মালয়েশিয়ার লঙ্কাউইতে মাচিংচ্যাং পর্বতের উপর রয়েছে পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষনীয় “লাংকাউই স্কাই ব্রিজ”। স্কাইব্রীজে যেতে হয় বেশ কিছু পাহাড় টপকে। এ জন্য সেখানে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে ক্যবল কারের তিনটি ল্যান্ডিং স্টেশন। একটা থেকে যাত্রা শুরু, মাঝখানে একটা এবং সর্বশেষেরটায় নেমে একটু নিচের দিকে সিড়ি দিয়ে নেমে যেতে হয় স্কাইব্রীজে।
সর্বশেষ ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে আরো উপরে উঠার জন্যও রয়েছে কয়েকটা সিড়ি। উপরের দিকের সিড়ি ধরে পাহাড়ের সর্বশেষ উচ্চতায় উঠলে দেখা যাবে পাশাপাশি দুটি পাহাড় চুড়ায় রেলিং দেওয়া দুটি ছাদ, এবং একটা থেকে অন্যটায় যাওয়ার জন্য রয়েছে একটা ব্রীজ। ওখানে গেলে দেখা যাবে হাজার হাজার তালা ঝুলানো রয়েছে ব্রীজের রেলিংগুলোতে। গোলাকার ছাদের নিচে রয়েছে কিছু দোকান, ওখানেই তালাগুলো বিক্রি হয়। প্রেমিক প্রেমিকা জুটিরা তাদের নাম লিখিয়ে তালাগুলো কিনে ওখানে লাগিয়ে দিয়ে সম্ভবত চাবিগুলো ছুড়ে মারছে নিচের পাহাড় চুড়ায়। অতএব আর ভাঙবে না প্রেম! আলাদা হবে না প্রেমের জুটি! এমন সরলপ্রাণ বিশ্বাসেই এই সেতুতে ‘লাভ লকস’ বা ‘ভালোবাসার তালা’ ঝুলিয়ে দিচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকা জুটিরা। এবার আসুন লাংকাউইর ভালোবাসার তালা ঝুলানো সেতুটা দেখে নেই।
(২) ওরিয়েন্টাল ভিলেজ কোম্পানীর ক্যাবল কারের প্রথম স্টেশন এটা এখান থেকেই যাত্রা শুরু হয় আকাশ পানে। বলতে পারেন জীবনটা ঝুলে সুতার উপর।
(৩) দ্বিতীয় ল্যান্ডিং স্টেশনটা সামনের ঐ উঁচু চুড়ায়।
(৪) দ্বিতীয় ল্যান্ডিংএ থেকে তৃতীয় ল্যন্ডিং এর তোলা ছবি, ডান পাশে সেই বিখ্যাত স্কাই ব্রীজ।
(৫) তৃতীয় ল্যন্ডিং এর উপরের চুড়ায় ডান ও বাম পাশে দুটি গোলাকার ছাদ দেখা যাচ্ছে, বাম পাশের চুড়াটা অপেক্ষাকৃত নিচু। এই গোলাকার ছাদগুলো নিচের অংশ দিয়ে একটার সাথে অন্যটা যুক্ত হয়েছে একটা ব্রীজের মাধ্যমে, ওটাই হলো আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় ভালোবাসার তালা ঝুলানো ব্রিজ, বা লাভ লক ব্রীজ।
(৬) তৃতীয় ল্যন্ডিং এর উপরের ডান পাশের চুড়া এটা, এখান থেকে তাকিয়ে মনে হয় পৃথিবিটা সত্যিই স্বর্গ।
(৭) কোন দিকে উঁচু পাহাড়।
(৮) পাহাড়ের পর সাগর, আবার সাগরের মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ।
(৯) আছে পর্যটকদের জন্য এমন কিছু নৌযান।
(১০) সর্বোচ্চ চুড়াটা থেকে পাশের চুড়াটায় যেতে হয় এই ব্রীজ দিয়ে, আর এই ব্রীজের দুই পাশের রেলিংগুলোতেই পাওয়া দেখা যাবে লাভ আকৃতির অসংখ্য তালা ঝুলছে। সুতরাং এই ব্রীজকে লাভ ব্রীজ বলা যেতেই পারে।
(১১/১২) ব্রীজের দুই পাশের ঝুলানো তালাগুলো।
(১৩) ব্রীজের শুরুতেই রয়েছে লাভ লক বা ভালোবাসার তালার দোকান।
(১৪) পছন্দের পর নাম লিখে দেওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত রয়েছে দোকান কর্মীরা।
(১৫) এতো উঁচুতে লাভ ব্রীজের পাশে ফুটে থাকা এই ফুলটার নাম জানিনা।
(১৬) ব্রীজের এক পাশে দেখলাম এমন বিশেষ কিছু যায়গায় ঝুলছে ভালোবাসার তালা, এই ভালোবাসাগুলোর মুল্য মনে হয় কিছুটা বেশী হবে 😉
(১৭) ভালোবাসার তালার সাথে একটা পোজ দিলে হয় কেম্নে?
(১৮) এক সময় স্কাই ব্রীজেও একটু হাটাহাটি করে নিলাম, ব্রীজটা বেশ দুলে আর নিচে তাকালে সত্যিই বেশ ভয় হয়।
(১৯) স্কাই ব্রীজে থেকে দেখা পাশের চুড়াটা, যেখানে রয়েছে ভালোবাসার তালাগুলো ঝুলানো।
(২০) সব শেষে এই পথেই আবার ফিরে চলা…………..
৩০টি মন্তব্য
অনন্য অর্ণব
ওয়াও…এক কথায় অসাধারণ একটা ট্যুর শেষ করে আসলাম। ভালোবাসার তালা কি একটাও নিয়ে আসছেন ভাই? আনলে আমারে একটা দিয়েন😄😄
কামাল উদ্দিন
নিয়া আসলে কি ভালোবাসা টিকবে? ওখানে লাগিয়ে আসাটাই নিয়ম। (কানে কানে বলি, আমি কিন্তু নিয়মটা পালন করিনি) 🙂
………..শুভ কামনা সব সময়
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার সব ছবি
আর অভিনব তথ্য
প্রেমিক যুগল তাদের নাম লিখে ভালোবাসার তারা ঝুলিয়ে রাখতে আর চাবি ছুড়ে ফেলেছে যাতে তাদের ভালোবাসা না ভাঙ্গে। দারুণ কিন্তু ব্যাপারটা,,,,😱😱
কামাল উদ্দিন
হুমম, সত্যিই দারুণ আপু, তবে অবাস্তব……….শুভ কামনা সব সময়।
রাফি আরাফাত
ছবি গুলো ভালো লাগলো। সুন্দর প্রকাশ
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ রাফি ভাই, ভালো থাকুন, সব সময়।
নিতাই বাবু
[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে]
শ্রদ্ধেয় দাদা, এপর্যন্ত এবিষয়ে জানা ছিল না। সাথের অনেক মানুষই মালয়েশিয়ায় থাকে। আবার অনেকেই ফেরত এসেছে। অথচ ভালোবাসায় তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়, তা কারোর মুখে শুনিনি। যা এখন আপনার পোস্ট পড়ে জানা হলো। আর ছবিগুলোও এমনভাবে আটকে দিয়েছেন, তাতে আপনার এই পোস্টও সোনেলায় তালার মতো আটকে রইল, দাদা। পোস্ট খানার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
কামাল উদ্দিন
[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে]
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা
নিতাই বাবু
[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে]
জিসান শা ইকরাম
পর্যটন শিল্পে মালয়েশিয়া বেশ এগিয়েছে। তাঁদের আয়ের অন্যতম উৎস এর একটি হচ্ছে পর্যটন।
অথচ আমরা কেবল মাত্র ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে পর্যটন শিল্পকে বেশি দূর নিয়ে যেতে পারছি না।
আমাদের পর্যটনের যে সম্পদ আছে তা দিয়েই দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত হতে পারে পর্যটন শিল্প।
ভালোবাসার তালা ঝুলানো দেখেছি দক্ষিন কোরিয়ার একটা পর্যটন স্পটে,
আপনার বর্ননা পড়ে এই স্থানটিও দেখার ইচ্ছে প্রবল হলো।
মালয়েশিয়া আবার গেলে ঘুরে আসব এখানে।
ভাল লেগেছে ছবি ব্লগ+ ভ্রমণ।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
আখের গোছানোর ধান্ধাটাই আমাদের কাছে সব সময় প্রধান্য পায়, তাইতো কোন দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকেও আমরা থাকি উদাসিন। নইলে পর্যটনে আমাদের সম্ভাবনা বিপুল।
…………….শুভ কামনা সব সময়
মনির হোসেন মমি
সহমত। পৃথিবীর প্রকৃতির সব রূপ এই বাংলাদেশে তবুও আমরা দূর্ণীতির কবলে পর্যটন শিল্পটাকে ধ্বসের দিকে নিয়ে গেছি।
নৃ মাসুদ রানা
ছবিগুলো একদম প্রানবন্ত
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ ভাইজান, ভালো থাকুন, সব সময়।
ছাইরাছ হেলাল
ভালোবাসা আর তালা দুজনে দুজনার, আপনার লেখা না দেখলে বুঝতাম না।
সুন্দর ভ্রমণ-ছবি-বর্ণনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ হেলাল ভাই, শ্রদ্ধা জানবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
ভিসা টিকিট ছাড়া পুরো মালয়েশিয়া ভ্রমন করার সুযোগটা আর মিস করিনি। হয়তো নিজে গিয়েও এভাবে সব দেখতে পেতাম না যেভাবে আপনি দেখালেন।
চমৎকার ছবি আর বর্ননায় এই পোস্ট অসাধারণ লেগেছে। আপনার ভ্রমন অভিজ্ঞার ঝুলি কিন্তু নামানো যাবেনা। আলাদীনের যাদুর পাটির মতো, হাতে রেখেই আমাদের একটা একটা করে খুলে দেখান। আমরা ঘুরে বেড়াবো আপনার সাথে। 🙂
শুভ কামনা চাওয়ালা ভাই 🌹🌹
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, মন ছোয়া চমৎকার মন্তব্য করেছেন আপনি।
আর চাওয়ালা নামটা দিয়ে আমার ডিমোশন না করলেও পারতেন আপু। কারণ আমি কিন্তু মাঝে মাঝে কফিও দেই 😉
কামাল উদ্দিন
[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে]
কামাল উদ্দিন
[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে]
সাবিনা ইয়াসমিন
ওওওও, এই কথা!
তাহলে পরেরবার আপনাকে কোকোনাট ভাই ডাকবো। একটা ডাব খেতে ইচ্ছে করছে 😀
কামাল উদ্দিন
গরম খাওয়ার পর ঠান্ডা ডাব খাওয়া কি উচিৎ হবে আপু?
সাবিনা ইয়াসমিন
আরে নাহ, ডাব খাওয়ার আগে আপনার লেখাটা পড়বোতো!
কামাল উদ্দিন
হে হে হে, কম খারাপ বলেননাই আপু 😀
মনির হোসেন মমি
১৯৯৭ তে গিয়েছিলাম একবার তবে ব্যাস্ততায় আপনার মত এমন ঘুরা হয়ে উঠেনি যাক আপনার পোষ্টে পুরোটা এবার প্রান ভরে ঘুরে নিলাম। এমন পোষ্টের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কামাল উদ্দিন
ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে কতোটাই আর দেখা হয়ে উঠে এই সুন্দর পৃথিবী, আমার ক্ষেত্রেও তাই। শুভ কামনা জানবেন ভাই।
এস.জেড বাবু
আপনার সাথে ঘুরে ঘুরে দেখা হয়ে গেল মহাথীর মোহাম্মদের সাজানো আধুনিক মালয়েশিয়া।
ছবিতে আর কথায় যেন জীবন্ত ট্যুর ছিলো।
ভালবাসার তালা মারার বিষয়টা আমি বিভিন্ন দেশে দেখেছি শুনেছি। আজ মালয়েশিয়ার তালা দেখা হলো।
সময় পেলে আরও লিখবেন।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ বাবু ভাই, সোনেলায় এসেছিই তো লিখতে ও পড়তে, আপনারা সাথে থাকলে সেটা অবশ্যই সম্ভব।
আরজু মুক্তা
তালাময় ভালোবাসা
কামাল উদ্দিন
ভালোবাসা তালা মারা, সুতরাং এই ভালোবাসা পালাতে পারবে না……..শুভেচ্ছা জানবেন আপু।