#ধর্ষণের দায় পুরোপুরি রাষ্ট্রব্যবস্থা ও পরিবারতন্ত্রের উপর বর্তায়”
———-
এভাবে আঁড়াল থেকে গর্জে উঠে কোনো লাভ হবেনা! যতই বিদ্রোহী আওয়াজ তুলুন মুক্তি আদৌ মিলবেনা।সিস্টেমটা এভাবে দাঁড়িয়ে গেছে অনেক আগে থেকেই।
কিচ্ছু করার নেই। ধর্ষণ এখন চর্চার রুপক অর্থেে জৌলুশ ছড়াচ্ছে। নিয়মিতই এর রেশ বিস্তৃত হচ্ছে চারপাশে।শিশুরাই মূল টার্গেটে পরিনত হচ্ছে।কারণ তাদেরকে রাজি করানো সহজ। আপনি যেই সময় একটি ধর্ষণ বিষয়ক স্ট্যাটাস লেখার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন,আপনার শরীরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে ভয়ে যন্ত্রনায়।ঘেমে অস্থির হয়ে বিক্ষোভ পুষছেন হৃদয় গহীনে,ঠিক সেই সময়ে আরও শত শত শিশু/নারীকে ধর্ষণ করা হচ্ছে একইভাবে।আপনার দৃষ্টিসীমার অগোচরে থেকে যাচ্ছে ঘটনাগুলো।যতোগুলো ঘটনা বাস্তবে ঘটছে_তার এক চতুর্থাংশও আপনার বা আমার চক্ষুপেয় হচ্ছেনা। সব খবরতো আর ভাইরাল হওয়ার মতো নয়।সব খবরে কি আর ইন্টারেস্ট থাকে! বাঙালী মস্তিষ্ক ইন্টারেস্ট প্রিয় ইস্যুকে ভালোবাসে।নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা ধর্ষিত হলে ধামা চাপা দেয়ার আয়োজন চলে।কারণ ওখানে ইন্টারেস্ট ইনভেস্ট দুটোই কম।
হাজারে দু’একটা ফোকাসে আসে অমন ঘটনাগুলো।মিডিয়ার সমস্ত ফোকাস উন্নত স্তরের মানুষদের নিয়ে।
এই যেমন মাদ্রাসা,স্কুল,কলেজ,ভার্সিটি,শপিং কমপ্লেক্স,রেস্তোরা,আবাসিক এলাকা। হাই প্রোফাইল কাভারেজ দিতে তাদের সমস্ত সময় অতিবাহিত হয়ে যায়।
অথচ তারা জানেনা-এমন একটি ভাইরাল ইস্যু,সহস্র বিকৃত চেতনাকে উস্কানি দিচ্ছে ঠিক সেই সময়ে। ধর্ষণ কি শুধুমাত্র একটি আলোচিত খবর,আর কিছুই নয়!
কি আশ্চর্য!তারাতো এই মনোভাবেই প্রচারণা চালচ্ছে-পরিত্রানের উপায় নিয়ে গঠনমূলক কাজ পরিচালনা করছেনা।
যে জীবনটি লজ্জার চাদরে চিরদিনের মতন হারিয়ে গেলো-শুধুই কি তারটা হারালো।সে খবর কেউ রাখেনা কেউ না। এতো এক স্বাভাবিক ঘটনা তাই নয় কি!আহা!কত্তো সহজে ভেবে নিলাম। গভীরে গেলাম না। হিউম্যান রিসোর্স কিচ্ছু করছেনা। ওইসব মহিলার আলোচনা দেখলে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে করে।
নিয়মিত ঘটছে ধর্ষণ ল। এভাবেই চলছে বাঙালী/বাংলাদেশী জীবন।এদেশের শতকরা ৫০ ভাগ পুরুষই নীরবে ধর্ষক মনন লালন করছে। কল্পনায় লক্ষ লক্ষ রমনীকে ধর্ষণ করে চলেছে। সুযোগ আসলে ছাড়া পাওয়ার উপায় নেই,জাস্ট মাইন্ড ইট। ওরা মুখোসের আঁড়ালে ভদ্র মানুষ নম্র মানুষ।
তাহলে আপনি নারী হয়ে কার কাছে আশ্রয় চাবেন? নারীর আশ্রয়তো নারীও নয়। একে অপরকে শত্রু মনে করে হেয় করতে চায়।
আপনার নিজের পরিবার সদস্যেের মধ্যেও ধর্ষক লালন করছেন। আপনি হয়তো জানেন-তবুও না জানার ভান করছেন।
এখন প্রশ্নটা হচ্ছে এর পেছনের মূল কারণটা কি! আর পরিত্রানের উপায়ই বা কি!
অনেকে বলবেন-নারীর স্বাধীন চলাচল,পর্দাশীলতার অভাব। কেউ বলবে ধর্মীয় শিক্ষায় গলদ আছে। কেউ কেউ সরাসরি পুরুষকে দোষারোপ করবে-তাদের যুক্তি-এটা পুরুষ নিয়ন্ত্রিত সমাজ।
এমন বিকৃত কারুকাজ বহুকাল ধরে চলে আসছে।অনেকে বলবে আইনের শাসন নেই,বিচার বিভাগ নিষ্ক্রিয়।
এগুলো কোনোটাই মূল কারণ নয়। একে অপরের ব্যক্তিগত মতামত মাত্র। যার চেতনা যেমন সে সেভাবেই চিন্তা করবে।একে অপরের দিকে কাঁদা ছুড়বে। আদৌ কি এরা মুক্তির স্বপক্ষে কিছু করার যোগ্যতা রাখে,কখখনো না।
আমাদের মূল কারণ সম্পর্কে অবগত হতে হবে।
ধর্ষন এবং যৌন মিলন দুটিই একই প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন জৈবিক ক্রিয়া। একটিকে পাশবিকতা এবং অন্যটিকে শিল্প চর্চা বলে আখ্যান দেয়া হয়। প্রক্রিয়া কিন্তু একটাই,পাশ্বপ্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ভিন্ন। উত্তরটাও ওখানে লুকায়িত। বাঙালী মনন ঠিক এই জায়গায় পিছিয়ে পড়েছে। তাদের শিল্প বিকশিত মন নেই। তাদের যৌন জীবনে শিল্পের ছোঁয়া নেই প্রেম ভালোবাসা নেই।
তারা আজও জানেনা সুস্থ যৌনাচার প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। তাই তারা আঁড়ালে কষ্ট পুষে রাখে।ভালোলাগা ইচ্ছে আকাঙ্খা মুক্ত ভাবে প্রকাশ করতে জানেনা। এভাবে তাদের মধ্যে বিকৃত চেতনার বীজ বপিত হতে থাকে।যখন সীমা অতিক্রম করে,ঠিক তখনই তারা ধর্ষক হয়ে ওঠে। তার মানে ধর্ষণের বিকাশ ঘটার জন্য কোনো ব্যক্তি মানুষ দায়ী নয়। আমাদের পুরো সামাজিক সিস্টেমটাই দায়ী। আমাদের শিক্ষার শেকড় ভন্ডামোর গলদে পরিপূর্ণ। তাই নৈতিক মূল্যবোধ মানবিক নিমগ্নতা হারিয়ে যাচ্ছে।
আমাদের মানবিক মূল্যবোধ অন্য সভ্যতা হতে বহুগুন পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই আজ পশুরাও আমাদের থেকে মানবিক।
শিক্ষক,ডাক্তার,বুদ্ধিজীবীদের মধ্যেও এমন বিকৃত চেতনা ছড়িয়ে যাচ্ছে।রাষ্ট্রকে এ নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে।শিশুদের পাঠ্যচর্চায় সুস্থ যৌন বিষয়ক আলোচনা থাকতে হবে।
সুস্থ যৌনাচার এবং বিকৃত যৌনাচারের পার্থক্য সম্পর্কে মৌলিক ধারণা দিতে হবে। আত্নকেন্দ্রিক পরিবার তন্ত্র থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। অন্যের সন্তানকেও নিজের সন্তানের চোখে দেখতে হবে।
মনে রাখবেন আপনার ঘরের শিশুটিও ধর্ষক হয়ে উঠতে পারে। যদি আপনি নৈতিক স্বচ্ছতার শিক্ষা দিতে না পারেন। সার্টিফিকেট গত শিক্ষা শুধু চাকরি দিবে।আর কিচ্ছুনা কিচ্ছুনা!
এর সাথে নারীদের সাহসী ভূমিকা একান্ত কাম্য। আর কতোকাল নিজেকে নারী পরিচয়ে খোলসবন্দি করে রাখবেন? নিজেকে মানুষ নামে ডাকুন। অনেক নারীই প্রগতিশীল চেতনায় বিকশিত হচ্ছে। আপনি নন কেনো? মনে রাখবেন আপনার চেতনা আপনার মেয়ে শিশুটির মধ্যেও জন্ম নিচ্ছে।
২১টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
চাই আইনের কঠোরতম অবিল্মবিত প্রয়োগ।
বিচার হীনতার ফাঁক গলিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত যা গড়িয়েছে।
হারিয়ে যাওয়া মানবিক মূল্যবোধ পুনরায় ফিরে পেতে অনেক জটিল পথ পেরুতে হবে।
সময়োপযোগী লেখার জন্য ধন্যবাদ।
মাসুদ চয়ন
ধন্যবাদ দাদা।সেটাই একান্ত কাম্য।
তৌহিদ
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ। আপনার লেখার সাথে সহমত পোষণ করছি। দেশের প্রচলিত আইন কানুন সংশোধন এবং নৈতিক মুল্যবোধ শিক্ষাই পারে এসব অপকর্ম থেকে মানুষকে বিরত রাখতে।
শুভকামনা জানবেন।
মাসুদ চয়ন
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা
সাবিনা ইয়াসমিন
সুস্থ যৌনাচার এবং বিকৃত যৌনাচারের পার্থক্য সম্পর্কে মৌলিক ধারণা দিতে হবে।আত্নকেন্দ্রিক পরিবার তন্ত্র থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।অন্যের সন্তানকেও নিজের সন্তানের চোখে দেখতে হবে।
মনে রাখবেন আপনার ঘরের শিশুটিও ধর্ষক হয়ে উঠতে পারে।যদি আপনি নৈতিক স্বচ্ছতার শিক্ষা দিতে না পারেন।সার্টিফিকেট গত শিক্ষা শুধু চাকরি দিবে।আর কিচ্ছুনা কিচ্ছুনা! “””””
নৈতিক এবং স্বচ্ছ শিক্ষায় পরিবার গড়ে তোলা এখন সময়েয় সবচেয়ে বড় দাবী।
আপনার সমসাময়িক ভাবনা ও প্রকাশ খুবই ভালো লাগলো। বেশি বেশি লিখুন। শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
মাসুদ চয়ন
আন্তরিক ধন্যবাদ গঠনমূলক আলোচনা প্রদান করার জন্য।ভাল
মাসুদ চয়ন
ভালো থাকবেন সবসময়
জিসান শা ইকরাম
ধর্ষন ঘটনা যতটা প্রচার পাচ্ছে, এর উত্তরণে গঠন মুলক প্রচার তেমন নেই বললেই চলে,
শুনতে খারাপ লাগলেও এটিই বাস্তবতা যে, ধর্ষন ঘটনা নিয়ে মিডিয়া ব্যবসা করছে, এদের পত্রিকার কাটতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরিবার থেকে এ সম্পর্কে আমরা ঠিক মত বুঝাতে ব্যার্থ হচ্ছি আমাদের সন্তানদের।
কেন হঠাৎ এই ধর্ষন ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে? সমাজবিজ্ঞানী এবং মনোবিজ্ঞানীরা এ সম্পর্কে মূল্যবান মতামত নিয়ে এগিয়ে আসলে ভালো হতো।
সমস্ত কিছু নিয়ে এত বেশী হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছি যে অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছি।
অনেক ভালো একটি লেখা দিলেন ভাই,
শুভ কামনা।
জিসান শা ইকরাম
পরিবারতন্ত্রের উপর বত্যায়”> এটি বর্তায় হবে নাকি ?
মাসুদ চয়ন
জি দাদা,ধন্যবাদ
নিতাই বাবু
মায়ের জাতি নারী সাহসী অতি সাহসী হলেও, তাঁরা আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে বড়ই অসহায়। তাই নরপশু ধর্ষণকারী জানোয়ারদের আচমকা ছোবল প্রতিহত করারমত তাদের একার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়! ওইসব নরপশুদের দমানোর সম্ভব হবে কঠিন আইন প্রয়োগের মাধ্যমে। আইন হোক ক্রসফায়ার।
মাসুদ চয়ন
ধন্যবাদ দাদা,অভিমত প্রদান করার জন্য
রেহানা বীথি
ধর্ষণ মহামারী হয়ে উঠেছে এখন। এক একটা নৃশংস ধর্ষণের ঘটনা এতটাই অমানবিক যে ভাবতেই অবাক লাগে, কোনো মানুষ এতটা বিকৃত চিন্তা কেমন করে করতে পারে! পত্রিকার পাতায় পাতায় প্রতিদিন এসব খবর। এখনই প্রয়োজন সময়োপযোগী আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা। তার সাথে সাথে পারিবারিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশও প্রয়োজন।
প্রয়োজন সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা।
সুন্দর পোস্টটির জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
মাসুদ চয়ন
অনেক ধন্যবাদ
মাসুদ চয়ন
ঠিক বলেছেন আপনি
প্রদীপ চক্রবর্তী
সময়োপযোগী লেখা
ধন্যবাদ আপনাকে।
.
মুড়িয়ে দিতে হবে এমন কালো হাত মুড়িয়ে দিতে হবে নরপশুদের এমন ব্যবহার।
আইনপ্রণয়নের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা অতীব প্রয়োজন।
মাসুদ চয়ন
ভালো বলেছেন।ধন্যবাদ ভাই
আরজু মুক্তা
একটাকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতো, সব ঠিক হতো।
কথায় আছেনা?”Justice delayed, justice denied ”
জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।
আর একটা শাহবাগ হোক!
মাসুদ চয়ন
হউক প্রতিবাদ বিক্ষোভ।তবুও মুক্তি চাই
মনির হোসেন মমি
সমপযোগী খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা।লেখাটিতে খুব কৌশলেই লেখক আমাদের অথাৎ ঘর হতে সংশোধিত আত্মা বের করার খুব সুন্দর যুক্তি দাড় করিয়েছেন।আসলে তাই করা উচিত মা বাবার ভাল ব্যাবহার ভাল কাজগুলোই সন্তানের জীবন চলার ধাপগুলো।তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রেরও সঠিক ভুমিকা থাকা জরুরী।সামাজিক জীবনে এ সব অপরাধ ঘটবেই তাই বলে রাষ্ট্র চুপ করে বসে থাকতে পারে না।যে ভাবে ধর্ষণের উপর মামলার স্তুব আদালতে জমেছে তার বিচারের কাজগুলো দ্রুত করলে আজ এ ধর্ষণ মহামাড়ীতে রূপ নিত না। খুব ভাল লাগল।আরো লিখুন।
মাসুদ চয়ন
ঠিক বলেছেন আপনি।সম্মিলিত প্রয়াসেই মুক্তি অন্তর্ভুক্তক্ত।অনেক ধন্যবাদ দাদা.