
২০ জুন–অরুকথা/অরুণিমা মন্ডল দাস
আজ রবিবার । আজকের দিনটা মোটামুটি ভালো কাটল। সকাল সকাল পাখির ডাকের মধ্যেই কেমন কেমন “বিবাহিত বিবাহিত শব্দ ভেসে উঠছিল। কাজ সেরে ভগবানের নাম শুনলাম। খুব ফ্রেস লাগছিল । আজকে রবিবার । রোমান্টিক ওয়েদার । বর আলাদা রুমে। বিবাহিত প্রেম সংসারের রসে মাতা বৌ বৌ ব্যাপারটা আমার মধ্যে ঠিক হয়ে উঠে না। তবে আজকে বর খোঁচায় নি। ঝগড়াটা কম । মারামারি হয়নি। আলাদা রান্না করলেও আমার প্রতি দয়া হল ।
আজকেএকটু ভালো কাটালাম। আমার যৌবনের দশ বছর কল্পনা করে ভেবে ভেবে কাটল। রোমান্টিক কোন সিনেমা দেখে ভেসে বেড়াতে খুব ভালো লাগে।
আগের দিনগুলো বিয়ের প্রথমের দিনগুলো মনে পড়ে গেল। একসংগে খাওয়া । স্বামীর বুকে মাথা রেখে ঘুমানো এগুলো সব ই একটা মেয়ের জীবনে ভোলার নয় । যতই অসুখী জীবন হোক না কেন অটুকু সুখ সবার জীবনেই আসে।
ঘুমঘুম চোখ। আবছা আবছা বৃষ্টি । ছুটে যাওয়া জল । তাঁর রোমান্সে থইথই মন ভিজে যেন একাকার।
বিয়ের পরের দিনগুলো দিনগুলো প্রতিটি মেয়ের জীবনে স্মরণীয় । অরুর মন্দিরে বিয়ে। কেউ মানে না । তবু বিয়ে । বাচ্চা সংসার । সংসারের কাজ। মারধর । যন্ত্রণা।
সবকিছুই আছে।
চারিদিকে রিমঝিমিয়ে বৃষ্টি । বিবাহিতদের প্রেম বলতে গলায় জোর ফাঁস । আস্তে আস্তে চাঁদের বেরিয়ে আসা । নিঝুম শান্ত রাতের আকাশ। শুধুই দীর্ঘশ্বাস। মাঝে মাঝে ব্যাকুল বাতাস মনকে আনচান করিয়ে দেয় ।
কেন যে কবি কবি মনটি সুকান্ত হয়ে ওঠে নির্লজ্জভাবে বুঝতে পারি না । কোমল পাথরগুলো শক্ত পাষান এ মাথা ঠুকরে কাঁদতে থাকে। তবু কোকিলের সংগে গান গাইতে গাইতে ডিমপাড়া আর হয়ে ওঠে না ।
বৃষ্টি ঝমঝমিয়ে কাঁপলে আজ আর ভালো লাগে না কেমন উদাস হয়ে গেছে ভাঙা মন।
হিংসা আর অত্যাচারের আগুনে সব আশাগুলো ছাই হয়ে গেছে।
অর্থ যে সব সেটা শ্বশুড়বাড়ি র লোকেরা আঙুল চোখে দিয়ে দেখিয়ে দেয় । রোজ এক দিন কাটাতে হয় বলে কাটাই বাঁচতে হয় তাই বাঁচি।
মরে গেলে পুড়িয়ে আর একটা বিয়ে করে নেবে। আবার নতুন সংসার করবে। প্যানপ্যান সোহাগরাত আর সংসারের নতুনত্ব গন্ধের প্রথম চারমাসের ন্যাকামি।
আমার আর ছোটবেলা র দিন মনে পড়ে না মাকেও না বাবাকেও না। মনে হয় আমি একা একা ই পৃথিবীতে এসেছি। আমার কেউ নেই । গাছ গুলো আকাশগুলো পাতাগুলো বৃষ্টিগুলো ই আমাকে ভালোভাবে চেনে বৃষ্টির শব্দগুলো ছাড়া কেউ ই আমাকে ভালোভাবে চিনল না।
আমার আমি কে? চিনতে পারছি না ছোটবেলায় চিনেছিলাম এখন হারিয়ে ফেলেছি।
সেই স্কুল ,বান্ধবীর দল,টিফিন, লাইন মারা , আমি না বান্ধবীদের লাইন মারা দেখতে খুব ভালো লাগত। কেমন একটা ফুরফুরে আবহাওয়া ঘুরে জীবনের আশপাশ।
এখনকার বিবাহিত বেকার বোরিং আর ভালো লাগে না। সংসার জিনিসটাই বিষাক্ত মনে হয় । বিরক্তিকর অসহ্য নরক মনে হয়।
৯টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
ঐজিবন আর আসিবে না। এখন সময় ও জীবন উপভোগ করাই মক্ষম।
অরুণিমা মন্ডল দাস
যা বলেছেন। ঠিক কথাই বলেছেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
পরিবর্তনই জীবন। সবসময় এক রকম চলা হয় না বলেই হয়তো আমরা আগের রোমান্টিক সময় গুলো মিস করি।
আজকের দিন ভালো কেটেছে দোয়া করি বাকি দিনগুলোও ভালো কাটুক। শুভ কামনা সবসময়
মনির হোসেন মমি
এ সমাজ কখনোই নারীর পক্ষ হয়ে কথা কয়না যদি সঠিক হয় তাও না।তাই সংসারের সকল বিড়ম্ভনার মাঝেও নারীকে মানিয়ে নিতে হয় সয়ে যেতে হয়।আজকের দিনটির মত আগামী দিনগুলোও ভালো কাটুক।শুভ কামনা নিরন্তর। শুভ বিবাহ বার্ষীকি।
রেজওয়ানা কবির
জীবন পরিবর্তনশীল তাই মানুষের জীবনে অনেক চড়াই উতরাই পারি দিতে হয় সবকিছু উপেক্ষা করে তবুও ভালো থাকার চেষ্টা করতে হয়, এটাই জীবন। শুভকামনা ।
আলমগীর সরকার লিটন
খুব আকার্ষণ লেখেছেন দিদি অনেক শুভেচ্ছা রইল
আরজু মুক্তা
একটা দিন ভালো মানেই। নতুন দিনের হাতছানি।
হালিমা আক্তার
জীবনের প্রতিটি ক্ষণ এক রকম যায় না। পিছনে পড়ে থাকা সোনালী অতীত মাঝে মাঝে স্মৃতিকাতরতা করে দেয়। আমরা সেই সুখ অনুভুতি উপভোগ করে দুঃখের সাগরে ভাসি । শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অবুঝ সময়ে সবাই ভালো থাকে কারণ তখন কোনো সমস্যা গায়ে আঁচড় কাটতে পারে না বোধ বুদ্ধি তেমন প্রখর না থাকার জন্য। তাইতো এখন বুঝি ঐ সময় টা কত ভালো ছিল, নির্ঝঞ্ঝাট ছিল। ভালো থাকুন নিরাপদে থাকুন শুভকামনা অবিরাম