
ঘুমাতে পারছি না কোনমতে। একটু পরপর জেগে উঠছি। একরকম বিস্ময়কর নেশার পেশায় জড়িত হয়নি কোনদিন। কিন্তু আজ হঠাৎ করে কেন যে দীর্ঘ রাতটাকে পাহারা দিতে বসেছি তারও কোন সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শুনেছি প্রেমে ছ্যাঁকা খেলে প্রেমিকদের ঘুম আসে না। প্রেমিকেরা সারারাত বাতি জ্বালিয়ে বিড়ির ধোঁয়া আর ছাইপাঁশে রাত্রিযাপন করে। কিন্তু আমিতো সবেমাত্র প্রেমের পথে পা রেখেছি।
একদিকে ঘুম এসে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। আবার অন্যদিকে হিমুর নাক ডেকে ঘুমানোর আওয়াজের যন্ত্রণায় মনের মাংসপেশিতে রাগ জমে জমে হাড্ডি-গুড্ডি ক্ষয়ক্ষতির কবলে পরছে। এরচেয়ে চরম দরিদ্র বিরক্তির ঘটনার মুখোমুখি স্বাক্ষী হয়ে থাকিনি কোন দিন। হিমু নাক ডেকেই ঘুমাচ্ছে। কিন্তু কিছু বলার উপায় নেই। কারণ, ঘুম থেকে উঠেই বলবে – আমি নাক ডাকি না।
হঠাৎই ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে। বুকের পর্দাগুলো ধুকপুক ধুকপুক করতে থাকে। মাথার উপরে ফ্যান তখনো ঘুরছিল। কিন্তু ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি পুরো শরীর ঘেমে একাকার। বিছানাটা অব্দি ভিজে গেছে।
আবার সেই খিলখিলিয়ে হাসি। যেটা ভেবে ভয় পেয়েছিলাম কিন্তু সেটা হয়নি। হিমু নিজেই ঘুমের মধ্যে উচ্চস্বরে খিলখিলিয়ে হাসতে ছিলো। সবকিছু আজ রংতামাশার মতো লাগছে। এলোমেলো অগোছালো এলোপাথাড়ি।
আর ঘুম হয়নি। জেগে জেগে মনের মধ্যে দর কষাকষি করছিলাম চিন্তাভাবনার সাথে। কিন্তু কোনদিক থেকেই অগ্রসর হতে পারছিলাম না। হঠাৎ কিছু সমাধান মিলবে মিলবে ভাব ঠিক তখনই হিমু হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলো। আর বলতে শুরু করলো – প্লিজ সোনা পাখি, যেওনা। আমি কোন উপায়ন্তর না পেয়ে হিমুর শরীরে হাত বুলিয়ে ডাকতে শুরু করলাম।
এই হিমু। কি হয়েছে তোর? এই হিমু…।
ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখে চোখের কোণে কয়েক ফোঁটা অশ্রু-শিশির বিন্দু গাল বরাবর চুইয়ে চুইয়ে পরছে। আমি টিস্যু পেপার হিমুর হাতে দেই। হিমু তখন বলে ওঠে – নীল রঙের রুমালটি কোথায়?
নীল রঙের রুমাল..! মানে কি? এতো রাতে রুমাল পেলি কোথায়?
কেন? ও যখন আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিলো আমি তখন খুবই কাঁদছিলাম। তখনই আমার হাতে নীল রঙের রুমাল দিয়ে বললো – প্লিজ কেঁদো না। রুমাল দিয়ে মুছে নাও।
আমি বললাম – শালা, তুই স্বপ্ন দেখেছিলি। আর আমার ঘুমের বারোটা বাজাচ্ছিলি।
২৩টি মন্তব্য
মোহাম্মদ দিদার
মনটা খারাপ হচ্ছিলো।
আবার হাসিয়ে দিলেন!
খুব ভালো লাগলো।
নৃ মাসুদ রানা
ও আ, তাই। বেশ ভালো তো।
এস.জেড বাবু
বাস্তবে হলে রুমালটা হলুদ হতো শিউর।
স্বপ্নে নীল দেখছে।
চমৎকার গল্প।
“হিমু”
নৃ মাসুদ রানা
বুঝতে পেরেছেন। একদম সত্যি।
এস.জেড বাবু
কত কথা বলি আপনার লিখা নিয়ে,
বিরক্ত হন না এজন্য কৃতজ্ঞতা ভাই।
আকবর হোসেন রবিন
‘হিমু’ নামটা দেখলে চোখের সামনে হুমায়ূন আহমেদের হিমু ভেসে উঠে। তাই অন্য কোন লেখকের লেখায় হিমু চরিত্র থাকলে সেটা পড়ার আগ্রহ পাই না। পড়ে মজাও পাই না। কেন জানি মনেহয় হুমায়ূন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার চরিত্রটা গুলো নিয়ে কম কচলানো ভালো। পরে হয়ত তিতা লাগতে শুরু করবে। তবে গবেষণা করা যেতে পারে। যাই হোক, এটা একান্ত আমার মতামত, সিরিয়াসলি নিবেন না।
শুভকামনা ভাই।
আকবর হোসেন রবিন
চরিত্রগুলো*
নৃ মাসুদ রানা
মতামতের জন্য ধন্যবাদ। আমিও সবার মতামতের অপেক্ষায় আছি।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ, আসলে আমি নিজেও হুমায়ূন আহমেদ স্যারের চরিত্রগুলোর ভক্ত। শুধু ওনার স্মৃতির জন্যই হিমু নামটি ব্যাবহার করছি। জানিনা কতটুকু স্বার্থক হব।
নিতাই বাবু
চলুক পর্ব! সাথে আছে সবসময়। এই পর্বটিও খুবই ভালো লেগেছে দাদা।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয় কবিবর, আপনাদের উৎসাহে গল্পগুলো আরও বেশি লোভনীয় হচ্ছে।
ছাইরাছ হেলাল
তাঁর লেখার আমাদের ও প্রিয়,
আর তাই আপনি সেই হিমু চরিত্রটি নিয়ে লিখছেন বলে পড়তে মন্দ লাগছে না।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ, এভাবে ব্যাখ্যা করে সাহস আর উৎসাহ দেওয়ার জন্য।
হৃদয়ের কথা
হিমু নাকও ডাকে! ভালোই লাগলো আপনার হিমু পড়তে।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ, হিমুকে নিয়ে আরও কয়েকটি গল্প আছে আমার। পড়তে পারেন প্রিয়। হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন এর শুভেচ্ছা স্বরূপ অথবা স্মৃতি রক্ষার্থে আমার এই ক্ষুদ্র চেষ্টা। আমি ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার একটি ছোট প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এবং এই ৩০টি গল্প দিয়ে একটি বই প্রকাশ করবো বলে আশাবাদী।
ধন্যবাদ, আশাকরি পাশে পাব। ভালো থাকুন।
রুমন আশরাফ
চমৎকার
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়
রেহানা বীথি
শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন আহমেদ যে কয়েকটা চরিত্র আমাদের মাথার মধ্যে বসিয়ে দিয়ে গেছেন, সেগুলো থেকে সরে আসা সম্ভব নয়। আপনার লেখাটি পড়তে গিয়ে হুমায়ূন স্যারের লেখার সাথে মেলাতে চেষ্টা করিনি। আপনি আপনার মত লিখেছেন। ভালো লাগলো।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়, প্রকৃতপক্ষে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের মতো করে লেখা সম্ভব নয়। আমি শুধু আমার মতো করে চেষ্টা করছি আর লিখে যাচ্ছি।
আরজু মুক্তা
হুমায়ুন স্যার যে পাঠক তৈররি করেছে, তা বোঝা যায়।
শুভকামনা।
নৃ মাসুদ রানা
হুমায়ুন আহমেদ স্যার শুধু পাঠক সৃষ্টি করেননি অনেকগুলো চরিত্রও সৃষ্টি করে গেছেন। যে চরিগুলো সবসময় তাড়া করে।
সুরাইয়া পারভিন
হা হা হা শেষটা দারুণ ছিলো
চমৎকার প্রকাশ
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ, ভালো লাগলো।