
স্যার তার এক ইংলিশ মিডিয়াম এর এক ছাত্রকে দিয়েছিলেন স্কুল পরীক্ষার কিছু বাংলা খাতা দেখে তাতে নাম্বার দিতে।ছাত্রটি খুব মনোযোগ সহকারে খাতাগুলো দেখছেন আর নাম্বার দিচ্ছেন।হঠাৎ একজন ছাত্রের খাতায় একটি প্রশ্নের উত্তরে নম্বর দিতে গিয়ে থেমে গেলেন।সেখানে লেখার এক পর্যায়ে পন্য লেখাটি তার কাছে কেমন যেন অশ্লীল অশ্লীল মনে হল।আগপাছ না ভেবে ছিঁ ছিঁ স্কুলের ছেলেরা এত খারাপ! দিলো কেটে পুরো প্রশ্নের উত্তর।সেই খাতার সামনে যে সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়েছিলো সে, সেইগুলোতেও মনের জিদে সামান্য ভুলে কেটে কুটে নম্বর এতো কম দিল যে যোগফলে সেই খাতার সেই ছাত্রটিকে ফেল করিয়ে দিল।
কিছুক্ষণ পর সেই শিক্ষকের হাতে ছাত্রের দেখা সেই সব খাতাগুলো গেলে শিক্ষক খাতাগুলোকে আরেক বার নেড়ে চেড়ে দেখেন।ছাত্রের দেখা সবগুলো খাতায় নম্বর অনুযায়ী সবাই পাস শুধু একজন ছাড়া।স্যারের মনে খটকা যেমন লাগল তেমনি ফেল করা ছাত্রের জন্য মনে কষ্ঠও অনুভব হল।তাছাড়া মাত্র তিন নম্বরের জন্য ছেলেটি ফেল করেছে।
ছাত্রকে স্যার জিজ্ঞাসা করলেন -কি ব্যাপার এই খাতাটিকে আর তিনটি নম্বর বাড়িয়ে দিলেতো পারতে-ছেলেটা পাস করে যেত।ছাত্রটি খাতাটি দেখে বুঝতে পারলেন সেই পন্য লেখা খাতাটিই।অনেকটা মনে খুব কষ্ট নিয়ে ছাত্র স্যারকে বললেন..।
-স্যার বাংলা ভাষা সম্পর্কে যার সামান্যতম কমনসেন্স নেই তাকে আমি নম্বর দেই কি করে? নম্বরতো ঐ উত্তর লেখাতে দেইনি বরং অন্য সব প্রশ্নের উত্তরে নম্বরও কম দিয়েছি।ফাজিল কোথাকার!
স্যার বললেন..
-কি লিখেছিলো?
-অশ্লীল শব্দ স্যার, বলতে আমার লজ্জা লাগছে..ছাত্র হয়ে কি ভাবে খাতায় এ সব অশ্লীল শব্দ লিখতে পারে?
স্যার সেই খাতাটি উল্টাইয়া পাল্টাইয়া সেই অশ্লীল শব্দের দিকে চোখ পড়ল তার।“পন্য” শব্দটির উপর চোখ পড়লে স্যার নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারলেন।অতপর ছাত্রটিকে শব্দটি দেখিয়ে বললেন।
-পন্য” এই শব্দটি?
– জি স্যার, এবার আপনিই বলেন ?
-আমি আর কি বলবরে বোকা! ভুলতো আমিই করেছি-যে তুমি হলে ইংলিশ মিডিয়াম এর ছাত্র আর আমি তোমাকে দিয়েছি বাংলা খাতা দেখতে!
-What you mean Sir?
-আরে এই “পন্য” সেই পর্ণ না।
স্যার অন্যত্র কলমে লিখে শব্দের বানান গত পার্থক্য দেখিয়ে ছাত্রকে বলল।
-এখন কি করবে?
-সরি স্যার!
-সামান্য সরিতে তাকে পাস করানো যাবে কিন্তু তার খাতায় যে পরীক্ষকের এতো কাটাকাটি যদি প্রশ্ন উঠে তখন তার জবাব দেবো কি করে?
তাই কথায় আছে,”ভাবিয়া করিও কাজ,করিয়া ভাবিও না” শেষে আম ছালা দুটোই যাবে।আর একটি কথা হল “বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃকোলে” যে যেই কাজের কাজী তাকে সেই কাজই দিতে হবে নতুবা এ গল্পের মত হিতে বিপরীত হতে পারে।
৩৭টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
এমন করে খাতা দেখলে কপালে করল্লা ভাঁজা মাস্ট।
মনির হোসেন মমি
হা হা হা ধন্যবাদ ভাইজান।
তৌহিদ
হা হা হা, বানান বিরম্বনায় কথার মানেই চেঞ্জ হয়ে যায়। লেখাটিই তার প্রমাণ।
ভালো লাগলো ভাই।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ ভাইটি।
শবনম মোস্তারী
হম। ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র কে দিয়ে বাংলা খাতা দেখলে এই রকম হবেই।
আমার নিজের ভাতিজা, ক্লাস 3তে পরে ইংলিশ ভার্সনে । সে বরাবরই বাংলাতে কম নম্বর পায়, বাংলা অনেক শব্দ সে বোঝেই না…🙁
মনির হোসেন মমি
রাইট আপু।ধন্যবাদ।
মনির হোসেন মমি
ভাতিজার জন্য দোয়া রইল।
রাফি আরাফাত
নাম দেখেই পড়ার ইচ্ছে বেড়ে গেছে।। হা হা হা।। ভালো লাগলো৷
ভালো থাকবেন
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ ভাইয়া।
শামীম চৌধুরী
প্রথমটা পড়েছি। এটাও পড়লাম। তৃতীয়টাও পড়তে চাই।
মনির হোসেন মমি
শুধু পড়বেনই নাকি লিখবেনও কিছু ।ধন্যবাদ।
সুরাইয়া পারভিন
একদম সঠিক বলেছেন ভাইয়া
যার যা কাজ তাকে তাই করতে দেওয়া উচিত। অন্যথায় পন্য হয়ে যাবে পর্ণ,,হা হা হা
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ আপু। ভাল থাকবেন।
আকবর হোসেন রবিন
রম্য গল্প ভালো লেগেছে।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ ভাইয়া।
সাবিনা ইয়াসমিন
খাতায় শিক্ষক নিজেই যদি কাটাকুটি শুরু করে দেয়, তাহলে শিক্ষার্থীর অবস্থা কি হবে!
” ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না ” এই কথাটা কি শিক্ষক আগে পড়েননি!!!
মনির হোসেন মমি
এ কথাটি গল্পের বাহিরে পোষ্টদাতার কথা।আর খাতা দেখায় শিক্ষক দেখলেন কই? মনে হয় গল্পটি আফার ভাল লাগেনি নাকি আফায় কোন টেনসনে আছেন? বলে ফেলেন কোন সমস্যা নেই-এই ছোডা ভাইটি আছে না।
সাবিনা ইয়াসমিন
হাহাহা, আমি দেখতে চাচ্ছিলাম ছোট্ট ভাই কি শুধু কমেন্ট দেখেই ধন্যবাদ দেয়, নাকি পড়ে দেয় 😀😀
পরিক্ষায় পাশ নাম্বার দিলাম আপনাকে 🌹🌹
মনির হোসেন মমি
যাক বাচা গেল।বিপদ কেটেছে।
শুভ ব্লগিং।।
এস.জেড বাবু
শুরুতে ভেবেছিলাম কি না কি
পড়ে দেখি মেসেজ-
“”যে যেই কাজের কাজী তাকে সেই কাজই দিতে হবে নতুবা এ গল্পের মত হিতে বিপরীত হতে পারে।””
চমৎকার কৌশলে লিখা।
মনির হোসেন মমি
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
হালিম নজরুল
এরকম বানান বিভ্রাট প্রায়ই হয়
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ ভাইয়া।
মোঃ মজিবর রহমান
ভাল উপস্থাপন মনির ভাই। কিছু বানান ও কিছু বাক্য উলটা লাগছে আমার নিকট আপনি পড়ে দেখবন দয়া করে।
মনির হোসেন মমি
দেখেছি ভাইজান আমার চোখে কেবল পাস এর স্থলে পাশ দেখলাম। আরো কিছু থাকলে কমেন্টসে জানাবেন। ধন্যবাদ ভাইজান।
আরজু মুক্তা
বানান বিড়ম্বনা।
হা হা
ভালো লাগলো
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ আপু।
কামাল উদ্দিন
সামুর উপর মনে হয় এই রকমই একটা খড়গ নেমে এসেছিল, শিক্ষামুলক গল্প। ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম মমি ভাই
মনির হোসেন মমি
জি ভাইয়া। সামুকে নিয়েই এ গল্পটি লিখেছিলাম । ওপেনের দিন পোষ্টও দিয়েছিলাম। অনেক ভাল লাগছে…জলছবি সহ কত ব্লগেই না ছিলাম ।সব ব্লগ ছেড়ে ছুরে এ ব্লগের কিছু সোনালী মানুষের মায়ায় পড়ে সংসার করছি আজ প্রায় ছয় বছর হবে।এ ছয় বছরের মাঝে অনেক ব্লগ হারিয়ে গেছে কিন্তু আমার এ আত্মার আত্মীয় এ সোনেলা পরিবারটি এখনো সবার ভালবাসা নিয়ে দাড়িয়ে আছে।আশা রাখি আপনাদের ভালবাসা নিয়ে এগিয়ে যাবে আরো….সেই প্রত্যাশায় শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
এই ব্লগের খবর আমি মাত্র দুইদিন আগে জানতে পেরেছি, এবং সাথে সাথেই রেজিষ্ট্রেশন করে ফেলেছি মমি ভাই
মনির হোসেন মমি
খুব ভাল করেছেন। এখন থেকে ব্লগিং এ সাথেই পাব বলে আশা রাখছি।এখানে সবাই আন্তরিক।
শাহরিন
ভালোই তো, এই শিক্ষকের ছাত্র তো এমনই হওয়ার কথা। গল্পটি পরে খুবই হাসি পাচ্ছে। অতীতের কিছু মনে পরে গেল। জিজ্ঞাসা কইরেন না ভাই ঘটনাটি 🤣
মনির হোসেন মমি
চোররে চুরির কথা মনে করে দিয়ে যদি বলেন-এই চোর এইটা কিন্তু চুরি করিস না তাহলে কি সে শুনবে? এই কমেন্টসে নয়- সোনেলায় রম্য লেখায় শুনতে চাই।ধন্যবাড
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা , এটি গল্প বিভাগে না দিয়ে রম্য বিভাগে দিলেই ভালো হতো 🙂
ছাত্রদের দিয়ে অনেক শিক্ষকই খাতা দেখায়,
আমি ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায় এক স্যার ক্লাস টেন এর পরীক্ষার খাতায় নাম্বার দিতে বলছিলেন,
আমি সবাইকে পাশ করিয়ে দিছি। যার উত্তর যত বড়, তাঁকে বেশী নাম্বার দিছি। ভুল শুদ্ধ আর দেখি নাই 🙂
মজা পেয়েছি খুব।
মনির হোসেন মমি
হা হা হা ভাইজান আপনার মত মাষ্টার যেন ঘরে ঘরে জন্মায়। ধন্যবাদ।
সাখিয়ারা আক্তার তন্নী
আমি কিন্তু আমার ক্লাসের অন্য সেকশনের খাতা দেখতাম।
নাম্বার দিতে আমার কোনো কৃপণতা নেই।
মনির হোসেন মমি
হা হা হা ধুমাইয়া দিবাইন কোন সমস্যা নাই। ধন্যবাদ আপু।