
আমি একটি চিঠি লিখে পোস্ট করেছিলাম একবার, তবে প্রাপকের ঠিকানা দেইনি। ডাকপিয়ন ফেরত চিঠি নিয়ে এসে বলে- প্রাপক কই?
উত্তরে বলেছিলাম – কেন ঐ আকাশ।
ডাকপিয়ন মুচকি হেসে বলেছিলো – ও আপনার প্রেমিকার নাম বুঝি আকাশ?
এরপর অনেকদিন কেটে গেছে, ডাকপিয়ন আর আসেনি। পরে জেনেছিলাম সে নাকি চিঠিখানি হাতে নিয়ে আকাশের ঠিকানা খুঁজে বেড়ায় রাত দিন।
আজ আমার হাতে হাসপাতালের মর্গ থেকে একখানা চিঠি এসেছে, প্রাপকের জায়গায় আমার নাম লেখা। মানুষ মরে গেলে মর্গে রাখে জানতাম কিন্তু মর্গ থেকে চিঠি আসাটা অদ্ভুত !
চিঠিতে আঁকাবাঁকা অক্ষরে লেখা- আমি আপনার সেই চিঠিখানা আকাশে পৌঁছে দিয়েছিলাম, তবে প্রাপক ছিলো ভুল ঠিকানার। তার নাম আকাশ নয় মোনালিসা, আকাশের অপ্সরী সে ; আকাশেই তার বসবাস। আমায় ক্ষমা করবেন।
আমি কৃতজ্ঞচিত্তে মনে মনে উত্তর দিলাম- বন্ধুবর, ভাগ্যিস আপনি ভুল ঠিকানায় চিঠিখানা পোষ্ট করেছিলেন। মোনালিসা আসল প্রাপক খুঁজতে এসে আমাকেই চিঠির প্রেরক ভেবে খামে ভরিয়েছে।
ছলছল চোখ থেকে টপ করে দু’ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো আমার হাতে ধরা চিঠিখানিতে। আহা! ডাকপিয়নটা বড্ড ভালো ছিলো। না হলে কি আর আমি মোনালিসাকে পেতাম?
২০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
মোনালিসাকে পাওয়ার চিঠি পড়ে আমাদের চোখ ছলছল না হলেও মন ভারী-ভারী ভাব চলেই এসেছে।
চিঠি ছোট্ট হলেও মন্দ বলছি না।
তৌহিদ
মন ভার করবেননা ভাই, সুখবর হলো মোনালিসা সাথেই আছে আমার।
চিঠি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
ডাকপিওন ভালো না হলে আপনি তো মোনালিসাকে পেতেনই না,
ভাল লেগেছে ছোট চিঠি।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
ডাকপিয়ন বড্ড ভালো মানুষ ছিলেন এটা সত্যি ভাই। তার জন্যে একটা উপহার কিনে রেখেছিলাম। অথচ দেয়া হয়নি আর!!
এই চিন্তাটা আমাকে প্রায়ই কষ্ট দেয়।
সাবিনা ইয়াসমিন
ডাকপিয়ন ভালো ছিলো, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। প্রাপক খুজতে গিয়ে যে নিজেই আকাশবাসি হয়ে যায় সেতো ভালোই হবে।
মোনেলিসাকে নিয়ে সুখে দিনযাপন করে আপনিও অনেক ভালো আছেন তাও বুঝতে পেরেছি। ভালো থাকুন, আর নিত্ত–নতুন গল্প দিয়ে আমাদেরকেও ভালো রাখুন। আপনার আর মোনালিসার জন্যে অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো 🌹🌹🌹🌹
তৌহিদ
ডাকপিয়ন আসলেই ভালো মানুষ ছিলো। চিঠিটা ভুল করে আসল ঠিকানায় পৌঁছে দিয়েছিল সে।
মোনালিসাকে আপনার শুভেচ্ছা দিয়ে দিলাম। ভালো থাকবেন আপু।
মায়াবতী
হুম…. তা এই মোনালিসা ম্যাডামের কথা কি ভাবি সাবে জানে নি কোনো??? খালি খালি অপ্সরীর সুখে ভাইসেন না ভাই জান, আয়নার সামনে দাঁড়ায় ইট্ট আশে পাশে তাকায়েন…. আইচ্ছা আফনেগো মোনালিসা আছে বনলতা আছে তাইলে আমাগো লাইজ্ঞা কি শুধু ই দেবদাস!!!!
এ টা কি কবিতা ছিলো নাকি কবিতার কাজিন টাইপ কিছু ? আচ্ছা, যাই হোক, ভালো লাগে আপনি যা কিছু ই লেখেন ***
তৌহিদ
নিজের কথা নিজেতো জানবেই!! আপনার ভাবী সাহেবার কথা বলছিলাম আর কি!!☺☺
আয়নায় সামনে দাঁড়ালে সেখানে দেখতে পাই মোনালিসা দুটি টিপ কাঁচে সেটে দিয়েছে। বুঝেন অবস্থা!!
আপনাদের জন্যে দেবদাস কেন !! এই ক্যারেকটার আমার মোটেই পছন্দ নয়, চাইলে কন রাজপুত্তুর দেখি। আলেকজান্ডার কিংবা অন্যকেউ?
না এটা কবিতা নয় আফা, সেই পোস্টম্যান আর চিঠিটা নিয়ে স্মৃতিচারণ।
আপনার লেখাও আমার ভালো লাগে আপু। ভালো থাকবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
চিঠিখানি নাথাক প্রাপক
খুজে পেল নিশ্চিত গন্তব্য
পেয়ে গেল মনমাধুরী।
শেষতক ডাকপিয়ন ভরসা…………………।।
তৌহিদ
ডাকপিয়নই শেষ ভরসা, না থাকলে যে কি হত!
মনির হোসেন মমি
ভাল থাকেন মোনালিসাকে নিয়ে এইতো কাম্য।লেখাটা অল্পতে চমৎকার।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, আপনিও ভালো থাকবেন।
নীরা সাদীয়া
“ভালো আছি ভালো থেকো/আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো” এই গানটা শোনার পর আমি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ভক্ত হই। আজ আপনার লেখা পড়ে তা মনে পড়লো। আপনার আকাশ যে শেষ অব্দি চিঠিটা পেয়েছিলো, এটা জেনে ভালো লাগলো।
তৌহিদ
গানটা আমারও খুব পছন্দের। ভালো থাকবেন আপু।
ইঞ্জা
মোনালিসাকে পেয়েছেন এই তো অনেক বড় পাওয়া। 😆
তৌহিদ
আমার জীবনের পরম প্রাপ্তি ভাই। আমি এদিক দিয়ে অনেক সুখী।
দোয়া করবেন।
ইঞ্জা
সবসময় দোয়া
তৌহিদ
ধন্যবাদ দাদাভাই।
রিতু জাহান
ও তবে এই হলো প্রেমের শুরু। এভাবেই ভাবি আপনার সাথে!
ডাকপিয়নকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
আহ! জীবনে একখান চিঠি পেলাম না। আফসুস। খালি মাইনসের চিঠি পড়ি ট্রাঙ্ক ভরা ভরা চিঠি।
হায়রে জীবন!!
তৌহিদ
আহারে! চিঠি পড়ার মজা থেকে আপনি বঞ্চিত হয়েছেন তাহলে!!
ভাইয়াকে বলেন অফিসে গিয়ে প্রত্যেকদিন একটা চিঠি লিখবেন আর আপনাকে পোষ্ট করবেন।
ভালো থাকবেন আপু।