
ছেলেধরার গুজবের পর বিদ্যুৎ নিয়েও গুজব ছড়াচ্ছে কিছু অসাধু বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ। অনেকেই ফেইসবুক, টুইটার, মেসেঞ্জারে এসব ভুয়া নিউজ ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ‘আগামী ২৫ থেকে ২৭ তারিখ নাকি সাড়া দেশে বিদ্যুৎ থাকবে না। এই তিনদিনে রাতের অাধারে মানুষের কল্লা কাটা হবে! প্লীজ স্টপ। আপনারা থামুক একটু। অনেক হয়েছে। এসব বিভ্রান্তিকর নিউজ ছড়িয়ে কী বুঝাতে চান আপনি প্রকৃত দেশ প্রেমিক? দেশ এবং দেশের মানুষের প্রতি অাপনার ভালোবাসা অনেক? এসব একদম ভুল! এটাকে দেশ প্রেম বলেনা বরং এটা অন্যায়। আপনি আবেগের ভয়ে এসব নিউজ ছড়িয়ে নিজেকে দেশ প্রেমিক নয় বরং দেশের বড় ক্ষতি করে অসাধু মানুষে পরিণত হচ্ছেন।
যারা এসব নিউজ বেশি বেশি শেয়ার করছেন আপনাদের মাথায় কী একটুও জ্ঞান নেই? তিনদিন কারেন্ট থাকবে না! রাতে কল্লা কাটা হবে এসব কোন ধরণের নিউজ? একবার কী ভেবেছেন আপনাদের এসব ভুয়া নিউজের জন্য অনেক বাচ্চা ছেলে-মেয়েরা ভয়ে স্কুলে যাচ্ছেনা! খাওয়া দাওয়া করছেনা ঠিকমত। আপনারা কী একবার ভেবেছেন আপনাদের এসব ভুয়া নিউজের জন্য অনেক মা -বাবা টেনশনে দিন দিন আহত হচ্ছেন। কেন এসব করছেন? কি লাভ এসব ভুয়া নিউজ ছড়িয়ে মানুষকে কষ্ট দিয়ে।
কোথায় দেশের বন্যাকবলিত মানুষের জন্য একটু সাহায্য বা দোয়া করবেন তা না করে কিছু বাজে পেইজ আর লিং থেকে নিউজ পড়ে সারা দেশ গরম করে দিচ্ছেন। আপনাদের এই গুজবের কারণেই অনেক সন্ত্রাসী, খুনি খারাপ মানুষগুলো অন্যায় করতে প্রশ্রয় পাচ্ছে। তারা এসব গুজবকে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক টাকা! শুধু তাই নয় এসব গুজবকে কাজে লাগিয়ে অনেক অসাধু লোক ছোট ছোট বাচ্চাদের অপহরণ করে মুক্তিপণ হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক টাকা। এমন কী গোপনে অনেক নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করে প্রাণে বেঁচে যাচ্ছে হত্যাকারীর দল! আর এসব গুজবে নিজেদের কাজ হাসিল করে নাম দিয়েছে পদ্মাসেতুর জন্য কল্লা চায়! কতবড় ধোকাবাজ ওরা। মূলত পদ্মাসেতুর কথা বলে অন্যায় ভাবে হত্যা করা হচ্ছে কিছু নিপরাধ মানুষদের। এখনো সময় অাছে নিজেকে পরিবর্তন করুন। কোনো কিছু দেখা বা শুনার আগের যাচাই করুন বিষয়টা কতখানি সত্য। অযথা আবেগের বশে বুয়া নিউজ বা গুজব ছড়িয়ে দেশ এবং দেশের মানুষের ক্ষতি করবেন না।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে থেকে জানা যায় ‘চলতি মাসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরিচিত কাউকে দেখলে ছেলেধরা সন্দেহে অন্তত ২২টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন ও আহত হয়েছেন আরও ২৬ জন। গত শনিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে স্থানীয় একটি স্কুলে যান তাসলিমা বেগম রেনু নামের এক মহিলা। এসময় তাকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়। এবার আপনারাই বলুন কেন সন্দেহের উপর ভিত্তি করে এই নিপরাধ মহিলাটিকে হত্যা করা হল? মহিলাটির ছোট একটি কন্যা সন্তান রয়েছে তারই বা কী হবে এখন?
শুধু রেনু হয় এরকম ভাবে অনেক নিষ্পাপ প্রাণ গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। আমাদের কিছু উত্তেজিত জনগণ কিছু না বুঝেই জাপিয়ে পড়ে। আরে ভাই সন্দেহ করে কেউ কী মানুষ হত্যা করে? আমি তো বলবো এটি একটি মার্ডার! সরকার যদি এর প্রদক্ষেপ না নেয় একদিন এই গণপিটুনি মহামারী আকার ধারণ করবে। তাই অামাদের উচিৎ সত্য জেনে বিচার করা। অযথা উত্তেজিত হয়ে কাওকে আঘাত করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই আসুন এসব গুজব থেকে বিরত থাকি, দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করি।।
২৪/০৭/২০১৯
১২টি মন্তব্য
আরজু মুক্তা
গুজবে কান দিবেননা।
সবাই ভালো থাকুন
মাছুম হাবিবী
এটাই কামনা ধন্যবাদ
তৌহিদ
গুজবে আক্রান্ত হয়ে হঠকারীমূলক কিছু করলে বুঝতে হবে তারা মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি। গুজব থেকে সবারই সতর্ক থাকতে হবে। ভালো লিখেছ ভাই।
শুভকামনা রইলো।
মাছুম হাবিবী
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া
মনির হোসেন মমি
ঘটনাগুলো আরো সক্রিয় হয় মিডিয়ার কারনে।আমরা এ সব ঘটনা নিউজ সেয়ার না দিলেই পারি।চমৎকার লেখা।
মাছুম হাবিবী
জ্বী ঠিক বলেছেন ধন্যবাদ ভাইয়া
জিসান শা ইকরাম
যারা এসব গুজব ছড়ায়, এরা এসব ভাবেনা ভাই।
সয়াইকে আতংকগ্রস্থ করাই এদের উদ্দেশ্য
এতে তারা সফলও হয়েছে।
অনেক ভালো একটি পোস্ট দিলেন ভাই, এমন পোস্ট আরো চাই।
শুভ কামনা।
মাছুম হাবিবী
জ্বী ভাই কিছু অসৎ মানুষ এসব গুজব ছড়িয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়।
শিরিন হক
সচেতনতা মুলক পোস্ট ভালো লাগলো।
আরো লিখুন পাশে আছি।
ছাইরাছ হেলাল
একে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা আর ওদিকে বন্যা,
কোথায় সহমর্মিতা নিয়ে সাধ্যানুযায়ী এদের পাশে দাঁড়াবো!! তা না করে কী সব আজগুবি
কাণ্ড-কারখানা করে আরও সমস্যা-আতংক বাড়িয়ে দিচ্ছি!
ইঞ্জা
মানুষ যেভাবে গুজবে কান দিচ্ছে যেন চিলে কান নিয়ে গেছে অবস্থা, এ থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারের উচিত সারা দেশের পাড়া মহল্লা, মসজিদ, মন্দির, গির্জাতে গুজবের বিরুদ্ধে প্রচারণা করে, তাহলেই হয়ত আমরা এ থেকে রক্ষা পাবো।
শামীম চৌধুরী
গুজবে কান দিবেন না। এটি এখন শ্লোগান। আসলে আমরা কি বোকা? নিজেরো কি বুঝিনা কার ক্ষতি কে করছি?