সকাল ৬ টা ৪৫ : ৩ টা মোবাইলের এলারমের বিকট শব্দে ঘুম শেষ । ২৯ দিন পরে এত ভোরে জাগলাম ।
সকাল ৭ টা ০৫ : বাথরুমে জনযট। ধমক দিলাম সবাইকে , কেন সবাই আরো আগে ঘুম থেকে উঠে নাই ? কেউ কোন কথা না বললেও প্রিয় বললো ” আব্বু তুমিও তো আরো আগে উঠতে পারতা ”
যাক অবশেষে গোছল করলাম , ঈদের নামাজে যাবার আগে গোছল করতে হয় ।
সকাল ৭ টা ১৫ : কোন পাঞ্জাবীটি গায় দেব , এ নিয়ে কিছু বেহুদা টাইম নস্ট । সমস্যার সমাধান করে দিলেন প্রিয়র আম্মু , তাঁর দেয়া পাঞ্জাবী গায় দিতে হবে । এটি বলতে গিয়ে তিনি রাগ না করলেও পারতেন ।
সকাল ৭ টা ৩০ : পোশাক পড়া শেষ । খাবার টেবিলে সাজানো শরবত পান করলাম সবাই একসাথে । ২৯ দিন পরে ভোরে কিছু খাওয়া ।
সকাল ৭ টা ৪৫ : হেটে রওয়ানা দিলাম ৩ পুত্রকে সাথে নিয়ে , হাতে জায়নামাজ । বড় আর মেঝোটা উচ্চতায় ছাড়িয়েছে আমাকে ।
সকাল ৭ টা ৫২ : ঈদগায় পৌঁছলাম । প্রচুর র্যাব । নাশকতার আশঙ্কা । এটি উড়িয়ে দেয়ার মত নয়।
এই ঈদগা সেই শহরে , যেখানে জেএমবির বোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন দুই বিচারক। এরপর সবই ইতিহাস ।
বাংলা ভাই , সায়েখ আব্দুর রহমান সহ সব শীর্ষ স্থানীয় জেএমবির নেতাদের বিচার এই শহরের আদালতেই হয়েছে । এই শহরের শিল্পকলা একাডেমিকে বিশেষ সাব জেল বানিয়ে এই সব ইসলামী জঙ্গিদের সেখানে রেখে বিচার কাজ সমাপ্ত হয়েছে ।
এই শহরের আদালতেই তাদের মৃত্যুদন্ডের আদেশ হয়েছে । এই আদেশেই তাদের ফাঁসী কার্যকর করা হয়েছে ।
জঙ্গিদের প্রতিপালক জামায়াত ইসলামীর জেলা আমীর যিনি সরকারী উকিল হয়ে এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়েছেন ।বিচার চলাকালীন সময়েই জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হয়েছেন নামাজ আদায় করে মসজিদ থেকে বেড় হবার সাথে সাথে । তিনি কি শেষ দিকে জামাতের কথা শুনতেন না ? অবাধ্য একজন মানুষকে সড়িয়ে দিয়েছে জামাত তার জেএমবি নামক একশন গ্রুপ দিয়ে ?
সব কিছু মনে পরে গেল ঈদগায় বসে । কিছুটা ভীত ।
আততায়ী বুকে বোমা নিয়ে লুকিয়ে নেইতো মুসুল্লিদের মাঝে ? র্যাবের কাছা কাছি বসে নামাজ আদায় করলাম।
সকাল ৮ টা ৪০ : নামাজ শেষ করে সবাই কবর স্থানে গিয়ে আব্বা , বড় ভাই সহ মৃত সজনদের কবর জিয়ারত করে বাসায় ফিরলাম ।
সকাল ৮ টা ৪৫: বাসায় এসে আম্মাকে প্রথম সালাম করলাম । আম্মার কাছ থেকে সালামী পেলাম ১০০ টাকা ।
সারা দিনের সালামী দেয়া নেয়ার অবস্থাঃ পেয়েছি ২৩০০ টাকা । দিয়েছি ১৬৮০০ টাকা। ঘাটতিঃ ১৪৫০০ টাকা । ঘাটতির পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবার আলামত পাচ্ছি ।
#অসমাপ্ত
১৯টি মন্তব্য
যাযাবর
দিন লিপি পড়লাম । ভালো লেগেছে পারিবারের টুকরো কথামালা । জঙ্গিরা সব আপনাদের ওখানে কট খেয়েছে ? 🙂
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ
হ্যা , সব আমাদের এখানে কট খেয়েছে 🙂
শিশির কনা
দিনলিপি পরে আফসোস হচ্ছে । আমার সালামী তো পেলাম না । সালামী চাই , দিতে হবে ।
জিসান শা ইকরাম
আচ্ছা দিয়ে দেব সালামী ।
ঘাটতির পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবার আলামত পাচ্ছি 🙂
নীহারিকা
দিনলিপি খুব মজা লেগেছে। বাকিটুকু পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। সবাই মিলে ঈদ করার ব্যাপারটা এবার মিস করেছি বলে মন অনেক খারাপ।
জিসান শা ইকরাম
লিখে ফেলবো আগামী দুই দিনের মধ্যে
আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পেরেছি যে আপনার মন খারাপ।
ব্লগার সজীব
দিনলিপি দারুন লাগলো । ভালোবাসার দিনলিপি ।
জিসান শা ইকরাম
সুন্দর বলেছেন – ভালোবাসার দিনলিপি
মিসু
সহজ সরল দিনলিপি ভালো লেগেছে । পরের পর্বের অপেক্ষায়। আমার সেলামী কোথায় ? 🙂
জিসান শা ইকরাম
পরের পর্ব লিখে ফেলবো ।
সেলামী পেয়ে যাবেন । চিন্তা করবেন না ।
আদিব আদ্নান
চমৎকার দিনলিপি ।
পাহারায় নামাজ , এই অংশটি বেশ সুন্দর ।
জিসান শা ইকরাম
কি আর করা !! জে এম বি শেষ করে দিল দেশের শান্তি ।
প্রজন্ম ৭১
JMB আসার পর থেকে দেশ পাল্টে গিয়েছে । লেখা ভালো লেগেছে ।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , দেশের সবচেয়ে বড় শনি এরা ।
বনলতা সেন
অসমাপ্ত না থাকলেই ভাল হত ।
জিসান শা ইকরাম
হুম , দিয়ে দেব আজকেই । আপনি লিখছেন না কেন ?
হতভাগ্য কবি
ঈদ মুবারাক ভাই। 🙂 দিনলিপি পড়ে আরাম পেলাম
আফ্রি আয়েশা
আহ হা সালামিটা মিস করলাম , সমস্যা নেই ২ মাস পর আরেক ঈদ , রেডি রাখেন 😀
সীমান্ত উন্মাদ
জি মামা আমারটা কিন্তু এখনো বাঁকি। দেখা হইলেই উশুল। \|/