প্রচন্ড ঝড় বইছে বাইরে। সন্ধ্যা থেকে ইলেক্ট্রিসিটিও নেই। বাতাসে বাড়িঘর উড়িয়ে নেয়ার দশা। রাতের খাবারের পর সংসারের সব কাজ শেষ করে শুতে যাচ্ছিলো পিয়া। অনেক ক্লান্ত! হঠাত মনে পড়লো আজ সন্ধ্যায় ছাদ থেকে কাপড় আনা হয়নি। কাজের ব্যাস্ততায় একদম ভুলে গেছে। কিন্ত এখন কি হবে? কাপড়গুলো কি ছাদে আছে নাকি উড়ে চলে গেছে? ভয়ে ভয়ে রাকিবকে বললো ব্যাপারটা। খুব বিরক্ত হলেও রাকিব বললো, ‘মোম নাও, গিয়ে দেখি।’ ছাদে গিয়ে দরজা খুলতেই মোম নিভে গেলো। বিজলীর আলোয় দেখে কাপড় মেলার তার শুন্য। অন্ধকারে পুরো ছাদ হাতড়ে হাতড়ে সালোয়ার আর ওড়না পেলো ছাদের দুপ্রান্তে। কিন্ত জামা? এর মধ্যে বৃষ্টিও শুরু হয়ে গেছে। রাকিব বললো, ‘ও আর খুঁজে লাভ নেই, কোথায় উড়ে গেছে কে জানে। পিয়ার মনটা খচখচ করছে। মনে হচ্ছে কেঁদেই ফেলবে। নতুন থ্রিপিসটা ক’দিন আগেই খুব শখ করে কিনেছিলো। রাকিবের মানা সত্বেও ছাদের কিনারে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখছিলো, পাশের মাঠে যদি পড়ে থাকে কামিজটা? হঠাৎ বিজলীর আলোয় মাঠে কালো মত কি একটা চোখে পড়তেই “পেয়েছিইইইইইইইইইইই’ বলে খুশিতে চিৎকার করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে নিচে ছুটলো কামিজ আনতে। কামিজটা ছিলো কফি কালারের। হয়তো সেটাই পড়ে আছে মাঠে। রাকিব পিয়ার পেছন পেছন ছুটতে ছুটতে বললো, ‘আরে আস্তে দৌড়াও, এত রাতে তুমি বাইরে যেও না, আমিই নিয়ে আসি। বৃষ্টি পড়ছে তো!’ কে শোনে কার কথা। এক দৌড়ে বারান্দার গ্রীলের গেট খুলে পিয়া পাশের মাঠে পৌছে গেছে। রাকিবও ততক্ষণে বারান্দার গেটে। কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখে পিয়া কামিজটিতে হাত দিয়েই এক চিৎকার। হাত ঝাড়তে ঝাড়তে বারান্দার দিকে ছুটে আসছে। রাকিব ভাবছে, সাপ-টাপ নয়তো ওটা? পিয়া এমন চিৎকার করছে কেন? কাছে আসতেই রাকিব বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে দেখে কামিজ কোথায়, পিয়ার হাত ভর্তি যে গোবর। 🙂
(সত্য ঘটনা অবলম্বনে)
২৫টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
জীবন এমনই যে পিয়া।
নীহারিকা
সেজন্যই তাড়াহুড়ো করতে নেই।
বুঝে শুনে চলতে হয় 🙂
ধন্যবাদ ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
হুম! সাবধান অতি সাবধানে চলায় বুধিমানের কাজ মনে হয়।
জিসান শা ইকরাম
চমৎকার উপস্থাপনার গুনে এক নিশ্বাসেই পড়ে গেলাম।
এমন ভুল হয় মাঝে মাঝেই।
আপনার লেখার জড়তা কেটে যাচ্ছে। শুভ কামনা।
নীহারিকা
আপনিসহ অন্য সকল ব্লগারদের লেখার মান এত উঁচুতে যে আমি আসলে কিছু লিখতে দ্বিধা বোধ করি। কিছু লিখে নিজেই এর মান নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারি না। মনে হয় সবাই কি ভালো লেখেন আর আমি তার ধারে কাছেও যেতে পারি না। অবশ্য মনকে স্বান্তনা দেই যে সবাই সবকিছু তো পারে না। লেখালিখিতে অপারগতা থাকলেও পড়তে ভালোবাসি। শিখতে ভালোবাসি। জানতে ভালোবাসি। তাই আমার লেখার মান যাই হোক, সোনেলার সাথে হেটে চলেছি।
উৎসাহ দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।
আমির ইশতিয়াক
রাকিব বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে দেখে কামিজ কোথায়, পিয়ার হাত ভর্তি যে গোবর। হা হা হা
ভালো লাগল।
নীহারিকা
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে 🙂
ছাইরাছ হেলাল
তাও ভাল, গরুর উপ্রে দিতে গেছে, মানুষ হলে কিন্তু বেশ একটু ঝামেলাই হয়ে যেত এই ঝড়-ঝঞ্জায়।
লেখা চালু থাকুক, বেশি বেশি করে।
নীহারিকা
ভাগ্যিস অন্য রঙ এর কাপড় ছিলো না 🙂
ভাই লিখতেই তো আছি কিন্ত কোনটাই মানসম্মত মনে হয় না আমার 🙁
দোয়া কইরেন।
ছাইরাছ হেলাল
মান-ফান কোন ব্যাপার না,
চোখ বন্ধ করে কলম চালাবেন,
পাঠক আপনার আশেপাশেই থাকবে।
নীহারিকা
এমন লেখার পাঠক পেলে লিখতে কোনো অসুবিধা নাই। 🙂
অনেক ধন্যবাদ।
রুম্পা রুমানা
হাহাহা। তারপর কি হল জানতে ইচ্ছে করছে। ভাল্লাগলো পড়ে। শুভ কামনা আপনার জন্য ।
নীহারিকা
তারপর যে কি হলো আপা……. জানি না 🙂
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
প্রহেলিকা
অন্ধকারটাই এমন, অন্ধকারের সাথে বিভ্রম নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকে। চোখের ভ্রম! গোবরকেও কামিজ মনে হয়।
ভালো লিখেছেন। লিখুন নিয়মিত।
নীহারিকা
ভাই ঠিকই বলেছেন। অন্ধকারের সাথে বিভ্রম জড়িত।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আমি তো হেসেই খুন!
নীহারিকা
প্লিজ, খুনের আসামী হতে চাই না আমি 🙂
ধন্যবাদ ভাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি কিন্তু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। নীহারিকা আপা দারুণ লিখছেন কিন্তু আপনি। শুরু থেকে শেষ একেবারে হতবাক হয়ে গেছি। কি ভাবলাম আর কি হলো! এরপর হাসতে হাসতে…বাকীটুকু বুঝে নিন।
নীহারিকা
আপা, ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।
এ ঘটনা আমার নিজের চোখে দেখা। ঘটনার পর এটা মনে হলেই কতবার যে হেসেছি, কি বলবো।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
নীলাঞ্জনা নীলা
হাসি না এসে কি যায়! একটা কৌতুক ছড়া পড়েছিলাম বহু বহু আগে। মনে হয় উন্মাদে। ঠিক এমনই ঘটনা আর কি! 😀
নীহারিকা
হাসাতে পেরে ধন্য মনে করছি নিজেকে। 🙂 :v
মিষ্টি জিন
হা হা হা হা … কি বলবো.. হেসেই তো শেষ।
শাখের কামিজ খুঁজতে যেয়ে গোবর হাতরিয়ে আসা।
অনেক সুন্দর উপস্হাপনা আপু।
খুব ভালো হয়েছে গল্প।
নীহারিকা
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপা।
দোয়া করবেন যেন এমন মজার গল্প আরো বেশি বেশি দিতে পারি 😀
মৌনতা রিতু
দারুন লিখলেন ম্যাডাম। সত্যিইও অবাক হয়ে পড়ে গেলাম। সাবলিলভাবে লেখার নামই ব্লগ। দারুন উপস্থাপন হয়েছে।
গুড গার্ল। এভাবে হোমওয়ার্ক চলুক :p
নীহারিকা
হাহাহাহা আমিও কমেন্ট দেখে মরলাম। 🙂
দোয়া কইরেন।