এক ছিলো ম্যাজিশিয়ান –
কিন্ত সে নিজেই জানতো না তার কাছে যে জাদুরকাঠি আছে, হাতের মুঠোয় স্বপ্ন আছে, বুকের ভেতর নদী। সে ভাবছিলো সাধারণ মানুষের জন্ম নিয়ে এসেছি সাধারণ হয়ে কাটিয়ে যাই।
এক ছিলো রাক্ষস –
তাকে সবাই ধর্ম নামে ডাকে। তার ছিলো লুকনো দাত নখর, সযত্নে লুকনো।
পরী আর ম্যাজিশিয়ান আর রাক্ষস , তিনজন যারযার মত দিন কাটায় কেউ কারো ছায়াও মারায় না , যেন তিনজনের কেউই বাস্তবে নেই – যেন জলের ওপর মেঘের ছায়া।
তারপর একদিন, প্রচন্ড কোলাহল আর ভীর এবং বাজনার ভেতরে শাখের শব্দ আর ধুপের ধোঁয়া এবং হ্যাজাক বাতির হিসহিসে আলোর ভেতর চোখে চোখ পরে ম্যাজিশিয়ান আর পরীর। মুহূর্তের জন্য কোলাহল আলো বাজনা থেমে যায় – কেবল নিঃশব্দ আর বুক ধুকপুক।
আড়ালে রাক্ষস মুচকি হেসে দাতে আর নখরে শান দেয়।
তারপর, ম্যাজিশিয়ানের ম্যাজিকে পরী সত্যিকারের পরী হয়ে উড়ে বেরায় আকাশ জুড়ে, তারা চাইলেই রাস্তাগুলো নদী হয়ে যায়, তুচ্ছ একটা বাইক হয়ে যায় পঙ্খিরাজ ঘোড়া। দিনের রঙ বদলায় যখন তখন – তারা চাইলেই বৃষ্টি নামে। তুমুল বৃষ্টিতে হাতেহাত রেখে তারা হেটে যায় নির্বিকার।
তারপর –
তারপর –
তারপর –
রাক্ষস আড়াল ছেরে আসে প্রকাশ্যে, হিংস্র দাত নোখ বের করে আচড়ায় কামড়ায়। তারা রক্তাক্ত কিন্ত হাসিমুখে সয়ে যায়, সব।
অতঃপর,
একদিন, পৌষের সকালে সূর্য ওঠার আগের আলোয় তারা মুখোমুখি হয়
– তোমার চোখ অত লাল কেন, ঘুমাওনি ?
– হ্যাঁ, ঘুমিয়েছি। আবার কবে দেখা হবে ?
– জানিনারে পাগলী। হয়তো এজন্মে নয়। যাই , যাবার সময় হলো।
– যাই বলেনা, এসো। নিজের যত্ন নিয়ো ।
– হু
– হু
এবং,
বহু, বহুদিন পর এক মাঝরাতে মাঝখানে দুই দুইটা মহাসগরের দুরত্বে বসে ম্যাজিশিয়ান বুঝতে পারে পরীর চোখ গুলো অত লাল ছিলো কেন, সেই ভোরে।
কান্নায়।
আর বৃষ্টির ছাঁটে যাবে না দেখা দুজনের চোখের জল…..
একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে
আমরা ধরা পড়ে যাব জেনো ঠিক
ধুয়ে যাবে যত আছে অভিমান
ধুয়ে যাবে সিঁদুরের টিপ
২৯টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
রাক্ষস কে ধর্ম না বলে সমাজ দিলে কেমন হতো? সবার অপ্রেমের গল্প হয়ে যেত।
কেমন করে এতো সুন্দর লেখেন কে জানে, অজানা ম্যজিসিয়ানরা অবশ্য অনেক কিছুই পারে। প্রেমের গল্প আর পরুম না, এখন থাইকা অপ্রেমের গদ্যই দিয়েন।
তারা চাইলেই বৃস্টি নামে, তারা চাইলেই রাস্তাগুলো নদী হয়ে যায়। আবেগের চুড়ান্ত লেখায় 🙂
কান্নায়। এর পর “আর” দিয়ে কবিতাটি শুরু, অনেক ভাল্লাগছে।
আগুন রঙের শিমুল
রাক্ষস সমাজকে বলতেই পারতাম , কিন্ত কাহুনেরা সবসময়েই শামানদের সাথে তাল মিলিয়ে ধর্মীয় সমাজব্যাবস্থা বানায়েছে – ধর্মীয় আচার ভিত্তিক সমাজ কিন্ত না, দ্যাটস ধর্মের নামে মানুষেরে ডমিনেট করার ব্যাবস্থা । যেটা তুলনামুলক সহজ , কারন আদিমকাল থেকেই মানুষ তার বুদ্ধির বাইরে বোঝার বাইরে যাকিছু ঘটে তার দায় কিংবা ব্যাখা অদেখা ঐশ্বরিকের ওপ্রে চাপায়ে দিয়ে শ্বান্তনা খোজে । এবং এইটারেই ব্যাবহার করা হয় তারে ডমিনেট করতে।
আর এইটা একটা সত্য ঘটনা – এবং সত্যিকারের রাক্ষস 🙂
ওইটা কবিতা না শুন্য – গান অঞ্জন দত্তের গান । অন্যের লেখা দেখেই ব্লককোট করে দিছি 😀
শুন্য শুন্যালয়
“একদিন বৃস্টিতে বিকেলে, থাকবেনা সাথে কোন ছাতা”… ক্যামনে ভুল করলাম এইটা? 🙁 ^:^
প্রহেলিকা
এত্তো এত্তো আবেগ যে কিভাবে মেশান আপনি কে জানে? মাঝখানে মাঝখানে এমন এমন কিছু কথা বলছেন যাই অতুলনীয় সুন্দর।
ছোট ছোট টুকরো কথায় গল্পের আদলে পুরো উপন্যাস লিখে ফেলেছেন আপনি ভাইয়া। অপ্রেমের গল্প এমন হলে প্রেমের গল্প দিয়া কাম কি?
সবাই খালি পদ্য ছাইরা গদ্যের দিকে যাচ্ছে কেন? হেলাল ভাইয়ার আছর এখন আমাদের সবার উপরে পরেছে, সব দায় উনার তবে আছর না পড়লে এমন লেখাও পড়তে পারতাম না।
আগুন রঙের শিমুল
হেলাল ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দুলোন গরে তুলেন pasay asi :D)
ছাইরাছ হেলাল
দুর্বার আন্দুলুন করতে চাই শিমুলের পতাকায়।
আগুন রঙের শিমুল
হ pasay asi
হেলাল ভাইয়ের pasi cay :D)
খসড়া
চমৎকার অভিব্যাক্ত, সাবলীল বর্ননা আর বিষয় বস্তু আরও চমকপ্রদ।
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ খসড়া 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বেশতো চলছে পর্বাকারে লিখুন না -{@
আগুন রঙের শিমুল
এইটা এক পর্বের গল্প ভাই 🙂 জীবনের গল্প , এই গল্পের পর্ব বাড়লে বাইচা থাকাই দায় হইয়া যাবে। এর রিপিটও চাইনা এমনকি অন্যকারুর জীবনেও না 🙂
সীমান্ত উন্মাদ
আবেগী লিখায় অনেক অনেক ভালোলাগা।
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ সীমান্ত উন্মাদ 🙂
জিসান শা ইকরাম
আমার মন্তব্যটি শুন্য শুন্যালয় করে দিয়েছেন।
ধর্মের চেয়েও রাক্ষস সমাজ এর শক্তি বেশী,তারা ধর্মকে পাল্টাতে পারে।
এমন লেখায় মন খারাপ হয়
হতাশ দৈত্য হয়ে মেরে ফেলতে চায়।
আগুন রঙের শিমুল
দাদা (3
স্বপ্ন
রাক্ষসরা খুবই খারাপ, কাঁদায় সবাইকে।
আগুন রঙের শিমুল
দুঃখ করোনা , বাঁচো 🙂
ব্লগার সজীব
বহু, বহুদিন পর এক মাঝরাতে মাঝখানে দুই দুইটা মহাসগরের দুরত্বে বসে ম্যাজিশিয়ান বুঝতে পারে পরীর চোখ গুলো অত লাল ছিলো কেন, সেই ভোরে।
কান্নায়।…………… পরীকে যেন দেখতে পেলাম ভাইয়া (y)
আগুন রঙের শিমুল
আচ্ছা 🙂 আমি মেলাদিন দেখিনা 🙁
নুসরাত মৌরিন
কেন প্রেমের গল্পগুলো অপ্রেমের হয়ে যায়।
কেন রাক্ষস এসে সব স্বপ্ন ছিঁড়ে খুড়ে দেয়!!
🙁
আগুন রঙের শিমুল
🙁
শিশির কনা
এমন সব রাক্ষস আছে বলেই প্রেম যে কত মায়াময় তা বুঝা যায়। ভালো লেগেছে শিমুল ভাই।
আগুন রঙের শিমুল
থ্যঙ্কু শিশির কনা 🙂
ছাইরাছ হেলাল
এ সব লেখা কোথায় ছিল এতকাল?
আরও চাই।
আগুন রঙের শিমুল
ছিলো কোন অন্ধকারে অথবা কোন আলোর গভীরে 🙂
লীলাবতী
ভালোবাসার দিনে,ভালোবাসার লেখা দিবেন,দিলেন অপ্রেমের গদ্য।অবশ্য ভালো লেগেছে 🙂
আগুন রঙের শিমুল
প্রেমে অপ্রেমে ডুবে থাকি নিরন্তর লীলাবতী
নীলাঞ্জনা নীলা
অনেক সময় ম্যাজিশিয়ানও ভুল করে দেখতে।একাকী নিঃসঙ্গ থাকে পরী।
আগুন রঙের শিমুল
ম্যাজিশিয়ান ঈশ্বর নয় 🙂