
সুরাইয়া তুমি যদি সাঁতার শিখতে পারবো তবে তোমাকে একটা নাইট কুইন ফুলের চারা দেবো। ব্যস এবার প্রচণ্ড জেদ চাপলো সাঁতার আমি শিখবোই।(ঐ চারার জন্য নয়, চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্ৰহণ করলাম)যে কোনো মূল্যে। প্রচণ্ড চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলাম। আমাকে সাঁতার শিখতে দিতেই হবে। এবার আর মা আমাকে আটকাতে পারলেন না। রাজি হয়ে গেলেন। কিন্তু সমস্যা হলো আমাকে সাঁতার শেখাবে কে? বাড়িতে মেজোভাবী আছে । মনে মনে ভাবলাম সেই একমাত্র ভরসা। ভাবী বেশ লম্বা চওড়া। প্রায় ছয় ফুট উঁচু সে। তার অসুবিধা হবে না আমাকে সাঁতার শিখাতে। যেই ভাবা সেই কাজ। তাকে গিয়ে বলতেই হে হে হে করে হেসে উঠলো। বললো…
-আইচে সাঁতার শিখতে। আমি তো নিজেই সাঁতার জানি না তোমাকে শেখাবো কি করে?
মেজাজটা গেলো বিগড়ে। ধুর ছাতা!
-এখন কি হবে?
-এককাজ করো তুমি পুকুরে নামো আর আমিও থাকবো। তবে পুকুরের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে।
-এতে আমার লাভটা কী হবে শুনি?
-ঐ আর কি সাহস পাবে
-মজা করছো! মার একটাও মাটিতে পড়বে না কইলাম
-হা হা হা হা।
না থাক কেউ তবুও আমি সাঁতার লিখবো। প্রযোজনে যদি পুকুরের অর্ধেক পানি গিলতে হয় তাতেও রাজি।
বুক ঢিপ ঢিপ করছে। ভয়ে থরথর করে কাঁপতে শুরু করলাম। এক পা নামিয়ে আবার দ্রুত তুলে নিচ্ছি। সাহসে কুলাচ্ছে না পুকুরে নামার। আমার এই অবস্থা দেখে মেজো ভাবী অনেকটা ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দিলো পুকুরে। সেও নামলো তবে পাড় ঘেঁষে ই দাঁড়িয়ে রইল। আর বললো নেমেছো যখন সাঁতার শিখবে তবেই উঠবে। আমি সমানে আল্লাহকে ডাকতে শুরু করলাম। আর মনে মনে ভাবলাম যদি সাঁতার টা শিখতে পারি মসজিদে পাঁচশ টাকা দেবো।
পাড় ধরেই হাত পা নাড়াতে শুরু করলাম। আমাদের পুকুরে নামা দেখে আশেপাশে যতো ছোট ছোট ছেলে মেয়ে ছিলো নেমে পড়লো আর হাসতে শুরু করলো। কেউ বলছে আপু এতো বড় হয়েছে সাঁতার জানে না। কেউ বলছে আন্টি সাঁতার পারছে না। এবার শুধু জেদ নয় মান সম্মান ক্ষুন্ন হতে শুরু করলো। এতো ছোট ছোট ছেলে মেয়ে গুলো আমাকে নিয়ে মজা করছে ভাবা যায়! যা হোক সাঁতার এবার শিখতেই হবে। সবাই আমাকে ট্রেনিং দিতে শুরু করলো। এভাবে করো, ওভাবে করো। আমি ওদের মতো কাজ করতে শুরু করলাম। বিশ্বাস করুন কতো কিলো নোংরা পানি খেয়ে নিয়েছি তার হিসেব নেই। এখন মনে হলেই গা গুলিয়ে উঠে।
পুকুর পাড়ে যেনো মানুষের ঢল নেমেছে। সবাই আসছে দেখতে আমাকে। ভাবীগুলো তো বেশ খুশি আমার কাণ্ড দেখে। যেনো হেসে হেসে গড়িয়ে পড়ছে। এমনিই সাঁতার কাটতে পারছি না তার উপর ওদের এমন মজা করা আর নিতে পারছিলাম না। মেজাজটা প্রচণ্ড বিগড়ে গেলো। যাবারই কথা আমাকে নিয়ে এমন মজা করার সাহস আগে পায়নি ওরা।
যা হোক প্রথমদিন শুধু নোংরা পানি খেয়ে কেটে গেলো। দ্বিতীয় দিন টানা দুঘন্টা ধরে চেষ্টা করে শরীরটাকে পানিতে ভাসাতে পারলাম। তখন একটু স্বস্তি পেলাম।
তৃতীয় দিন মাথা ডুবিয়ে ডুবিয়ে সাঁতার শিখলাম। মাথা ডুবিয়ে সাঁতার কাটতে কাটতে অনেকটা দূরে গিয়ে হাঁফিয়ে গেলাম। যেই দাঁড়াতে যাবো দেখি পায়ের নিচে মাটি নেই। আবার খেলাম কয়েক কিলো নোংরা পানি। আমার এমন অবস্থা দেখে কাজিন টেনে নিয়ে উপরে তুললেন। এবার ঘটলো সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। বিকেল থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ,,,,
২৫টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
যাক নাইটকুইন সাঁতারে এগিয়ে যাচ্ছেন।
তবে সাঁতার শেখার স্টেপগুলো ঠিক ঠিক বর্ণনায় নিতে পেরেছেন।
দেখি এবার ভূতটি কী কী করে।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সাঁতার কিন্তু শিখতেই হবে, আমিও আপনার মতো এখনো পানিতে নামতেই ভয় লাগে। এ জীবনে আর শেখা হলো না। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
সুরাইয়া পারভীন
দিদি এখনো চেষ্টা করে দেখতে পারেন। শিখা হয়েও যেতে পারে।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
রেহানা বীথি
সাঁতার শিখতেই তো বিদিখিচ্চিরি লেগে গেল, আবার কোন্ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, বাবারে!!!
সুরাইয়া পারভীন
সাপ জ্বীন তুকতাক এগুলো রহস্য উদঘাটন করতে হবে না?
হা হা হা হা হা
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
প্রদীপ চক্রবর্তী
একদিন সাঁতার শিখে ফেলবেন দিদি আর সেইদিন নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন।
শুভকামনা অনেক।
সুরাইয়া পারভীন
হুম তা ঠিক বলেছেন দাদা
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সুপায়ন বড়ুয়া
এই যে ঠেকলে শিখা যায় !
আবার কি রহস্যে শেষ করলেন ?
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদা
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
তৌহিদ
আপনার লেখা পড়ে নিজের সাঁতার শেখার স্মৃতি মনে পড়লো। ভালো লাগছে পড়তে। চলুক গল্প।
তৌহিদ
নববর্ষের শুভেচ্ছা আপু
সুরাইয়া পারভীন
নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো ভাইয়া
খুব খুব ভালো থাকবেন সবসময়
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
ফয়জুল মহী
নববর্ষে জাতীর জন্য সুখবর কামনা করি। শুভেচ্ছা আপনাকে ।
সুরাইয়া পারভীন
আপনাকে ও নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
জিসান শা ইকরাম
শুধু পুকুর পাড়ের কেন? আপনার সাঁতার শেখার বর্ণনা পড়েই তো হাসতেছি আমি 🙂
নিখুঁত বর্ণনা দিলেন ছোট আপু।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো ভাইয়া
হালিম নজরুল
যাক, তবুও ভাল নোংরা পানি খাওয়া সার্থক হল।
সুরাইয়া পারভীন
হ্যাঁ তা তো হয়েছে
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার সাঁতার শেখার বর্ণনা জানলাম আপু।
অনেক ভালো লেগেছে, শুভ নববর্ষ আপু।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সাথে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানবেন
কামাল উদ্দিন
মনে হচ্ছে যাদুকাটা নদীতে সাতার শিখতে গিয়েছিলেন 😀
বিকেল থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ কেন ভুতে ধরছিলো নাকি আপু?
সুরাইয়া পারভীন
আজকের পর্বে পড়ে নিয়েনই ভাইয়া
ততোক্ষণ অপেক্ষা করুন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো
কামাল উদ্দিন
আপনাকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা