দেশের এই চলমান অবস্থায় অনেকেই দেশ ছেড়ে চলে যেতে চাইছে। আমিও ভাবলাম তাই তো! ঘন্টা, এতো কি হবে দেশ নিয়ে চিন্তা করে?
কোন যেনো এক ফিরিঙ্গি নাকি বলেছিলো, ‘সালা টোমাডের গোলামের ডেশ(দেশ) টোমরা(তোমরা) ডোলামই(গোলাম) রয়ে যাবা!’
আসলেই তো কতো যে জলদস্যু শাসক এসেছিলো এ দেশে! তাই তো সব আলাদা মস্তিষ্কের মানুষ। জিনগত দোষ যারে বলে। তাই তো এতো উশৃঙ্খল। একদম জলদস্যুদের মতো। একটু হলেই গুজবে কান দিয়ে রাস্তায় নেমে ভাঙচুর শুরু করে।
আসলেই, বিদেশ চলে গেলেই ভালো হইতো। কিন্তু সেই সুযোগ তো আর নেই! তাই আফসোস করেই দিন পার করে দিতে হবে আর কি। সেই এক সুযোগ ছিলো আমার। আহ! সে সুযোগটায় ধরা দিলে আজ আমি জাপানে থাকতাম। আমার পোলাপানের নাক একটু বোঁচা হইতো এই আর কি! আমার বাঁশির মতো নাকটা দেইখা মোর শাশুড়ি গর্ব করতো।😛 না হয় কিছু সুশি মুশি খাইতাম আর কি। তয় অক্টোপাস খারাপ হইতো না মনে হয় খাইতে।
ধুর! চিন্তায় এতো দূর গেলাম কিন্তু সে জাপানির পরিচয় দিতে হবে তো। তয় বলি শোনেন,
আমার বাড়ি পোর্ট এলাকায়। যেখানে বিদেশের জাহাজ টাহাজ ভেড়ে আর কি। তো এক জাপানি জাহাজ ভিড়েছিলো আমাদের পোর্টে। আমি তখন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে। বোঝেন তো বয়সটা🤔জাহাজের ওদের কারো কোনো অসুখবিসুখ হলে সরকারি হসপিটালে এসে চিকিৎসা করাতো। সে জাপানি জাহাজের এক রেডিও অফিসারের নজরে পইড়া গেছিলাম। আমিও কিন্তু হোঁচট খাই নাই, তা কিন্তু না।মাথায় কি চুল ছিলো সে লোকটার। একেবারে ঝরঝরে। তবে জাপানি হইলেও নাকটা খুব একটা কিন্তু বোঁচা ছিলো না।
যাইহোক, কারনে অকারনে সে হসপিটালে ঘুরঘুর করতে লাগলো। আমিও এতিওতির সুযোগে আড়চোখে তাকায়ে দেখতে লাগলাম। একদিন একগাদা গিফট দিয়ে পাঠালো আব্বার অফিসে। আহ! বিদেশি পিওর শ্যাম্পু, সাবান, পারফিউম, আর যেনো কি কি মনে নাইক্কা। আসলে জাহাজের রুগিরা আগে এরকম গিফট ডাক্তারদের প্রায়ই দিত। সে জাপানি আমাদের আরএমও কাকুর খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠলো। আমাদের সবাইকে তিনি তার জাহাজে দাওয়াত করে খাওয়াইছিলো। আমরা সে জাপানি জাহাজ দেখেছিলাম হসপিটালের প্রায় সব আন্টিরা ও আমরা পোলাপানরা। একদিন আরএমও আন্টি বলছে, “তুই কি জানিস এ জাপানি তোকে খুব পছন্দ করে।” মনে মনে কইলাম, হেতিরে আমারও পছন্দ। কতো সুন্দর মিষ্টি মিষ্টি করে হাসে। কিন্তু সমস্যা হইলো ভাষা। ইশারার ভাষায় কি আর প্রেম হয়। আহারে! প্রথম প্রেম আমার ভাষার কারনে সমুদ্রের জলে ভাইসা গেলো😥 নতুবা আইজ আমি জাপানে থাকতামরে ভাই। কেউ মোরে গাইল দিতে পারতো না। রাইত যাইগা পোলার বাপের জন্যেে বইসা থাকতাম না।
মনডা আইজ বড় আকুলি পিকুলি করিচ্চে আফসোসে।
#বিঃদ্রঃ ইহা একটা রম্য পোষ্ট। কেউ মনে নিয়েন না। ভাষার দিকেও কেউ খেয়াল কইরেন না। মোর পোলার বাপেরে কেউ কইয়ে দিয়েন না। প্লিজ লাগে। ভালা থাইকেন সবাই।
২৬টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
হা হা হা হাসাইলেন।মনটাই ভাল হইয়া গেল।আপনি কথা বলে কথার বাস্তবায়নও করেন।তবে এবার কান্দেন মোগো ঘুষ না দিলে মোই দুলাভাইরে কইয়া দিমু \|/
জীবন এমনি কপাল বলেও একটি কথা আছে।তবে নিজ স্বকীয়তার আনন্দই আলাদা পরদেশ আর নিজ দেশ পর ভাষা আর নিজ ভাষা কখনো এক নয়।যত কষ্ট আর সমস্যাই থাকি না কেন প্রত্যহ বাচি নিজ মৃত্তিকায় এটা গর্বের এটা অহংকার।
মৌনতা রিতু
হা হা হা আপনার দুলাভাই জানে। তাই কুনো লাভ নাই😊 তয় এক কাপ চা খাওয়াতে পারি আমার হাতের। সবাই বলে আমি ভালো রান্না করি, তা রান্না করে খাওয়াতে পারি। তাইলে তো এই বোনের বাড়ি আসা লাগবে আপনাকে। চলে আসুন একদিন পরিবার নিয়ে। ভালো লাগবে।
ভালো থাকুন ভাই সব সময়। শুভকামনা রইলো।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
হায়াতে আপনাগো আল্লায় বাচাইয়া রাখুক যদি কপালে থাকে আসবো নে।ধন্যবাদ। -{@
মৌনতা রিতু
অপেক্ষায় থাকলাম ভাই, আসিয়েন।
রেজওয়ান
সব পইড়ালাইছি আপি😜ভাইয়ারে কইয়াদিমু চক্কেত না দিলে :D)
মৌনতা রিতু
ভাইয়া জানে \|/ হা হা তাই লাভ নাই। চক্কেত এমনিতেই দিমুনে।
ধন্যবাদ।ভালো থাকুন সব সময়।
মোঃ মজিবর রহমান
আমরা পোলাপানরা। ইন্টারেও পোলাপান।
হাই হাই হা হুতাশ কইরা হাত পা ছোড়েন ফুরুত ফুরাত।
মৌনতা রিতু
হায় হায় এখনকার ইন্টারের পোলাপানরা যদি পোলাপান হইতারে তয় আমি না কেনু? হ, আসলেই হা হুতাশ করতেছি। এই ঘন্টার সমালোচনার দেশে আর থাকুম না।
মোঃ মজিবর রহমান
তয় ভাল থাকুন। কই আর করার আছে। খাচায় বন্ধি এই দেশটায়।
মাহমুদ আল মেহেদী
রম্য লেখা ও লেখার ভাষাও চমৎকার ভালো লাগল
মৌনতা রিতু
অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সব সময়।
ছাইরাছ হেলাল
ইতি-উতির প্রশিক্ষণ তখন-ই সেরে নিয়েছিলেন!
ইশারায় শিস দিয়ে নাকি অনেক কিছু করা যায়, তাই ভাষা-ভুষা কুন ব্যাপার না।
আপ্নে সুবিধা করতে না পেরে এখন এই গপ্পো ফেঁদে একটু হাল্কা ভাব নিচ্ছেন!!
নিন, সে তো নেবেন-ই!!
আচ্ছা, এ-জন্যই আপনার নাক হাল্কা বোঁচা!!
মৌনতা রিতু
ইতি উতির সুবিধা আর করতে পারলাম কই? বাপে তো এর দুই তিনমাস পর একখান পোলা পাইয়া আধাঘন্টার মধ্যে বিয়ে দিয়ে দিলো😣
আমার নাক বোঁচা!!! আয়নাডা খুইজা আনি খাড়ান গুরুজী।
তৌহিদ ইসলাম
আপু গল্পটি পড়ে মন ভালো হয়ে গেলো। তবে জাপানে যাওয়া হয়নাই তাই ভালো না হলে আপনেরে আমরা পাইতাম না।
মৌনতা রিতু
হা হা হা। তাইনা! অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন সব সময়। আসলে জীবনটা আনন্দের। কেনো তাকে দুঃখের সাগরে ডুবিয়ে রাখি আমরা।
তৌহিদ ইসলাম
সহমত আপু। ভালো থাকবেন।
নিতাই বাবু
বর্তমানে আমাদের দেশটা ডিজিটাল দেশ। সবকিছুতেই ডিজিটাল ছোঁয়া। সেই ছোঁয়া আমাদের গায়েও লেগেছে মনে হয়। দেশে যা কিছুই রটুক-ঘটুক এই দেশই থাকতে হবে। দেশ থাকলে সমস্যা হবে, সমাধানও হবে।
আপনার সুন্দর লিখনশৈলী পড়ে ভালো লাগলো। আশা করি ভালো থাকবেন।
মৌনতা রিতু
আপনিও ভালো থাকবেন ভাই। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। শুভকামনা রইলো।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু আমি খুব বেশী ব্যস্ত। তাই ব্লগে আসতে পারছিনা। শুধু বলে রাখি পৃথিবীর একাদশতম বৃহত্তম লেক-এ এসেছি। এ মাস পুরোটাই দৌঁড়ের উপর যাবে। ওহ লেকের নাম “লেক এরি।”
ভালো থেকো।
মৌনতা রিতু
তাড়াতাড়ি আসোওওও -{@ (3
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু এখন তীর্থর গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে। তরুণও এখানে। উইকএন্ডে বাইরে চলে যাই। আর আমার আছে ডাক্তার, ফিজিও। সব মিলিয়ে বেশ ব্যস্ত। এইতো আর কিছুদিন। তরুণ চলে যাবার পর ঘুরে বেড়ানোও বন্ধ। তাই যেটুকু পারছি ঘুরে নিচ্ছি। বুঝেছো? আগামীকাল প্রায় সাতদিনের লম্বা সফরে যাচ্ছি। এবারের সফর নিয়ে ভ্রমণকাহিনী লিখবো, কথা দিচ্ছি। কেমন?
ভালো থেকো খুউব।
মৌনতা রিতু
লিখে ফেলো এক এক করে। পড়ার অপেক্ষায়। -{@ (3
জিসান শা ইকরাম
আহারে কেন জাপান বিয়া হইল না? 🙁
জাপান গেলে হোটেলে থাকা লাগতো না আমার।
থাকা খাওয়া সব ফ্রি- এর চাইতে আনন্দের আর কি আছিল?
রম্যও তো ভালোই লিখতে পারো 🙂
মৌনতা রিতু
হ তাই তো! কত্তো মজা হইতো।
আমি রম্য লিখুম কথা দিছিলাম কিন্তু আর কেউ কথা রাখে নাই মুই বিচার চাই।
মায়াবতী
বাহ কি চমৎকার রম্য লিখে প্রথম প্রেমেরে অবসাদ ও বুঝিয়ে দিলে রিতু !!! খুব ই মজা পেলাম, ভাল থাক -{@
মৌনতা রিতু
হা হা হা। তুমিও ভালো থেকো আপু। ভালবাসা নিও।