জুন মাসে লকডাউন দিয়ে আবার তা উঠিয়ে নিলো। কারন ব্যাংক ক্লোজিং। এরপর লকডাউন দিয়ে আবার ঈদের আগে উঠিয়ে নিয়ে মোটামুটি সব খুলে দিলো। আবার ঈদের কেনাকাটা শেষ করে লকডাউন/ শাটডাউন দিলো। ঈদের পরে করোনা প্রকোপ চরম আকার ধারন করলো; আর তা কমাতে লকডাউন/শাটডাউন দিলো। তাও বলা হচ্ছে কঠোর লকডাউন। সরকারী প্রজ্ঞাপণে কঠোরতারভাবে সকল কার্যক্রমগুলো পালন করতে বলা হলো। পোষ্টার, মাইকিংসহ প্রচারনা চলছে মাস্ক ও সামাজিক দুরত্বের।

এদিকে পাঁচতারিখ পর্যন্ত গার্মেন্টস্ বন্ধ থাকার কথা। ঈদের আগে/ পরে তাই লোকজনকে দেখা গেলো পায়ে হেঁটে, ছোটছোট যানবাহনের করে বহুকষ্টে বাড়িতে ফিরতে। তারা বাডি ফেরার কারণ হলো একটা লম্বা ছুটি। দশদিন না যেতেই ঘোষনা হলো ছুটি বাতিল, ১ তারিখ থেকে গার্মেন্টস্ খোলা।

লোকজন চাকুরী বাঁচাতে আবার ভোঁ দৌড়। আবার সেই ভোগান্তি। হাজার হাজার মানুষকে দেখা যাচ্ছে একই সাথে ভীড় করতে। কোনভাবেই সামাজিক দুরত্ব মেইনটেইন করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ঈদের মতোই ভীড় আবার শুরু হয়ে গেলো।

আমার প্রশ্ন হলো , করোনা তাহলে বাড়াচ্ছে কে? জনগনের কি সব দোষ? পেটের দায়ে, চাকরী বাঁচাতে একটা মানুষকে দৌড়াতেই হবে বা হচ্ছে?

অথচ উদ্ধর্তন মহল তাদের খেয়াল খুশি মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যখন খুশি লকডাউন, শাটডাউন দিচ্ছেন আবার যখন খুশি উঠিয়ে নিচ্ছেন। কখন কি হবে বা হচ্ছে কেউ বুঝে ওঠার আগেই এসব হাস্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েই যাচ্ছেন। এই যে হাজার হাজার শ্রমিক কুড়িগ্রাম, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া থেকে ঢাকা যাবে তাদের খরচ কতো? সাধারন গার্মেনটস্ এ চাকুরী করে একটা মানুষ কটাকা বেতন পায়? সে হিসাবও আমাদের মাথায় নেই?

আমার মা বয়স্ক মানুষ, একবার করোনা হয়ে গিয়েছে। পাশের বাড়ির ঢাকা ফেরত মেয়েটি ঈদের পরদিন তার খালাম্মা মানে আমার মাকে দেখতে হাজির। একদম জড়িয়ে ধরা থেকে শুরু করে সব হয়ে গেলো।এভাবেই করোনা বাড়ছে।

বাসগুলো চুপিসারে শহরের বাইরে দাঁডিয়ে। বিভিন্ন ভাবে দালাল ধরে, কাষ্টমারের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এরপর পুলিশকে ঘুস কিংবা পুলিশ না দেখার ভান করে তাদের ছেড়ে দিচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাওয়া লোকজন ঢাকা থেকে ৩০/৪০ কি: মি দুরে নেমে যাচ্ছে। কারন শহরের ভেতরে চলছে কঠোর লকডাউন/ শাটডাউন। তারপর নেই কোন রিক্সা, নেই সিএনজি। যাও আছে তার ভাড়া কয়েকগুণ। পায়ে হেঁটে এই মানুষগুলো চলছে সারি সারি। তাদের অফিস করতে হবে, পেটের ভাত যোগাতে হবে।কেন এই প্রহসন?

যে কোন সিদ্ধান্ত নিলে একবার নেন যথাযথ পালন করার চেষ্টা করেন তা না হলে করোনা প্রহসন চলতেই থাকবে আজীবন। দেশজুড়ে এখন যা হচ্ছে, ঘটছে সবই হাস্যকর। দালালে দেশ ভরে গেছে কিন্তু আমাদের তা বলা নিষেধ। আমরা চলছি- ‘দেখবো শুনবো বলবো না কোন বিপদে পড়বো না।’

আসলেই কি বিপদে পড়ছি না। দেশটা যদি আমার হয়, আমার ট্যাক্সের টাকায় চলে তাহলে ক্ষতি পুরোটাই আমার। আমার ক্ষতিতো কেউ কোথাও থেকে এনে পুষিয়ে দেবে না? তাই একটু হলেও যে কোন সিদ্ধান্ত মাথা মোটা বলদদের মতো না নিয়ে ভেবেচিন্তে নিন!

আর কতোকাল আমরা করোনা বৃদ্ধি/কমা নিয়ে বন্দি থাকবো। প্রহসন বন্ধ করে সব খুলে দিন; আমাদের ভাগ্যে যা আছে হবে!!!!

ছবি- কুড়িগ্রাম চিলমারী ঘাট।

৬৮০জন ৫৪০জন
0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ