মোবাইল ফোন আমাদের জীবনে এক অভিনব এবং বৈজ্ঞানিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। জীবনকে দিয়েছে গতিশীলতা। বিশ্বকে নিয়ে এসেছে হাতের মুঠোয়। স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মানুষকে নিকট থেকে নিকটে নিয়ে আসছে। স্কাইপে, ইমো, ভাইবার, ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটস আপ, টুইটার, গুগল সহ বিভিন্ন এপ্যাসে মানুষকে একটা সামাজিক গণমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ার আওতায় নিয়ে এসেছে। এই সোশ্যাল মিডিয়া কি শুধু আমাদেরকে সামাজিকতার সুন্দর বন্ধনে আবদ্ধ করছে নাকি অন্য কিছু ?
আসলে সোশ্যাল মিডিয়া ক্রমশ আমাদেরকে আন সোশ্যাল করে দিচ্ছে ! এখন আমরা আর কারো বাড়িতে বেড়াতে যাইনা বরং মোবাইল / টেলিফোনে কথা বলে সব দায়িত্ব সেরে ফেলি অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়াতেই সব কাজ সেরে ফেলি। পরীক্ষায় পাশ, স্কুলে ভর্তির জন্য আমরা দোয়া চাই। দোয়া চাই অসুস্থ ব্যক্তির জন্য। তাঁর শারীরিক উন্নতি বা অবনতির আপডেট হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। মৃত্যুর মতো দুঃসংবাদ এখন মোবাইল বা টেলিফোনে খুব একটা জানাতে হয়না। তা সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে জানা যায় অতি সহজেই । ওখানেই আমার তাঁর বিদেয়ী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। ইচ্ছে হলে জানাজায় অনেকে উপস্থিত হয় অনেকেই হয়না। আপনার পদোন্নতি, নতুন ব্যবসার খবর বা বিভিন্ন খবর নিমিষেই সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।
পৃথিবীতে নতুন মানুষের আগমন, জন্মদিনের শুভেচ্ছা বিনিময় এই মিডিয়াতেই হয়ে যায়। কষ্ট করে কেক কাঁটার অনুষ্ঠানে এখন না গেলেও হয় আবার অনেকেই আগের মতো দাওয়াতও দিতে চায়না। পরিবারের দু’চার জন সদস্য মিলে রাত বারোটায় কেকটা কেটে তাঁর ছবি পোস্ট করলেই হয়। যারা তাঁর আত্মীয়ের বা পরিচিতদের বিয়েতে দাওয়াত না পেলে কোন ক্ষতি নেই তাঁর ভিডিও বা ছবি নিমিষেই আপনার চোখের সামনে চলে আসছে।
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন ঘরে মেহমানের আগমন এবং রোগী দেখতে যাওয়ার অফুরান সওয়াবের কথ ইরশাদ করেছেন। কিন্তু মেহমান খুব একটা আসেনা আবার কষ্ট করে আপনাকে রোগীকে দেখতে তাঁর ঘরে বা হাসপাতালেও যেতে হচ্ছেনা। আপনার সব মুশকিল এহসান করে দিচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। আমার ব্যাক্তি, পরিবার আর সমাজ জীবনে এর বিরাট বিশাল প্রভাব পড়েছে।
আমরা এখন সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া বলতে গেলে একেবারেই অচল। মৃত্য , বিয়ে বা অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়া কারো সাথে আর কারো খুব একটা দেখা হয়না। ভুল বলছি দেখা হয় —- আমাদের একজনের সাথে আরেকজনের প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়াতে রিয়েল নয় ভার্চুয়াল। ভাব বিনিময় হয়, শুভ কামনা জানানো হয়, শুভ সকাল আর শুভ রাত্রি বলে দিন শেষ করা হয় এই ভার্চুয়াল জগতে ।
আমরা ছবি কথা শেয়ার করি পোষ্ট দেই। লাইক দেই । কমেন্ট করি ।আহা ! উঁহু করি! এ পর্যন্তই সবার দায়িত্ব আর কর্তব্য কিন্তু রিয়েল বা বাস্তব জীবনে সেই আন্তরিকতার, স্নেহ-ভালোবাসার, সুখ-দুঃখের আর শ্রদ্ধার বন্ধনগুলো দিন দিন আলগা হয়ে যাচ্ছে । পারস্পরিক সম্পর্কের ভাটা পড়ছে। আমরা একে অপরের থেকে বাস্তবে দূর থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি বন্ধনের রোমে রোমে ঘুণে ধরা সমাজের পচন ধরেছে ফলশ্রুতিতে চলছে সম্পর্কের ঠানাপোড়েন আর ঘাত-প্রতিঘাত। আমরা একাট্টা আর খুবই সোচ্চার ভার্চুয়াল জগতে, সোশ্যাল মিডিয়াতে।
রিয়েল জগতে আমরা একে অপরের থেকে ক্রমশ দূরে অনেক দূরে সরে যাচ্ছি যেন এক একটা আলাদা নির্জন দ্বীপ। হয়তবা এমন একদিন আসবে হায়তবা হায়ত মউত বিয়েতেও আর স্বশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন পড়বে না। বিজ্ঞান আমাদের জীবনে এনে দিয়েছে গতি আর বেগ আর নিয়ে যাচ্ছে সহানুভূতি, সহমর্মিতা আর আবেগ।
নিশ্চয় ক্রিয়ার বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে
কিন্তু আধুনিকতা সম্পর্কের বন্ধন এতোটাই শিথিল করে দিচ্ছে যে
কল্পনা করতে গেলেও হৃদয় সিক্ত হয়ে ওঠে।
মুগ্ধতায় শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা নিরন্তর।
জ্বি, প্রতিটি ক্রিয়ার বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। আমাদের মানবিক, সামাজিক, ব্যক্তি আর পারিবারিক সম্পর্কগুলোর কথা চিন্তা করলে তা খুবই দুঃখজনক বিষয়। ধন্যবাদ সুন্দর প্রতিক্রিয়ার জন্য।
আমরা দিনে দিনে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছি এই সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করার জন্যই। পান থেকে চুন সব খবর এখানে জানানোর জন্য পোষ্ট করি কিন্তু নিজেদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন এদের খবর নেয়ার সময় পাচ্ছিনা। লোক দেখানোর তাড়না আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
একসময় বিজ্ঞান আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল কিন্তু আমরা তাকে একটু একটু করে অভিশপ্ত করে তুলেছি। ভার্চুয়াল জগত টাকে এখন আমরা নোংরা করে ফেলেছি। আপনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ খুব ভালো লাগে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা নিরন্তর। শুভ রাত্রি
সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতার তুলনায় অপকারিতা বেশি। এটি আমাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে আমাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে। আমি ফেসবুকের অনেক আইডির কথা জানি, যারা নিজেদের পরিবারের সবাইকে ব্লক করে রেখেছে যাতে তাঁর পরিবারের কেউ যেন তাঁর কার্যকলাপ দেখতে না পায়। কাদের সে বন্ধু ভেবে দিন রাতের অধিকাংশ সময় ব্যয় করছে?
সামাজিক কর্মকান্ড হতে দূরে সরে যাচ্ছে সবাই। ফেসবুকে দুই একটা স্ট্যাটাস, মন্তব্য লিখে সামাজিকতা সম্পন্ন করছে।
মূল্যহীন মোহ সবার মূল্যবান সময়, মেধা শেষ করে দিচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আপনার মূল্যায়নটি দুঃখজনক এবং হতাশাজনকও বটে — আমি ফেসবুকের অনেক আইডির কথা জানি, যারা নিজেদের পরিবারের সবাইকে ব্লক করে রেখেছে যাতে তাঁর পরিবারের কেউ যেন তাঁর কার্যকলাপ দেখতে না পায়। কাদের সে বন্ধু ভেবে দিন রাতের অধিকাংশ সময় ব্যয় করছে?
ভালো আর সুস্থ থাকবেন। শুভ কামনা ।
২১টি মন্তব্য
সাখাওয়াত হোসেন
চমৎকার বলেছেন ভাইয়া- বিজ্ঞান আমাদের জীবনে এনে দিয়েছে গতি আর বেগ আর নিয়ে যাচ্ছে সহানুভূতি, সহমর্মিতা আর আবেগ।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
নিশ্চয় ক্রিয়ার বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে
কিন্তু আধুনিকতা সম্পর্কের বন্ধন এতোটাই শিথিল করে দিচ্ছে যে
কল্পনা করতে গেলেও হৃদয় সিক্ত হয়ে ওঠে।
মুগ্ধতায় শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা নিরন্তর।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
জ্বি, প্রতিটি ক্রিয়ার বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। আমাদের মানবিক, সামাজিক, ব্যক্তি আর পারিবারিক সম্পর্কগুলোর কথা চিন্তা করলে তা খুবই দুঃখজনক বিষয়। ধন্যবাদ সুন্দর প্রতিক্রিয়ার জন্য।
ছাইরাছ হেলাল
প্রযুক্তির উল্টো দিক সুন্দর করে দেখিয়ে দিলেন,
ভাল এর সাথে কতটুকু অন্য কিছু নেব তা আমাদের ই ঠিক করে নিতে হবে।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
“ভাল এর সাথে কতটুকু অন্য কিছু নেব তা আমাদের ই ঠিক করে নিতে হবে” — খুব মূল্যবান মন্তব্য করেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
যে জিনিস যত ভালো তত মন্দ।
প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে।
সত্যি অসাধারণ লিখেছেন।
পড়ে ভালো লাগল।
শুভকামনা রইল প্রিয়
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনার মূল্যবান মতামতে আমি অনুপ্রাণিত। সুস্থ আর ভালো থাকবনে। ধন্যবাদ।
তৌহিদ
আমরা দিনে দিনে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছি এই সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করার জন্যই। পান থেকে চুন সব খবর এখানে জানানোর জন্য পোষ্ট করি কিন্তু নিজেদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন এদের খবর নেয়ার সময় পাচ্ছিনা। লোক দেখানোর তাড়না আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
শুভকামনা ভাই।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনার সুন্দর এবং মুল্যবান মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ভাইয়া।
রোকসানা খন্দকার রুকু
খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে বললেন ভাই। আমরা সব সেরে নিচ্ছি সোসাল মিডিয়ায়। শেষ জামানায় এমনই হবে।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপা আপনার ছোট্ট অথচ মূল্যবান মন্তব্যে আমি অনুপ্রাণিত। সুস্থ আর ভালো থাকবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
একসময় বিজ্ঞান আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল কিন্তু আমরা তাকে একটু একটু করে অভিশপ্ত করে তুলেছি। ভার্চুয়াল জগত টাকে এখন আমরা নোংরা করে ফেলেছি। আপনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ খুব ভালো লাগে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা নিরন্তর। শুভ রাত্রি
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আমরা নিজেরাই আশীর্বাদকে অভিশাপে পরিণত করছি। পাশাপাশি ভার্চুয়াল জগতকে নোংরা আর অশ্লীলতায় ভরে ফেলছি। আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ দিদি।
আলমগীর সরকার লিটন
নতুন নতুন ভাবনা খুব সুন্দর কবি আলম দা
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
সম সাময়িক বাস্তব কিছু বিষয় নিজের বিবেকের তাগিদে আপানদের কাছে অনভিজ্ঞ লেখায় তুলে ধরার চেষ্টা মাত্র। ধন্যবাদ ভাইয়া।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
সম সাময়িক বাস্তব কিছু বিষয় নিজের বিবেকের তাগিদে আপানদের কাছে অনভিজ্ঞ লেখায় তুলে ধরার চেষ্টা মাত্র। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আরজু মুক্তা
কথা সত্য। সব ডিজিটাল। এখন বেড়াতে গেলেও দোষ। না গেলেও দোষ। আতিথিয়েতা অফ।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন আপা ।
জিসান শা ইকরাম
সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতার তুলনায় অপকারিতা বেশি। এটি আমাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে আমাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে। আমি ফেসবুকের অনেক আইডির কথা জানি, যারা নিজেদের পরিবারের সবাইকে ব্লক করে রেখেছে যাতে তাঁর পরিবারের কেউ যেন তাঁর কার্যকলাপ দেখতে না পায়। কাদের সে বন্ধু ভেবে দিন রাতের অধিকাংশ সময় ব্যয় করছে?
সামাজিক কর্মকান্ড হতে দূরে সরে যাচ্ছে সবাই। ফেসবুকে দুই একটা স্ট্যাটাস, মন্তব্য লিখে সামাজিকতা সম্পন্ন করছে।
মূল্যহীন মোহ সবার মূল্যবান সময়, মেধা শেষ করে দিচ্ছে।
ভালো লেখা।
শুভ কামনা।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আপনার মূল্যায়নটি দুঃখজনক এবং হতাশাজনকও বটে — আমি ফেসবুকের অনেক আইডির কথা জানি, যারা নিজেদের পরিবারের সবাইকে ব্লক করে রেখেছে যাতে তাঁর পরিবারের কেউ যেন তাঁর কার্যকলাপ দেখতে না পায়। কাদের সে বন্ধু ভেবে দিন রাতের অধিকাংশ সময় ব্যয় করছে?
ভালো আর সুস্থ থাকবেন। শুভ কামনা ।