
পুরো রুমে আতরের আত্মারা কেবলই ভেসে ভেসে খেলা করছে। নিশ্বাসে বুকের ভেতরের নাড়িভুড়ির গন্ধগুলোও নিমেষেই নিঃশেষ হয়ে গেছে। পেট ফুলে ফেঁপে কথার তালে তালে শ্বাসপ্রশ্বাস সংগ্রহশালার যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তাতেও সুগন্ধি আতরের সুগন্ধ বিদ্যমান।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গুনগুনিয়ে গান গেয়ে গেয়ে মাথায় চিরুনি করছে। আর আড়ালে আবডালে নিজের চোখে চোখ রেখে মুচকি হাসি হাসছে। আর আমি মিটমিট করে তাকিয়ে কান্ডকারখানা দেখতে ব্যস্ত। বিমূর্ত রোমাঞ্চকর এ মূহুর্ত আর হয়তো কপাল রেখায় জুটবে না।
আলনায় খোঁজাখুঁজি করছিলো। বেশ বিরক্ত হয়েই খোঁজাখুঁজি করছিলো। কিন্তু পাচ্ছিলো না। মুখের চাদরে মুড়িয়ে থাকা গোপন কথাগুলো তখন মিউমিউ করে শোনা যাচ্ছিলো। ইস্ রে! কোথায় যে রাখলাম? এখানেই তো রেখেছিলাম। গেলো কোথায়? সময়তো নেই যে খোঁজাখুঁজি করবো।
হিমুর রঙিন মুখটা চুপসে গেলো নিমেষেই। বিরক্তের আবছা আলোয় হাসিমাখা মুখখানা অবিকল জোৎস্নার অপেক্ষায় পাহারাদারের মতো দেখা যাচ্ছিলো। কখন জোৎস্না উঠবে আর সে আলো মেখে হলুদ হবে। আমার শুধু দেখার অনুমতি আছে কিন্তু সাজার…।
হঠাৎই বিছানা থেকে লাফিয়ে পড়ার টেবিলের কাছে আসলো। টেবিলের ড্রয়ার খুলতেই একচক্ষু মাতাল হাসি বর করলো হিমুর ঠোঁটে। সে দৃশ্য দেখার অভাবে অভাগী এই মহাবিশ্ব। কিন্তু আমি…। আহা! ভুলিতে পারিনা কোনমতে।
হলুদ পাঞ্জাবি আর ক্ষয় হয়ে ছিঁড়ে যাওয়া ছেঁড়া মানিব্যাগে বের হলো হিমু। কিছুক্ষণ পর কলিং বেল বেজে উঠলো। দরজার ছিটকিনি খুলতেই দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে পড়লো। উমা! এ আমি কাকে দেখছি? হিমুর হাতে হলুদ ফুল।
চোখদুটো দু’হাতের আঙুলে ঘষাঘষি করে দেখলাম না আমি ভুল কোনকিছু দেখিনি। যা দেখেছি ১০০০০০০০% সত্যিই দেখেছি। শুধু জিজ্ঞেস করলাম – এজন্যই কি ভোর বেলায় বাইরে বের হয়েছিল?
হিমু বললো – হু।
হিমুর পড়ার টেবিলে ডায়রির পাতাগুলো ফ্যানের বাতাসে ঘুরপাক খাচ্ছে। ডায়রিটা দেখতে লোভ হলো আমার। ডায়েরিটা হাতে নিয়ে দেখি একটা পাতা ছেঁড়া। কিন্তু অপর পৃষ্ঠার পাদদেশে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে – তোমার জন্য আমি হিমু হব। হলুদ পাঞ্জাবি পরে সারারাত খালিপায়ে রাস্তায় হাঁটবো। বাদল দিনে একগুচ্ছ কদম ফুল এনে তোমার হাতে দেব। তুমি কি আমার রূপা হবে?
১৪টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
বাহ ! মুগ্ধ পাঠ,
হিমু এমন করে বললে রূপা হবেনা কেনো?
শুভ কামনা।
নৃ মাসুদ রানা
হুমম, হতে হবেই। নইলে তো শব্দগুলোর মান থাকে না..
এস.জেড বাবু
অবশ্যই রূপা হবে।
দরজার ছিটকিনি খুলতেই দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে পড়লো। উমা! এ আমি কাকে দেখছি? হিমুর হাতে হলুদ ফুল।
অনেক মুগ্ধ হয়ে পড়েছি।
ভাল লাগল ভাই
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়…
বন্যা লিপি
অনেক ভালো লাগলো হিমুর হাতে হলুদ ফুল।
রূপা না হয়েই যায়না!
নৃ মাসুদ রানা
তাই, তাহলে হয়েই যাবে। হিমুকে নিয়ে ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার আগ্রহ আমার। এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই।
এস.জেড বাবু
আরে বাহ্
দোয়া রইলো ভাইজান। বই কিন্তু চাই আমার।
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার গল্প। পাঠে মুগ্ধতা অশেষ
হিমু হাতে হলুদ ফুল
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয় । হিমুকে নিয়ে ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার আগ্রহ আমার। এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই।
সুরাইয়া পারভিন
ওয়াও দারুণ খবর
অভিনন্দন সহ শুভকামনা রইলো
ছাইরাছ হেলাল
হিমুর তো দেখছি দারুন প্রভাব।
সুন্দর লেখা।
নৃ মাসুদ রানা
জ্বি, হিমুকে নিয়ে ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই।
পর্যায়ক্রমে গল্পগুলো পেয়ে যাবেন আশাকরি ইনশাআল্লাহ..
শিরিন হক
হিমুর প্রেমে একসময় যে পড়েনি সে জানবেনা হিমুর হাতে হলুদ ফুল কতটা সুন্দর।
আপনার হিমু ও ভালো ভলো লাগলো।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়, হিমুকে নিয়ে আমার লেখা আরও একটি গল্প রয়েছে। এছাড়া এই ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি ইনশাআল্লাহ। এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই। আশাকরি পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ।