
সহায় সম্বলহীন মৃন্ময়ী দেবী শোকে পাথর হয়ে উদাসীনভাবে দিকভ্রান্তে ছুটছেন।
এমন করুণ শোক আর স্মৃতি আমায় বড্ড কাঁদায়।
ঘড়িরকাটা দুপুর একটা ছুঁইছুঁই বিলাস চৌধরী এসেছেন পার্বতীকে নিয়ে বাড়ি চলে যেতে। চারপাঁচ দিন পর পার্বতীর বাগদান হওয়ার কথা। বিবাহের কথা শুনার পর থেকে পার্বতী দিনদিন কেমন হয়ে যাচ্ছে। চোখেমুখে বিষাদের কালোছায়া বহমান। তাকে একদন্ড হাসিমুখে দেখতে পাওয়া যায়না।
বিনোদ যে সেই কবে অন্নপূর্ণাকে ভালোবাসিয়াছে তাহার নিতান্তটুকু প্রেম আনয়ন হয়নি দুজনের মধ্যে।
অন্নপূর্ণা দিনদিন বিনোদের প্রতি অহেতুক অভিমান দেখিয়ে আসছে। হঠাৎ একদিন ওপার থেকে চিরকুটে বেসে এসেছে অন্নপূর্ণার বিবাহ ঠিক হইয়া গিয়াছে।
এ কথা শুনে বিনোদ চোখেরজলে ভাসছে।
অন্যদিকে আমি ভাসছি স্মৃতির স্রোতে আর অপেক্ষায়মান নিয়তির কাছে।
ললাটে অজস্র চিন্তার ভাঁজ নিয়ে আমি ভবঘুরে। পার্বতী চলে যাওয়াতে বলরাম দাদার বাড়িতে একশূন্যতা বোধ হচ্ছে।
বিনোদ অন্নপূর্ণার চিরকুটের প্রতিত্তরে বলছে
তোমাকে ভালোবাসার যোগ্যতা হয়তো আমার হয় নি। তোমার হিয়া বড় বড় বাস্তবতার অহমিকা আর অহংকারকে চিনেছি।
যোগ্যতা মেপে প্রেম হয়,
ভালোবাসা নয়।
সত্যিই বিনোদ কতখানি বিষাদের স্মৃতিতে আছে সেটা ভাষায় ব্যক্ত করার মতো নয়। কেউ মন থেকে ভালোবাসে আবার কেউ ভালোবাসার নামে হৃদয়ে জায়গা করে পরিণামে দিয়ে যায় ভালোবাসার বেদনাময় বিষাদ।
আমিও ভাবতে পারিনি প্রথম অবস্থায় অন্নপূর্ণা বিনোদের প্রতি শেষবেলা এমন আচরণ করবে।
সত্যিই খুবি একটা অদ্ভুত ব্যাপার!
মনেমনে ভাবছি এ তিলোত্তমা নগরীতে এসে কী আমাদের কপালে নগরের নাগরী প্রেমময়ীর ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়তে হবে?
পার্বতী বাড়িতে ফেরার আজ প্রায় তিনদিন। হঠাৎ করে বলরাম দাদার হাতে একখানা চিঠি এসেছে। বিলেতে চাকরি করা পাত্রের সাথে তাহার বিবাহ সম্পাদন হবে না। কারণ না জেনেই আমার মনের মধ্যে এক প্রশান্তি এসেছে।
তারপর জয়িতা বৌদির মুখে শুনলাম যার সাথে পার্বতীর বিবাহ হওয়ার কথা সে পূর্বে দুখানা বিবাহ করিয়াছে।
তাই পার্বতীর বাবা একথা শুনে এমন বিবাহিত পাত্রের সঙ্গে একমাত্র আদরের মেয়ে পার্বতীকে বিবাহ দিতে চান না।
কত বাঁধাবিপত্তি পেরিয়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদ আর পবিত্র ভালোবাসায় পরিশেষে পুলকিত প্রেমে পূর্ণিমার আলোকিত রাত্রিতে আলোকিত চাঁদকে সাক্ষী করে দীপের সাথে পার্বতীর বাগদান ও সম্প্রদান দুইই সম্পূর্ণ হয়েছে।
যে ভালোবাসায় আছে ঈশ্বর প্রদত্ত আশীর্বাদ।
আছে ললাটে নিয়তির বন্দন সে ভালোবাসা সবসময় পবিত্র।
পবিত্র ভালোবাসায় পার্বতীর প্রতি বিনোদের যে অন্তরঙ্গ টান,অগ্নিহোমের পূর্ণতায় ভরে উঠে দুটি দেহের একটি প্রাণ।
ভালোবাসায় মান,অভিমান,সুখ,দুঃখ কত বেদনার বিষাদ থাকবে যদি ভালোবাসা পবিত্রতম হয় তাহলে সে ভালোবাসার একদিন জয় সুনিশ্চিত। দীপ ও পার্বতীর ভালোবাসার বন্ধন ছিলো নিয়তির উপর সে নিয়তি সকলকিছুকে উপেক্ষা করে অবশেষে তাদের একি বন্ধনে আবদ্ধ করে।
.
১৬টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
দীপ ও পার্বতীর ভালোবাসার বন্ধন ছিলো নিয়তির উপর সে নিয়তি সকলকিছুকে উপেক্ষা করে অবশেষে তাদের একি বন্ধনে আবদ্ধ করে।
তাদের যুগলবন্দী জীবন
সুন্দর ও সফলতা কামনা করি
সাথে লেখকের .
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক প্রাপ্তি দাদা।
অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
তৌহিদ
অত্যন্ত চমৎকার একটি ধারাবাহিক লেখা ছিলো এটি। প্রেম, বিরহ, বেদনা, নানান ঘাতপ্রতিঘাত অবশেষে প্রণয়। সব মিলিয়ে পর্বত কন্যার ইতিকথা একটি দারুণ উপভোগ্য উপন্যাস ছিলো।
একজন লেখকের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হচ্ছে পাঠকের চাহিদা পূরণ। সোনেলায় আপনি এসেই এই উপন্যাস দিয়ে সবার মন জয় করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেই মনোযোগ দিয়ে আপনার এই উপন্যাসের পর্বগুলি পড়তাম আর অবাক হতাম। হিংসেও হতো এটা ভেবে আহা! আমি যদি এরিকম লিখতে পারতাম।
সোনেলায় এত সুন্দর একটি উপন্যাস সফলভাবে পাঠকপ্রিয়তা দিয়ে শেষ করলেন। ব্লগ কর্তৃপক্ষ এবং আমার পক্ষ থেকে আপনাকে অভিনন্দন দাদা।
এমনি করেই লেখার জগতে জ্বলজ্বলে নক্ষত্র হয়ে বিরজ করুন সবসময়। এটাই সারাজীবনের কাম্য।
পরের উপন্যাস লেখা শুরু করেছেনতো? আমাদের বেশিদিন অপেক্ষা করাবেননা কিন্তু প্লিজ।
ভালো থাকবেন দাদা। সোনেলা আপনাকে পেয়ে সত্যি গর্বিত।
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক প্রাপ্তি দাদা।
অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
ইসিয়াক
প্রথম থেকে পড়তে হবে । সুন্দর লাগলো………….
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক প্রাপ্তি দাদা।
অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অভিনন্দন দাদা। পরবর্তী উপন্যাসের অপেক্ষায় রইলাম। শুভ কামনা ও শুভেচ্ছা রইল
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক প্রাপ্তি দিদি।
অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
সুরাইয়া পারভিন
আমি কেবল শেষ পৃষ্ঠার পাঠিকা তাই তেমন কিছু বলতে পারছি না,, তবে শেষ পৃষ্ঠা পড়ে মনে হচ্ছে অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে সত্যিকারের ভালোবাসার জয় হয়েছে।
শেষ ভালো যার সব ভালো তার
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক প্রাপ্তি দিদি।
অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
মনির হোসেন মমি
ললাটে অজস্র চিন্তার ভাঁজ নিয়ে আমি ভবঘুরে…
চমৎকার বাক্য চিন্তাগুলো যে ললাটের অগ্রভাবে থাকে এ ভাবে ভাবিনি কখনো।যাক শেষ পর্যন্ত ওদের প্রেম সার্থক হল। কথায় আছে না ডাকার মত ডাকতে জানলে খোদায় কেমনে শুনে না।পবিত্র প্রেম কখনো বিরহ বয়ে আনে না। চমৎকার ভাবেই শেষ করলেন এ অসাধারণ উপন্যাসটি।খুব ভাল লাগল। উপন্যাসটি বই আকারে বের করার চেষ্টা করুন।আশা করছি পাঠকপ্রিয়তা পাবে। শুভ কামনা রইল দাদা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক প্রাপ্তি দাদা।
অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
দাদা ছোটখাটো স্বপ্ন আছে উপন্যাসটি বই আকারে বের করতে।
আপনাদের অনুপ্রেরণায় আমি কৃতার্থ। আপনারা অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন বলে আজ ছোট একটা উপন্যাস স্বল্প জ্ঞান নিয়ে সমাপ্ত করলাম।
সাবিনা ইয়াসমিন
পবিত্রতা ভালোবাসার বন্ধনকে মজবুত করে। যে প্রেমে শতভাগ পবিত্রতা আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা থাকে, সে প্রেমই ঐশ্বরিক প্রেম। ঈশ্বর প্রদত্ত প্রেম কখনো ব্যার্থ হয় না।
তোমার প্রথম উপন্যাস অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্যে তোমাকে অভিনন্দন। আরও লিখো। শুভ কামনা সারাক্ষণ 🌹🌹
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক প্রাপ্তি দিদি।
অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
জিসান শা ইকরাম
বিশাল এক কাজ অত্যন্ত সফল ভাবে শেষ করেছ।
এই উপন্যাস সোনেলার একটি সম্পদ বলে বিবেচিত হয়ে থাকবে।
সময় পেলে পর্বের লিংক যুক্ত করার চেস্টা করব।
শুভ কামনা প্রদীপ।
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক প্রাপ্তি দাদা।
খুশি হলাম অনেক।
অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।।