“…চিঠি কিন্তু আমি লিখছি না আম্মু, আব্বু লিখছে আমি বলছি.. আমি তো লেখা শিখিনি.. মিস বলেছে কদিন পরেই আমি লেখা শিখে যাবো.. আম্মু, আব্বুটা না অনেক পচা হইছে.. সারাদিন অফিসে থাকে.. দেরি করে বাসায় আসে.. আমি বকি তো.. অনেক বকি, তবু শোনে না.. তুমি কবে আসবা.. জানো, আব্বুটা না অনেক বোকা, রান্না করতে পারে না, প্রতিদিন ভাত পুড়িয়ে ফেলে.. আমি বলি, আমি রেঁধে দেই, আব্বু বলে বড় হও মা, আমি হাসতে হাসতে মরি, ওরে! আমি কী ছোট! আমি তোমার মতো শাড়ি পড়তে পারি.. জানো আম্মু, আব্বুটা অনেক গরীব আছে, জুতা ছিঁড়ে গেছে বোঝেও না, ছেঁড়া জুতো পরে ঘুরে বেড়ায়.. নানুভাই দাদুভাই আমাকে টাকা দিছে চকলেট খেতে আমি জমিয়ে রাখি.. তুমি কিন্তু আব্বুরে বলবা না, আমি আব্বুর জন্য একটা জুতা কিনবো.. তোমার জন্য একটা শাড়ি আর.. একটা আয়না.. আম্মু তুমি না অনেক সুন্দর.. আমারে একটা টিপ পরায় দিবা কিন্তু.. আর লিপস্টিক.. আব্বুর শরীর খারাপ হইছে, খায় না ঠিক মতো, বলি দুধ খাও, কথা শোনে না.. বকি তো অনেক বকি, খালি হাসে আর লেখে.. আমি ঘুমাই ঘুমাই অনেক ঘুমাই, তবু আব্বু ঘুমায় না, আব্বু কী লেখে আম্মু.. আব্বুটা অনেক পচা, বলে, তুমি নাকি আল্লাহর বাসায় বেড়াইতে গেছো, তুমি বলো কারো বাসায় কেউ এতোদিন বেড়ায়.. আমি বকি তো অনেক বকি.. আব্বুরে বলি চলো যাই আম্মুরে নিয়া আসি.. আব্বুটা বোকা, মুখ নিচু করে থাকে, আসলে কাঁদে আমি জানি, কেমন বোকা.. বড়রা কী কোনদিন কাঁদে বলো আম্মু.. আমি আব্বুকে বলি, কী ব্যাপার, চোখে পানি কেন.. আব্বু বলে ধুলা পড়ছে.. আব্বুটা কিন্তু ভালো আছে, জানে কাঁদলে আমি বকা দিবো.. আম্মু তুমি তাড়াতাড়ি আসবা.. আমরা এখন রান্না করবো.. আমি কাছে না থাকলে আব্বু আবার ভাত পোড়াবে.. এখন যাই তাইলে.. ও আম্মু শোনো, আব্বু একটা ছোট্ট বিড়াল আনছে আমার জন্য.. জানো না বিড়ালটা অনেক ফাজিল.. আমার একটা বই ওকে দিছি.. পড়ে না কথাও শোনে না সারাদিন দুষ্টামি.. আম্মু গেলাম.. আব্বু বলতেছে ভাত নাকি আজকেও পুড়বে- তুমি আসবা তাড়াতাড়ি-”
ছবিঃ সংগৃহীত
৩৬টি মন্তব্য
লীলাবতী
মন খারাপ হয়ে গেলো দাদা, ছোট মেয়ে জানেই না, মা আর ফিরবেননা।
দীপংকর চন্দ
কিছু মানুষের জীবন বড়ো অদ্ভুত হয় লীলাবতী!!
প্রার্থণা করি, ভালো থাকুক সবাই।
শুভকামনা অনিঃশেষ।
লীলাবতী
আপনার লেখা শীর্ষ ১৫ এর শীর্ষে দেখে ভালো লাগছে দাদা।
দীপংকর চন্দ
বলেন কি!!!
আপনি তো আমাকে চমকে দিলেন!!!
আরে!!! তাই তো!!!!
এইটা তো চিন্তার কারণ হইলো একটা!!!
কারণ, শীর্ষস্থান আমার কখনওই কাম্য নয়। শীর্ষস্থান স্পর্শের চেষ্টাও করিনি কখনওই জীবনের কোন ক্ষেত্রে। একটা জীবন কাটাতে চাই সাদামাটাভাবে। সকলের সাথে মিলে মিশে। প্রার্থণা করবেন, সেটাই যেন পারি আমি। আমার মাথা যেন নত রাখতে পারি কৃতজ্ঞতায়।
শুভকামনা এবং শুভকামনা। পুনরায়।
লীলাবতী
লেখাটি সবার হৃদয় স্পর্শ করেছে দাদা। আপনি অনেক বিনয়ী।
দীপংকর চন্দ
আমার কি একটু লজ্জা পাওয়া উচিত???
ঠিক বুঝতে পারছি না!!!
শুভকামনা পুনরায় লীলাবতী।
অনেক ভালো থাকবেন। অনেক ভালো।
জিসান শা ইকরাম
কিভাবে লেখেন দাদা এমন করে! অদ্ভুত সুন্দর।
দীপংকর চন্দ
শ্রদ্ধা অনেক জিসান ভাই।
যে কোন লেখায় প্রাণের সঞ্চার ঘটায় পাঠকের সুন্দর চোখ, আন্তরিক দৃষ্টি।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।
ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।
জিসান শা ইকরাম
এমন লেখা একটি সাইটের মান বৃদ্ধি করে
নিয়মিত আসুন এখানে
পাঠক প্রিয়তা আছে আপনার লেখায়।
শুভকামনা।
দীপংকর চন্দ
কি যে বলেন!!!
সামান্য চেষ্টা করি লেখার- এই তো!!!
আর উপস্থিতির অনিয়মিতি হয়তো থাকবে, তবু জানবেন আসবো অবশ্যই। কারণ, আপনাদের অকৃত্রিম আন্তরিকতা উপেক্ষা করার সাধ্য আমার মতো একজন সাধারণ মানুষের নেই।
শুভকামনা এবং শুভকামনা। বারবার।
অনিকেত নন্দিনী
চিঠিটা ভালো কিন্তু মন খারাপ করিয়ে দেয়। 🙁
দীপংকর চন্দ
কি যে বলি!!
মেয়েটির প্রতীক্ষার প্রহর শেষ না হলেই হয়তো ভালো হতো!
শুভকামনা অনিকেত নন্দিনী। অনেক।
কৃতজ্ঞতা উপস্থিতিতে।
অনিকেত নন্দিনী
এই প্রতীক্ষা তো অশেষ।
দীপংকর চন্দ
উত্তর নেই এই মন্তব্যের প্রকৃতপক্ষে!!
অনিকেত নন্দিনীর জন্য শুভকামনা। পুনরায়।
মৌনতা রিতু
এ কেমন লিখলেন ? বুকটা ভারি হয়ে গেলো। আমি বলেছি মৃত্যু তুমি কিন্তু এখন আসবে না। আমি এই ছোট ছোট চারটি হাত ছেড়ে যাব না। জুলিটা যে আমার কিছুই খুজে পায় না, ফোনটাও হাতে দাও, ভাতটা বেড়ে দাও, মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দাও, না, আমি মরতে চাই না। আমি চাইনা এমন যায়গা বেড়াতে যেতে।
আমি বাচ্চাদের মানুষ করার পর, জুলির পরে মরতে চাই। ওকে আমি কার কাছে রেখে যাব! ও যে বড় বেশী অভিমানি।
দীপংকর চন্দ
অবশ্যই ভালো থাকবেন আপনি। এবং আপনার সন্তান।
শতবর্ষী পরমায়ু নিয়ে ভালোবাসায় বাঁঁচুন, আন্তরিক প্রার্থণা থাকছে।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।
জানবেন কৃতজ্ঞতা উপস্থিতিতে।অনেক।
ব্লগার সজীব
কেমন এক অদ্ভুত কষ্ট বয়ে গেলো মনে।
দীপংকর চন্দ
প্রত্যুত্তর নেই আসলে!!!
উপস্থিতিতে কৃতজ্ঞতার কথা বলি।
শুভকামনার কথাও বলি। অনিঃশেষ।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক ভালো।
রিমি রুম্মান
যে লেখা পাঠক হৃদয় ছুঁয়ে যায়, সে লেখা এবং লেখকের সার্থকতা সেখানেই।
ভাল থাকুন, অনেক ভাল।
দীপংকর চন্দ
ধন্যবাদ অনেক সুলেখক।
আন্তরিকতাপূর্ণ উপস্থিতির প্রতি কৃতজ্ঞতা অনেক।
আমার শুভকামনা জানবেন। অনিঃশেষ।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।
ইকবাল কবীর
অনেক ভাল লিখেছেন ভাই। অনেক অনেক অভিনন্দন।
দীপংকর চন্দ
কৃতজ্ঞতা এবং কৃতজ্ঞতা উপস্থিতিতে।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন ভাই।
ভালো থাকবেন। অনেক ভালো। সবসময়।
খসড়া
ধরে রাখে যেমন ঝিনুক
কষ্টের আড়ালে মুক্তোর সুখ।
দীপংকর চন্দ
”আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে-”
ভিতর বাহির অন্তরের শুভকামনা।
এবং কৃতজ্ঞতা।
সবসময় ভালো থাকবেন। অনেক।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
ভাল লাগলো।
দীপংকর চন্দ
ধন্যবাদ ভাই। অনেক।
উপস্থিতিতে কৃতজ্ঞতা।
আচ্ছা, আপনি-ই কি মিছির আলী?? কে জানে!!
শুভকামনা। অনেক।
এবং অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
হুমমমম।
ভাইয়া আমিই মিসিরআলী।
আপনাকে এখানে দেখে ভালো লাগলো।
দীপংকর চন্দ
অনেক ভালো লাগলো জেনে।
শুভকামনা পুনরায় ভাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
ধূসর মেঘে ছেয়ে গেলো মনটা। তার চেয়ে মেঘলা আকাশ ঢের ভালো। অন্তত বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকা যায়।
আপনি এতো ভালো লেখেন কি করে?
লিখুন মনকে আরোও ডুবাই লেখনীতে।
ভালো থাকুন নিরন্তর।
দীপংকর চন্দ
কি যে বলেন!! লেখা মানে এলোমেলো কিছু বাক্যই তো!!
কৃতজ্ঞতা সুলেখক উপস্থিতিতে। অনেক কৃতজ্ঞতা।
এবং অনিঃশেষ শুভকামনা।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।
লীলাবতী
আজকে মা দিবস, মা দিবসের জন্য সেরা লেখা এই লেখাকেই মনে হলো। একজন মা অনুপস্থিত থেকেও প্রবল ভাবে উপস্থিত এই লেখায়।
লেখাটি প্রিয়তে নিলাম দাদা ভাই।
দীপংকর চন্দ
শ্রদ্ধা জানবেন।
এবং শুভকামনা। অনেক।
পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি এবং আগামী পৃথিবীতে যাঁঁরা মা হবেন, এবং যাঁঁরা লালন ও ধারণ করবেন মাতৃত্বকে- সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
ভালো থাকবেন। অনেক ভালো। সবসময়।
মোঃ মজিবর রহমান
আর এতো সুন্দর ভাবে সাবলীল মনে রেখাপাত করে । হৃদয়ে অনুভুতি তলা লেখা।
খুব ভাল লাগলো
মা মা আর মা।
দীপংকর চন্দ
অনেক অনেক ধন্যবাদ মজিবর ভাই।
কৃতজ্ঞতা অনেক উপস্থিতিতে।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।
অনেক শ্রদ্ধা ‘মা’ শব্দটির প্রতি।
শুভকামনা। পুনরায়।
নিশীথের নিশাচর
ভালো লাগলো কিন্তু আমি হতভাগা আজ পর্যন্ত মা বাবা ডাকতে পারলাম না
দীপংকর চন্দ
আপনার কথায় আমার বুকের ভেতরটা শূন্য হয়ে গেলো ভাই!!
সহমর্মিতা থাকছে।
মা-বাবা যেখানে যে অবস্থায় থাকুন, ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা অটুট রাখুন তাঁদের প্রতি।
অনিঃশেষ শুভকামনা।
ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।