তিরি-প্রিয়-অহম-রিনী-প্রাঞ্জল-পিউ এবং অতিথিবৃন্দ: কথোপকথন: (**তৃতীয় এবং শেষ পর্ব**)
অহম – এখানে বসার জায়গা নেই, লিভিং রুমে আসুন প্লিজ।
জিসান শা ইকরাম – এতো ফরমালিটির কি দরকার? কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
তিরি – এটা কোনো কথা হলো? তারপর দেখা যাবে আপনার কোন নাত্নী এসে আমাদের ঝাড়ি দিচ্ছে।
অহম – তিরি ঠিক বলেছিস। কি মেয়ে রে বাবা, জিসান ভাইকে যা জ্বালায়।
তিরি – আচ্ছা আপনার বিরক্তি আসেনা? রাগও তো ওঠার কথা!
জিসান শা ইকরাম – ও তো মজা করে। হাসতে আর হাসাতে যে পারে, তার উপর কি রাগ করা যায়?
তিরি – নাহ আপনি ভালো মানুষ, অন্য কেউ হলে যা শুনছি আপনার নাত্নীর নামে, তাতে…। যাক ওসব। যা যা ভালো লাগছে তাই নিন।
জিসান শা ইকরাম – আচ্ছা বলুন রাধারমনের গান ভালোবাসেন?
অহম – শিশিরকনা এসেছেন বুঝি? চুপচাপ কোথায় লুকিয়ে আছেন? সামনে আসুন শিশিরকনা। আচ্ছা আমাদের ব্লগে যে বনলতা সেন আছেন, উনি আসেননি? জানিস তিরি খুবই ভালো লেখেন। জীবনানন্দ বেঁচে থাকলে এই বনলতাকে নিয়েই আরেকটি কবিতা লিখে ফেলতেন।
জিসান শা ইকরাম – এসেছেন দুজনেই। আরোও যারা এসেছেন, তারাও ওই যে ওপাশে বারান্দার কাছাকাছি দাঁড়িয়ে।
প্রজন্ম ৭১ – আমি প্রজন্ম ৭১। চেনার কথা না সেভাবে যদিও।
অহম – কেন? আপনাকে না চেনার কি আছে? দেশকে নিয়ে যে এতো ভাবে, লেখে তাকে কি অচেনায় রাখা যায়? নতূন কিছু লিখছেন না কেন?
প্রজন্ম ৭১ – সময় করে উঠতে পারছি না আসলে। তবে লিখবো। আর শুনুন, ওই যে দেখছেন ওদিকে— উনি শিশিরকনা। গান শোনানো এড়ানোর জন্য পরিচয় দিচ্ছেন না।
অহম – অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রজন্ম ৭১ – আর এসব ফর্মালিটি থাক না……।
সোনিয়া হক – আমি সোনিয়া হক।
অহম – ওহ যার কাছে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। এই তিরি উনার পোষ্ট পড়লে তুই শরীর-স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞানী হতে পারবি। সোনিয়া আপনি আমার এই বন্ধুটিকে কিছু টিপস দিয়ে যাবেন প্লিজ।
সোনিয়া হক – কি যে বলেন না!
অহম – আপনার পরিচয়টা বলুন।
অর্বানীল – আমি অর্বানীল।
অহম – আর পরিচয় দেয়ার প্রয়োজন নেই। আপনার লেখা তো শীর্ষ পঠিত পোষ্টে সবসময় ঝুলে থাকে।
অর্বানীল – লজ্জ্বা দেবেন না এভাবে বলে। এঁর সাথে তো পরিচয় হয়নি? ইনি হলেন হিলিয়াম এইচ।
হিলিয়াম এইচ – আপনার সাথে পরিচিত হয়ে খুবই ভালো লাগলো।
অহম – তাহলে আজকের সব ছবি তোলার দায়িত্ত্ব আপনার হিলিয়াম।
হিলিয়াম এইচ – অবশ্যই, সাচ্ছ্যন্দে।
অহম – কি ব্যাপার, আপনি চুপ করে দেখেই যাচ্ছেন? গান শোনাবেন কখন?
অরণ্য – আমি কে সেটা জানেন?
অহম – বাহ না জানার তো কিছু নেই! আপনি অরণ্য। গুনগুন শুনেছি, শ্রবণশক্তি খুবই প্রখর আমার। বুঝলেন?
অরণ্য – সে তো বুঝতেই পারছি। আজ বরং গান থাক, কথাই হোক।
তিরি – যারা গান গাইতে পারে, তারাই যে কেন এতো ভাব ধরে!
অরণ্য – এই তো ভুল বললেন, ভাব নয়। গান শুরু করলে আর কিন্তু থামাতে পারবেন না। রাজি তো?
তিরি – দেখি কেমন মনোরঞ্জন করতে পারেন। যদি মন না ভরে তাহলে কিন্তু…
প্রিয় – আগে তো খাওয়া পর্ব শেষ হোক। গান এবং খাওয়া একই মুখে তো দুটো হবেনা, তাই না?
জিসান শা ইকরাম – এ দুজনের সাথে পরিচয় হয়নি। ইনি হলেন অলিভার, আর এদিকে সাতকাহন।
অলিভার – পরিচিত হয়ে খুবই ভালো লাগলো।
অহম – যার কাছে সফটওয়্যার থেকে ভূত কিছুই ছাড় পায়না। জানিস তিরি উনার লেখায় একঘেঁয়েমী পাবিনা তুই। এই দেখবি গল্প, এই আবার বিজ্ঞান। মানে ভিন্নতা সবক্ষেত্রেই। যার কাছে জীবনের মানে হলো শূণ্য থেকে শূণ্যে ছুটে চলা।
অলিভার – এবার একটু বাড়িয়ে বললেন। এভাবে প্রশংসা পেয়ে কথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে যে!
তিরি – তা কোন সাতকাহন? সমরেশের?
সাতকাহন – সোনেলা ব্লগের সাতকাহন।
অহম – প্রবন্ধ যে আকর্ষণীয় হতে পারে, আপনার লেখা না পড়লে জানতাম না। কবিতা তো অনন্য, কিন্তু সাহিত্য বিভাগে আপনার প্রতিটি প্রবন্ধই একেকটি মাইলষ্টোন হতে পারে।
সাতকাহন – থাক, থাক প্লিজ। এবার অন্য গল্প হোক।
শুন্য শুন্যালয় – সবার খাওয়া কি শেষ? তাহলে আসরটা বসাই।
অহম – কিসের আসর?
শুন্য শুন্যালয় – কবিতা-গান-কৌতুক-আড্ডা-গল্প…এইতো এসব!
তিরি – হুম তা হতে পারে। অরণ্য আর শিশিরকনার গান, জিসান ভাইয়ের কৌতুক, অহমের আবৃত্তি, আর কার কি? কিছু মনে করবেন না, আর তো জানিনা কে কি পারেন!
জিসান শা ইকরাম – আমি কৌতুক বলবো? কেন?
শিশিরকনা – না, না আজ গান না। খুবই নার্ভাস। অন্য কোনোদিন।
তিরি – জিসান ভাই শুনুন যার নাত্নী আছে, তাকে তো কৌতুক বলতেই হবে। কেন জানি মনে হচ্ছে আপনি অনেক মজা করতে পারেন। আর শিশিরকনা আজ কোনো না শুনবো না।
খেয়ালী মেয়ে – বাহ আপনার ইনট্যুইশন পাওয়ার তো বেশ ভালো! আচ্ছা তিরি নামের মেয়েটি কি করবে?
তিরি – আমি শ্রোতা এবং দর্শক।
লীলাবতী – এতো সহজে কি ছেড়ে দেয়া যায়?
সীমান্ত উন্মাদ – আরে সবাই দেখি এন্টারটেইনমেন্টের দিকে রওয়ানা হয়েছেন। আমার কথা কি কারো মনে আছে? কেউ একজনও আমায় পরিচয় করিয়ে দিলোনা। এই যে তিরি আপু আমি সীমান্ত উন্মাদ।
অহম – ওহো, সত্যিই তো ভুল হয়ে গেছে, এই নিন হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
সীমান্ত উন্মাদ – এটা কি করছেন! আরে না, না!! এখন তো আমার নিজেরই লজ্জ্বা লাগছে।
তিরি – বেশী লজ্জ্বা লাগছে? তাহলে এখুনি চোখ ঢাকার জন্যে কিছু এনে দিই? আচ্ছা উন্মাদনীয় তো কিছু দেখলাম না। তাহলে সীমান্ত উন্মাদ কেন নাম?
সীমান্ত উন্মাদ – সীমান্ত হলো সীমানা, তো সীমা পার হওয়া উন্মাদ নই বলেই হয়তো উন্মাদনীয় কিছু দেখেননি আপু।
অহম – বাহ! বেশ বলেছেন। একেবারে ঠিক। এটাও বলুন আপনি যে বন্ধনহীন, চোখের তারায় হাজারো স্বপ্ন নিয়ে উড়ে বেড়ানো একটা পাখী। যে সময় কেটে কেটে ডানা ওড়ায় মেঘের দেশে।
সীমান্ত উন্মাদ – আমি এখন আপনাদের কবিতা-গান শুনবো।
ছাইরাছ হেলাল – আর কোনো কথা নয়, এবার অনুষ্ঠান শুরু হোক।
অহম – উপস্থাপনায় ছাইরাছ হেলাল এবং মিথুন।
***************************************************************************************
প্রিয় – খুবই ভালো লাগলো পরিচিত হয়ে। বহুদিন পর এমন হৈ-হুল্লোড়, আনন্দ হলো। আবার সময় করে আসবেন। অহম না থাকলেও কখনোই ভাববেন না। জানিনা আপনাদের কেমন লেগেছে, তবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পর এভাবে আড্ডা আর হয়নি।
অহম – সত্যি ভাবিনি আপনারা সবাই আসবেন। কাল আমি চলে যাচ্ছি। ব্লগে কথা হবে লেখা-লেখির মধ্যে। দেখুন আমি লেখালেখি থেকে অনেকটাই দূরে। ব্লগে আছি বটে, শুধু পাঠক হয়ে।
শুন্য শুন্যালয় – সে তো চলবে না। লিখতে হবে।
অহম – লেখা আমায় দিয়ে আর হবেনা। এভাবে বললে পাঠক হিসেবেও থাকতে যে পারবোনা, পালিয়ে যাবো।
তিরি – এটা কি কথা অহম! লিখিস। আমার ভালো লাগবে।
সহযোগে – ঠিক আছে আজ তাহলে চলি।
প্রিয় – অনেক অনেক ধন্যবাদ আসার জন্য।
জিসান শা ইকরাম – তিরি আপনার গল্প আমার নাত্নীকে বলবো।
তিরি – কেন?
জিসান শা ইকরাম – আপনার সাথে বেশ মিল। ব্লগে আসুন, পড়ুন। আর চেষ্টা করুন লিখতেও পারবেন। আমরা তো কেউ পেশাদার নই।
অহম – জিসান ভাই ও কিন্তু পেশাদারই ছিলো। কিন্তু এমন পাগলী যে আর লেখেনা। শুধু ডায়েরী লেখে।
জিসান শা ইকরাম – আচ্ছা মন না চাইলে লিখবেন না, কিন্তু ব্লগে আসুন। আপনাদের মতো পাঠক আমাদের সোনেলা’র যে প্রয়োজন। ঠিক আছে, আজ আসি।
**চমক পর্বের এখানেই সমাপ্তি। আরোও অনেক ব্লগার আছেন, যাদের কথা এখানে লেখা হয়নি। অনেকেই নতূন এবং অনেকের লেখা পড়ার সময় করে উঠতে পারিনি। চেষ্টা করেছি তাদেরকেই রাখতে, যারা এই লেখাটির সাথে একাত্ম হয়ে গেছে। অহম-তিরি যাদেরকে ছাড়া কিছুই না। যাদের ভালোবাসা পেয়েই ধারাবাহিক এই রচনাটি চলছে এবং আশা করি আগামীতেও চলবে। এভাবেই পাশে থাকুন, যাতে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারি বন্ধুত্ত্বের নির্মল আনন্দসহ।
ক্রমশ প্রকাশ্য
হ্যামিল্টন, কানাডা
৩১ জুলাই, ২০১৫ ইং।
২৭টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
এমন আড্ডার স্বপ্ন দেখার মজাই আলাদা।
আপনি তো দেখছি সবার সাথে বেশ ইয়ে জমিয়ে ফেলছেন।
কবিতা কই?
নীলাঞ্জনা নীলা
ইয়ে তো জমাতেই হয়!
তা নইলে কি চলে?
কবিতা এখানে দেবো? ;?
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা, ইয়ে চালু থাকুক।
কালকে নূতন কবিতা চাই ই।
নীলাঞ্জনা নীলা
যাক শান্তি। আমি তো এখন ;( শুরু করতে যাচ্ছিলাম। :p
অরণ্য
যেন ঠিক আড্ডাতেই ছিলাম। অহমের মতো আমিও খুঁজছিলাম বনলতা সেন কে, সাথে প্রহেলিকাকেও উনাদেরকে যেন আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম না। যেন অনেকের সাথে দেখা হয়ে গেল অনেক দিন পরে।
গ্রেট! (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
আড্ডাতে সকলেই ছিলেন, একা আমি-ই ছিলাম না। 🙁
এ কষ্ট কোথায় রাখি? ;(
অরণ্য
ঘরের বাতাস দেখা যায় না। 😀 আপনাকে আমরা পেয়েছি। আপনি ছিলেন। সে থাকা আমরা কেউই ছিলাম না। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
এভাবে বললে তো খুশীতে \|/ 😀
আপনার জন্যে -{@
স্বপ্ন
আড্ডা তো চোখের সামনে দেখলাম লীলাপু।একটি বিষয় বুঝতে পারলাম,আপনি সবার লেখা পড়েন মন দিয়ে।সবার লেখা থেকে তুলে আনলেন লেখার পিছনের মানুষটিকে সঠিক ভাবে।এমন একটি আড্ডার স্বপ্ন পুর্ন হবে কি?
নীলাঞ্জনা নীলা
স্বপ্ন দেখতে তো সমস্যা নেই। একদিন কে জানে হয়েও যেতে পারে এমন আড্ডা! 😀
জিসান শা ইকরাম
তুমি একটা সুপার কম্পিউটার হয়ে গিয়েছ।
সমস্ত দিন থাকো ব্যাস্ততার মাঝে
এত ব্যাস্ততার মাঝে সবার ব্লগ পড়লে কখন?কাজে ফাকি চলে নাকি? 🙂
এমন পোষ্ট তোমার পক্ষে দেয়াই সম্ভব।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা এখানে কাজে ফাঁকি দেয়ার কোনো সুযোগ নাই। এই যে আসিয়া মন্তব্য করি, সবার লেখা বাসে বসে পড়ি। তা নইলে এসে পড়ার সময় কই? 😀
সীমান্ত উন্মাদ
আমি আড্ডায় নাই, মানিনা মানবো না, আগামীকাল হরতাল আর চলমান অবরোধ চলবে।
সীমান্ত উন্মাদ
;( :p \|/
নীলাঞ্জনা নীলা
ওহো। স্যরি। উন্মাদ ছাড়া এ লেখা অসম্ভব।
আবার কাজে যাচ্ছি। ফিরে এসেই সীমান্ত উন্মাদের জন্যে সারপ্রাইজ রেডি থাকবে। -{@ 😀
সীমান্ত উন্মাদ
অপেক্ষায় থাকলাম আপু। \|/ -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
অপেক্ষা পূর্ণ হলো। (3
শুন্য শুন্যালয়
এমন এক আড্ডার স্বপ্ন দেখি আমি। সেখানে অহম আর প্রিয়কে না আনলে কিন্তু নীলা আপুর খবর আছে। এ আড্ডা কেন শেষ হলো? কেন শেষ হয়? 🙁
নীলাঞ্জনা নীলা
অহম আর প্রিয়র খবর জানিনা, আমি নেই। কে হায় যাচিয়া উত্তম-মধ্যম খাইতে ভালোবাসে! :p
এ আড্ডা শেষ করতে গিয়ে আমারও কষ্ট হচ্ছিলো। কিন্তু এই ধারাবাহিকটিকে তো শেষের মুখ দেখাতে হবে, তাই না?
মিথুন
আমার তো কোন গুণই নাই। আমি আড্ডায় কি করবো তাই ভাবতেছি ;?
নীলাঞ্জনা নীলা
কে বলেছে গুণ নেই? উপস্থাপনার দায়িত্ত্বে কার নাম? :p
তানজির খান
:c
নীলাঞ্জনা নীলা
😀 :=
খেয়ালী মেয়ে
বাহ!!!এতো সুন্দর আড্ডায় দেখি খেয়ালী মেয়েটাও আছে 🙂
অহম ব্লগে লেখালেখি করে এটাতো জানা ছিলো না ;?
নীলাঞ্জনা নীলা
খেয়ালী মেয়েকে ছাড়া কোনো আসর কি জমতে পারে?
আমিও খুঁজছি অহমকে। কি নামে আছে, কে জানে! ;?
ব্লগার সজীব
শেষ হয়ে গেলো আড্ডা? 🙂 এমন একটি আড্ডার স্বপ্ন মনে ধারণ করে নিলাম। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
‘স্বপ্ন স্বপ্ন স্বপ্ন দেখে মন।’
আড্ডার পর আর কিছু আসবে যে! -{@ 🙂