৮/৯) বারিক টিলার উপর দাঁড়িয়ে যাদুকাটাকে যেমন দেখায়।

 

(১০/১১) পাথর নিয়া কেউ ভেসে যায় ইঞ্জিনে কেউবা লগিতে।

 

(১২) বর্যায় নদী থাকে এমন ভরপুর, পেছনে মেঘালয়ের পাহাড়ে মেঘেদের ঘনঘটা।

(১৩/১৪) কর্ম ব্যস্ত যাদুকাটার পাড়।

 

(১৫) মানিগাঁও গ্রামের পায়ের কাছে এসে যাদুকাটা পুরো বামে বেঁকে দূরে গিয়ে সুরমায় মিলিত হয়েছে।

 

(১৬/১৭) মানিগাঁও গ্রামের যাদুকাটার এই বাঁকেই রয়েছে বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ শিমুল বাগান। আমি বসন্ত ও বর্ষায় দুইবারই এই বাগানে গিয়েছিলাম।

 

(১৮/১৯) যাদুকাটায় যাওয়ার পথেই নাম না জানা গ্রামে পড়বে এমন কিছু কূড়ে ঘর। এই ছবিগুলো আমি চলন্ত বাইকে বসে তুলেছি।

 

(২০/২১) আর যাদুকাটার আশে পাশে দেখা পেয়ে যাবেন এমন কিছু নাম জানা চমৎকার ফুলের।

বাংলাদেশের অনেক যায়গায়ই আমি গিয়েছি। তবে যাদুকাটার আশেপাশের এমন চমৎকার একাধিক ভ্রমণের যায়গা বান্দরবান ছাড়া আর কোথাও আমি দেখিনি। তাই তো ওখানে ছুটে গেছি বার বার। আপনারাও কেউ যদি ওদিকটায় যান আমি হলপ করে বলতে পারি এলাকাটার প্রেমে পড়ে আপনাদেরকে ওদিকে ছুটে যেতেই হবে বার বার।

১০২০জন ৯৩১জন
0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ