অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে যে কৃষক বিদ্রোহগুলোর কথা আমরা জানতে পারি, তা থেকে’৭১এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত আমাদের সুদীর্ঘ জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে নারীদের অবদান আলাদা করে দেখা যাবে না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি সংগ্রামে-আন্দোলনের মধ্যেই নারীদের অবদান মিলেমিশে আছে। কখনও প্রত্যক্ষ, কখনও পরোক্ষভাবে নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোন পর্যায়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি সফল করা যায়নি। সেসব বিপ্লবী নারী ব্যক্তিত্বদের তালিকা তৈরি করে, তাদের জীবনী, সংগ্রাম, আন্দোলন ও অবদান বিষয়ে লিখে একসাথে প্রকাশ করা আমার জন্য দুরহ। তাই আমার প্রয়াস থাকবে ‘সংগ্রামে-আন্দোলনে নারীদের অবদান’ শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে তথ্যপূর্ণ প্রবন্ধ প্রকাশ করার। আমার এই সংকল্পে শুরুতে যে ব্যক্তিত্বটি বেছে নিয়েছি তিনি প্রথম শহীদ বিপ্লবী নারী প্রীতিলতাওয়াদ্দেদার।
প্রীতিলতা ওয়োদ্দেদার; একজন বাঙালি। যিনি ব্রিটিশ ভারতীয় শাসন আমলে স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী নারী শহীদ ব্যক্তিত্ব। চট্টগ্রামের ধলঘাট গ্রামে ১৯১১ সালের ৫ মে প্রীতিলতা জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম জগদ্বদ্ধু ওয়াদ্দেদার ও মাতার নাম প্রতিভাময়ী দেবী। বাবা মায়ের ছয় সন্তানের মধ্যে প্রীতিলতা ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান। ছোট বেলায়, কন্যা ও কালো বলে পরিবারের আত্মীয়রা তাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতেন। তখন প্রতিভাময়ী দেবী তাদের উদ্দেশ্যে বলতেন ‘দেখে নিও, আমার কালো মেয়ে একদিন তোমাদের সবার মুখ আলো করবে’। তিনি আদর করে মেয়ের নাম রেখেছিলেন রানি।
প্রীতিলতার অপর ভাইবোনেরা পারিবারিক গন্ডির বাইরে কেউ যেতে পারেননি। তাছাড়া তখন গড়পড়তা বাঙালি পরিবারে মেয়েদের বিশেষ পড়ানো বা স্কুলে পাঠানো হত না। প্রীতিলতার বাবাও প্রথম দিকে কন্যাদের শিক্ষার ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন। কিন্তু প্রীতিলতার আগ্রহ দেখে তাঁকে ডা. খাস্তগীর গার্লস হাই স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়। মেধাবী মেয়েটি স্কুল জীবন থেকে চেয়েছিলেন, নারীজাতির উন্নতি সাধনে মন দিতে।
চট্টগ্রাম তখন অগ্নিগর্ভ। মাস্টার দা সূর্যসেনেরবৈপ্লবিক কর্মসূচির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। চট্টগ্রামবাসীর নীরব সমর্থন তাঁর প্রতি। প্রীতিলতা কৈশোরে মাস্টারদা ও অম্বিকা চক্রবর্তীকে বন্দি অবস্থায় একবার দেখেছিলেন। শুনেছিলেন তাঁরা স্বদেশী ডাকাত। স্কুলের এক শিক্ষিকা তাঁকে বুঝিয়ে ছিলেন স্বদেশী ডাকাত কারা, তাঁদের লক্ষ্য কী। ক্লাস এইটের মেধাবী ছাত্রীটিকে বোঝাবার জন্য পড়তে দিলেন ‘ঝাঁসির রানি লক্ষীবাঈ’। তখন থেকেই দেশের অবস্থা জানতে প্রীতিলতা নিয়মিত খবরের কাগজ পড়তে শুরু করেন।
প্রীতিলতার স্কুল জীবন শেষ হল। প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হলেও শিক্ষাবৃত্তি না পাওয়ায় কলকাতায় পড়তে যাওয়া হল না। ঢাকার ইডেন কলেজের হোস্টেলে দশ টাকায় থাকা যায় বলে তিনি সেখানেই পড়তে গেলেন। এখানে বলে রাখা ভালো, তখন চট্টগ্রামে সহশিক্ষার চল ছিল না। ঢাকায় এসে প্রীতিলতা ‘দীপালী সংঘের’ কথা শুনলেন অধ্যাপক নীলিমা বসুর মুখে। দেখলেন সংঘে সদস্য হওয়ার শর্ত হল, ‘প্রয়োজন হইলে দেশের মুক্তি সংগ্রামে আমার সর্বস্ব, আমার জীবন পর্যন্ত আমি ত্যাগ করিতে প্রস্তুত।’ প্রীতিলতা তো এমন জীবনই চেয়েছিলেন। অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে তিনি ছুটির সময় বাড়ি গিয়ে মাস্টারদার সঙ্গে কাজ করতে চাইলেন। মাস্টারদা প্রীতিলতার আগ্রহের কথা জানতে পেরে তাকে দলের সদস্য করে নেন।
প্রীতিলতা ক্রমেই দেশের স্বাধীনতার জন্য নিঃস্বার্থ আত্মদানকে পবিত্র ধর্মীয় কর্তব্য হিসেবে গ্রহণ করেন। তিনি শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত ছিলেন। ভালো বাঁশি বাজাতে পারতেন। তাঁর এ সময়কার মানসিক দ্বন্দ্বের পরিচয় আছে তার রোজনামচায়। ‘.. কোন পথে জীবনকে আমি ভাসিয়ে দিলাম, এই তো আমার টেবিলের সামনে রাধাকৃষ্ণের ছবি। এই প্রেম স্বর্গীয়। এমনভাবেই মাতৃভূমিকে আমাকে ভালোবাসতে হবে। অন্য কোন প্রেম ভালোবাসা আমার হৃদয়ে স্থান পাবে না। রাধার মতোই আমার দেশপ্রেম আমি উজাড় করে ঢেলে দেব, নিজেকে নিঃশেষে আমি দান করে যাব।’
প্রীতিলতা আইএ পাস করেন মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়ে। কুড়ি টাকা শিক্ষাবৃত্তি পাওয়ায় এবার তাঁর পক্ষে কলকাতায় বেথুন কলেজে পড়া সম্ভব হয়। বেথুন কলেজে ইংরেজিতে অনার্স নিয়েছিলেন, থাকতেন হোস্টেলে। হোস্টেলে থাকাকালীন তার পড়ালেখার চেয়ে আগ্রহ বেশি ছিলো বিপ্লবীদের নিয়ে। তিনি নিয়মিত পত্র আদান প্রদানের মাধ্যমে বিপ্লবীদের খোঁজ খবর রাখতেন। পরে ১৯৩২ সালের এপ্রিল মাসে প্রীতিলতা চট্টগ্রামে ফিরে আসেন। এই সময় তার সাথে দেখা হয় মাস্টারদা ও নির্মল সেনের সঙ্গে। নির্মল সেন তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘পরিবারের প্রতি কিরূপ টান আছে?’ জবাবে প্রীতিলতা বলেন, ‘ Duty to family কে Duty to Countryর কাছে বলি দিতে পারব।’
প্রীতিলতার সাথে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে মাস্টারদা লিখেছেন, “তার চোখেমুখে একটা আনন্দের আভাস দেখলাম। এতদূর পথ হেঁটে এসেছে তার জন্য তার চেহারায় ক্লান্তির কোন চিহ্ন লক্ষ্যই করলাম না। যে আনন্দের আভা তার চোখেমুখে দেখলাম, তার মধ্যে আতিশয্য নেই, Fickleness নেই, Sincerity শ্রদ্ধার ভাব তার মধ্যে ফুটে উঠেছে। একজন উচ্চশিক্ষিত Cultured Lady একটি পূর্ণকুটিরের মধ্যে আমার সামনে এসে আমাকে প্রণাম করে উঠে বিনীতভাবে আমার দিকে দাঁড়িয়ে রইল, মাথায় হাত দিয়ে নীরবে তাকে আশীর্বাদ করলাম।”
চট্টগ্রাম শহরের উত্তরদিকে পাহাড়তলী স্টেশনের কাছে ছিল ইউরোপীয়ান ক্লাব, যা ব্রিটিশদের প্রমোদকেন্দ্র। একমাত্র শ্বেতাঙ্গরা ব্যতীত এবং ক্লাবের কর্মচারী, বয়-বেয়ারা, দারোয়ান ছাড়া এদেশীয় কেউ ঐ ক্লাবের ধারে কাছে যেতে পারতো না। সন্ধ্যা হতেই ইংরেজরা এই ক্লাবে এসে মদ খেয়ে নাচ, গান এবং আনন্দ উল্লাস করতো। ক্লাবের সামনের সাইনবোর্ডে লেখা ছিল “কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ।”নানা সময়ে ভারতীয় বিপ্লবীরা এই ইউরোপীয়ান ক্লাবে হামলার পরিকল্পনা করলেও তাতে সফল হয়নি। পরে মাস্টারদা ১৯৩২ এর সেপ্টেম্বর মাসে ক্লাবে হামলা করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন এবং এই আক্রমণের দায়িত্ব তিনি নারী বিপ্লবীদের উপর দেবেন বলেন । এই আক্রমণে বিপ্লবীদের মধ্যে প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন প্রীতিলতা ওয়োদ্দেদার।
বিপ্লবীদের আশ্রয়দাতা যোগেশ মজুমদার ক্লাবের ভিতর থেকে রাত আনুমানিক ১০ টা ৪৫ এর দিকে আক্রমণের নিশানা দেখানোর পরেই ক্লাব আক্রমণ শুরু হয়। সেদিন ক্লাবঘরে প্রায় চল্লিশ জন মানুষ অবস্থান করছিল। তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বিপ্লবীরা ক্লাব আক্রমণ শুরু করে। পূর্বদিকের গেইট দিয়ে ওয়েভলি রিভলবার এবং বোমা নিয়ে আক্রমণের দায়িত্বে ছিলেন প্রীতিলতা। প্রীতিলতা হুঁইসেল বাজিয়ে আক্রমণ শুরু নির্দেশ দেবার পরেই ঘন ঘন গুলি আর বোমার আঘাতে পুরো ক্লাব কেঁপে উঠছিল। ক্লাব ঘরের সব বাতি নিভে যাবার কারণে সবাই অন্ধকারে ছুটোছুটি করতে লাগল। ক্লাবে কয়েকজন ইংরেজ অফিসারের কাছে রিভলবার ছিল। তাঁরা পাল্টা আক্রমণ করল। একজন মিলিটারী অফিসারের গুলিতে প্রীতিলতার বাঁ-পাশে গুলির আঘাত লাগে। তখন আহত অবস্থায় পুলিশের হাতে বন্দি হয়ে বর্বরোচিত অত্যাচারের সম্মুখীন হওয়ার পরিবর্তে পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহননই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। তবে মতানুসারে, তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে নারী সমাজকে আগ্রহী করে তোলার জন্য এবং নারীরা যে এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেছে তা জানানোর জন্য তিনি এই আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেন।
সূত্র সন্ধানে
সহায়ক বই
১. অগ্নিযুগের দুই বিপ্লবী – এটা সম্পাদনা করেছে ‘মালেকা বেগম’।
আচ্ছা। ভয় লাগে, আমি তো অনেক ছোট। বড় বড় ভাইরা পড়ে মন্তব্য করে। সারাক্ষণ মনে একটা ভয় থাকে। আশাকরি আস্তে আস্তে এই ভয়টা কেটে যাবে। তবে আমি এখানে শিখতে এসেছি। লেখালেখিতে মেচিউর হতে এসেছি। আপনারা সবসময় ভুল-ত্রুটি ধরে দিলে আমার জন্য ভালো হবে।
সম্পূর্ন লেখাটি পড়লাম। এই লেখাটি কম্পলিট করতে আপনার যে অনেকখানি পরিশ্রম করতে হয়েছে তা বলা বাহুল্য। আপনার লেখনি শৈলি দেখে অবাক হচ্ছি। আপনি সোনেলায় আরও আগে এলে ব্লগ আরো সমৃদ্ধ হতো।
লেখাটি অনেক চাপে পড়ে লিখতে হয়েছে। ভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে সিদ্ধান্ত নিলো প্রথমবারের মতো দেয়ালিকা প্রকাশ করবে। তো, লেখা সংগ্রহ, লেখা গুছানো, এডিট করা সব দায়িত্ব পড়লো আমাদের ব্যাচের উপর। তারপর নির্ধারিত তারিখের পরে দেখলাম চাহিদা অনুযায়ী লেখা পাচ্ছিনা। কি করার! এইদিকে নির্ধারিত তারিখের পূর্বে চেয়ারম্যান ম্যাডামকে সব বুঝিয়ে দিতে না পারলে আমাদের উপর দিয়ে ঝড়-তুফান যাবে। তাই পরে বাধ্য হয়ে আমরা কয়েকজন কয়েকটা টপিকস নিয়ে লেখা শুরু করলাম। আমাকে দেওয়া হলো একজন বিপ্লবী নারী ব্যক্তিত্ব নিয়ে লিখতে। চয়েস করে নিলাম প্রীতিলতা ওয়োদ্দেদার। তবে প্রীতিলতার সম্পর্কে যা জানি তা দিযে একটা লেখা তৈরি করা সম্ভব না। তাই দেরি না করে চলে গেলাম নূপুর মার্কেটে। অনেক খুঁজে বের করলাম ‘অগ্নিযুগের দুই বিপ্লবী’ ও ‘ বীরকন্যা -প্রীতিলত ’ এই দুইটা বই। বাসায় এসেই পড়তে শুরু করলাম। পড়া শেষ হলো রাত সাড়ে ১২টায়। আমি অনেক ধীরে পড়ি। পড়া শেষে লিখতে বসলাম রাত ১টার দিকে। এই লেখা শেষ হলো ভোর ৫ টায়।
সুন্দর ও প্রাঞ্চল একটি উপস্থাপন রবিন ভাই। প্রিতিলতার এই আত্বহনন একরকম দেশের তরে জিবন বিলিয়ে দেওয়া। তবে আমি পড়েছিলাম তাকে অনেক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
আপনাকে সুন্দর একটি লেখা পোস্ট করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে’ এটা আসলে আমি এখন পর্যন্ত কোন লেখায় পড়ি নাই। যতটুকু পড়েছি, “আক্রমণ শেষে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সময় একজন অফিসারের গুলিতে প্রীতিলতা আহত হন। প্রীতিলতা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, ব্রিটিশদের হাত থেকে বাঁচতে ক্লাব আক্রমণের পরেই তিনি আত্মহনন করবেন তাই পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্লাব আক্রমণ শেষে তিনি পটাশিয়াম সায়ানাইড গ্রহণ করেন। সহযোদ্ধা কালী কিংকরকে নিজের কাছে থাকা রিভলবার ফেরত দিয়ে পটাশিয়াম সায়ানাইড নেন। এ অবস্থায় ধরা পড়ার আগে সঙ্গে রাখা সায়ানাইড বিষ খেয়ে আত্মাহত্যা করেন তিনি। কারণ ধরা পড়লে বিপ্লবীদের অনেক গোপন তথ্য ব্রিটিশ পুলিশের মারের মুখে ফাঁস হয়ে যেতে পারে।”
যারা স্বাধীকার আন্দোলন এর ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা তাদের কাছে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার একজন অনুকরনীয় বিপ্লবীর নাম৷
তার কথা স্কুলের পাঠ্য বইতে অন্ত্ররভুক্ত করা উচিত।
ভাল লেখেন আপনি, নিয়মিত লেখুন।
লেখাটি আপনি ১৪ জুন ২০১৯ সনে অন্য একটি সাইটে প্রকাশ করেছিলেন।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার সম্পর্কে নবম-দশম শ্রেণীর ইংরেজি ১ম পত্রে একটা পেসেজ আছে। তবে এই ছোট পেসেজ যথেষ্ট না। বাংলা ১ম পত্রে বা সমাজ বইয়ে একটা প্রবন্ধ দিতে পারতো।
আমি বিস্তারিত কমেন্টে যা বলতে চেয়েছিলাম, সেটা জিসান সাহেব বলে দিয়েছেন। 🙂
আপনার লেখা প্রবন্ধটি অবশ্যই মানসম্মত এবং পরিপূর্ন। আপনি যদি আরও লেখেন সেগুলোতেও আপনার দক্ষতা দেখতে পাবো বলেই বিশ্বাস রাখি। আপনি নতুন লেখাগুলো সোনেলা সাইটে দিলে বেশি ভালো হয়। এতে সোনেলার পাঠক আপনার লেখাগুলো আগে পড়তে পারবে।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইলো। লিখুন প্রতিনিয়ত, প্রতিদিন। 🌹🌹
এরকম তথ্যবহুল লেখা নিশ্চয় ব্লগকে সমৃদ্ধ করবে। প্রীতিলতার মতো দেশ প্রেমিকদের সম্মানের উচ্চাসনে বসানো উচিত।
যে দেশ গুণিজনের কদর করে না সে দেশে গুণিজন জন্ম নেননা।
এরকম গবেষণামূলক লেখা আরো লিখুন।
লেখাটি কোথায় জানি পড়েছি। গবেষণাধর্মী লিখা ভালো লাগলো। তাঁর জন্ম তারিখ বা ইংরেজ বিদ্রোহ নিয়ে লিখা পড়তে গেলেই অনেক ধরণের মানসম্মত লিখা পাই। সবচেয়ে বড় কথা নারী হিসেবে উৎসাহ যোগাতে যাঁরা অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন, ইনি অন্যতম।তাঁর সাহসিকতা আমাকে উদ্বুদ্ধ করে।
লেখাটি অনেক চাপে পড়ে লিখতে হয়েছে। ভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে সিদ্ধান্ত নিলো প্রথমবারের মতো দেয়ালিকা প্রকাশ করবে। তো, লেখা সংগ্রহ, লেখা গুছানো, এডিট করা সব দায়িত্ব পড়লো আমাদের ব্যাচের উপর। তারপর নির্ধারিত তারিখের পরে দেখলাম চাহিদা অনুযায়ী লেখা পাচ্ছিনা। কি করার! এইদিকে নির্ধারিত তারিখের পূর্বে চেয়ারম্যান ম্যাডামকে সব বুঝিয়ে দিতে না পারলে আমাদের উপর দিয়ে ঝড়-তুফান যাবে। তাই পরে বাধ্য হয়ে আমরা কয়েকজন কয়েকটা টপিকস নিয়ে লেখা শুরু করলাম। আমাকে দেওয়া হলো একজন বিপ্লবী নারী ব্যক্তিত্ব নিয়ে লিখতে। চয়েস করে নিলাম প্রীতিলতা ওয়োদ্দেদার। তবে প্রীতিলতার সম্পর্কে যা জানি তা দিযে একটা লেখা তৈরি করা সম্ভব না। তাই দেরি না করে চলে গেলাম নূপুর মার্কেটে। অনেক খুঁজে বের করলাম ‘অগ্নিযুগের দুই বিপ্লবী’ ও ‘ বীরকন্যা -প্রীতিলত ’ এই দুইটা বই। বাসায় এসেই পড়তে শুরু করলাম। পড়া শেষ হলো রাত সাড়ে ১২টায়। আমি অনেক ধীরে পড়ি। পড়া শেষে লিখতে বসলাম রাত ১টার দিকে। এই লেখা শেষ হলো ভোর ৫ টায়।
দেয়ালিকায় প্রকাশ হওয়ার পর এটি আমি ফেসবুকে নোট আকারে প্রকাশ করি। ওখান থেকে ফ্রেন্ডলিস্টের এক ছোট ভাই আমাকে না জানিয়ে তার নিউজ পোর্টালে আমার নাম দিয়ে প্রকাশ করে। অবশ্য পরে আমি এটি দেখতে পায়। কিন্তু তখন আর কিছু বলার বা করার ছিলোনা। হয়তো এইভাবে দেখতে পারেন।
২৩টি মন্তব্য
ইঞ্জা
ভাই আগামীকাল পড়বো
আকবর হোসেন রবিন
আচ্ছা। ভয় লাগে, আমি তো অনেক ছোট। বড় বড় ভাইরা পড়ে মন্তব্য করে। সারাক্ষণ মনে একটা ভয় থাকে। আশাকরি আস্তে আস্তে এই ভয়টা কেটে যাবে। তবে আমি এখানে শিখতে এসেছি। লেখালেখিতে মেচিউর হতে এসেছি। আপনারা সবসময় ভুল-ত্রুটি ধরে দিলে আমার জন্য ভালো হবে।
সাবিনা ইয়াসমিন
সম্পূর্ন লেখাটি পড়লাম। এই লেখাটি কম্পলিট করতে আপনার যে অনেকখানি পরিশ্রম করতে হয়েছে তা বলা বাহুল্য। আপনার লেখনি শৈলি দেখে অবাক হচ্ছি। আপনি সোনেলায় আরও আগে এলে ব্লগ আরো সমৃদ্ধ হতো।
লেখার বিস্তারিত মন্তব্য পরে দিচ্ছি। 🙂
আকবর হোসেন রবিন
লেখাটি অনেক চাপে পড়ে লিখতে হয়েছে। ভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে সিদ্ধান্ত নিলো প্রথমবারের মতো দেয়ালিকা প্রকাশ করবে। তো, লেখা সংগ্রহ, লেখা গুছানো, এডিট করা সব দায়িত্ব পড়লো আমাদের ব্যাচের উপর। তারপর নির্ধারিত তারিখের পরে দেখলাম চাহিদা অনুযায়ী লেখা পাচ্ছিনা। কি করার! এইদিকে নির্ধারিত তারিখের পূর্বে চেয়ারম্যান ম্যাডামকে সব বুঝিয়ে দিতে না পারলে আমাদের উপর দিয়ে ঝড়-তুফান যাবে। তাই পরে বাধ্য হয়ে আমরা কয়েকজন কয়েকটা টপিকস নিয়ে লেখা শুরু করলাম। আমাকে দেওয়া হলো একজন বিপ্লবী নারী ব্যক্তিত্ব নিয়ে লিখতে। চয়েস করে নিলাম প্রীতিলতা ওয়োদ্দেদার। তবে প্রীতিলতার সম্পর্কে যা জানি তা দিযে একটা লেখা তৈরি করা সম্ভব না। তাই দেরি না করে চলে গেলাম নূপুর মার্কেটে। অনেক খুঁজে বের করলাম ‘অগ্নিযুগের দুই বিপ্লবী’ ও ‘ বীরকন্যা -প্রীতিলত ’ এই দুইটা বই। বাসায় এসেই পড়তে শুরু করলাম। পড়া শেষ হলো রাত সাড়ে ১২টায়। আমি অনেক ধীরে পড়ি। পড়া শেষে লিখতে বসলাম রাত ১টার দিকে। এই লেখা শেষ হলো ভোর ৫ টায়।
নিতাই বাবু
“সংগ্রামে-আন্দোলনে নারীদের অবদান’ শিরোনামে আপনার সুলেখিত লেখনী পড়ে সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। পুরো লেখাটি পড়লাম। সুখের খবর হলো, কোথাও কোনও বানানে হেরফের নেই! নিখুঁত গাঁথুনিতে পরিশুদ্ধ শব্দ সংযোজন। সব মিলিয়ে যেন একটা বই থেকে বিপ্লবী নারী প্রীতিলতার জীবনকাহিনী পড়েছি। আপনার ইচ্ছা, “সংগ্রামে-আন্দোলনে নারীদের অবদান’ শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে তথ্যপূর্ণ প্রবন্ধ প্রকাশ করার।” অবশ্যই করবেন। সাথে আছি নিয়মিত। জয় হোক আপনার। শুভকামনা সারাক্ষণ।
আকবর হোসেন রবিন
এই লেখাটা লেখার সময় আমি অসম্ভব সতর্ক ছিলাম। তাই হয়তো বানানে হেরফের নেই। তবে অন্য কোন লেখায় বানানে ভুল দেখলে ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইল।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
সুন্দর ও প্রাঞ্চল একটি উপস্থাপন রবিন ভাই। প্রিতিলতার এই আত্বহনন একরকম দেশের তরে জিবন বিলিয়ে দেওয়া। তবে আমি পড়েছিলাম তাকে অনেক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
আপনাকে সুন্দর একটি লেখা পোস্ট করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
আকবর হোসেন রবিন
‘নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে’ এটা আসলে আমি এখন পর্যন্ত কোন লেখায় পড়ি নাই। যতটুকু পড়েছি, “আক্রমণ শেষে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সময় একজন অফিসারের গুলিতে প্রীতিলতা আহত হন। প্রীতিলতা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, ব্রিটিশদের হাত থেকে বাঁচতে ক্লাব আক্রমণের পরেই তিনি আত্মহনন করবেন তাই পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্লাব আক্রমণ শেষে তিনি পটাশিয়াম সায়ানাইড গ্রহণ করেন। সহযোদ্ধা কালী কিংকরকে নিজের কাছে থাকা রিভলবার ফেরত দিয়ে পটাশিয়াম সায়ানাইড নেন। এ অবস্থায় ধরা পড়ার আগে সঙ্গে রাখা সায়ানাইড বিষ খেয়ে আত্মাহত্যা করেন তিনি। কারণ ধরা পড়লে বিপ্লবীদের অনেক গোপন তথ্য ব্রিটিশ পুলিশের মারের মুখে ফাঁস হয়ে যেতে পারে।”
ভাইয়া আপনাকেও ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
আমি এক বইতে পড়েছিলাম আবার পড়ে জানাব ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
যারা স্বাধীকার আন্দোলন এর ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা তাদের কাছে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার একজন অনুকরনীয় বিপ্লবীর নাম৷
তার কথা স্কুলের পাঠ্য বইতে অন্ত্ররভুক্ত করা উচিত।
ভাল লেখেন আপনি, নিয়মিত লেখুন।
লেখাটি আপনি ১৪ জুন ২০১৯ সনে অন্য একটি সাইটে প্রকাশ করেছিলেন।
শুভ কামনা।
আকবর হোসেন রবিন
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার সম্পর্কে নবম-দশম শ্রেণীর ইংরেজি ১ম পত্রে একটা পেসেজ আছে। তবে এই ছোট পেসেজ যথেষ্ট না। বাংলা ১ম পত্রে বা সমাজ বইয়ে একটা প্রবন্ধ দিতে পারতো।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমি বিস্তারিত কমেন্টে যা বলতে চেয়েছিলাম, সেটা জিসান সাহেব বলে দিয়েছেন। 🙂
আপনার লেখা প্রবন্ধটি অবশ্যই মানসম্মত এবং পরিপূর্ন। আপনি যদি আরও লেখেন সেগুলোতেও আপনার দক্ষতা দেখতে পাবো বলেই বিশ্বাস রাখি। আপনি নতুন লেখাগুলো সোনেলা সাইটে দিলে বেশি ভালো হয়। এতে সোনেলার পাঠক আপনার লেখাগুলো আগে পড়তে পারবে।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইলো। লিখুন প্রতিনিয়ত, প্রতিদিন। 🌹🌹
আকবর হোসেন রবিন
হ্যাঁ, উনার সাথে কথা হয়েছে। আসলে এই ব্যাপারটা আমার একদমই জানা ছিলোনা।
আপু; শুভেচ্ছা, শুভকামনা ও মতামত জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
নাজমুল হুদা
এমন সাহসী নারীদের জীবনের বার্তা হোক আগামী নারী সাহসিকতার বার্তা। নারী পুরুষের সৌন্দর্যে ভরপুর হোক আগামীর স্বদেশ ।
অনুপ্রেরণাযোগ্য সাহসী এক নারীর জীবনগাথা সুন্দর তুলে ধরেছেন।
ধন্যবাদ ভাইয়া 😍
আকবর হোসেন রবিন
অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
এরকম তথ্যবহুল লেখা নিশ্চয় ব্লগকে সমৃদ্ধ করবে। প্রীতিলতার মতো দেশ প্রেমিকদের সম্মানের উচ্চাসনে বসানো উচিত।
যে দেশ গুণিজনের কদর করে না সে দেশে গুণিজন জন্ম নেননা।
এরকম গবেষণামূলক লেখা আরো লিখুন।
আকবর হোসেন রবিন
চেষ্টা করবো ভাইয়া।
মনির হোসেন মমি
খুব ভাল হয়েছে লেখাটি। এরা নারী জাগরণীর অহংকার। স্যালুট তাদের।
আকবর হোসেন রবিন
ধন্যবাদ ভাই।
আরজু মুক্তা
লেখাটি কোথায় জানি পড়েছি। গবেষণাধর্মী লিখা ভালো লাগলো। তাঁর জন্ম তারিখ বা ইংরেজ বিদ্রোহ নিয়ে লিখা পড়তে গেলেই অনেক ধরণের মানসম্মত লিখা পাই। সবচেয়ে বড় কথা নারী হিসেবে উৎসাহ যোগাতে যাঁরা অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন, ইনি অন্যতম।তাঁর সাহসিকতা আমাকে উদ্বুদ্ধ করে।
আকবর হোসেন রবিন
লেখাটি অনেক চাপে পড়ে লিখতে হয়েছে। ভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে সিদ্ধান্ত নিলো প্রথমবারের মতো দেয়ালিকা প্রকাশ করবে। তো, লেখা সংগ্রহ, লেখা গুছানো, এডিট করা সব দায়িত্ব পড়লো আমাদের ব্যাচের উপর। তারপর নির্ধারিত তারিখের পরে দেখলাম চাহিদা অনুযায়ী লেখা পাচ্ছিনা। কি করার! এইদিকে নির্ধারিত তারিখের পূর্বে চেয়ারম্যান ম্যাডামকে সব বুঝিয়ে দিতে না পারলে আমাদের উপর দিয়ে ঝড়-তুফান যাবে। তাই পরে বাধ্য হয়ে আমরা কয়েকজন কয়েকটা টপিকস নিয়ে লেখা শুরু করলাম। আমাকে দেওয়া হলো একজন বিপ্লবী নারী ব্যক্তিত্ব নিয়ে লিখতে। চয়েস করে নিলাম প্রীতিলতা ওয়োদ্দেদার। তবে প্রীতিলতার সম্পর্কে যা জানি তা দিযে একটা লেখা তৈরি করা সম্ভব না। তাই দেরি না করে চলে গেলাম নূপুর মার্কেটে। অনেক খুঁজে বের করলাম ‘অগ্নিযুগের দুই বিপ্লবী’ ও ‘ বীরকন্যা -প্রীতিলত ’ এই দুইটা বই। বাসায় এসেই পড়তে শুরু করলাম। পড়া শেষ হলো রাত সাড়ে ১২টায়। আমি অনেক ধীরে পড়ি। পড়া শেষে লিখতে বসলাম রাত ১টার দিকে। এই লেখা শেষ হলো ভোর ৫ টায়।
দেয়ালিকায় প্রকাশ হওয়ার পর এটি আমি ফেসবুকে নোট আকারে প্রকাশ করি। ওখান থেকে ফ্রেন্ডলিস্টের এক ছোট ভাই আমাকে না জানিয়ে তার নিউজ পোর্টালে আমার নাম দিয়ে প্রকাশ করে। অবশ্য পরে আমি এটি দেখতে পায়। কিন্তু তখন আর কিছু বলার বা করার ছিলোনা। হয়তো এইভাবে দেখতে পারেন।
তৌহিদ
অনেক তথ্যসমৃদ্ধ লেখা। আমরা ভুলে যাই দেশমাতৃকারর সেবা করতে গিয়েই শহীদ হয়েছেন অনেকেই। অনেকের নামই জানিনা।
ব্লগে আপনার লেখাগুলো পড়ে বেশ ওজনদার মনে হয়েছে। সোনেলা আপনাকে পেয়ে গর্বিত। লিখুন নিজের মতন করে।
আকবর হোসেন রবিন
শুকরিয়া। নিয়মিত লেখার চেষ্টা করবো।