
#করোনা_ছুটি_৩
ঘুম ভাঙলো একটু দেরি করেই। আলো ঝলমলে সকাল। চারপাশ নিস্তব্ধ। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি সর্বনাশ নয়টা আটচল্লিশ! বহুকাল পরে এতোদেরি করে ওঠা। ছুটি শুরুর দ্বিতীয়দিনেই এলার্ম বন্ধ করে দিয়েছিলাম। উঠেই ওয়াশরুম। বেরিয়ে ফিল্টার থেকে পানি নিয়ে চুলোয় চাপালাম। করোনা হানা দেয়ার পর সকালের পানিটা উষ্ণ গরম খাই। নিত্যদিনের নিয়মিত একডোজ থাইরক্স খেয়ে নিলাম (এটিতে আমার কোনকালেই ভুল হয়না)। এর খানিকপর একটু কালোজিরা। আরেক গ্লাস উষ্ণ গরম পানি নিয়ে ভদ্রলোককে খেতে দিলাম। ওই বেড ওয়াটার (বেডটি এর মতো)আরকি!😋 এরপর টিভি ছেড়ে চা পান করতে করতে ফেসবুকে হারিয়ে যাওয়া।
ফেসবুকে বসলে কখনোকখনো বুদ হয়ে লেখা হয়। কোন ফাঁকে সাড়ে এগারোটা বেজে গেলো টের পাইনি! ভারী নাস্তা এড়াতে তাই চুলোয় ডিমসেদ্ধ চাপিয়ে দিলাম। সকালে টোস্ট দিয়ে চা আর এখন ডিমসেদ্ধ, ব্যস।
বুয়া নেই। কিছু কাপড় ভেজালাম। মাছ, সবজি নামালাম। ভদ্রলোক ধুয়ে দিলেন, আমি ঢেড়শ কাটলাম ভাজির জন্য, একগাদা টমেটো কাটলাম ভাপ দিয়ে রাখব আর টক রান্না করবো। শিম কাটলাম। আমি এই কাটতে কাটতে ভদ্রলোক চুলোয় ভাত চড়িয়ে দিলেন। এরপর আমি রান্নাতে এলে তিনি চলে গেলেন তাঁর নিজের কাপড়গুলো ধুয়ে গোসল সারবেন। ও, বারান্দার গ্রিলগুলোও মুছে নিয়েছেন। কাপড় যেদিন ধোয়া হয়, সেদিন সেটাও করা হয়। আমি ঢেড়শভাজি, পুঁটি মাছের চচ্চড়ি, টমেটোর টক রান্নার পর যথারীতি ফার্নিচার মোছা, ঘরমোছা সেরে গোসলে, আমার কাপড়সহ কুশনকভারগুলো ধুয়ে গোসল সেরে বেরিয়ে দেখি তিনি টেলিভিশনে খবর দেখায় ব্যস্ত।
দুপুরে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ টেলিভিশন দেখে আস্তে করে তিনি বিছানায়। আমি একসময় লেখতে বসলাম। খানিকপর বই নিয়ে আমিও শুয়ে শুয়ে পড়ছি। আমার বাসার পাশেই রাস্তা। মহল্লার ভেতরের রাস্তা। সুনশান নীরব। একসময় কারো আনাগোনা টের পেয়ে জানালার পর্দা গলে উঁকি দিলাম, দেখি আর্মি টহল দিয়ে যাচ্ছে। বই পড়তে পড়তে একসময় আমি নিজেও ঘুম পড়ে গিয়েছি। সন্ধ্যার আজানে ঘুম ভাঙে। জানালা দিয়ে দেখি জরুরী ঔষধের মিনিট্রাক দাড়িয়ে। গোটা কয়েকজন কিছু ঔষধ নিলো। ফার্মেসীতেও কিছু নিলো।
সন্ধ্যায় চা-নাস্তা সেরে টেলিভিশন খবর, ফেসবুক, বই এরপর রাত নামে। খেয়েদেয়ে আবারো ফেসবুক। অতঃপর ঘুম…
★ছুটি ১ আর ছুটি ২ লেখা হয়নি। পরেরগুলো দেয়ার চেষ্টা করবো।
১৫টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
ছুটিতে ২ জনের পিকনিক ভাবটা
ভালই কাটছে।
ভাল কাটুক আগামী দিন গুলো।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হাহাহা। গৃহই হোক শান্তির নীড়।
রেহানা বীথি
বাহ্, বেশ লাগলো আপনার ছুটির একটি দিনের দিনলিপি। ভালো থাকুন সবসময়। শুভকামনা রইল।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ভালো থাকুন প্রত্যেকেই।
শুভকামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভালোই দু’জনে মিলে পিকনিক কোয়ারেন্টাইন পালন হচ্ছে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সুস্থ এবং আনন্দে থাকার জন্য সময়টাকে উপভোগ্য করে তোলা দরকার।
ভালো থাকুন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অর্ধেক অঙ্গের অধিকারী আপনারাই না বলেন। তাইলে ভাগাভাগিতেই তো সুন্দর। নয়?
জিসান শা ইকরাম
ঘরের কাজ ভাগ করে করা হচ্ছে। ভালোই দিনকাল কাটছে সবার।
শুভ কামনা।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অর্ধেক অঙ্গের অধিকারী আপনারাই না বলেন। তাইলে ভাগাভাগিতেই তো সুন্দর।
নিরব সাগর
সবাই তাদের সংসার গুছিয়ে নেওয়ার ভাল সময় পেয়েছে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
জ্বী, এখনই সময় পারিবারিক ভাব ভালোবাসার।
ভাই কী সংসারযাপন করছেন?
সুরাইয়া পারভীন
আরে বাহ চমৎকার কাটছে হোম কোয়ারেন্টাইন দিন গুলো।
দু’জন ভাগ করে কাজ করছেন।এটা কিন্তু দারুণ লেগেছে
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হোম কোয়ারেন্টিনকে উপভোগ্য করা।
হালিম নজরুল
আমারও ঘুমায়ে ঘুমায়ে কেটে যাচ্ছে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
উঁহু! শরীরে জরা বাসা বাধবে। হয় কাজ নয় ব্যায়াম।