অহম-প্রিয়-তিরি-পিউ কথোপকথন :
প্রিয় – আরে চলে এলে কেন?
অহম – ছাগলীটার সাথে থাকবো বলে। এতো কষ্ট করে এসে যদি ওকে জ্বালাতে না পারি! প্রাঞ্জল বাইরে অপেক্ষা করছে, তুমি যাও।
প্রিয় – আরে ধুর! থাকি।
অহম – ভাব কম নাও। তোমার রেষ্ট নেয়া দরকার। কাল তাড়াতাড়ি চলে এসো। শুধু বলে দাও কোনো মেডিসিন কি দিতে হবে?
প্রিয় – কিচ্ছু না। সকালে নার্স এসে ঔষধ দিয়ে যাবে। রাতেরটা দিয়ে গেছে। ঘুমোচ্ছে এখন।
***************************************************
তিরি – সুপ্রভাত।
অহম – ওরে…উঠে পড়লি?
তিরি – একটা ছাগল ঢুলছিলো, এরপর চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙ্গলে হাসপাতালে পাহারা কে দিতো?
অহম – কেন আমার ফুলটুসী আছে না?
তিরি – আহা! “যারে দিয়া রামের মা, তারে তুমি চিনোনা?”
অহম – ঘটনা কি দাদু-দিদির আমলের বচন ঝাড়ছিস? নাহ তুই বুড়িয়ে গেছিস। তাইতো দেখতে এমন লাগছে।
তিরি – মানে? কেমন লাগছে? আমায় তুই বিশ্রী বললি? বলবিই তো, আমায় এখন কতো কিছুই বলিস। কোনো কথা শুনিস না।
অহম – ধুত্তোর, এতো সেন্টু কবে থেকে হলি বলতো? পাগলী তুই যা বলবি তাই শুনবো। পিউকে বিয়ে করতে হবে? ঠিক আছে করবো। এবার হাসি দে।
তিরি – না, আমি বলিনি পিউকে তোর বিয়ে করতেই হবে। শুধু বলেছি একটু কথা বল, মেলামেশা কর। তারপর দেখ। আমি তোকে জানি, তাই এটুকু অধিকার খাটিয়েছি।
অহম – কখন আসবে আজ?
তিরি – এইতো সকাল সাতটার দিকে। নার্সের সাথে সাথেই চলে আসে। আর আট-দশ মিনিট।
অহম – একটু জল খেয়ে নে।
তিরি – আমি ওয়াশরুমে যাবো।
অহম – আয়, আমার হাত ধর।
তিরি – ধ্যৎ, আমি একাই পারি। ডাক্তারদের স্বভাব কি জানিস? ওরা রোগ যতোনা, তার দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। অযথাই কিন্তু রেখেছে আমায় কাল।
**************************************************
অহম – আপনি?
পিউ – আমি পিউ। তিরি আপু?
অহম – ওয়াশরুমে।
তিরি – “ইতনা সন্নাটা কিয়্যু?(এতো নীরবতা কেন?)” (হিন্দী শোলে সিনেমা থেকে সংলাপটা নেয়া)। অহম এ হলো আমাদের মিষ্টি কিউট পিউ। আর পিউ এ হলো অহম, আমার প্রাণের কয়েকটি টুকরোর মধ্যে একটি।
অহম – হাই।
তিরি – দেখ তোর আমেরিকান হাই এখানে চলবে না। বুঝলি?
পিউ – হ্যালো।
তিরি – আরে এসব হচ্ছে কি? একজন হাই তুলছে, আর একজন হ্যালো বলছে।
অহম – পিউ আপনি কিছু মনে করবেন না যেনো। আমাদের এসব পাগলামী সেই কলেজ জীবন থেকে চলে আসছে।
পিউ – না, না। তিরি আপুর থেকে অনেক গল্প শুনেছি আপনাকে নিয়ে।
অহম – তাই?
তিরি – আহা কি রোমান্টিক হাসি রে তোর মুখে অহম! আচ্ছা যাক, আজ তোকে আসল নামে ডাকলাম না। পিউ একদিনে সব শুনে ফেললে মূর্ছা যাবে। এই পিউ কি করছো?
পিউ – গুছিয়ে নিচ্ছি সব। ওই যে দরোজায় শব্দ, নার্স বুঝি এলো।
ক্রমশ প্রকাশ্য
হ্যামিল্টন, কানাডা
১৬ মে, ২০১৫ ইং।
উত্তর এবং প্রত্যুত্তর : তিরি এবং অহম : উনবিংশ ভাগ
২০টি মন্তব্য
ইমন
ত্রিভুজ প্রেম হবে নাকি 😛
নীলাঞ্জনা নীলা
বন্ধুত্বকে প্রেমের মত হালকা ভাবে নেয়া উচিৎ না। আমাদের এমন ধারনা পাল্টানো উচিৎ। ছেলে এবং মেয়েদের এমন গভীর সম্পর্ককে বন্ধুত্ব হিসেবেই দেখার মানসিকতা অর্জন করতে হবে।
প্রেম হচ্ছে অনেক কিছুর চাহিদা। আর বন্ধুত্ব হচ্ছে নিঃস্বার্থ একটি আবেগ যা কোন চাওয়া পাওয়ার উপর নির্ভর করেনা।
ধন্যবাদ আপনাকে ……… ইমন
খেয়ালী মেয়ে
একটা ছাগল ঢুলছিলো, এরপর চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙ্গলে হাসপাতালে পাহারা কে দিতো?————–দারুন বলেছে তিরি (y)
অবশেষে তাহলে পিউর সাথে অহমের দেখা হয়েই গেলো!!!!!!!!!!!
নীলাঞ্জনা নীলা
ছাগলই তো ঢুকেছিলো 🙂 অবশেষে দেখা হলো দজনার।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অনেকদিন অহম আর তিরির ধারাবাহিক কথোপকথনের পর্বগুলো দেখছি, কিন্তু পড়ার সুযোগ হয়নি।
আজ পড়ে বাকীগুলো পড়ার নেশা জেগে উঠলো। যাবো, একদিন আপনার আইডিতে ঢুঁ মেরে একসাথে ৪/৫ টি করে পড়ে নিতে হবে।
অই দুটু বন্ধুর কথোপকথনের শুরুটা ধারাবাহিকভাবে না পড়লে নির্মল বন্ধুত্বের আনন্দটা ঠিক উপভোগ করা যাচ্ছে না।
ভালো থাকুক সকল বন্ধুরা।
নীলাঞ্জনা নীলা
সময় পেলে পড়বেন,পড়ে ভালো লাগলে আমার পরিশ্রম সার্থক হবে।
আশা জাগানিয়া
আপু সময় নিয়ে একদিন সব লেখাগুলো পড়েছি।অহম তিরির বন্ধুত্ব মনে হয় স্বর্গের বন্ধুত্ব।প্রিয়কে দেখেছি আদর্শ হিসেবে।আমি প্রিয় হতে চাই।পিউর সাথে দেখা হয়েই গেলো অহম এর 🙂 পরের পর্ব দ্রুত চাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।সময় পাচ্ছি না লেখার,তাই বিলম্ব হয়।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বরাবরের মতো অহম তিরির গল্প জমে উঠেছে।দিদি লাইনগুলোর দূরত্তের ব্যাবধান আরো কমানো যায় যদি আপনি এন্টার দেবার সময় শিফট চেপে এন্টার দেন।গল্পে ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম।
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ আপনাকে।
জিসান শা ইকরাম
দারুন কথোপকথান
দৃশ্যপটে পিউ তাহলে আসলো 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
এসেতো গেলো 🙂
সোনিয়া হক
পড়ে খুব মজা পাচ্ছি আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্য হলাম সোনিয়া।
মেহেরী তাজ
মাঝখানে ঢুকে পড়েছি। ঠিক বুঝতে পারছি না। আশা করি খুব তারাতারি আগের গুলো পড়া হবে।
নীলাঞ্জনা নীলা
আগের পর্ব গুলো না পড়লে বুঝতে পারা যাবে না।সময় পেলে পড়বেন।
শুন্য শুন্যালয়
অহমের সাথে পিউ এর আবার প্রেম হবে নাকি? ছাগল অহমটা প্রেমিক হিসাবে কেমন তা দেখার সুপ্ত বাসনা জাগছে। কি যে আছে আপুর মনে!!! অপেক্ষাই অপেক্ষা।
নীলাঞ্জনা নীলা
আগে বলা যাবে না।সব জানে তিরি 🙂
ব্লগার সজীব
তিনটি পর্ব পড়ে ফেললাম আপু।পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি,দ্রুত দেন 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
কত দ্রুত চান বলেন 🙂