বাংলার ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু।

রিতু জাহান ২৫ জানুয়ারি ২০১৭, বুধবার, ১১:২০:২৪পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি, এদেশ ১৭ মন্তব্য

ভারত বর্ষকে লুটে পুটে খেতে এই সবুজ ঐশর্য্যে ভরা প্রকৃতির লীলাভূমিতে যুগ যুগ ধরে  এসেছে অনেক লুটেরা। এদের কেউ আমাদের চোখে বীর কেউ বা খলনায়ক। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে এই শাসন শোষনের পাশাপাশি উন্নত যে হয়নি তা নয়। মানুষ সভ্যতার দিকে পা বাড়িয়েছে অনেকটা তাদের হাত ধরে। আমরা সবাই জানি ভারত বর্ষ অর্থাৎ বাংলাকে যারাই শাষন করেছে তারা শুধু শোষনই করেছে। নিজেরা অর্থাৎ তৎকালীন সময়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিভিন্ন রাজা বাদশারা বিদেশীদের এদেশে আমন্ত্রন জানিয়েছে। কখনো পর্তুগীজ, কখনো ডাচ, কখনো ইংরেজী,কখনো ফরাসিদের। বাংলার সম্পদের প্রতি লোভ তাদের বার বার এদেশে এনেছে। তবে শেষ পর্যন্ত ইংরেজরাই তারা তাদের কৌশলে টিকে গেছে প্রায় দুইশত বছর পর্যন্ত। শাষকদের বড় বড় সব স্থাপনা, সড়ক, সেতু, কার্লভার্ট ইত্যাদি এই বাংলার বুকে হয়নি। বাংলার মানুষের দুর্দশা তাই থেকে গেছে ১৯৭১ এ এদেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত। এ বাংলা কখনোই অন্য কোনো বাংলীর হাত ধরে স্বাধীনতার স্বাধ পায়নি।
কিন্তু বাঙ্গালীর দুঃখ দুর্দশা বুঝে যে বাঙ্গালীর হাত ধরে এদেশের নিপীড়িত মানুষ প্রথম স্বাধীনতার স্বাধ পেলো তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। আর সেই মানুষটিকে ও তাঁর পরিবারের ছোট বড় সদস্যদের মেরেই বাঙ্গালী এক ঘৃণিত ইতিহাস সৃষ্টি করল।
তৎকালীন ভারতবর্ষের এই মানুষগুলো যুগ যুগ ধরে গোলামী করে গেছে বিদেশী পর্যটক শাষকদের কাছে। আমরা ইতিহাস পড়তে গিয়ে দেখেছি নীল চাষিদের করুন কাহিনী। পড়েছি মৎস্যন্যায়, পড়েছি ১৭৭০ সালে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ যা ‘ছিয়াত্তরের মন্বান্তর’ নামে পরিচিত। পড়েছি জমিদারের শাসন। যে শাসনে জমিদারই হয় সব জমির মালিক আর সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারন মানুষ খাজনার চাপে চাপা পড়ে আজীবন পিষে মরে।
আমরা সেই ছোট বেলার ছড়া’ধান ভানলে কুঁড়ো দেব’, খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গি এলো দেশে, ইত্যাদি ছড়া বিশ্লেষন করলে দেখতে পাই নির্মম সেই সব দিনগুলোর কথা।
উত্থান, বিকাশ ও পতন পৃথিবীর এক চরম সত্য। এ সত্যে যেমন একদিন রোম সম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে যায়, ঠিক তেমনি বাংলায় আসা শাষক গোষ্ঠিরও উত্থান পতন হয়।
বিশিষ্ট ইতিহাস ও সমাজতত্ববিদ ইবনে খালুদুনের মতে,কোনো কোনো সাম্রাজ্যের জীবনকাল ১২০ বছর ধরেছেন। যদি তাতে যুগ সন্ধিক্ষণের অনুপাতে তারতম্য ঘটে থাকে তথাপি তা তিন পুরুষ অধীক তেমন স্থায়ী হয় না। এক পুরুষ ইবনে খালুদুন ৪০ বছর ধরেছেন। তিন পুরুষের জীবনকাল সেই হিসেবে ১২০ বছর। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলায় কখনো শশাংক, কখনো পাল, কখনো, সেন বংশ, কখনো মোঘল এদেশ শাষন করে গেছে। আচ্ছা, তারা কি বাঙ্গালী ছিলেন? আমার ইতিহাস পড়ার জ্ঞানমতে তা মনে হয় না। কারন, বাঙ্গালীর জাতীয় ইতিহাস বিবেচনায় তখন প্রকৃত বাংলা ভাষা এবং বাঙ্গালী জাতীয় বিকাশ ঘটেনি। এর কারন, আমরা দেখতে পাই রাজমহলের বিভিন্ন দলিল দস্তাবেজে ফারসি ও আরবি শব্দের ব্যবহার। এবং মুদ্রায় প্রচলন ছিল আরবি ও ফারসি শব্দ। সেই অর্থে তারা কেউই আজকের অর্থে বাঙ্গালী নয়। তারা ছিলেন শাষক। এভাবে আর্য থেকে শশাঙ্ক, পাল, সেন ও প্রাচীনযুগের অন্যান্য শাষক। এরপর মধ্যযুগে এসে একের পর এক ইসলা ধর্মালম্বীরা, কখনো শান্তি প্রচারের উদ্দেশ্যে, কখনো বানিজ্যের উদ্দেশ্যে,কখনো দেশ জয়ের উদ্দেশ্যে এদেশে আসতে থাকে। এবং এক পর্যায়ে এদেশের ক্ষমতা দখল করে। তারা এদেশীয় সনাতন ধর্মীদের কাছে “ম্লেস” বা অচ্ছুত। অচ্ছুত বটেই, যারা পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে, তাদের কাছে আগত বিজয়ী মুসলীম বীররা এদেশের বাংগালী অধিবাসী নন। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা জানতে পারি, মধ্যযুগে কখনো এ্যারাবিয়ান, কখনো পারসিয়ান, কখনো আফগানিয়ান এদেশের ক্ষমতা দখল করে তাদের তাদের সুবিধার অনুসারে এদেশ শাষন করেছে। যেটা আমি প্রথমেই বলেছি। তবে হ্যাঁ, প্রাচীন ও মধ্যযুগে পর্যটক শাসকদের শাষনামলে বাংলার উন্নতি যে হয়নি তা নয়। হয়েছে, তবে তা তাদের প্রয়োজনের কারনেই।  তাদের কার্যকলাপের ফলে তাদের অজান্তেই এদেশ ধীরে ধীরে সভ্যতার দিকে আগাতে থাকে।
যেমন, ইংরেজরা তাদের শাষনামলে তাদের কাজের সুবিধার্থে এদেশে ইংরেজী ভাষা চালু করেছে। এবং সেই ইংরেজী ভাষার সূত্রেই এদেশের লোকজন আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের সংগে পরিচিত হতে পেরেছে। ঠিক তেমনি ভিন্ন ভিন্ন শতাব্দীতে বিভিন্ন জাতী ধর্ম ও বিভিন্ন ভাষা ভাষী শাষকদল এদেশে আসায় অন্যান্য ভাষার বিভিন্ন শব্দ বাংলা ভাষায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলা ভাষা ও এর সংস্কৃতিকে সম্মৃদ্ধ করেছে। এটা প্রচলিত হয় যে, যে ভাষায় ও সংস্কৃতিতে বিদেশী ভাষার শব্দ বেশী অন্তর্ভূক্ত হয় সেই ভাষা ও সংস্কৃতি ততো বেশী সম্মৃদ্ধি হয়। যেমন উদাহরন স্বরুপ আমরা ইংরেজী ভাষাকে বলতে পারি। এভাবে পর্যটক শাষকরা তাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাংলা ভাষা ও বাংলাকে উন্নতির দিকে নিয়ে গেছে। কিন্তু ইংরেজরা বাংগালী জাতীকে দেখতো খুবই ছোট জাত হিসেবে। যেমন ছোট উদাহরন দিয়ে যদি বলিঃ তারা সেই সময়ে বাংলা থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন ফসল, এবং  নীল নিতে রেলওয়ে নির্মান করে। তারা থাকার জন্য তাদের আবাসগুলো নির্মান করে রাজকীয় ভাবে। অথচ রেলের নিন্ম শ্রেনীর বাংগালী শ্রমিকদের জন্য আবাস স্থলগুলো নির্মান করে ছোট ছোট কুঠরি আর ঘর থেকে বের হওয়ার সম্মুখে তাদের জন্য তৈরি করে কাঁচা মাটির ঢাকনা বিহীন চাড়ির টয়লেট। এতে ইংরেজরা ঠিক বোঝাতে চাইতো যে ঘর থেকে যেতে আসতে যেন বাংগালী অনুভব করে তারা নিচু শ্রেনীর!
তো যাইহোক, এইসব উন্নতি পর্যটক শাসকদের আন্তরিক ইচ্ছার কারনে হয়েছে তা বলা যাবে না।
ভারতবর্ষের ইতিহাসে কয়েকজন বৈদেশিক ভাগ্যন্বেষী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরকমই দু’একজন ভাগ্যন্বেষীর মধ্যে’নবাব আলীবর্দী খাঁ’তিনি মারাঠাদের নির্মম অত্যাচার থেকে বাংলাকে বাঁচাতে সোচ্ছার ছিলেন। এবং তাঁর দৌহিত্র নবাব সিরাজুদ্দৌলা এবং বারো ভূঁয়া প্রধান ইশা খাঁ। কারন ইশা খাঁ এর শাষনামলে বাংলার মানুষ কিছুটা স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করতে পেরেছে। কারন তিনি মোঘলদের খাজনা দিতে অপারগতা জানায়। তাই আমরা আকবরের শাষনকালে বাংলার বারো ভূঁইয়া প্রধান ইশা খাঁ এর স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারনে তাকে এদেশের বীর হিসেবে মনে করি। বাংলার শেষ নবাব সিরাজদ্দৌলার প্রতি আন্তরিক টান ও আমাদের কম নয়। কিন্তু তবুও এ শাষকগন বাংলার উন্নায়ন এবং বাংলার মানুষের কথা না ভেবে শুধুমাত্র  তাদের সিংহাসনটি টিকিয়ে রাখতে বিদেশীদের সাথে বিভিন্ন আপোষ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। আলীবর্দী খানও মারাঠাদের সম্পূর্ণ নির্মুল করতে না পেরে তাদের সাথে একটা চুক্তিতে আসে। নবাব সিরাজুদ্দৌলাও ইংরেজদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। সিরাজুদ্দৌলাকে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব মনে করলেও, আমরা তাঁর জীবনি পড়ে জানতে পারি যে, তিনি তার অজ্ঞতা, এবং উদাসিনতার কারনে ইংরেজরা এদেশে একেবারে ঘাঁটি মেরে বসে। হয়ত তারা জাতীতে বাংগালী ছিলেন না বলেই, বাংলার মানুষের উন্নায়ন ও দুঃখ দুর্দশার কথা উপলব্দী করতে পারেননি। তবে হ্যাঁ আমরা অনেক বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের কথা পড়েছি। আমরা ক্ষুধিরাম পড়েছি, প্রিতীলতা পড়েছি, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা পড়েছি, পড়েছি ফরায়াজী আন্দোলন। তবে অনেক সময় সেই  সব আন্দোলনে দেখা দেয় নিজেদের মধ্যে কোন্দল, জাত পাত এর একটা হিসাব। তাই সেই সব আন্দোলন খুব একটা স্থায়ী রূপ নেয়নি। এছাড়াও সিংহাসন আরোহীরা বিভিন্ন সময়ে তাদের ক্ষমতার মোহো এবং পরিবারের অন্তর্বতী সমস্যাগুলো নিরসনেও অনেকটা সময় ব্যায় করে। তাই তো,’ওদের দাম দিতে হয়েছিল…
বিশ্বজুড়ে তখন আগুন জলছে
কিন্তু ওদের নিজেদের ঘৃণাই ওদের আত্নাকে হনন করল’।(কিপলিং, দি আইটল’জ, ১৯১৪)যাইহোক, আমরা ইতিহাসের এই নায়ক, আলীবর্দী, গোপাল, ইশা খাঁ, সিরাজুদ্দৌলাকে প্রকৃতই কি বাংগালী বলতে পারি? আমার এ প্রশ্নের জবাব ইতিহাসবেত্তাগনই ভালো দিতে পারবেন। কারন, ইতিহাস পড়ে এখানে আমি শুধুমাত্র আমার সীমিত জ্ঞানের অনুভূতির কথা বলছি।
একটু অন্য প্রসংগে আসি, গণতন্ত্রের সংজ্ঞা হিসেবে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের ১৬ তম প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, By the people of the people for the people.
আর এই গনতন্ত্র আনতে বাংগালীকে অতিক্রম করতে হয়েছে একটা দীর্ঘ পথ। সেই পথের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন অনেক বাংগালী। কিন্তু এতে কেউ সফল হয়েছেন কেউ হয়েছেন ব্যার্থ। ভারত বর্ষের মানুষ দীর্ঘদিন বৃটিষ শাষন থেকে মুক্ত হলো ঠিকই। আমার কেবল একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খায়, ইংরেজরা বাংলা ছেড়ে চলে যাবার পর অর্থাৎ দেশ ভাগের পর আমরা কি পেলাম? এই বাংলার কোটি কোটি মানুষের নিরবিচ্ছিন্ন কষ্ট আর যন্ত্রনার আর এক মাত্রা পেলো কেবল মাত্র। আমরা বর্বর আর এক শাষক গোষ্ঠী পাকিস্তানীদের কাছে জিম্মি হয়ে রইলাম। আমরা স্থায়ী এক অভিষাপে পড়ে রইলাম। এই যন্ত্রনা কেবল একান্ত ভাবেই রয়ে গেলো আমাদের নিজস্ব, আমাদের কাঁধে বহন করার ক্রুশ। দেশভাগের পর এই অর্জনটির সাফল্য তাই থেকে যায় এক প্রকার বন্ধ্যা। পাকিস্তান সরকার প্রমাণ করে, মুসলিম শাষন ব্যাবস্থা স্বতন্ত্র জাতীয়বাদ তত্ত্বটির দেউলিয়াপনা। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা সেখানে সাম্প্রদায়িক ঐক্যের তত্ত্বকে নস্বাৎ করে দেয়। তারপর প্রাদেশিক নানা বিভেদ এবং জল, জমি, সীমানা, সরকারী চাকুরী, ব্যবসার সুফল নিয়ে  সৃষ্টি হয় পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্য আচরন। দীর্ঘদিনের শোষন, দেশভাগের রক্তাক্ত বেদনার স্মৃতি আরো তীব্র হয় পশ্চিম পাকিস্তানিদের বৈষম্যমূলক আচরনে। জিন্নাহ্ যে ‘দক্ষিণ এশীয় মনরো ডকট্রিন’ এর কথা বলেছিলো তেমন কিছুর অস্তিত্ব তৈরি হইছিল না আদৌ। তার যায়গায় লতায় পাতায় বেড়ে ওঠে অবিশ্বাস, বিদ্বেষ, বিরোধ, বৈষম্য। চরম বিপর্যস্ত এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিজেদের ভাগ্যকে গড়তে বাংলা, বাংলা ভাষা মাতৃভাষাকে ও বাংগালী জাতিকে রক্ষা করতে মনের তাগিদে বাংলার মানুষকে ভালোবেসে এ দেশকে স্বাধীন করতে এগিয়ে আসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। সুদীর্ঘ দিনের নিপীড়নের পর  স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দরকার ছিল এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের। কিন্তু যুদ্ধের কথা বলা সহজ কিন্তু কোটি বাংগালীকে যুদ্ধের জন্য ডাক দেওয়া সহজ কথা নয়। এ জন্য দরকার ছিল প্রতিটা বাংগালীর হৃদয়ে মাতৃভূমির জন্য প্রিয় অনুভূতিতে অনুরন্জিত সমতা, ন্যায় বিচার, সামাজিক, ঐক্য আর বাংলার সংস্কৃতিক দীপ্তির উপর ভিত্তি করে এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার মনোভাব তৈরি করানো। বঙ্গবন্ধু তার বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর, ভালোবাসা দিয়ে তা পেরেছিলেন। তিনি নিরীহ বাংগালীকে তাদের আত্নবিশ্বাসে উজ্জিবিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি বাংলা ও বাংলার মানুষকে বিশ্বের দরবারে মর্যাদা সম্পন্ন আসনে অধিষ্ঠিত করতে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। অগনিত বার তিনি কারা বরন করেছেন। তবু তিনি দমে থাকেননি। তিনি তার ভালোবাসা ও তাঁর বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর দিয়ে বাংগালীকে যুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত করতে পেরেছেন। লাখো মানুষ ঝাপিয়ে পড়েছে তাঁরই কথায় মহান মুক্তিযুদ্ধে। তাঁর হাত ধরে মাত্র নয় মাসের এক  রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে আমরা পেয়েছি এক স্বাধীন ভূখন্ড।
বঙ্গবন্ধুর আত্নজীবনি পড়ে আমরা দেশভাগের পরবর্তী ইতিহাস সম্পর্কে আরো জানতে পারি।
বঙ্গবন্ধু বহুবার তাঁর ভাষনে বলেছে,”আমি যদি স্বাধীনতার ঘোষনা নাও দিতে পারি, তবু তোমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকবে, সময় বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়বে যুদ্ধে”। তাই এই যে স্বাধীনতার ঘোষনা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিতর্কে আমি যেতে চাই না। আমরা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষন শুনি নি এমন বাংগালী নেই। বঙ্গবন্ধুর সেই সাতই মার্চের ভাষন ছিল বাংগালী জাতিকে সকল নির্মম শাষনও শোষন থেকে মুক্তি পেতে যুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ করার এক শক্তিশালী পদক্ষেপ।
শেষকথা হলো রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকতে পারে, এতে আমার কোনো দ্বীমত নেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু দলমত নির্বিশেষে সবার আদর্শ হওয়া উচিৎ। কিন্তু যুদ্ধাহত একটা দেশকে গোছানোর আগেই ক্ষমতার লোভে এই মহান পুরুষটিকে নির্মমভাবে মেরে ফেলল, বিপদগামী বাংগালী। তারপর সহজ সরল বাঙ্গালীকে তারা বোঝাতে অনেকটা সক্ষম হলো যে বঙ্গবন্ধু এক ব্যার্থ শাসক! কিন্তু কেউ বুঝল না, একটা যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশকে গড়ে তুলতে কিছুটা সময় অবশ্যই প্রয়োজন। যেখানে পাকিস্তানীরা বাংলার অধীকাংশ বুদ্ধিজীবিদের নির্মমভাবে হত্যা করে, বাংলার অনেক সম্পদ লুট করে, আগুনে পুড়িয়ে দেয় ঘর বাড়ি, ব্রীজ, কালভার্ট ধ্বংস করে। বঙ্গবন্ধু এই বাংগালীকে বড় বেশী ভালবাসতেন, বড় বেশী বিশ্বাস করতেন তাই বুঝতই পারেননি তাদের হাতেই তিনি ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিহত হবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কিছুটা হয়ত আঁচ করতেন, তাই তো তিনি বলেছিলেন,” জনগনের জন্য আমি যা করছি তা তারা উপলব্দী করতে পারল না।” বঙ্গবন্ধু কখনো কোনো ব্যপারে আপোষ করেননি।
আজ বঙ্গবন্ধুর বড় প্রয়োজন ছিল আবারো এই দেশে।
বিঃদ্রঃ এই পোষ্ট পড়ে কেউ দয়া করে অযথা বিতর্ক করবেন না। কোনো দ্বীমত থাকলে প্রশ্ন করবেন। ভুল হলে স্বীকার করে নিব। তথ্য জানাার থাকলে তা বিশ্লেষন করে দিব।
ধন্যবাদ।
,,,,,,,,,,মৌনতা রিতু,,,,,,,,,
২৪/১/১৭.এ

৬৩৯জন ৬৩৯জন
0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ