সতেরো – অহমের প্রতি
দেখ মেজাজ বিগড়ে দিসনা আমার । প্রিয়’র ভাগ্য ভালো যে আমার মতো বৌ ওর কপালে জুটেছে ।
এতো ব্যস্ততা কিসের রে ? চাকরী তো আমিও করি । আবার সংসারও চালাতে হয় । প্রিয়টা না এখনও সেই আহ্লাদী টাইপের থেকে গেছে । আর খুব অপরাধে ভোগে । আচ্ছা তুই-ই বল , সন্তান ছাড়া কি অসম্পূর্ণ থাকে জীবন ? অনেক বোঝাই । সন্তান না থাকুক , প্রিয়’র এই আহ্লাদীগুলো আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থাকলেই হলো ।
তুই না আমাকে আজকাল বেশী ট্র্যাজিক চরিত্র করে দিচ্ছিস । সামনে পেলে তোকে কাঁচা খেতাম , বুঝলি রে ছাগল ?
তোর তিরি
আঠারো – তিরির প্রতি
এই ঘটনা কি ? আসল কথা এড়িয়ে গেলি যে ? কোন মেয়ে যে দেখে রেখেছিস আমার জন্যে , তার কিছুই বললি না যে ! কবে থেকে এসব দু’ নম্বরী শিখেছিস রে ?
যাক এবারের মতো ছেড়ে দিলাম , সব নাড়ী-নক্ষত্র যদি না জানাস , তোকে তেলাপোকা ভেঁজে খাওয়াবো ।
শুনুন চাকুরীজীবি গিন্নী , ইহা হইলো প্রবাস । এক সেকেন্ডের দেরী হইলেই আধা ঘন্টার বেতন চেক-এ যোগ হয়না । আপনাকে বাঁচাইতে অনেকেই ঢাল হইবার জন্য রহিয়াছে , মেয়েদিগের তো উহাই সুবিধা হে মাতা ।
তোর অহম
উনিশ – অহমের প্রতি
এই দেখ , আমি সময়ের এদিক-ওদিক কখনোই করিনি , আর কোনো সুবিধা কারোও থেকে নেইনি । শয়তান তুই কখনো দেখেছিস এমন করেছি আমি ?
আর শোন কিভাবে যে বলবো তোকে ! পরমা মানে ওই মেয়েটি , যাকে দেখে রেখেছিলাম । বিয়ে করে ফেললো । ওর নাকি আগে থেকেই সম্পর্ক ছিলো । অথচ আমি কিন্তু জিজ্ঞাসা করেছিলাম , তোর কথা বলেছিলাম । পরে আমায় বলে , ওর বয়ফ্রেন্ডের সাথে বিশাল অভিমান চলছিলো , ওকে দেখাতেই এমন করেছিলো । পরমা আর ওর বরের সাথে দেখা হলো । ওর বরের সামনেই বললো কথাগুলো । ভালো লাগলো আজকাল এতো গোপনীয়তা ছড়ানো স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে , সেখানে ওরা সবকিছু শেয়ার করে । তবে প্রিয় আর আমার মধ্যেও তো গোপন বলে কিছু নেই ।
শোন এই নিয়ে যদি আমায় বিদ্রূপ করিস , তাহলে কিন্তু আর চিঠি-ই লিখবো না ।
তোর তিরি
বিশ – তিরির প্রতি
হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা । আমি কি করবো বল তো ? এতো হাসি এলে কি করে আটকায় , জানা নেই । ঘটকি রে তোর দৌঁড় আমার জানা আছে । আর মেয়ে দেখবি আমার জন্যে ? বহুদিন পর এমন প্রাণ খুলে হাসলাম রে । তুই শুনলে সেই আগের মতো বলতি , “দৈত্যের মতো হাসির শব্দ , কেউ তোর প্রেমে পড়বে না ।” তার এক সপ্তাহের মধ্যেই উপমা ডুবলো । এই রে এখনকার মেয়েটার কি নাম জানি ! পরমা !! এসব হচ্ছেটা কি ? আমি আসলেই অবাক !
যাক বাঁচলাম তুই আর আমায় চিঠি লিখবিনা । চিঠির মধ্যে যে পারমাণবিক বোমা ছুঁড়িস , তার থেকে তো মুক্তি পেলাম ! হে ঘটকিনী আপনি ভালো থাকুন মা জননী । অনুগ্রহ করিয়া বেচারা প্রিয়’র উপর আপনার উচ্চস্বরের বাক্যবাণ ছাড়িয়া উহাকে আঘাত করিবেন না । আহ কি শান্তি ! ওঁম শান্তি !!
আপনার অহম
ক্রমশ প্রকাশ্য
২০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
সত্যি অদ্ভুত চিঠির আন্তরিক ভাষা , মনে হয় সত্যি যেন দু;জন কাছে বসে
একে অন্যের সাথে কথা বলছে ।
বেশ মায়াময় অটুট বন্ধনের বন্ধন ।
নীলাঞ্জনা নীলা
যখন লেখা শুরু করেছিলাম , ভাবিনি ভালো লাগবে সকলের…আমি জানি না যেদিন শেষ অংশটা তুলে দেবো , সেদিন কেমন লাগবে সকলের… 🙂
ব্লগার সজীব
বুঝলাম , তবে একদম শেষে , আপনার অহম হলো কেনো ? ওম শান্তি ওম 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
আমরা বন্ধুদের সাথে মাঝে-মধ্যে দুষ্টুমী করে আপনি বলিনা ? আমি-ই তো আমার বান্ধবীকে বলি হে মা জননী আপনাকে পেন্নাম হই…সেভাবে লিখলাম…হুম শান্তি নাই কোথাও… ^:^
লীলাবতী
লেখা শিখছি আপনার লেখা পড়ে।
নীলাঞ্জনা নীলা
তাই বুঝি ? আমি তো সকলের সহজ-সাধারণ কথা থেকেই কথা সাজাই…আমার শিক্ষক তো মন্তব্য করা সবাই… 🙂
জিসান শা ইকরাম
কিভাবে লিখেন এমন করে ? মনে হয় বাস্তবে দেখছি দুজনকে ।
নীলাঞ্জনা নীলা
টাইপ করি ল্যাপটপে…মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে আর ফন্ট হলো অভ্র…বাস্তবেই তো নানা…আপনি আর আপনার নাত্নী… 😀
শুন্য শুন্যালয়
উপমা, পরমা বলে আসলে কেউ নেই তাই না আপু? তিরির কথা আরো লিখুন. কেনো সে এমন করে?
নীলাঞ্জনা নীলা
আছে গো আছে…কল্পনার মানবী নয়..তিরির কি কথা বলবো ? যা শুনতে চাইবে , সেটাই বলবো…কিন্তু প্রশ্ন বুঝিনি কি করে তিরি ? ;?
শুন্য শুন্যালয়
অহমের জন্য তিরির এই টানটা শুধুই বন্ধুত্ব নয় বলে মনে হয়, তবু যেনো সে নিজেকেই দ্বিধায় ভেঙ্গে ফেলতে চায় …
নীলাঞ্জনা নীলা
নাহ নিখাঁদ বন্ধুত্ত্ব…প্রেমের মতো স্বার্থপর সম্পর্ক নয় । ছেলে-মেয়ে কি এমন বন্ধু হয়না ?
মশাই
আবার আমাকে আগের সবগুলো পর্ব আগে পড়তে হবে আউলিয়ে ফেলেছি সব। আবার প্রথম থেকে পড়তে হবে আমাকে। ^:^
নীলাঞ্জনা নীলা
ইস বড়োই বিরক্তিকর ! তাই না ? 🙁
মশাই
বিরক্তকর না আসলে আফসোস বলতে পারেন। আসলে আগের গুলো পরা হয়নিতো তাই মূল চিত্রকল্পটি ছুতে ব্যর্থ হয়েছি তবে হ্যাঁ ঠিকই পড়ে নিবো সময় করে। না পড়ে ছাড়ব না তাও বলে দিলাম হ্যা।
নীলাঞ্জনা নীলা
হাহাহাহাহা…বেশ মজা পেলাম মন্তব্যে , সাথে অবশ্যই ভালো লাগাও 🙂
খসড়া
(y)
নীলাঞ্জনা নীলা
:T \|/
স্বপ্ন
” যাক এবারের মতো ছেড়ে দিলাম , সব নাড়ী-নক্ষত্র যদি না জানাস , তোকে তেলাপোকা ভেঁজে খাওয়াবো । ”
:D) :D) এক কথায় অসাধারন । এত সুন্দর এবং আন্তরিক সম্পর্ক আসলেই কি হয় ? অপেক্ষা করবো পরের পর্বে তিরির পারমানবিক বোমা নিক্ষেপনের ।
নীলাঞ্জনা নীলা
তেলাপোকা ভাঁজা শুনে এতো খুশী ? 😀
আন্তরিকতা মনের ব্যাপার…আর পারমাণবিক বোমা অবশ্যই থাকবে , তিরি বড়োই ভয়ঙ্কর মেয়ে…
ভয় পাই আমি নিজেই… 🙁