
সামাজিক অবক্ষয় কথাটি এখন বহুল আলোচিত একটি বাক্য। সোস্যাল মিডিয়া, অনলাইন ও প্রিন্ট সংবাদ মাধ্যম, টিভিতে নিত্যদিন খুন, ধর্ষন, রাহাজানি, শ্লীলতাহানি প্রভৃতি খবরে একদিকে সমাজের নারীরা যেমন শংকিত তেমনি সামাজিক দায়বদ্ধ ব্যক্তিবর্গরাও সামাজিক অবক্ষয়ের এমন খবরে নিঃসন্দেহে ভীত ও দিশেহারাবোধ করছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমরা লজ্জিত হচ্ছি, অপরাধী আইনের আওতায় আসছে, সাজা হচ্ছে কিন্তু অপরাধ কমছে না। প্রশ্ন হলো সামাজিক অবক্ষয়ের কারন কি এবং সমাজে এমন নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটছে কেন?
সম্প্রতি (গত ৩০ সেপ্টেম্বর) বরগুনায় দিনেদুপুরে রিফাতকে বর্বরোচিতভাবে কুপিয়ে হত্যার বহুল আলোচিত সেই মামলার রায়ে বিজ্ঞ আদালত রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। রিফাত হত্যার অন্যতম প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুর্বেই ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। স্বামীর হত্যাকান্ডে মিন্নির জড়িত থাকার প্রমান ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি এবং বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত ও প্রমাণক আদালতে প্রতীয়মান হয় যে মিন্নির বিবাহবহির্ভূত প্রেমের বলীর শিকার হয়েছেন তার স্বামী রিফাত। অথচ মিন্নি রিফাত দু’জনেই ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। মিডিয়ার কল্যানে এখন সকলেরই এসব তথ্য জানা।
বর্তমান সময়ে মানুষের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় যে হারে ঘটে চলেছে, তা একটি জাতির জন্য খুবই উদ্বেগজনক। প্রকাশ্য দিনের আলোয় রিফাত হত্যাকান্ডের মত এমন ঘটনা ঘটলো, ভিডিও করা হলো, ঘটনস্থলে লোকজন দাঁড়িয়ে থাকলো, অথচ কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। এটাও সমাজের অবক্ষয়েরই চিত্র। সমাজে দুর্নীতি, বিচারহীনতা, অন্যায় করেও পার পেয়ে যাওয়া, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার এবং মাদকাসক্তি ইত্যাদিই হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারন। সামাজিক অবক্ষয়ের এই চিত্র যদি অব্যাহতভাবে চলতে থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এ দেশের আপামর জনসাধারণের নৈতিক স্খলন রোধকরা দুষ্কর হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে সুস্থ্য বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম পার্কগুলির পরিবেশ এমনই নেতিবাচক যে সাধারণ মানুষ চলাফেরায় ইতস্ততবোধ করতে বাধ্য হয়। সংস্কৃতির ছোঁয়ার অপসংস্কৃতির আগ্রাসী ভূমিকার কারনেও সামাজিক অবক্ষয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে আকাশ সংস্কৃতির কিছু কুরুচিপূর্ণ অনুষ্ঠানের (হিন্দি ও বাংলা সিরিয়াল) যা কিছু সম্প্রচার করা হয় তা থেকে সমাজের মানুষের তেমন কিছুই শেখার নেই।
বিনোদনের নামে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক, অসম প্রেম, পরিবারের সদস্যদের নিজের স্বার্থসিদ্ধতা, অনৈতিক, অমানবিক কার্যক্রম, নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মকাণ্ড ইত্যাদি শিক্ষাই মানুষ বেশী শিখছে। ইউটিউবে অসামাজিক কুরুচিপূর্ণ দেশীয় নাটক, গান কিংবা অসুস্থ বিনোদন আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন করে দিচ্ছে। এর ফলে তা সমাজের মাঝে কুৎসিত আকারে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে।
হাতের নাগালে মোবাইল যা প্রযুক্তির কল্যানের চেয়ে সামাজিক অকল্যানের জন্য অনেকাংশেই দায়ী। আমরা আমাদের সন্তানকে এসবের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে কতটুকু শিক্ষা দেই তা কি কেউ একবারও ভেবেছি? স্কুল, কলেজের পাঠ্যবিষয়ে নামমাত্র কিছু পরিচ্ছেদ সামাজিক বিজ্ঞান পড়ানো হলেও অবক্ষয় থেকে উত্তরণের শিক্ষা ঠিক কতটুকু দেয়া হয় বা আদৌ সঠিকভাবে দেয়া হচ্ছে কিনা তা নজরদারি করাটাও অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক মুহূর্তেই সাজানো-গোছানো সোনার সংসারকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। স্ত্রী কর্তৃক স্বামী হত্যা, স্বামী কর্তৃক স্ত্রী খুন, স্ত্রীর প্রেমিক কর্তৃক স্বামী খুন বা স্বামীর প্রেমিকা কর্তৃক স্ত্রী খুনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। রিফাত, মিন্নি, নয়নের ত্রিভুজ প্রেমের কারনেই কিন্তু রিফাত হত্যাকান্ড ঘটেছে। যার চরম মুল্য দিতে হচ্ছে এই দুই পরিবারকে।
মানুষের চোখে প্রেম নামক বস্তুটি এখন ভোগ্যপণ্যে পরিনত হয়েছে। অবৈধ সম্পর্কের জেরে প্রায়ই পারিবারিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। সামাজিক অবক্ষয়ের শিকার হচ্ছেন আমাদের বাবা-মা, বোন, স্ত্রী-সন্তান সবাই। তদন্তে এর পেছনে বের হয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর পরকীয়ার ঘটনা। পরকীয়ার কারণে স্ত্রী কর্তৃক স্বামী বা স্ত্রী খুন, মা-বাবা কর্তৃক সন্তান হত্যার মতো লোমহর্ষক ঘটনার খবর গোটা জাতির বিবেককে নাড়া দেয় প্রায়ই।
বর্তমান সময়ে সামাজিক অবক্ষয়ের ভয়ঙ্কর আগ্রাসী এক কালো থাবার আগ্রাসনে নিপীড়িত হচ্ছি আমরা। এই বেড়াজাল থেকে বেরোনোর রাস্তা আমাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে। এখনই সময় আমাদের শিশু কিশোরদের নৈতিকতা মুল্যবোধের শিক্ষা দেয়া। কাল আপনার শ্লীলতাহানি হবেনা এর দায়ভার কিন্তু কেউ দিতে পারে না।
সামাজিক অবক্ষয়ের এই ক্রমাগত অবনতির কারন খুঁজে বের করে রাষ্ট্রের, পরিবারের, সমাজের সকল দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি আমাদের সমাজের সর্বোস্তরের মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। নিজের মুল্যবোধকে জাগ্রত রাখার জন্য সুস্থ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে হবে।
আমরা রিফাতের মত আর কোন দাম্পত্য হত্যাকান্ড দেখতে চাইনা। মুল্যবোধ অবক্ষয়ের শিকার হয়ে আর কোন মিন্নির ফাঁসির রায় হোক তাও চাইনা। চাইনা চোখের সামনে ধর্ষিত হোক আমাদেরই মা বোনদের কেউই। আমরা একটি সুস্থ সমাজ চাই যেখানে নারীরা নিজেদের নিরাপদ মনে করবে। আমরা চাই মুল্যবোধ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের শিশু, কিশোর তরুণ, যুবকেরা নিজেদের নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করবে। সামাজিক অবক্ষয়রোধে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করার বিকল্প আর কিছুই নেই।
[ছবি – নেট থেকে নেয়া]
৪৫টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
আপনার সাথে একমত কিন্তু আমাদের এখন সবাই দায় কারণ কোন অন্যায় হলে কেউ এগে আসে না প্রতিবাদ নেই এগুলো জন্য আমরা দায়
তৌহিদ
আমাদের নিজেদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ জোরদার করতে হবে।
ভালো থাকুন ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
সাজা হচ্ছে কিন্তু অপরাধ কমছে না। প্রশ্ন হলো সামাজিক অবক্ষয়ের কারন কি এবং সমাজে এমন নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটছে কেন? আপনার এই জায়গায় আমি পরিপুর্ণ একমত না তৌহিদ ভাই।
কোন টা সাজা হয়েছে। বংগবন্ধুর খুনি, ১০ ট্রাক অস্ত্রের যেভাবে রায় বাস্তবায়ন হয়েছে সেইভাবে হচ্ছে। এই রায়ের মত অন্যন্য রায়কে কেন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছেনা। রায় রায় ই আলাদা হয়ার কথা নয়।
বুয়েটের ছাত্র হত্যা, নোয়াখালির মাদ্রাসা ছাত্রী পুড়িয়ে হত্যা, এটলিস্ট গতকাল মিন্নি রায়ের কপি পড়ে দেখুন কি হয়।
তৌহিদ ভাই আইনের কঠর প্রয়োগ ছাড়া কিছুই করার নায়। সে যেই হোক। আজ দেখেন মি. ওবাইদুল কাদের শুধুই বলে ছাড় দেওয়া হবেনা। কিন্তু হচ্ছে। তার কি করবেন??
সিলেট জঘন্যতম ৬ জন ধররষন করল গ্রেপ্তারে এলমেলো আবার দেখুন নুরুইর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হতে না হতেই শায়েস্তা এইগুল কিসের আলামত আপনি বুঝুন।
শাহবাগ আন্দোলনে যারা আনদোলনে মৃত্যু ভয়ে পিছনে না থেকে সরকারের সাথে মিলল তাদের ও কিছু কিছু শায়েস্তা হয়েছে সরকারের কাজের সমালোচনার জন্য। এটা কি গ্রহনযোগ্য।
যাক আর বেশি বলে আপনাদের চোখেও অপরাধী হবনা।
মনির হোসেন মমি
আরো একটি আশ্চর্যের বিষয় যে এদেশে বিচারের রায় হলেও তা কার্যকর না করে ঝুলিয়ে রাখে বছরের পর বছর!কিন্তু কেন? আবার সামাজিক অবক্ষয় বলে সব দায় জনগনের উপর চাপিয়ে দেয়াও বোকামী তাহলে রাষ্ট্রীয় নেতাদের প্রয়োজন কেন?
মোঃ মজিবর রহমান
এখন এরা নেতা নয় এরা চোর মহা চোর আর দুর্নিতির বাপেরও বাপ এরাই। এরাই করছে আর ধরা পড়ছে মালেক ড্রাইভার, কোন পিয়ন, কোন সহকারী। বড় ভাশুরের নাম মুখে নিতে নাই। তওবা আল্লাহ নারাজ হইবে।
তৌহিদ
সহমত মমি ভাই। রায়ের দীর্ঘসূত্রতাও সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারন বলে আমিও মনে করি। বিচারের নামে প্রহসন বন্ধ চাই।
তৌহিদ
মজিবর ভাই, আমারও এটা প্রশ্ন? সবসময় ড্রাইভার, মালি, দারোয়ান এরাই ধরা পড়ে কেন? এদের যারা আশ্রয় দিয়েছে তারা থেকে যায় নাগালের বাইরে!
দলীয়করণ সবজায়গায়। এর থেকে উত্তরণ না হলে ভবিষ্যতে দূর্নীতি বন্ধ হবেনা এবং প্রকৃত অপরাধীও ধরা পড়বেনা নিশ্চিত।
তৌহিদ
মমি ভাই, কেউ কারো দ্বায়ভার নিতে চায় না। সবাই নিজেদের স্বার্থের জন্য অন্যকে কাজে লাগাই অথচ নীতির কোন তোয়াক্কা করিনা। নেতারা একারনেই আড়ালেই থেকে যায়।
ফয়জুল মহী
হা হা হা নোয়াখালী মাদ্রসা ছাত্রী না সে । নুসরাত জাহান রাফি ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার ছাত্রী । সেই হত্যায় আওয়ামী লীগ জড়িত। ফেনীর আরো একজন মেয়ে চিটাং বেড়াতে গিয়ে কয়েকদিন আগে ধর্ষিত হয়েছে আর ধর্ষক একই লীগ। ওবায়দুল কাদের —- করে।
মোঃ মজিবর রহমান
সরি মহী ভাই। যেই জড়িত হোক শাস্তি না পেলে অন্যায় বাড়বেই কোন ক্রমেই কম্বেনা। তা হাজার পারসেন্ট সত্য।
তৌহিদ
বিএনপি, হাওয়া ভবন, তারেক, লুকিং ফর শত্রুজ গংদের আমলের কুকীর্তির ফিরিস্তি দেয়া শুরু করলে রাত দিন পার হয়ে যাবে মহী ভাই। আর কিছু বললাম না। সমঝদার লোকের জন্য ইশারাই কাফি ☺
ফয়জুল মহী
কে কার বিচার করবে ? নৈতিক জোর থাকতে হয়। সোনাগাজী হলো অন্য দলের জন্য ফিলিস্তিন । অন্য দলের জন্য কাজ করে সোনাগাজীতে বাস করবে স্বপ্নেও ভাবে না কেউ। ক্ষমতাবান গুন্ডাদের অবৈধ বালু মহাল বন্ধ করায় এবং ফেনী শহরে অবৈধভাবে দখল করা সরকারি জায়গা উদ্ধারে চেষ্টা করায় ভেজাল বিরোধী অভিযানের বিচারপতি সোহেল শুধু ফেনী নয় বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে পরিবার নিয়ে। কারণ রাতে তার বাসায় বোমা মেরেছে গুন্ডারা মেরে ফেলার হুমকির বিচারও পায়নি সে। ফেনীর পাশে চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় এবং নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলায় আরো ভয়াবহ কারণ এইসবে ওবায়দুল কারের প্রভাব। প্রমাণ চাইলে দল নিরপেক্ষ কোন সচেতন লোকের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। মাদক , চোরা চালান বালু মহাল , সব ধরনের চাঁদা জায়গামত ভাগ হয়। শুধু ফেনী মহিপাল হতে ডেইলি কোটি টাকা চাঁদা উঠে পরিবহন হতে । কে খায় এই টাকা।
তৌহিদ
এহহে লেখায় আবার দল নিয়ে এলেন কেন? সামাজিক অবক্ষয়ে দলমত নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণইই জরুরী।
বিচারের রায় কিছুক্ষেত্রে প্রভাবিত হয় অস্বীকার করিনা। তবে মিন্নির রায় অন্যদের জন্য সংকেতবার্তা বলে মনে করি। শুরু যখন হয়েছে ভবিষ্যতে আরও দৃষ্টান্ত দেখবে দেশবাসী তা আশাক করতে দোষ কি!
ফয়জুল মহী
এই জন্য বিএনপি তের বছর রাস্তায় ঘেউ ঘেউ করে। বিএনপি বহু বছর ক্ষতায় নাই আসার দরকারও নাই কারণ তারা চোর । আর এখন ডাকাতেরা খেতেছে দেশটাকে
তৌহিদ
মহী ভাই, ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে একটি পোষ্ট দিন। বিস্তারিত লিখুন। মন্তব্য করবো। এই লেখা রাজনৈতিক দল নিয়ে নয়। অযথা দলাদলি করবেন না।
নির্দিষ্ট বিষয়ে সামাজিক অবক্ষয় রোধে করনীয় কি তা বলুন।
একজন ওবায়দুল কাদের নয়, ১৬ কোটি জনগনের কথা বলুন।
তৌহিদ
মন্তব্যের জন্য ব্লগ উন্মুক্ত, আপনার মন্তব্যে তাই পজিটিভলি নিলাম মজিবর ভাই। এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ ছাড়া এর থেকে উত্তরণ অসম্ভব।
চমৎকার বলেছেন।
মোঃ মজিবর রহমান
তৌহিদ ভাই, রাজনিতি এই জন্যই আনলাম রাজনিতির বাহিরে আপনি অফিসে, অর সরকারী অফিসে কিছুই করতে পারবেনা। এদের কারা রক্ষা করে বা কারাই বা এদের সাপোর্ট দেয় অনৈতিক কাজ করার জন্য। শুধুই কি সরকারী কর্তা ও কর্মীর ক্ষমতায় এরা অন্যায় করে??? না এদের টাকার ভাগ রাজনিতবিদ, মন্ত্রী ও অনেক জায়গায় যায়। তা আপনি আমি সবাই জানি।
মোঃ মজিবর রহমান
বুয়েটে আবরাল হত্যায় প্রধান্মত্রী যখন দায়িত্ব নিল আমরা অনেকেই বাহাবা দিলাম মায়ের মত কাজ করল। কিন্তু কি হচ্ছে। দেখুন। তাহলে কি বুঝব প্রধান্মন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাবান আরো আছে।
তৌহিদ
মজিবর ভাই, দেখি সামনে কি হয়। প্রকৃত অপরাধীরা সাজা পাক এটাই চাই। আইন বহির্ভূত হত্যাকান্ড আমি সমর্থন করিনা।
মোঃ মজিবর রহমান
তৌহিদ ভাই, রোধ করতে হলে ডাইরেক্ট বাটাম ঘটনা স্থলেই। বিষেশ করে, নারী নির্যাতন, খাবারে ভেজাল, রাস্তায় নষ্টামী, এগুল। ভাল দিয়ে হবেনা।
মনির হোসেন মমি
মজিবর ভাই -ক্ষমতাসীন বা রষ্ট্রীয় অপকর্ম এখন রোধ করা অসম্ভব।কারন একদিকে নন জনগন নির্বাচীত সরকার আর তাদের পুরো সাপোর্টে আছে পুরো প্রশাসন। তাই পরোক্ষ ভাবে বর্তমান দেশ চালাচ্ছেন প্রশাসন এটা গত জাতীয় নির্বাচনেই পরিষ্কার হয়ে গেছে। সুতরাং এখন অপেক্ষায় থাকতে হবে-আমাদের দেশে কবে সেই ছেলে হবে কথায় অকর্মে বড় না হয়ে কাজে বড় হবে।অপেক্ষা বিক্ষিপ্ত জনতার ঝটিকা আন্দোলন।
মনির হোসেন মমি
একটি হত্যাকান্ড সারা জীবনের কান্না আর হত্যাকান্ডটি যদি হয় পরকিয়া প্রেম ঘটিত তবেতো পরিবার সমাজ সবখানেই এর প্রভাব পরে।যাই হোক সমাজে অপরাধ থাকবে অপরাধীরাও অপরাধ করবে এটা জীবন যাপনের একটি চলমান অধ্যায় কিন্তু যখনি লোকজনের সামনে অপরাধ হয় তখন উপস্থিত জনতা যে দাড়িয়ে দাড়িয়ে তামাশা দেখে এটা নিঃসন্দে চিন্তার বিষয়।তবে রাষ্ট্রীয় বিচার ব্যাবস্থায় যদি ভরসা বা স্বচ্ছতা না থাকে তবে এসব উটকো ঝামেলায় জনগন জড়াতে চাইবে না।আমরা দিন দিন অনেকটা আত্মকেন্দিক হয়ে পড়ছি।
চমৎকার লেখা।
তৌহিদ
একদম ঠিক ভাইয়া। এই আত্মকেন্দ্রিকতা দূর করতে না পারলে সমস্যা থেকে উত্তরণ অনেকাংশেই সম্ভব নয় বলেই মনে করি।
ভালো থাকবেন ভাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
প্রকাশ্য ঘটনায় যখন জনতা চেয়ে চেয়ে দেখে নয়তো ভিডিও করা নিয়ে ব্যস্ত তখন সত্যি খারাপ লাগে, রাগ হয়।অপরাধীরা এতো ই শক্তিশালী যে এতো জনতার মাঝে কারোরই সাহস হয় না প্রতিরোধ করার! এখানে জনগণের ও দোষ দিব। পরিবার একটা বড় শিক্ষালয় সেখান থেকে কতটা সুশিক্ষা পাচ্ছে বা সেটাকে কাজে লাগাচ্ছে সেটা দেখাও পরিবারেরই দায়িত্ব।
অন্যায় করে পার পেয়ে যাচ্ছে, শাস্তি নেই বললেই চলে তবে সেখানে এমন অধঃপতন দেখতেই হবে সমাজে। আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসন আমাদের নারী সমাজকে একদম সংস্কৃতি হীন আর মানবতাহীন করে দিয়েছে। অন্যায়, পরকীয়া, অসুস্থ মনমানসিকতা, এর ওর পিছনে কুট চাল শিক্ষা দিচ্ছে। সরকারীয় লেবাস এখন সর্বত্র ব্যবহৃত হচ্ছে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়ার জন্য। সেখানে কারো কিছু করার নেই। নয়নকে কেন ক্রস ফায়ারে মারা হলো? যে মা সন্তানকে মারলো তার বিচার কি হলো তা কি প্রকাশিত হয়েছে? কত শত খুন, ধর্ষণ , অপরাধ হচ্ছে তার শেষ পরিণতি মিডিয়াতে প্রকাশ পাচ্ছে? কিছুদিন বাঙালি হুজুগে মাতাল থাকে তারপর সব ঠিক চুপ হয়ে যায়। সাগর-রুনি সাংবাদিক দম্পতি দের খুনের রহস্য আজো অজানাই রয়ে গেল কাদের ইশারায়? গ্রাম-গঞ্জে এমন অপরাধ, খুন, পরকীয়া হরহামেশাই ঘটছে তাদের কয়টা বিচার হয়েছে বা প্রকাশ্যে এসেছে? সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে আমরা কি শিক্ষা পেলাম!
এসব যতদিন বিচারহীনতায় থাকবে ততদিন সুস্থ, সুন্দর সমাজ , দেশ আশা করাটাই মূর্খতারই বহিঃপ্রকাশ।
তৌহিদ
আসলে বিচারের দীর্ঘসূত্রীতা এসবের জন্যে অনেকাংশে দায়ী। সঠিক সময়ে এটি হয়না বলেই অপরাধীরা পার পেয়ে যায় এবং একই অপরাধ পূনঃ সংগঠিত হয়। এর দায় অবশ্যই দায়িত্বশীলদের নিতে হবে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
প্রদীপ চক্রবর্তী
বিচারহীনতা অপরাধীকে পূনরায় অপরাধ করতে উৎসাহিত করে।
যা বাস্তব।
আর এই বাস্তবতা রাষ্ট্রের বুঝা উচিৎ।
না হয় একদিন এই বিকৃত মনের মানুষ সদৃশ জানোয়ার গুলো পুরো রাষ্ট্রকে ধর্ষণ করে ছেড়ে দেবে।
আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।
অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তি হোক।
.
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ভালো উপস্থাপন, দাদা।
তৌহিদ
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দাদা।দায়িত্বশীলদের আরো যত্নবান হতে হবে। সেই সাথে আমাদের সচেতনতাও জরুরী।
ভালো থেকো দাদা।
ছাইরাছ হেলাল
আইনের ত্বরিৎ ও কঠোর প্রয়োগ ই এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র সমাধান মনে করি।
তৌহিদ
একদম ঠিক ভাই। আইন আছে তবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা নড়বড়ে। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা কাটিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের কঠোর সাজা হলে এই সমস্যা অনেকাংশেই কমে যাবে।
ভালো থাকুন ভাই।
শামীম চৌধুরী
প্রথমে মিন্নির প্রতি দেশবাসীর সমবেদনা জেগে ছিলো। বরগুনার উকিল মিন্নির পক্ষে না দাঁড়ালো ঢাকা থেকে ছুটে গিয়েছিলেন আইনজীবি মিন্নিকে আইনী সহায়তা দেবার জন্য। কিন্তু রায়ে প্রকাশ হলো মিন্নিই ছিলো রিফাত হত্যার মাষ্টার মাইন্ড।
আসলে সামাজ বিরোধী কাজ মানুষকে অন্ধ করে দেয়। তখন বাবা মা ভাই বোন স্বামী স্ত্রী সবাই চলে যান অন্ধকারে। পরকীয়া এমনই একটি নেশা যে নেশা মানুষকে খুনী করে তুলে। তার প্রমান মিন্নি।
আর দেশে ইদানিং ধর্ষনের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এ যে কিসের আলামত সেটা ভাবার দরকার।
খুব ভাল লিখেছো।
তৌহিদ
সহমত ভাই,পাশাপাশি আমাদের মুল্যবোধ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। নিজের মনুষ্যত্ব বিবেক জাগ্রত না হলে সামাজিক অবক্ষয় থামানো মুশকিল।
শুভকামনা ভাই।
রেজওয়ানা কবির
আইনের সঠিকভাবে প্রয়োগ,মানুষের সচেতনতা আর প্রতেক্যের মধ্যে মনুষত্ববোধটা ধরে রাখলে আর কোন অবক্ষয়ই হবে না ইনশাআল্লাহ।
তৌহিদ
চমৎকার বলেছেন। ধন্যবাদ আপু।
রেজওয়ানা কবির
খুব গুরুত্বপূর্ণ ও সমসাময়িক বাস্তবতা তুলে ধরেছেন ভাইয়া।
তৌহিদ
পড়ে মন্তব্য করেছেন দেখে প্রীত হলাম। শুভকামনা সবসময়।
রোকসানা খন্দকার রুকু
খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সমসাময়িক লেখাটি। আমাদের দেশের আইনী প্রয়োগ ত্বরান্বিত হোক এই কামনা করি। তাহলেই সমাজে অন্যায় কমে যাবে।
শুভ কামনা ভাই।
তৌহিদ
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে যেমন ন্যায়বিচার পাওয়া কঠিন তেমনি বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতাও অপরাধীদের নতুন করে অপকর্মে লিপ্ত হতে উৎসাহ যোগায়।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
খাদিজাতুল কুবরা
তৌহিদ ভাইয়া আসলে সুশিক্ষা দিতে পরিবারের ভূমিকা অতুলনীয়। তারপর সামাজিক অবক্ষয়ের চরম অবস্থা। একজনকে দেখে দশজন নষ্ট হয়। রাস্ট্রের দুর্বলতা ডাকবার আর জায়গা নেই। পদ্মাসেতু পাতাল রেল গড়তে পারে আইনের সংস্কার এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারেনা। কেননা সর্ষের ভেতর ভূত রয়েছে। ধুমধাম সাততাড়াতাড়ি রায় কার্যকর করুক। মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দিক। নড়েচড়ে বসবে অপরাধী, অভিভাবক সমাজ সবাই। আমরা সবাই শাস্তিকে ভায় পাই। টাকা থাকলে মামার জোর থাকলে যখন যা খুশি তা করে পার পাওয়া যায় তখন কিসের ভয়।
অন্যায় করবোনা কেন?
যা-ই হোক আমার মনে হয় কান টানলে মাথা আসবে।
তৌহিদ
একদম ঠিক বলেছেন আপু। দু চারটা শাস্তি প্রকাশ্যে দিতে পারলে অন্যেরা সবাই লাইনে আসতো। ধর্ষণ, খুন এসবের অপরাধী যেই হোক কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। টাকা কিংবা মামার জোরে কেউ যাতে রেহাই না পায়।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
সুপায়ন বড়ুয়া
এক সাথে অনেক বিষয় তুলে আনলেন।
যুক্তিগ্রাহ্য ভাবে তুলেও ধরলেন।
সমাজের এ অবক্ষয়ের পরিনতি যে কত ভয়াবহ হতে পারে তার প্রমান তিন্নির মতো দ্বিচারিনী মেয়ের জন্য আজ অনেক গুলো পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে।
এরকম অনেক বহুগামী পুরুষ ও সমাজে কম নয়।
অথচ আমি তিন্নির জন্য কবিতাও লিখেছিলাম।
এখন নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
তৌহিদ
নারী হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই মিন্নি অনেকের সহমর্মিতা পেয়েছিল অথচ কলুষিত তার কার্যকলাপ।
সমাজে নারীর চেয়ে পুরুষরাই বেশিরভাগ বহুগামিতায় আক্রান্ত যার ফলে সাংসারিক অশান্তি লেগেই আছে। মৃত্যুর মত পথ নিজেই বেছে নিচ্ছেন অনেকে যা মোটেই কাম্য নয়।
সামাজিক অব্যবস্থাপনা আর ঘৃণ্য অপসংস্কৃতি এসবের অন্যতম কারণ দাদা।
শুভকামনা রইলো।
আরজু মুক্তা
হাতের বদলে হাত। সব ঠিক।
ক্যান্টনমেন্টের সামনে দিয়ে গাড়ি যখন যায়। ড্রাইভার সব নিয়ম মেনে চলবে। আর সীমানা পার হলেই একই।
সুমতি হোক সরকারের
তৌহিদ
এরকম আইন আসলে প্রকান্তরে মানবাধিকার লঙ্ঘন। তবে প্রকৃত অপরাধী সাজা পাক এটাই চাই।
আইন সকলের জন্যই সমান দেখতে চাই আমরা। ভালো থাকুন আপু।
হালিম নজরুল
প্রকাশ্য দিনের আলোয় রিফাত হত্যাকান্ডের মত এমন ঘটনা ঘটলো, ভিডিও করা হলো, ঘটনস্থলে লোকজন দাঁড়িয়ে থাকলো, অথচ কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। এটাও সমাজের অবক্ষয়েরই চিত্র। সমাজে দুর্নীতি, বিচারহীনতা, অন্যায় করেও পার পেয়ে যাওয়া, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার এবং মাদকাসক্তি ইত্যাদিই হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারন।
——————-ধন্যবাদ ভাই। চমৎকার লিখেছেন।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, পড়েছেন দেখে ভালো লাগলো।
শুভকামনা জানবেন।