দ্বিতীয় জনের আর একটি গল্প , স্যারের কাছে শোনা ।
একবার কী হল — সে ঠিক করল ভূত পুষবে , বেশ তো কেউ নিষেধ করেনি , তা বাবা তুমি ভূত কেন ব্রহ্মদৈত্য ও পুষতে পার । এখন প্রাথমিক সমস্যা হল ভূত তো হঠাৎ পড়ে পাওয়া দু’আনা বা চৌদ্দআনা গোছের বস্তু না বা চাইলেই পাওয়া যায় এমন কিছু । যাই হোক কী করে না করে ভূত একটি সে জোগার করেই ফেলল এবং ভূতের সাথে এই মর্মে একটি অলিখিত চুক্তিতে উপনীত হল যে ভূতটি পোষ মানবে কিন্তু পোষ মানবে না । এ রকম ও যে চুক্তি হয় তা জীবনে প্রথম শুনলাম । যাক আমার কোন সমস্যা নেই , যার পাঠা সে ঘাড়ে বা লেজে যেখানে কেটে খুশি থাকুক ,তা থাকুক না । অপেক্ষায় থাকলাম দেখিনা কি হয় টাইপের । কয়েকদিন পরে আবার দেখা , বেশ ঝিম ধরা ভাব , জানাল বেশ ভালই চলছে ভূতের সাথে বসবাস , যদিও অধিকাংশ ব্যাপারেই দ্বিমত , তা সত্বেও বহু ভাষাবিদ জ্ঞানী ভূতটি যখন যে বইপত্র দরকার তা এনে দিতে কাল-বিলম্ব করে না । আবার তর্জমার কাজটিতেও ভালই পারঙ্গম । ভাবছি এবারে কিছুদিন ফ্রানৎস কাফকা পড়ব । মনে মনে প্রমাদ গুনলাম । এ যাত্রায় কথাবার্তা এখানেই শেষ । এর বেশ কিছুদিন পর তাকে আবিষ্কার করি হাসপাতালের বেডে , প্লাস্টার করা হাতটি গলায় ঝোলান । আমি কাছে গেলে আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল এবারে সে ঠিক করেছে সন্ন্যাস নিয়ে হিমালয়ে গিয়ে কিছুদিন থাকবে সন্ন্যাসীদের সাথে , এ লাইনে আমার কোন পরিচিত কেউ থাকলে যেন তাকে জানাই । এ গল্প শোনার পরে আমরা ভেবেছি , যে মানুষ এই সব উন্মাদ নিয়ে চলে-ফেরে সে কি পুরোপুরি ঠিক আছে ? সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি আমরাও। উত্তুঙ্গ উত্তম্মন্যতা ছাড়াই স্যার ছিলেন অভেদ্য উচ্চতায় আমাদের কাছে ।
২০টি মন্তব্য
বনলতা সেন
ভুত পালার কথা জীবনে এই প্রথম শুনলাম। মরালের জবাব নেই ।
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন ভূতদের কিন্তু আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না ,
ইচ্ছে বা অনিচ্ছায় ।যদিও হ্যানডেল করা বেশ ঝামেলার ,
তারপর যদি পড়ার বিষয় হয় ‘কাফকা’ তাহলে বেশ কঠিন ব্যাপারটি ।
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা হা , হাসি পেলো খুব ।
কিছু মানুষ থাকে এমনি , তবে এরা নিজের মনেই চলে , ক্ষতি করেন না তেমন।
হিমালয়ের আইডিয়াটা খারাপ না , এত জটিলতা নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে সন্যাসি হয়ে যাওয়া উত্তম।
” যে মানুষ এই সব উন্মাদ নিয়ে চলে-ফেরে সে কি পুরোপুরি ঠিক আছে ? সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি আমরাও। উত্তুঙ্গ উত্তম্মন্যতা ছাড়াই স্যার ছিলেন অভেদ্য উচ্চতায় আমাদের কাছে ।”’ — দারুন উপলব্দি ।
ছাইরাছ হেলাল
সন্ন্যাস নিতে পারলে মন্দ হয় না , যদিও হিমালয় ব্যাপারটি বেশ কঠিন ।
স্যারের কথা বলে শেষ করা যাবে না ।
শিশির কনা
ভুত কে পালা , এই চিন্তা মানুষের মাথায় আসে কিভাবে ? ওরে বাবা …………
ছাইরাছ হেলাল
ব্যাপারটি কিন্তু মন্দ না , কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই কাজটি করতে হয় । তাছাড়া পড়াশোনার জন্য যে পরিমাণ বইপত্র দরকার তা ভূত বাবাজি সাহায্য ছাড়া সংগ্রহ করা সম্ভব নয় কোনভাবেই , যেমন ধরুন এই মুহূর্তে বিনয় মজুমদারের নির্বাচিত কবিতার বইটি দরকার , সেটি যেহেতু পাওয়া যাবে না তাই ও ওই শেষ ভরসা ।
লীলাবতী
এমন উল্টা পাল্টা চিন্তা করার মানুষও আছে দুনিয়ায় ? 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আরে , আপনি উল্টা পাল্টা বলছেন কেন !
কতটা প্রয়োজনীয় সেটিও একবার ভেবে দেখুন ।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
প্রজন্ম ৭১
এধরনের মানুষ কিন্তু ভীষণ সহজ এবং সরল হয়। একান্ত অনুভুতি তে মুগ্ধ ।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই অনেক অনেক সহজ সরল না হলে এমন করে ভাবতেই
পারত না । ধন্যবাদ ।
"বাইরনিক শুভ্র"
আমিও ঘাড়ে ভুত নিয়ে ঘুরে বেড়াই ।
ছাইরাছ হেলাল
বাহ্ , আপনি অনেক ভাগ্যবান , তা ঘাড়টি যথাস্থানে আছে না কী উল্টে
আছে তা পরীক্ষা করে দেখবেন কিন্তু ।
সোনিয়া হক
ভুত কিন্তু আছে , বিশ্বাস করুন বা না করুন। ভুত বাস করে আমাদের মনে। লেখা ভালো লেগেছে ।
ছাইরাছ হেলাল
যাক, ভুত আছে তাহলে । তা সে যেখানেই থাকুক ।
আপনাকে ধন্যবাদ । নিয়মিত পড়ার জন্য ।
মশাই
এ আমি কোথায় এসে পরলাম ???? এ দেখি পূর্বে লিখিত আমার বর্তমানের কথা??? এ কি করে সম্ভব?
ছাইরাছ হেলাল
হা হা , কত কিছুই না ঘটে ।
মশাই
ঘটুক যা ইচ্ছা তবে সব যেন আবার বলে দিবেন না হ্যা।
ছাইরাছ হেলাল
কিছুই বলা হবে না , এ আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন ।
অরুনি মায়া
আমারও একটা পোষা ভূত ছিল, কিন্তু রাগ করে চলে গেছে | কতদিন অনুভব করিনা তাকে 🙁
ছাইরাছ হেলাল
যাক, আপনার ও একটি ভূত ছিল?
সব ই দেখছি ভূতময়।