“দেশটাকে আর ধ্বংস করবেন না। আসুন সংলাপ করে সমাধানের পথ বের করে আনি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনি। কারও প্রতি আমাদের রাগ-ক্ষোভ নেই। তবে যা করেছেন ভুল করেছেন, মনে মনে তা স্বীকার করুন। ভারতকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেব না, দেশের মাটি ব্যবহার করে কাউকে অন্য দেশের ওপর হামলা করতে দেব না।”— খালেদা জিয়া
গত ৫ই জানুয়ারি খালেদা জিয়ার ভাষনের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু জবাব চাই-
১। ”দেশটাকে আর ধ্বংস করবেন না!”
★কাকে বলছেন ম্যাডাম? অবরোধ ঘোষনার মাধ্যমে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ পোড়ানোর হোলিখেলা কার নির্দেশে শুরু হয়েছিলো? হাজার হাজার গাছ (প্রায় ৪০ হাজার গাছ) কার নির্দেশে কাটা পড়েছিলো? ক্যামনে পারেন এমন ফাঁকা বুলি আওড়াতে?
২। ”আসুন সংলাপ করে সমাধানের পথ বের করে আনি!”
★আপনাদের টেলিফোনিক সংলাপ তো জাতি শুনেছে! আপনার অভিব্যক্তির প্রকাশও জাতি অবলোকন করেছে! উদ্দেশ্য যদি সৎ থাকতো তো সেদিনই সুযোগটি গ্রহন করতেন।
৩। ”কারও প্রতি আমাদের রাগ-ক্ষোভ নেই!”
★রাজনীতি করতে এসে ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর কোন সুযোগ নেই। কিন্তু প্রতিপক্ষের প্রতি সেই ব্যক্তিগত ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে আপনি ক্রোধান্ধ হয়ে জনতার প্রতি প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠেছিলেন। প্রত্যন্ত এলাকায় আঞ্চলিক একটা প্রবাদ আছে-”হরি মাইরা বউ রাগ” (শ্বাশুড়ীকে মেরে বউয়ের উল্টো গুসসা)। আপনাদের রাগ আবার কার প্রতি? মসকরা করছেন ম্যাডাম! রাজনীতিতে নেমেছেন জনতার সেবা করতে আর আপনি বলছেন “কারও প্রতি আমাদের রাগ-ক্ষোভ নেই!” শ’য়ে শ’য়ে মানুষ পুড়িয়ে যে অন্যায় করেছেন, আগে তো তার জন্য জাতির কাছে মাফ চেয়ে নিন। তারপর না হয় আবদার করবেন।
৪। “তবে যা করেছেন ভুল করেছেন, মনে মনে তা স্বীকার করুন।”
★নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে আর কতো ধোঁকা দেবেন আমজনতাকে? সে সুযোগ এখন আর নেই যে ম্যাডাম। দিন এখন সত্যিই অনেক পাল্টে গেছে। গলাবাজি আর ধোঁকাবাজি করে খেয়া পার হওয়ার দিন এখন আর নেই। এখন মানুষ অনেক সচেতন। এখন মানুষ আপনার কথার অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য ধরে ফেলে। কাজেই মানুষকে সঙ্গে পেতে গেলে তাদের অন্তরে জায়গা করে নিতে হয়। মাত্র ১ বছর আগে আগুন নিয়ে খেলতে গিয়ে যে নিরপরাধ এত্তোগুলো মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন, আগে তাদের কাছে করজোরে মাফ চান। গলাবাজি, ধোঁকাবাজি না করে ভুল স্বীকার করুন। আপনি শেখ হাসিনাকে মনে মনে ভুল স্বীকার করতে বলেছেন (জানি না, আপনার ভাষায় শেখ হাসিনা কি ভুল করেছেন। আপনার হয়ে কেউ যদি এর ব্যাখ্যা দেয়, তবে কৃতার্থ হবো)। কিন্তু আগামী নির্বাচনে দলের প্রধান হয়ে ভোট চাইতে গেলে আপনাকে আগে জাতির কাছে আগুন সন্ত্রাসের জন্য প্রকাশ্যে মাফ চাইতে হবে।
★★আরো একটি কারনে আপনাকে জাতির কাছে মাফ চাইতে হবে। গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে আপনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে যে সংশয় প্রকাশ করেছেন, সেজন্য।
আপনার ভাষ্য ছিলো, “আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।” (দেশের সবকটি জাতীয় পত্রিকায় তাই এসেছে)।
পাকিস্তানের সংসদে আলোচনার মাত্র তিনদিনের মাথায় ঠিক তাদের মতো করেই একই রকম বক্তব্য আপনি সেদিন দিয়েছিলেন। আপনি তো দু’বার পূর্ণ মেয়াদে আর একবার মাত্র অল্প ক’দিন (জনরোষে টিকতে না পেরে মাত্র ১৫ দিনের মাথায় পদত্যাগ করেছিলেন।) মোট তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। একবার মনে করে দেখুন তো, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের বাণীগুলোতে ‘৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা’ কথাটি ছিলো কি না? তাহলে তখন কেনো আপনি প্রশ্ন তুললেন না?
তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই যে তথ্য সঠিক নেই, তো আপনার কি তখন কোন প্রকার দায়িত্বই ছিলো না তা সংশোধনের?
শুনুন ম্যাডাম, আমরা চাই না আপনি রাজনীতির মাঠে বিরূপ পর্যায়ে পতিত হোন। এখনো সময় আছে, দলকে দাঁড় করিয়ে রাখতে গেলে দলনেত্রী হিসাবে আপনাকে জাতির কাছে মাফ চাইতেই হবে।
১। আপনি প্রতিপক্ষের উপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে সাধারণ নাগরিকদের পুড়িয়ে মেরেছেন! যারা নেতা (দেশ পরিচালক) নির্বাচন করবে, তাদেরই তো আপনি আঘাত করেছেন। তাও আবার স্মরণকালের ইতিহাসে এমন ঢালাওভাবে(শ’য়ে শ’য়ে) মানুষকে আগুনে পোড়ানোর ইতিহাস নেই।
২। আপনি পাকিপ্রেম দেখাতে গিয়ে আমাদের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শহীদদের সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে জাতির অহংকারে আঘাত হেনেছেন, যা রক্ত দিয়ে অর্জিত ইতিহাসের অবমাননাস্বরুপ। মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা, শহীদদের অবমাননা, বীরাঙ্গনাদের অপমান করে কথা জাতি সহ্য করবে না। অন্যদের কথা আর না বলি কারন নেতা যেমন পথ দেখাবেন, পাতি নেতারাও সে পথেই হাঁটবেন। দেশের জন্মলগ্নের মীমাংসিত ইতিহাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আবার সে দেশেরই সরকার পরিচালনার দাবী আপনি করতে পারেন না। কাজেই সময় থাকতে নিজেকে সংশোধন করে ফেলুন।
দু’দুটো গুরুতর অপরাধ আপনি জাতির সাথে করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবী নিযে জনতার দুয়ারে যাবার আগে তার সুরাহা করুন। যদি সত্যিই দেশ এবং জাতির স্বার্থে আপনার রাজনীতি হয়ে থাকে, বিশ্বাস করি আপনি তা করবেন। আবেগপ্রবণ জাতি নিশ্চয় আপনাকে মুখ ফেরাবে না।
শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
২০টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
আমরা উন্নতি চাই আর তা নেত্রী শেখ হাসিনাই একমাত্র ভরসা।
আপনার সংগে একমত ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ভরসা ঠিক কিন্তু খালেদা জিয়া একটা বৃহত্তর দলের নেত্রী হয়ে দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে জাতিকে বিভ্রান্ত করে চলেছেন।
যাকে বা যাদেরকে আমরা দু’দুবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলাম এবং তিনি বা তারা আবারও সে দায়িত্ব নেয়ার দাবী করেছেন জাতির কাছে, কাজেই তাদেরকে মাফ চেয়েই সে দাবী করতে হবে। কেননা তিনি অপরাধ করেছেন জাতির সাথে। নেত্রীর কথা মানেই দলের কথা। সুতরাং দলও তা এড়াতে পারে না।
জিসান শা ইকরাম
অবরোধ হরতালের নামে উনি দেশের জনগনের সাথে যা করেছেন এর পরিনতি তাঁকে ভোগ করতেই হবে।
উনি কেবল নিজ এবং দলের ক্ষতিই করেননি দেশেরও চরম ক্ষতি করেছেন
একটি শক্তিশালী বিরোধীদলের অভাবে ক্ষমতাসীনরা স্বৈরাচার হয়ে যেতে পারেন
এটি তার একগুয়েমির জন্যই হয়েছে।
দেশে এই মুহুর্তে এমন কোন সঙ্কট নেই যে সংলাপে যেতে হবে
সংকটে আছে বিএনপি,তাদের সঙ্কট দেশের সঙ্কট নয়।
শহীদের সংখ্যা নিয়ে তার বক্তব্য বাংলাদেশের নাগরিকের মত হয়নি
হয়েছে একজন পাকিস্থানি নাগরিকের মত।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
“উনি কেবল নিজ এবং দলের ক্ষতিই করেননি দেশেরও চরম ক্ষতি করেছেন
একটি শক্তিশালী বিরোধীদলের অভাবে ক্ষমতাসীনরা স্বৈরাচার হয়ে যেতে পারেন
এটি তার একগুয়েমির জন্যই হয়েছে।
দেশে এই মুহুর্তে এমন কোন সঙ্কট নেই যে সংলাপে যেতে হবে
সংকটে আছে বিএনপি,তাদের সঙ্কট দেশের সঙ্কট নয়।”— (y) একমত।
হ্যাঁ, এই দাবী করার পর কেউ নিজেকে বাংলাদেশি হিসাবে দাবী করতে পারে না।
ভোরের শিশির
নেতিবাচক প্রচারণা!
এর সুফল হচ্ছে সব সময়েই আলোচনায় থাকার জন্য আগ্রহ বা আলোচনা-সমালোচনা তৈরি।
এদের এইসব কথা নিয়ে যতই আলোচনা করবো ততোই ওরা আবার সাধারণের আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসবেন…
একটি পঁচা লাশ নিয়ে কথা বলে পঁচা লাশটাকেই বারেবারে এগিয়ে রাখা হয়…
মারজানা ফেরদৌস রুবা
প্রায়ই দেখি অভিনয় জগতে শিল্পীরা ‘পাবলিক ফোকাস’ তৈরি করার জন্য মাঝেমধ্যেই উদ্ভট, অপ্রাসঙ্গিক, ভিত্তিহীন কথা বলেন। এর মুল উদ্দেশ্য থাকে পাবলিকের মনে নিজেকে জিইয়ে রাখা।—- এমনটা কি? :D)
“একটি পঁচা লাশ নিয়ে কথা বলে পঁচা লাশটাকেই বারেবারে এগিয়ে রাখা হয়…”
যথার্থই বলেছেন।
ভোরের শিশির
একদম ঠিক উদাহরণ দিয়েছেন আপু… :p
ছাইরাছ হেলাল
শুভবুদ্ধির উদয় হতে কত বাকী তা তো জানতে পারছি না।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আদৌ সে সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। আর যদি তা না হয়, অচিরেই পতিত হতে বাধ্য।
একবার ২০০১ আর ২০১৩ এই দুইটা সাল আমাদের চোখের সামনে নিয়ে আসুন তো, দেখুন কি দেখা যায়
২০০১ সালে যারা প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস নিয়ে দম্ভভরে জাতির পতাকা আর জাতিকে নেত্রীত্ব দেবার ক্ষমতা হাতে নিয়ে এদেশের মুক্তি সংগ্রামের নায়ক আমাদের দরদের জায়গা মুক্তিযোদ্ধার পিঠে লাথি দিতেও দ্বিধা করেনি, জাতি সেদিনের সে দৃশ্য সহ্য করতে পারেনি।
সেদিনের সে ঔদ্ধত্যই ২০১৩ সালের গণ বিস্ফোরণ যা ইতিহাসে আরেকটি অধ্যায়ের জন্ম দেয়।
কাজেই সে বিবেচনায় যদি তাঁর শুভবুদ্ধির উদয় হয়, তো ভালো।
আবু খায়ের আনিছ
আলোচনা এবং সমালোচনা জায়গাগুলো নিরপেক্ষ হওয়া উচিৎ।
ভোরের শিশির
দেশের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনায় নিরপেক্ষতা বলতে কিছুই নেই। হয় দেশের ইতিহাসের পক্ষে অথবা তার বিপক্ষে।
আবু খায়ের আনিছ
খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য আমাকেও মর্মাহত করেছে। ইতিহাস এর পক্ষ বিপক্ষ এই নিয়ে বলি নাই দাদা।
ভোরের শিশির
আমাকে মর্মাহত করেনি, বরং আমি নিজেই উনার কোন বক্তব্য পড়তেও যাই না। আমার সহজ কথা ভাই- যে লাশ পঁচে গলে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে সেই দুর্গন্ধ নাকে নিতে আর রাজী নই। কারণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও এর ইতিহাস সম্পর্কে আমরা নিজেরাই এখনো অনেক কিছুই জানি না। সময় পেলে আর সুযোগ হলে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে শুনি আর বিশ্বস্ত সূত্র না পেলে মুক্তিযুদ্ধ ও এর ইতিহাস নিয়ে কিছুই পড়তে রাজী নই…
আপনার যে মন্তব্যের ভিত্তিতে আমার প্রতি মন্তব্য তা শুধু মাত্র ‘নিরপেক্ষ’ শব্দের জন্য। স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারী বা স্বাধীনতার হয়ে কথা বলা মানুষদের নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনায় কোনদিনই নিরপেক্ষতা নিয়ে থাকা যায় না। এই জন্যেই এতো কথা বলা। 🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আনিছ এবং শিশির, আপনাদের দুজনের কথোপকথনের পর আর কিছু বলার থাকে না।
দুজনকেই ধন্যবাদ।
খালেদা জিয়া আমাদের সবচেয়ে দুর্বল জায়গায় আঘাত করেছেন, যা সহনীয় নয়।
অনিকেত নন্দিনী
মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ, বীরাঙ্গনা – এসব আমাদের অহংকার এবং খুবই সংবেদনশীল ব্যাপার। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর এগুলি নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা চরম ধৃষ্টতা বৈ কিছুই নয়।
আল্লাহ আমাদের শুভবুদ্ধি প্রদান করুন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এবং এই এক জায়গায় আমরা পুরু জাতি এক। দলমত নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে যাই।
ব্লগার সজীব
এই মহিলা এবং তার দলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবেনা এই জনমে।ভালো লিখেছেন আপু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হয় হবে, নাহয় অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে।
সব সহ্য করা যায় কিন্তু যখন অহমে আঘাত পড়ে তখন তা মেনে নেয়া যায় না।
ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক আপু। আমরা যেন চিনতে পারি, বুঝতে পারি। মহামান্যাকে নিয়ে নতুন করে কি বলবো? এদের এমন বক্তব্য আর আশ্চর্যজনক মনে হয়না।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ, এজন্যই আমার লিখাটা। চিনতে হবে, জানতে হবে। এতোদিন আড়ালে থেকে যারা পাকিস্তানের সহযোগী হয়ে গোপনে কাজ করে গেছে, এখন তাদের সে মুখোস উম্মোচিত হচ্ছে।
খালেদা জিয়ারও এখন নিজেকে প্রমাণ করার সময় এসেছে। এ জাতি বড়ই ধৈর্যশীল কিন্তু অস্তিত্বের প্রশ্নে বড়ই কঠিন।
এখন সিদ্ধান্ত তার নিজের।