
কোনো এক রাজকন্যা
পরনে ঘাসের শাড়ি
কালো চুল ধান
বাংলার শালিধান
আঙ্গিনায় ইহাদের করছে বরণ।।(জীবনানন্দ )
আবার,
স্বাধীনতা তুমি
উঠানে ছড়ানো
মায়ের শুভ্র শাড়ির আঁচল।(শামসুুর রাহমান)
চেতনায়,মননে জড়িয়ে আছে শাড়ির নানারূপ। আর সবকিছুর উর্দ্ধে স্থান ধরে আছে টাঙ্গাইল শাড়ি। সময়ের সাথে সাথে চলতে পারে এ শাড়ি। নারীরা বদলে নিতে পারে সময়োপযোগী করে।
একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় বংশ পরস্পরায় এই শাড়ির বুনন রীতি টিকে আছে ; সেই সাথে আছে রং , নকশা, উপকরণ। তাই এই শাড়ি আজও আধুনিক।
শুভ্রদেবের গান মনের অজান্তে বলতে ইচ্ছে করছে —- “পরেছে লাল শাড়ি/খোঁপায় ফুল আর হাতে রেশমি চুড়ি। ” তাঁতে বোনা সুতির শাড়ির সারিতে এগিয়ে আছে টাঙ্গাইল শাড়ি।
ইতিহাস ঘাটলেই দেখা যায়,টাঙ্গাইল জেলার সদর, দেলদুয়ার, কালিহাতি, বাসাইল, ও নাগরপুর উপজেলার কয়েকটি স্থানে এই শাড়ির বুনন দেখা গেলেও , বেশিরভাগ শাড়ি তৈরি হয় দেলদুয়ারের পাথরাইলে ।তাঁত শিল্পীর মতে, ১৫০/২০০ বছর ধরে এখানে এই শাড়ি তৈরি হচ্ছে।
টাঙ্গাইল শাড়ি বোনার যে মূল যন্র হাতচালিত তাঁত থাকে, তাকে বলে পিটলুম।শাড়িতে নকশা ফুটিয়ে তোলার জন্য নকশাটা প্রথমে করা গ্রাফ কাগজে।তারপর সেই নকশা ধরে কাগজে চৌকো চৌকো ছিদ্র করা হয়। ছিদ্রে সুতো ঢুকিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় শাড়ির নকশা। এখন নানা ধরণ ও দামের শাড়ি তৈরি হয়। দাম ৩৩০ থেকে ৮০০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
শাড়ি তৈরির জন্য সুতার যে প্রস্তুতি সেই সুতা কাটার কাজটা ৯৯ শতাংশ করেন নারীরা।
টাঙ্গাইল শাড়ি হচ্ছে বাংলাদেশি শাড়ি। আর আছে নিজস্ব স্টাইল। আর হাতের তাঁতে তৈরি সুতির যে আবেদন তার তুলনা আর কোথাও পাওয়া যাবেনা !
আমি পূরব দেশের পূরনারী
গাগরি ভরিয়া এনেছি অমৃতবারি
এনেছি শত ব্রত পার্বণ উৎসবে
এনেছি সারস হংস কলরব
এনেছি নব উষর সিন্ধুর
মেঘ ডমরুর সাথে মেঘ ডুমুর শাড়ি।
(কাজী নজরুল ইসলাম)
★★আসুন এই ঈদে সবাই একটা টাঙ্গাইল শাড়ি কিনি।
২৩টি মন্তব্য
শাফিন আহমেদ
কিছুদিন আগে সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘরে গিয়েছিলাম, সেখানে গিয়ে জামদানি শাড়ি দেখেছিলাম একদম শুরুর দিকে প্রস্তুতকৃত , এছাড়া নানুর মুখে মসলিন কাপড়ের কথাও শুনেছিলাম তবে দেখিনি। মসলিন কাপড় নাকি এত পাতলা ছিলো যে দিয়াশলাই এর খোসার ভেতরেও ঢুকানো যেত। শাড়ি বাঙ্গালী নারীর ঐতিহ্য। আজকে আপনার কল্যানে টাঙ্গাইল শাড়ি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম । লেখাটি অনেক তথ্যবহুল। ধন্যবাদ আপনাকে। শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
শাড়ি আমাদের ঐতিহ্য। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের কর্তব্য।
শুভকামনা
শামীম চৌধুরী
আমার মা একজন স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন। উনাকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত টাঙ্গাইলের শাড়ি পড়তে দেখেছি। আমি খুব শখ করে সিঙ্গাপুর থেকে শিপন জর্জেটের একটি শাড়ি এনে দিয়েছিলাম। তখন শিপন জর্জেটের খুব কদর দেশে। আম্মা শাড়িটি নিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু কোনদিন পড়েন নি। পরে আমার বিয়ের পর আমার বউকে শাড়িটি দিয়ে বলেন তোমার স্বামী আমার জন্য এনেছিলো আজ তোমাকে দিলাম। তোমার জন্যই যতনে রেখেছিলাম। শাড়ি এনেছিলাম ১৯৮৪ সালে। আমার বউ পায় ১৯৮৮ সালে।
প্রদীপ চক্রবর্তী
শাড়ি ও লেখা দুই সুন্দর হয়েছে দিদি।
সাথে টাঙ্গাইল শাড়ি সম্পর্কে অনেককিছু জানতে পারলাম।
ধন্যবাদ দিদি।
আরজু মুক্তা
দারুণ তো ! আমারও টাঙ্গাইল শাড়ি খুব পছন্দ।
আরজু মুক্তা
আমারও টাঙ্গাইল শাড়ি খুব ভালো লাগে।
আপনার মায়ের প্রতি থাকলো সশ্রদ্ধ সালাম।
ছাইরাছ হেলাল
বিজ্ঞাপন মোটামুটি হইছে, মডেল নির্বাচন জুইত হয় নাই। তাই ফ্লপ।
শাড়ি-ফাড়ি এখন কে আর পড়ে!
অবশ্য মসলিন ফিরিয়ে আনার কঠিন প্রচেষ্টা চলছে। তখন ভাবুব-নে!
আরজু মুক্তা
বিয়ে মনে হয় করেননি। তাহলে বুঝতেন। ১ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারী, ১ বৈশাখ এ কতো যে শাড়ির কদর। ঐ যে মডেল দেখছেন উনিও পহেলা ফাল্গুনে টাঙ্গাইল শাড়ি পরেছেন।জামদানি শাড়ির মডেলে আপনার বৌ এর ছবি দিবো।
শুভকামনা
রেহানা বীথি
সবসময় পরি না, কিন্তু বিশেষ বিশেষ দিনে শাড়িই আমার একমাত্র পছন্দ। ভালো লাগলো শাড়ি নিয়ে আপনার পোস্ট।
আরজু মুক্তা
শুভকামনা আপু।
আমারও বিশেষদিনে শাড়ি পরতে ভালো লাগে।
তৌহিদ
টাঙ্গাইল শাড়িতে রমণীদের ভালো মানায় তা আপনার ছবিটি প্রমাণ করে। এটি আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য। এমন সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে এর আগে এরকম লেখা পড়িনি। আর কবিতাগুলিও আপনার লেখার সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
শুভকামনা রইলো আপু।
আরজু মুক্তা
মন্তব্য ভালো লাগলো। সোনেলায় নতুন বিষয়ে লিখলাম, এজন্য আরও ভালো লাগলো।আর শাড়ি ছাড়া রমণী বেমানান।
আপনাকে ধন্যবাদ।
সাবিনা ইয়াসমিন
শাড়িতেই বাঙালী নারীর সৌন্দর্যের বিকাশ ঘটে। এমন মেয়ে খুব কমই আছে যে, শাড়ি পরতে ভালোবাসে না। পোস্ট ভালো লাগলো। হলুদ শাড়িতে আপনাকেও খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
শুভ কামনা 🌹🌹
আরজু মুক্তা
আপনার কমেন্ট সবসময় সুন্দর হয়।
আপনাকে অফুরন্ত শুভেচ্ছা।
ইঞ্জা
শাড়ী তাও তাতের, বেশ সুনাম এর দেশে বিদেশে, আমি এই শাড়ী বিক্রি হতে দেখেছি কলকাতার নিউমার্কে, আজ জানলাম এর ইতিহাস।
খুব ভালো পোস্ট দিলেন আপু, ধন্যবাদ।
আরজু মুক্তা
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আমাদের দেশি শড়ি অনেক উন্নত।
শুভকামনা
ইঞ্জা
অবশ্যই উন্নত আপু, ধন্যবাদ। 😊
মনির হোসেন মমি
দেশীও পন্য
কিনে হই ধন্য…
আপনার লেখাটি দেশপ্রেম বুঝায়।কিন্তু দুঃখের বিষয় সরকারী বা আধা সরকারী সংস্থাগুলোর এ দিকে নজর না থাকাতে দিন দিন বিলুপ্তির পথে এগুচ্ছে।
আরজু মুক্তা
আকাশ সংস্কৃতি দায়ী। তাও উৎসবগুলোতে পরি।
শুভকামনা।
জাহিদ হাসান শিশির
শাড়িতে আপনাকে অনেক সুন্দর (সুন্দরী) লাগছে। 😀
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ
সুরাইয়া পারভিন
শাড়িতে নারীকে যতটা সুন্দর লাগে পৃথিবীর আর কোন পোশাকে ততোটা সুন্দর লাগে কিনা জানিনা। শাড়ি বাঙালি নারীর ঐতিহ্য গর্ব ভালোলাগা, ভালোবাসার পোশাক। নারীর পরিপূর্ণ সৌন্দর্য বিকশিত হয় শাড়িতেই। আমার প্রথম পছন্দ শাড়ি এবং শেষ পছন্দ শাড়িই। সময় সংকীর্ণতার জন্য হয়তো অন্য পোশাক পরতে হয়। কিন্তু পছন্দের শীর্ষে শাড়ি রয়েছে। তাঁতের শাড়ির বাংলা এবং বাঙালির গর্ব
চমৎকার লিখেছেন।
আরজু মুক্তা
শুভকামনা জানবেন।