বই রিভিউ
বই- না হন্যতে
লেখক – মৈত্রেয়ী দেবী
ন হন্যতে বাঙালি কথা সাহিত্যিক মৈত্রেয়ী দেবী লিখিত একটি আত্মজীবনী মুলক উপন্যাস। উপন্যাসটি লেখা হয় ১৯৭২ সালে। প্রকাশিত ১৯৭৪ সালে। রোমানিয়ার লেখক লিখিত “লা নুই বাঙালীর” প্রতিক্রিয়া জানাতে মৈত্রেয়ী দেবী এ উপন্যাস লেখায় হাত দেন।
মৈত্রেয়ী দেবী ১৯১৪ সালের ০১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। মৈত্রেয়ী দেবীর বাবা প্রফেসর সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তের কাছে অনেক শিক্ষার্থী পড়তে আসতো। এমনি এক শিক্ষার্থী ছিলেন রোমানিয় তরুণ মির্চা। আধুনিক শিক্ষায় অগ্রসর সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত মেয়েকে বিদেশি শিক্ষা গ্রহণের জন্য, তাঁর প্রিয় ছাত্র মির্চার সাথে লেখা পড়ায় উৎসাহ দেন। এক সাথে সময় কাটানোর সুবাদে তাদের মধ্যে অনায়াসে একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যদিও মৈত্রেয়ী দেবী জানতো তাদের এ সম্পর্ক কখনো পরিনতি পাবে না। তাদের রক্ষণশীল সমাজ কখনোই মেনে নিবে না। সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত যতই আধুনিক হোন না কেন, এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। তাদের সম্পর্কের কথা যেদিন প্রকাশ পেল। সেদিনই মৈত্রেয়ী দেবীর বাবা তার প্রিয় ছাত্র মির্চাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। যা মির্চার কাছে ছিল অকল্পনীয়। উপন্যাসে দেখা যায় মির্চা ১৯৩৩ সালে “লা নুই বেঙ্গুলি” নামে একটি বই লেখেন।যা ফরাসি ভাষায় প্রকাশিত হয়।এ বইয়ের বিষয়ে মৈত্রেয়ী দেবী কিছুই জানতেন না। প্রায় চার দশক পর তিনি এ বইটির কথা জানতে পারেন মির্চার এক বন্ধুর মাধ্যমে। এবং এটাও জানতে পারেন, তাদের পবিত্র সম্পর্কে বিকৃত করে তুলে ধরা হয়েছে। তখন তিনি প্রকৃত সত্য তুলে ধরার জন্য “না হন্যতে” লেখায় হাত দেন।এ বই লিখতে যেয়ে ১৯৭২ সালে দাঁড়িয়ে, তিনি বারবার ফিরে যান ১৯৩০ সালের হারিয়ে যাওয়া শৈশবের সেই দিন গুলোতে। উপন্যাসে মৈত্রেয়ী দেবী তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার চিত্র সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন।৪২ বছর যার কথা ভুলে গিয়েছিলেন, তাকে নিয়ে লিখেছেন জীবনের শ্রেষ্ঠ লেখা।এ জন্য ই বইটির নাম দিলেন – ন হন্যতে।
১৬টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
সবিনয়ে বলতে চাই….. বুক রিভিউ বলতে যা বোঝায়,,, এখানে আমি তা খুঁজে পাইনি। আপনি মির্চা এঁলিয়াদের প্রসঙ্গটাকেই বেশি উপস্থাপন করেছেন। ন হন্যতে সম্পর্কে রিভিউ হলে,,, মৈত্রেয়ী দেবীর ন হন্যতে নিয়েই আরো বিস্তারিত লেখা আশা করেছিলাম। মির্চা’র উপন্যাসের জবাবে মৈত্রেয়ী দেবীর ন হন্যতে এটা মোটামুটি রকম একটা বর্নণা দিয়ে ন হন্যতের রিভিউটা গতি পেতে পারত আরো একটু বিস্তারিত।
তথাপি…. আশা করি আমার মন্তব্যে মন খারাপ করবেন না। অসংখ্য ধন্যবাদ।
হালিমা আক্তার
প্রথমেই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই সুন্দর ভাবে বিশ্লেষণ করে দেয়ার জন্য। আসলে লিখতে চেয়েছিলাম একরকম হয়ে গেছে আরেক রকম। এজন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আর মন খারাপ করার প্রশ্নই আসে না। শুভ কামনা রইলো।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
খুব ভালো লাগলো বইটি সৃষ্টির ইতিকথা জেনে।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
হালিমা আক্তার
আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমার অতি পছন্দের দুটি বই। মির্চা বলেছেন তাদের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। মৈত্রেয়ী দেবী তা অস্বীকার করেছেন। মির্চার অন্ধত্ব প্রমাণ করে ভালোবাসা কি পরিমান ছিল।
ছাত্রজীবনে বারবার মনে হতো, ভালোবাসা যদি না পাই তাহলে মির্চার মতো হয়ে যাবো।
শুভকামনা ও ভালোবাসা জানবেন হ্ালিমা আপা 🥰
হালিমা আক্তার
আমারও খুব পছন্দের বই। এদের ভালোবাসার মধ্যে কেমন যেন একটা সুবাস ছড়ানো ছিল। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো।
মোঃ মজিবর রহমান
বন্যা আপুর সংগে একমত। ন হন্যতে-এর আলকপাত নাই। তবে মির্চা প্রতিউত্তর স্বরুপ ন হন্যতে সৃষ্টি উপস্থাপন ভালো হয়েছে। ধন্যবাদ হালিমা আপু। মনে কষ্ট নিবেন না। আরো সুন্দর লিখবেন আপনার লেখা থেকে আমি অনুপ্রাণিত হই অনেক।
হালিমা আক্তার
প্রথমেই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই সুন্দর ভাবে বিশ্লেষণ করে দেয়ার জন্য। আসলে লিখতে চেয়েছিলাম একরকম হয়ে গেছে আরেক রকম। এজন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আর মন খারাপ করার প্রশ্নই আসে না। শুভ কামনা রইলো।
আলমগীর সরকার লিটন
বই টই আমি খুব কমই পড়ি সময় থাকে না
এক সময়ে খুব পড়তাম—
ভাল থাকবেন কবি হালিমা আপু!
হালিমা আক্তার
বই পড়ার আমি ও খুব একটা সময় পাইনা। তবে ইদানিং কয়েকটি বই শেষ করেছি। শুভ কামনা রইলো।
খাদিজাতুল কুবরা
বই দুটিই পড়েছি। অসাধারণ বই দুটিই। কিন্তু ন হন্যতের বেশি ভালো হয়েছে।
হালিমা আক্তার
মির্চার “লা নুই বেঙ্গুলি” টি পড়া হয়নি। ইচ্ছে আছে পড়ার। আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
হালিম নজরুল
ভুলেই গিয়েছিলাম বইটি পড়েছিলাম ১৯৮৯ এ। একইসাথে আরেকটি বইও। মির্চা এলিয়েদার “লা নুই বেঙ্গলি”।
হালিমা আক্তার
আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
কামাল উদ্দিন
পড়া হয়নি, তবে বন্ধুর লাইব্রেরীতে বইটি অনেকবারই হাতিয়েছি
হালিমা আক্তার
অসাধারণ একটি বই। অশেষ ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।