আদিম যুগে মানুষ ছিল পশুর মতোই। বন্য পশু শিকার করে কাঁচা মাছ মাংস, বনের ফলমূল খেয়ে জীবন ধারণ করত। সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, আদিম যুগে মেয়েরাই প্রথম কৃষিকাজ উদ্ভাবন করে। এবং আগুন আবিষ্কারও তাদের হাতেই।
দলবদ্ধভাবে বসবাস করার সময় নারী পুরুষ উভয়ই খাদ্য সংগ্রহ করত। তবে তখন দলের প্রধান ছিল নারী। খাদ্য সংগ্রহের এক পর্যায়ে নারীরা লক্ষ্য করল, তাদের সংগ্রহ করা বার্লি দানা ও গম পড়ে তাদের থাকার জায়গার আশেপাশে গজিয়ে উঠছে চারাগাছ। এটি দেখে মেয়েদের মনে বীজ ছিটিয়ে শষ্য পাওয়ার ধারনা জন্ম নিল। মেয়েরাই বুদ্ধি করে পাথর ঘসে হাতিয়ার তৈরী করল, যা দিয়ে মাটি গর্ত করে চারাগাছ লাগানো যায়। পাথর ঘসার সময় তারা লক্ষ্য করল, পাথরের ঘর্ষণে আগুনের ফুলকি বের হয়ে তাদের হাতে ফোসকা পড়ার মতো অবস্থা হয়। এতে তারা এই আগুন জ্বালিয়ে পশুর মাংস ঝলসিয়ে খাওয়া শিখল এবং গুহার মুখে আগুন জ্বালিয়ে তা থেকে বন্য হিংস্র পশুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার বুদ্ধি বের করল।
এই নারীদের কৃষি উৎপাদনের উপর ভিত্তি করে তারা দলবদ্ধভাবে এক জায়গায় থাকার কথা চিন্তা করল। কারণ তারা খাদ্যের সন্ধানে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরে বেড়াত। নারীই ছিল তখন সর্ব ক্ষমতার অধিকারী। তাই সভ্যতার শুরুর আগে নারীর ক্ষমতাই ছিল প্রধান। কিন্তু তখন পুরুষকে বৈষম্যের চোখে দেখা হত কিনা এটা আমার জানা নেই। তবে দেখা হলে হয়ত পুরুষ এখনো সেই অবস্থাতেই থাকত। যাই হোক, সেই অসভ্য যুগে মানুষ যখন যাযাবরের মতো, পশুর মতো জীবন যাপন করত, তখন কোনো নারী পুরুষ ভেদাভেদ ছিল না। কিন্তু মানুষ যখন গুহা ছেড়ে সভ্য জগতে বাস করতে শুরু করল, তখন থেকেই শুরু হল নারী পুরুষ বৈষম্য।
নারীরা যখন কৃষি উদ্ভাবন, ও আগুন জ্বালিয়ে একটা সু-শৃঙ্খল দলবদ্ধ একটা সমাজে বাস করার চিন্তা করল তখনই পুরুষ তার পেশী শক্তি বলে নারীকে দাবিয়ে রাখতে শুরু করল। তার একটা প্রধান কারণ দেখা যায় নারীর গর্ভে সন্তান লালন ও পালন। পুরুষ অস্বীকার করতে শুরু করল নারীর কৃতিত্ব। আগুনের ব্যবহার ও কৃষির উদ্ভাবনে বিপ্লব সৃষ্টি কারী নারীকে সকল কঠোর পরিশ্রম থেকে তারা অব্যহতি দিল, পুরুষ তাদের বৈধ উত্তরাধিকার নির্ধারনের স্বার্থে। তারা নারীকে একগা্মিতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করল ঠিকই কিন্তু পুরুষ থেকেই গেল বহুগামিতায়। নারী তার মাতৃসুলভ আচরণে সন্তান লালন পালনে অনেকটা আবদ্ধ হল। আসলে পুরুষের ভাষায়, এবং নারীর এসব আচরণে নারী হল অবরোধবাসিনী।
একসময় নারী এই ধারাবাহিকতায় একেবারেই পিষে মরতে থাকে। কিন্তু দিন বদলের সাথে সমাজের মানুষ সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবার কারণে অনেকটা দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টালেও, পাল্টায়নি সেই আবদ্ধের সীমারেখা। একজন নারী, তার অনেক রূপ। গর্ভই তার সব থেকে বড় পরিচয়। সেই অর্থে সে পুরুষের গর্ভধারিনী। অথচ কতোটা নীচে এখনো নারী জাতি। একজন নারী অনেক রূপের পালাবদলে শিশু থেকে কিশোরী, কিশোরী থেকে বধু হয়। ছোটবেলা থেকে পরিবার থেকে শিখানো হয়, নারী মানে সহনশীল, নারী মানে কর্মঠ, নারী মানে ত্যাগের মূর্তি। সেই কর্মঠ নারী, বিয়ে হয়ে নতুন সংসারে, নতুন মানুষের হাত ধরে স্বপ্ন বোনে সোনার সংসার গড়ার। নারীর মনে তার স্বামী পুরুষটিই একমাত্র ভরসার পুরুষ। তার সংসারটাই তার নিজেরই মনে হয়। স্বামী যদি হয় কর্তা স্ত্রী নারীটি তার কর্তি। মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে এমন কোনো নারী নেই যে তাকে সংসারের শুরুতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় না। একসময় পরিশ্রমের ফল স্বরূপ সংসারটি যখন মোটামুটি দাঁড়িয়ে যায়, অনেকক্ষেত্রে তখন স্বামী পুরুষটি বহুগামিতায় গা ভাসায়। নারীর সব স্বপ্ন হয় চুরমার। রয়ে যায় প্রেমহীন, আশাহীন এক প্রণহীণ রক্ত মাংসের মানুষ, যদি বেঁচে থাকে।
কবে যেন কিছু শব্দ লিখেছিলাম, কোনো লেখাতেই তা মানাসই হয় কিনা জানি না।
“রাত গভীর, ক্লান্ত শ্রান্ত শরীর এলিয়ে বিছানায় কৃষাণী। মৃদু পায়ে, শয়ন পাশে উঠে আসিল স্বামী পুরুষটি তার। মৃদু পায়ে আসতে দেখে, কৃষাণী একটু যেন আড়মোড়া দিল, মিথ্যা ঘুমের বাহানায়। স্বামীর হাতের একটু আদর, একটু ছোঁয়ার আশায়। এ ক্লান্ত জরাজীর্ণ শরীর তার আজও কেঁপে ওঠে, একটুখানি শৃঙ্গারের আশায়। মনে মনে ভাবে সে, কতো বাসনা তার স্বামী পুরুষটির বাহুতে কিন্তু, হায়! একি গো, যে হাতে আলত করে ধরত কৃষাণীর মুখখানি, আজ সে হাতখানি তার শক্ত বড় দম বন্ধ হবে কি কৃষাণীর এবার ! যে চোখে তার প্রেম ছিল এতো, তাতে কেন আগুন এতো !
সেই প্রথম যখন এসেছিল কৃষাণী এ ঘরে তার, কতো বিজয় আনন্দ ছিল ও চোখে তার। কৃষাণী জেনেছিল এ ঘরখানি তার, এই স্বামী পুরুষটি শুধুই তার।
একটুখানি ভিটা তার স্বর্গ হইল। সেই সূর্য কিরণ দেবার আগে ওঠে এই কৃষাণী। তারা দুজনে গড়বে এ সোনার সংসার। দিন যায় বেলা যায়, গতরখানি খেটে, বদনখানি রোদে পুড়ে, গড়ল আজ এ সংসার। এক ভিটা থেকে হল তিনখানা ভিটা, ধানি জমি, গরু তাও হল কিছু। স্বামীর ঔরসজাত সন্তানকে করতে হবে মানুষ। এসব করতে করতে, স্বামী পুরুষটিকে প্রেমে ভাসানোর সময়টা গেল হারিয়ে। তবুও অঙ্গে তার প্রেম ছিল, ছিল পরিনত বয়সের সুখ স্বপ্ন। কিন্তু সখা স্বামীটি তার বড়ই অধৈর্য্য , অন্য প্রেমে ভেসে গেলো। কৃষাণী চিৎকার করে বলিল,” মেরো না মেরো না, এখন যে বড় সুখের সময় আমার”।
৩৩টি মন্তব্য
প্রজন্ম ৭১
খুবই গুছিয়ে লিখেছেন এই পোষ্ট। সভ্যতার প্রথম সূচনা নারীর মাধ্যমেই হয়েছিল। গুহাবাসী মানব যখন গুহা ত্যাগ করল নারীর কর্তৃত্ব তখন হতেই কমে যেতে লাগল। আমাদের দেশে নৌকায় ভাসমান যাযাবর আছেন এখনো কিছু। পুরুষ সেখানে কোন কাজ করেনা, বসে বসে অলস সময় কাটায়। আয় রোজগার সবই করে নারীরা। তবে যে কোন সিদ্ধান্ত নেয় পুরুষ।
নারী এবং পুরুষ যে যার প্রাপ্য সন্মান পাক।
মৌনতা রিতু
অবশ্যই পুরুষের সন্মানও পুরুষ পাক। শুভকামনা জানবেন ভাল থাকুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
মৌনতা আপু দারুণ লিখেছো তুমি। এতোটাই বিষণ্ণ হয়ে গেছে মন। একটা কথা আছে মানুষ যতো উন্নত হচ্ছে, ততোটাই নীচে নেমে যাচ্ছে তার মন। সভ্যতার সৃষ্টি থেকে এটাই তো পড়ে আসছি বইয়ে।
ছোট্ট একটা ঘটনা বলি। দেশে আমাদের পরিচিত একজন প্রতিবেশী মহিলা উনি চাকরী করতেন আর উনার স্বামী ঘরে থেকে টিউশনী করতেন এবং বাচ্চাদের দেখাশোনা করতেন। ওই ভদ্রলোককে নিয়ে কতো কি যে কটূক্তি। বুঝতেই পারছো! এবারে আমি নিজের কথা বলি। দেশে থাকার সময় তরুণ প্রায়ই শুক্রবারে আমাকে সাহায্য করতো রান্নাঘরে। একদিন আমাদের বাড়ীওয়ালী ভাবী দেখে বললেন, “বৌদি আপনি দেখি তরুণ ভাইকে দিয়ে মেয়ে মানুষের কাজ করাচ্ছেন? পুরুষ মানুষ সারা সপ্তাহ কাজ করেন, আজ শুক্রবার উনাকে রেষ্ট করতে দিন।” মেজাজ গেলো বিগড়ে। শুধু বললাম ভাবী ভাইকে দিয়েও মাঝে-মধ্যে কাজ করাবেন। চুপ করে সরে গেলেন। নারী-পুরুষের কাজ আলাদা আমাদের সমাজে। তাই এতো বৈষম্য। এখানে মহিলারা সবধরণের কাজ করে। নারী-পুরুষ কোনো কথা না।
আপু নারীরা আজীবনই একা। তাদের সুখের সময় আসলে যে কোনটা, তা তারা নিজেরাও জানেনা। আর আমরা নিজেদেরকে সুখী সাজিয়ে রাখি। আমার এ কথা না মানতে পারো, কিন্তু আমার কাছে এটাই সত্যি।
ভালো থেকো আপু। -{@
মৌনতা রিতু
আর বোলো না আপু, আমি যখন প্রথম প্রেগনেন্ট হই জুলি খুবই সেবা করেছে আমার। সত্যি ওর এই ঋন শোধ হবে না। এইটা নিয়ে শশুরবাড়িতে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে।
তবে জুলি কোনোদিন বাথরুমে লুঙ্গি রাখে না। হ্যাঁ, তাকে অফিস যাবার সময় রেডি করে দিতে হয়। যতো যাইহোক দরজা আমাকেই খুলতে হয়। হাতে ফোনটা না দিলে ভুলে যায়। তবে মাঝে মাঝে গার্লফ্রেন্ডরা ফোন দিলে তখন নিতে ভোলে না :p প্রমানিত। 🙂 হা হা হা।
যাইহোক, আমি মশারির দুই কোনা তাকে দিয়েই টানাই।
ভালো থেকো আপু। ভালবাসা নিও।
নীলাঞ্জনা নীলা
মৌনতা আপু তাহলে তোমার তিনটি বাচ্চা, কি বলো! 😀 :p
মৌনতা রিতু
তা বলতে পার। 🙂 -{@ (3
ছাইরাছ হেলাল
বলতেই হয়, ফিরিয়ে দেও সে অভয় অরণ্য,
যেখানে নেই কোন কাম-কাইজ,
কী আনন্দ!!
মৌনতা রিতু
কাম কাইজ না থাকলে কোনোকালেই খাওন যে জোটে না। তাই কাম কাইজ থাকোন লাগবো, শুধু সবাই সবাইকে সন্মানের চোখে দেখুক, এই কামনা।
ইঞ্জা
মানুষ যত এগুচ্ছে বলে মনে হচ্ছে আসলে তারা মন।মানষিকতায় পিছিয়ে যাচ্ছে, আমার পরবর্তী কথায় হয়ত অনেকেই আমার প্রতি বিরুপ ধারণা পোষণ করতে পারে তবুও বলছি আদিম যুগে ধর্ম আর এর বাধ্যবাধকতা ছিলোনা বলে তখন মানুষের প্রতি মানুষের সম্মানবোধ ছিলো আর ধর্মের ভেদাভেদে তা আজ মানুষ জলাঞ্জলি দিয়েছে।
মৌনতা রিতু
অবশ্যই আপনার কথাও ঠিক। মানুষ সভ্য হয়েও সভ্য হল না এটাই দুঃখ।
ধন্যবাদ ভাই।
আবু খায়ের আনিছ
সবার আগে, নারী মুক্তি/নারী স্বাধীনতা/নারী সমধিকার এগুলোর সঠিক সজ্ঞা নির্ধারণ করতে হবে, তারপর কাজ করতে হবে নয়ত কোন ভাবেই সম্ভব নয়।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
প্রিয়জন হিসাবে প্রতিটা নারীই পুরুষকে পরম মায়ায় বুকে জড়িয়ে নেয়। সভ্যতার যুগে প্রবেশের পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আদিপত্যবাদী পুরুষ সে মায়াকে, সে কোমলতাকে দুর্বলতা হিসাবে নিয়েছে। নারীর নির্ভরশীলতাকে দুর্বলতা হিসাবে গন্য করেছে।
অবস্থার প্রেক্ষিতে আজকাল অবশ্য এখানেও একটু পরিবর্তন এসেছে। আগে পুরুষকে নারী স্বামীরুপে গন্য করতো, এখন করে বন্ধুরুপে। যেখানে বন্ধুত্বের বন্ধনকে ডিঙ্গিয়ে স্বামীত্ব প্রবল হয়ে উঠে সেখানে ভাঙনের সুর বেজে উঠে। যে সময়টায় পুরুষকে স্বামীরুপে গন্য করা হতো, সে সময়টায় পুরুষ নারীকে দাসীরুপেই ট্রিট করতো। হয়তো সেখানে নারীর নমনীয়তাই তার স্বকীয়তাকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
এ পর্যায়ে এসে নারী অনুধাবন করতে শুরু করেছে, নমনীয়তা যেখানে দুর্বলতা হিসাবে মূল্যায়িত হয়, সেখানে নমনীয় থাকাটা এক প্রকার অন্যায়। নিজের সত্বার প্রতি অন্যায়। তাই কালে কালে নারী পুরুষতান্ত্রিক শৃঙ্খলতা ভাঙতে শুরু করেছে।
ঘুরে যখন আবার পরবর্তী প্রজন্মের দিকে দৃষ্টিপাত করি, উপলব্ধি করি কালের আবর্তে নারী আস্তে আস্তে আবার পুরোনো ধারায় উল্টো গতিতে ফিরে যাচ্ছে কি? চোখে দেখা এমনই দু’একটি ঘটনা আমাকে এ প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
মৌনতা রিতু
হুম, সহমত।
শুভকামনা রইল।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ভুলক্রমে মন্তব্যটি আবু খায়ের আনিস ভাইয়ের জবাবের ঘরে পোস্ট হয়ে গিয়েছে। এটি আসলে মৌনতা রিতুর মুল পোস্টের বিপরীতে করা মন্তব্য।
মৌনতা রিতু
হ্যাঁ, আপু ফেসবুকে তো দেখলে এখনো শিক্ষিত মানুষগুলোই কতোটা নীচু চোখে দেখে এই নারীর অধিকারের কথা বললে।
অনেক ভালবাসা নিও, ভালথেকো।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হার মানলে হবে না মৌন। ওরা থামিয়ে দিতে চায়, পাছে নারী সজাগ আর অধিকার সচেতন হয়ে উঠে এই ভয়ে।
আমার কথা, পুরুষ আমি তোমাকে অধিকার বঞ্চিত করতে চাই না, কিন্তু আমার অধিকারও অক্ষুণ্ণ থাকা চাই।
নর এবং নারী, দু’য়ে মিলে বাড়ি (জগৎ সংসার)।
মোঃ মজিবর রহমান
সেই প্রথম যখন এসেছিল কৃষাণী এ ঘরে তার, কতো বিজয় আনন্দ ছিল ও চোখে তার। কৃষাণী জেনেছিল এ ঘরখানি তার, এই স্বামী পুরুষটি শুধুই তার।
নারীর উপর খরগ নেমে আসা কোন ক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না।
মৌনতা রিতু
সত্যি কতো স্বপ্ন নিয়ে একটক মানুষ অন্য একটি মানুষের সাথে জড়িয়ে যায়, সেই স্বপ্নভেঙেও যায়।
ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
সবাই মিলেমিশে বসবাস মঙ্গলময়।
মৌনতা রিতু
ঠিক বলেছেন ভাই। একদম।
অপার্থিব
আদিম সমাজ সাম্যবাদী ছিল। নারী ও পুরুষ উভয়ই বহুগামী ছিল তাই সন্তানের পিতা কে সেটা অধিকাংশ সময়ই তাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হত না তাই সন্তানেরা পরিচিত হত মায়ের নামে। মূলত সম্পত্তিতে ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে নারীর শোষনের যাত্রা শুরু। পুরুষ তন্ত্র নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী নুতুন নুতুন মুল্যবোধ তৈরী করলো , নিজেদের মুক্ত রেখে তারা নারীদের নানা রকম শৃঙ্খলায় আবদ্ধ করলো। নারীদের শোষণ করতে ধর্মও মূলত পুরুষতন্ত্রের হাতিয়ার। সভ্যতার অগ্রগতিতে এত অবদান রাখার পরও ঈশ্বরের লক্ষ লক্ষ দুতদের মধ্যে একজনও নারী নেই, ঈশ্বরের অবতার রুপে কোন নারী জন্ম গ্রহণ করে না , ঈশ্বরের কোন কন্যাকে নিয়েও বিশ্বজুড়ে কোন মাতামাতি হয় না।
মৌনতা রিতু
এখানে ও ব্যাখ্যা আছে। তবে সেই ব্যাখ্যা প্রকাশ না করাটাই ভাল। আমাদের সবার জন্য ততা মঙ্গল জনক।
আসলে অনেক কিছুর ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না।
এই যে সম্পত্তি, বংশ রক্ষাই হয়ত এই বৈষম্যের প্রধান কারন। অন্যান্য কারন তো আছেই।
ধন্যবাদ ভাই।
লীলাবতী
আপু আপনি যে প্রচুর পড়াশুনা করেন, এই পোস্ট তার প্রমান। আপনি এমন লেখা লিখতে থাকলে প্রচুর সমালোচনার সম্মুখীন হবেন। তবে থেমে থাকবেন না। এমন লেখার জন্য ধন্যবাদ আপু।
মৌনতা রিতু
তাই না ! আর বলো না, বড় ছেলের জন্য ও পড়তে হয়, এমন সব প্রশ্ন করে কি বলব! তুমি হাসবে, আমি এখন নাইন টেনের বইও পড়া শুরু করেছি। নতুন করে গ্রামার শিখতে হচ্ছে। ইতিহাস আমার প্রিয় বিষয়। আড্ডা দেই আমরা তিনজন ইতিহাস নিয়ে। ক্লাস সিক্সের ছেলে আমার সেই আড্ডার মধ্যমনি।
হুম, সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। তবুও লিখতে হবে।
ভাল থেকো,লেখা কৈ ? :@ রাগের পরে এবার -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
তবুও বলতে হবে রে! আমরা বললে আরো দশটা নারী শক্তি পাবে। সাহস করে পথ হাটবে।
মিষ্টি জিন
কি বলবো রীতু আপু ? নারী পুরুষের এই বৈষম্য পৃথিবীর সবজায়গায় ই আছে। নারী বা স্রীর উন্নতি সেই যুগ বল বা এই যুগ ..কোন যুগেই পুরুষরা সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেনি।তবে কিঁছু ব্যাতিক্রম ও আঁছে ।
তুমি ভাবো তে একবার তুমি আর তোমার ভাই একই বাবার সন্তান কিন্তু সম্পত্তি ভাগের বেলায় ভাই তোমার দ্বীগুন পাবে।আমাদের ধর্ম এই নিয়ম করে দিয়েছে।
একটা মেয়ের চাইতে ছেলের জন্ম দেয়া কি বেশী কষ্টের?
তুমি বেশ পডুয়া। বাচ্চাদের পড়াতেই গেলে মা কেও অনেক পড়তে হয়। অনেক ভাল লিখেছো।
মৌনতা রিতু
হ্যাঁ আপু, পড়তে হয়। আর এই পড়াটা যদি সময় থাকতে করতাম, তবে অনেক কিছুই হয়ত করা সম্ভব হতো।
হ্যাঁ, ব্যতিক্রম পুরুষ তো অবশ্যই আছে।
ভালো থেকো। -{@
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বরাবরের মতো খুব গোছানো পোষ্ট।আমি মনে এই জানলাম নারীর হাতে মানব জীবনের অতি প্রয়োজনীয় বস্তুগুলো সৃষ্টি হয়েছে।তবে আপননার ললেখায় পুরুষ শাষিত সমাজ উৎপত্তির ধারা সুন্দর ভাবে উঠে এসেছে -{@
মৌনতা রিতু
হ্যাঁ, ভাই, ইতিহাস তো তাই বলছে। কিন্তু তবুও অনেকেরই মানতে দিধা।
ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন। শুভকামনা রইল পরিবারের প্রতি।
শুন্য শুন্যালয়
আমি সবসময়ই মনে করি সন্তান যেমন নারীর সর্বশক্তি তেমনি সন্তানই নারীর সবচাইতে দূর্বল দিক এবং পুরুষ সেই দুর্বলতা পুরোটা কায়েম করে। আমি বলবোনা ব্যতিক্রম নেই, কিন্তু ব্যতিক্রম তো উদাহরন নয়।
আমাদের সামাজিক নিয়মনীতি আর অপার্থিবের সাথেও আমি একমত। যেটা প্রকৃত দৃষ্টান্ত হতে পারতো সেখান থেকেই নারী বিচ্ছিন্ন। সামাজিক নিয়মে মা-বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি এসে ওঠা, নারীর যেন শিকড় উৎপাটন করা।
খুব ভালো একটি পোস্ট দিয়েছ রিতু আপু। শুধু না পড়ে এইসব শেয়ার হওয়া উচিৎ বেশি করে। তবে সময় বদলাচ্ছে, বদলাবে আরো নীলাপু। নারী পুরুষ পাশাপাশি থেকে সকল কাজ করুক তাদের সাধ্য অনুযায়ী, সম্মান সহকারে।
বইগুলো সব প্যাকেট করেছো তো? এসে কিন্তু সব ছিনতাই করবো।
মৌনতা রিতু
সন্তানকে ব্যবহার করে এরা যা ইচ্ছে তাই এটা একদম সত্যি কথা।
নারী সরে দাঁড়ায় তার অধিকার থেকে। ফেসবুক এটা নিয়ে তর্ক হয়ে গেছে এক পর্ব। কিছু আছে না, সাইকো, যাদের মানতে সমস্যা “নারীও মানুষ”।
বই কয়টা চাই, চলে তো আস আগে।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
সুন্দর লিখাটার জন্য ধন্যবাদ।
আল্লাহর দেয়া বিধান মতে নারী পুরুষ যার যার অবস্থান থেকে পরস্পরকে মর্যালদা দিলে সংসারে অশান্তি আশার কোন কারণ নেই। আমরা নিজেরাই অশান্তির জন্য দায়ী । এটা ঠিক যে নারীরা যে পুরুষকে বিশ্বাস করে তাকে নিজের আত্মার মতই মনে করে। নারীকে যেমন অবহেলা করার, অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই তেমনি নারীরও উচিত ঘরের মানুষটিকে ভালবাসা দিয়ে ধরে রাখার। এটাও বাস্তব যে সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে নারীরা স্বামীদের সাথে পারস্পপরিক হৃদ্যতার মাঝে দুরত্ব সৃষ্টি হয়। নারী থাকে অগোচালো, স্বামী চায় পরিপাটি স্ত্রী। সেই সুন্দর মায়াবী বধুটি ছেলেমেয়ের আয়ার কাজ করতেই যে অগোচালো হয় এটা অনেক পুরুষ বুঝতে চায়না। তবুও হয়তো এভাবেই চলবে জীবন…… সকলের সংসার হোক সুখের সর্গ।
মৌনতা রিতু
আপনি ঠিকই বলেছেন। সত্যি মেয়েয়েদের সাথে এমনটি হয়। শহরমুখি জীবনটা অবশ্য আলাদা। গ্রামের চিত্র কিন্তু এরকম।
ধন্যবাদ ভাই , শুভকামনা জানবেন।