হৃদয় আকাশে যে দুঃখের মেঘ তোমায় আঁকড়ে ধরে,তাকে ঝরে পড়তে দাও। বৃষ্টির পরে রোদ আসবেই।কাঙ্খিত সুখের সূর্য কখনোই চির মেঘে ঢাকা থাকে না। তোমার আকাশে ঝলমল করে সে হেসে উঠবেই।
যে তোমায় বার বার আঘাত করে, এই আঘাতে ঘাবড়ে যেও না। ভেঙে পোড় না, নিজেকে অথর্ব মনে কোরো না। কারণ সূক্ষ দৃষ্টিতে দেখলে এই জীবনেই স্বর্গ নরকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তাই ধৈর্য ধরে,শান্ত হয়ে জীবনটাকে তার স্বাভাবিক নিয়মে চলতে দাও। বাঁচতে শেখো, কখনও নিজের মাঝে, কখনও সন্তানের মাঝে। উপর আল্লাহ সন্তান স্বরূপ যে নিয়ামত, যে স্বর্গের সুখ তোমায় দান করেছেন, তাদের ও বাঁচতে দাও, তোমার সন্তানকে বাড়তে দাও তোমার হাত ধরে। কারণ তুমি তো নারী, তুমি মা। এক পক্ষ হোক না একটু বিমুখ। কিছু সময়ের রিপুর তাড়নায় মানুষের মন ,বিবেক যখন ক্ষয়িত ও বিলুপ্ত হয়, তখন সে স্বার্থপর হয়ে ওঠে। নিজের সংকীর্ণ ইচ্ছা চরিতার্থ করার জন্য তোমাকে ঠকাবে, অপমান করবে, দুঃখ দিবে, খুনও করতে চাইবে। কখনও এমনও কষ্ট দিবে যেন তুমি আত্মহত্যা করো। কিন্তু ছোট ছোট যে হাতগুলো তোমায় আঁকড়ে ধরে আছে তাকে তো তুমি ঠকাতে পারো না। কারণ তুমি নারী। তুমি দেখ অপরপক্ষের শেষ পরিণতি। কারন তার পরিণতি হয় ভয়াবহ। সাময়িক সুখের জন্য যে ব্যাক্তি পথভ্রষ্ট হয় সে আসলেই প্রকৃতপক্ষে নিজেকে গোটা পরিবার, সমাজ, সন্তান থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। সে বোঝেনা সে আসলে অসম্পূর্ণ। সে নিজেকে করে ফেলে কলুষিত,খণ্ডিত,ক্ষুদ্র। কিছু অহমিকা অন্য শরীরের আকর্ষন তাকে পাগল করে দেয়। তাকে ঐ তৃতীয়পক্ষের এমনভাবে আক্রমন করে যে ,তার ভিতরের মনুষ্যত্ব টুকু পর্যন্ত নষ্ট করে খেয়ে ফেলে। বস্তুগত কিছু সময়ের আনন্দ তাকে শেষ সময়ে এসে অন্তরে এক নিদারুণ যন্ত্রনায় জলে পুড়ে মেরে ফেলে। জীবন থেকে সে কোনো তৃপ্তিই পায় না। এভাবে যৌবন উপভোগ করা জীবনটাই তার জন্য নরকবাস হয়ে ওঠে।
তাই এই সময়টা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। তুমিই তো বলো সংসার জীবনে সবাই তো সমান নয়। সকল মানুষ একই উপাদানে তৈরী হলেও তার মন ও মনন আলাদা। যে পুরুষ শক্ত রুট চিবোতে গিয়ে গলা চেপে ধরে, মনে মনে তখন হাওয়া থেকে শুরু করে গোটা নারী জাতিকে দোষারোপ করে, সেই পুরুষটি আদৌ রুটির “র”ও বানাতে পারে না। তার কথায় মন খারাপের কিছু নেই। যে তুমি দুঃখ কষ্টকে সহনশীলতার সাথে হজম করে আশার আলো দেখো, ঐ আলো দূরে নয়।
যে পুরুষের অবৈধ তৃপ্তির জন্য নারী হয় গৃহহীন, নিঃস্ব কিংবা নিদারুণভাবে অত্যাচারিত। এই নারী এক সময় উঠে দাঁড়ায় কখনও নিজে কখনও সন্তানের হাত ধরে। উঠে সে দাঁড়াবেই। কারণ দুঃখ মানুষকে গতিশীল করে, উচ্চাকাঙ্ক্ষী করে। যুগে যুগে অনেক দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় থেকে সৃষ্টি হয়েছে অনেক মহৎ কবিতা, সাহিত্য।
যখন নারী সব অত্যাচার ক্ষোভ, অপমানের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ায় তখন নির্লজ্জ স্বামীটি হয়ে যায় আরও বেপরোয়া। সে এমন অবস্থা জাহির করে যে সব দোষ এই নারীর। অক্ষম নীচ মনা এই ব্যক্তিটি স্ত্রীর নিন্দা রটিয়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে প্রতিপন্ন করতে চায়।
তাই আজকের যে ত্যাগ তোমার মনুষ্যত্বকে বিকশিত করে, তোমার সন্তানকে সোনার সন্তান হয়ে বেড়ে ওঠে, তোমার সন্তান সমাজে মাথা উঁচু করে বড় হয়ে ওঠে সেই ত্যাগই তোমার প্রকৃত সুখ। কারণ তুমি স্বার্থপর নও। তুমি যে নারী।
৮টি মন্তব্য
অনিকেত নন্দিনী
নারীত্বের গভীরতম বোধ আর মাতৃত্বের গর্বে ভরপুর অনুপ্রেরণা দানকারী লেখা। (y)
একদম যথার্থ বলেছেন। নারী মানেই দুর্বল বা অবলা নয়। ইচ্ছের জোরে নারী তার গন্ডি ছাড়িয়ে বহুদূর এগিয়ে যেতে পারে।
ভালো থাকবেন আপু। -{@
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
বৃষ্টির পরে রোদ আসবেই—- এই কথা অবশ্যই সত্যি
আমরা আশা নিয়ে বেঁচে থাকি, এই আশার একটি বড় অংশ আমাদের সন্তানরা
সন্তানের কাছে মা সবচেয়ে বড় আশার প্রদীপ,
ঝড় বন্যা জলোচ্ছ্বাসের সময় মা কিভাবে সামলান তা দেখে শিক্ষা নেয় সন্তানরা
নারী অনেক শক্তিশালী রূপে আবির্ভুত হোক
সমস্ত মেঘ কেটে যাক।
শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
মাতৃত্বের জয়গানে নারী সব বাঁধা পেরিয়ে যাবেই।
মৌনতা রিতু
হুমম।যাবেই।উঠে সে দাঁড়াবেই।
শুভ্র রফিক
নারীরা ইচ্ছে করলে অনেক কিছুই পারে।ভাল লেগেছে
অরুনি মায়া
অবশ্যই নারী উঠে দাঁড়াবে ,সন্তানদের মানুষের মত মানুষ করবে | সব ঠিক আছে | কিন্তু তাই বলে মানুষ নামক কোন পশুর সাথে থেকেই যে তা করতে হবে এমন নয় | আত্মসম্মানবোধ সবারই থাকা উচিত | দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভাল |এটা আমি মনে করি |
মৌনতা রিতু
একদম ঠিক।