
সবার খাওয়া শেষে সবাই ড্রয়িংরুমে বসে গল্প করছে, ছায়া নিজের বানানো ফুড কাস্টার্ড নিয়ে এলো, সবাইকে বাটি ভর্তি ফ্রুট কাস্টার্ড সবার হাতে হাতে তুলে দিয়ে এক বাটি নিয়ে অনিকের রুমের দিকে এগুলো।
অনিকের রুমে নক করলে অনিক দরজা খুললে ছায়া বাটিটা এগিয়ে দিলো।
ছায়া ভিতরে আসো, বসো।
খুব টায়ার্ড না?
হুম তা তো একটু আছিই।
ওহ একদম ভুলে গিয়েছিলাম, লেভিন একটা ডকুমেন্টস দিয়ে গেছে।
হুম কথা হয়েছে।
আমি নিয়ে আসছি বলেই ছায়া উঠতে গেলো।
দরকার নেই, তোমার কাস্টার্ড কই?
আছে পরে খাবো।
কোন সমস্যা হয়নি তো এ কদিন?
না কিসের সমস্যা, সব ঠিক ছিলো।
অনিক ব্রেসলেটটা হ্যান্ডব্যাগ থেকে বের করে ছায়াকে দিয়ে বললো, এইটা তোমার জন্য।
ছায়া হাত বাড়িয়ে নিয়ে ভালো করে দেখে বললো, এতো অনেক দামী, এ আমি নিতে পারবোনা।
কেন নিতে পারবেনা?
না আমি নিতে পারবোনা।
নাও মা, নাও, এইটা আমি চয়েজ করে কিনেছি।
কখন যেন অনিকের মা দরজায় এসে দাঁড়িয়েছেন ওর কেউ খেয়াল করেনি।
মা আসো, দরজায় দাঁড়িয়ে কেন, অনিক বললো।
মেয়েটির দেখছি আত্মসম্মানবোধ বেশ, মুগ্ধ চোখে অনিকের মা বললেন।
অনিক হাসলো, ছায়া মাথা নত করে আছে।
আন্টি আমি এতো দামী জিনিস নিতে পারবোনা, ছায়া মিনমিন করে বললো।
ছায়ার মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলেন অনিকের মা, বালাটা নিজের হাতে ছায়াকে পড়িয়ে দিয়ে বললেন, মা দিলে না করতে পারবে?
ছায়া চুপ করে গেলো।
পরদিন সকাল সকাল ছায়া উঠে পড়লো, ফ্রেস হয়ে এসে ব্রেকফাস্ট রেডি করতে লেগে গেলো, কিছুক্ষণ পর অনিকের মা এলেন কিচেনে।
সালামালেকুম আন্টি।
ওয়া আলাইকুম আসসালাম, কি করছো?
ব্রেকফাস্ট রেডি করছি?
না মানে কি কি তৈয়ার করছো?
তেমন কিছু না আন্টি, মুরগীর কলিজি গুর্দা ফ্রাই, মিক্সড ভেজিটেবল এবং ডিম, সাথে লুচি।
বাহ, বেশ বেশ, আমি হেল্প করি তোমাকে, বলেই উনি লুচি বেলতে শুরু করলেন, ইতিমধ্যে অনিকরা সবাই চলে এলো ডাইনিংয়ে, ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে সবাই আড্ডায় মজে গেলো।
অনিক মনে আছে আজ আফরিনের বাসায় দাওয়াত, অনিকের মা স্মরণ করিয়ে দিলেন।
হাঁ মা মনে আছে, ছায়া, আনকেল আপনাদেরকেও দাওয়াত দিয়েছে ও।
তাই, ঠিক আছে সবাই যাবো ইনশা আল্লাহ, রওশনের বাবা সায় দিলেন।
অনিক বাবা বলছিলাম কি, অনেকদিন দেশে যাওয়া হয়না, আমি আজ টিকেটটা করে ফেলতে চাইছিলাম আমাদের জন্য।
অনিক মনে এক ধাক্কা খেলো, অবাক হয়ে তাকালো ছায়ার দিকে।
কি বলেন ভাই, আমরা এলাম আর আপনারা চলে যাবেন, অনিকের বাবা বলে উঠলেন?
না মানে, অনেকদিন হলো তো?
ভাই তা হবেনা, আমরা এসেছি এক বিশেষ কাজে, আপনিও শরিক হোন আমাদের সাথে, এরপর নাহয় যাবো এক সাথে, অনিকের মা হাসতে হাসতে বললেন।
মা আমি উঠছি অফিসে যাবো, অনিক উঠে পড়লো নিজ রুমের উদ্দেশ্যে, রুম থেকে ওর বিজনেস ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসতেই চোখাচোখি হলো ছায়ার সাথে, দেখলো ছায়া চোখ নামিয়ে নিয়েছে।
কয়টায় আসবি, অনিকের মা জানতে চাইলেন?
সন্ধ্যার আগেই ফিরবো, বলেই দরজা খুলে বেরিয়ে গেলো ও।
পিছন পিছন ছায়াও ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে এসে লিফটের সামনে চলে এলো।
কি হলো?
আগে বললে না তোমরা যাচ্ছো?
না এখন কই যাচ্ছি, শুনলে না আন্টি না করলো।
লিফট এসে যাওয়ায় অনিক উঠে পড়তেই ছায়াও উঠে গেলো।
তুমি রাগ করছো কেন অনিক, একদিন তো যেতেই হতো?
কেন তোমার পড়ালেখা শেষ।
না।
তাহলে?
বললাম তো এখন যাচ্ছিনা।
আচ্ছা আসি এখন।
আল্লাহ্ হাফেজ।
লিফটের দরজা খুলে গিয়েছে ইতিমধ্যে, অনিক বেরিয়ে গেলো, ছায়া লিফটে উপরে উঠে এলো।
ওদিকে ড্রয়িংরুমে অনিকের বাবা মা গল্প করছিলেন রওশনের বাবার সাথে।
ভাবী বললেন না কি বিশেষ কাজে আমাদের আটকালেন, রওশনের বাবা জিজ্ঞেস করলেন?
ভাই আসলে আমরা এসেছি অনিককে বিয়ে করাতে।
তাই বাহ খুব ভালো হবে ভাবী।
আসলে গত ছয় বছরে আমরা ওকে বিয়ে করাতে উঠে পড়েছিলাম, কিন্তু ছেলেটা মানছে না, কিন্তু ও প্রতিবারই বিষয়টা এড়িয়ে যায়, অনিকের বাবা বললেন।
তাহলে তো থাকতেই হয় রাশেদ ভাই, এইবার আমিও ছাড়ছিনা, ওকে বিয়ে করিয়েই তারপর যাবো।
ছায়াকে বাইরে থেকে আসতে দেখে অনিকের মা বললেন, মেয়েটা বেশ লক্ষ্মী।
বড় এ নিশ্বাস ফেলে রওশনের বাবা বললেন, লক্ষ্মী তো অবশ্যই, সাথে জনম দুঃখি মা আমার।
অনিকের বাবা রওশনের বাবার হাত ধরে বললেন, ভাই আমি জানি, এই ক্ষতিটা আপনাদের দুজনকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, আমি দুঃখিত।
….. চলবে।
ছবিঃ গুগল।
২৮টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
লেখকরা কী এমনি হয়! পাঠককে এমন একটা জায়গায় এনে দেয় যে পাঠক বুঝতেই পারছেননা মন্তব্য কী দিবে! যাক চলছে সাবলিল ভাষায় অনিক ছায়া রওশনের ধারাবাহিক উপন্যাস।দেখা যাক ,,,,কোথায় গিয়ে গল্পের ঠিকানা দাড়ায়।
বানানের একটি অক্ষরের মিষ্টেক পাল্টে দেয় ধারনা…..নাও মা, নাও, এইটা আমি চয়েজ করে কিনেছি।
ইঞ্জা
লেখকরা কেমন হয় জানিনা ভাই, আমি সাসপেন্স রাখতে পছন্দ করি।
বানানের কি সমস্যা খুলে বললে খুশি হবো।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আমি ও একমত সম্পূর্ণ মমি ভাইয়ের সাথে। ভালো লাগছে। ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা রইলো
ইঞ্জা
ধন্যবাদ অনিঃশেষ আপু, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ছাইরাছ হেলাল
প্যাঁচ সামনে, বুঝতে পারছি।
ইঞ্জা
প্যাঁচ লেগে গেছে অলরেডি, বুঝতে পারেননি ভাইজান?
সুপায়ন বড়ুয়া
অনিক ছায়ার পরিনতি কোন দিকে গড়ায় ?
ইন্জা ভাই যেদিকে তাড়ায়
ততক্ষন আছি প্রতিক্ষায়।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
দোয়া রাখবেন ভাই।
ফয়জুল মহী
মনোরম ও মনোহর লেখনী ।
ইঞ্জা
ধন্য যোগ ভাই, শুভেচ্ছা অফুরন্ত।
জিসান শা ইকরাম
গল্প যে কোনদিকে নিবেন তাই ভাবছি।
অনিকের বিয়ে, আগামি দুই তিন পর্বেই আশাকরি সব জেনে যাবো 🙂
পরের পর্ব দ্রুত চাই।
ইঞ্জা
গল্পের মোর ঘুরছে ভাইজান, আমিও মাথা ঘামাচ্ছি কি করা যায়, দেখা যাক কি হয়, দোয়া রাখবেন।
ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
গল্পএর মোচলানো কোন সাইট নেই বুঝতাছিনা।
দেখি লেখকের কেরামতি।
ইঞ্জা
অপেক্ষার ফল নাকি মধুর হয় ভাই। 😄
মোঃ মজিবর রহমান
গুরুজজে কয় শুনেছি। দেখি যস্টহি মধু না সুন্দর বনের মধু কোনটা পাই।
ইঞ্জা
ওকে ভাই। 😆
সাবিনা ইয়াসমিন
জি বাংলার সিরিয়ালের মত লাগছে। চরম মূহুর্তে এসেই নাটক শেষ, পরের পর্বের অপেক্ষা 😠😠
এই সিরিজ ১২ ঘন্টা পরপর দিবেন। এত দেরিতে দিলে আরও খারাপ কমেন্ট দিবো।
ইঞ্জা
হে হে হে হে সিরিয়ালই তো লিখছি আপু, আমার লেখা “ভালোবাসি তোমায়” নিয়ে হয়তো চলচিত্রে যাবে, দোয়া করবেন। 😄
সাবিনা ইয়াসমিন
বাহ! সুসংবাদ। শুভেচ্ছা রইলো ভাইজান 🙂
ইঞ্জা
কথাবার্তা চলছে, দেখা যাক, দোয়া রাখবেন।
নিতাই বাবু
সবগুলো পর্বের মধ্যে অনেকগুলো পর্ব মিস করার ফলে আপনার সুলেখিত “এক মুঠো ভালোবাসা ( ২৪ তম পর্ব)”-এ সুন্দর সাবলীল মন্তব্য করতে হিমশিম খাচ্ছি। তারপরও এই পর্বটা পড়ে আপনার “এক মুঠো ভালোবাসা” সবগুলো পর্বই নতুন করে পড়তে ইচ্ছে করছে। পড়বো বলে আশা করি।
ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয় দাদা।
ইঞ্জা
দাদা পড়ে ফেলুন দ্রুত, নাহলে গল্প বুঝবেন কি করে? 😁
তৌহিদ
ভাই অনেকদিন পরে পর্বটি পড়লাম। অনিকের সাথে ছায়ার মিলন হবে কিনা বলতে পারছিনা। তবে ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে মনে হয় বুঝতে পারছি।
শুভকামনা রইলো দাদা।
ইঞ্জা
মিলন হবে কিনা বা মিলন দেবো কিনা আমি নিজেই জানিনা, ভাবছি গল্পের মোর কোনদিকে নিয়ে যাবো?
দোয়া রাখবেন ভাই, ধন্যবাদ।
আলমগীর সরকার লিটন
অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা রইল কবি ইঞ্জা দা
আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা থাকলাম
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাই, আপনার কন্সিস্টেন মন্তব্য আমাকে আপ্লুত করে।
হালিম নজরুল
আপনার গল্প মানেই একরাশ ভাললাগা ভাই।
ইঞ্জা
আপ্লুত হলাম ভাই, ধন্যবাদ অবিরত।