গত পর্বে (বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-৩ ) আমি বলছিলাম ফিলিপ মার্শাল এর কথা, তার প্রকাশিত বই এর কথা, সেই সাথে বব উডওয়ার্ড এর State of Danial বই এর কথা, যেখানে তারা তথ্য সুত্র মিলিয়ে খুঁজে পেয়েছিলেন সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্সবানদারের যুক্তরাষ্ট্রে থেকে, কলকাঠি নাড়ার ষড়যন্ত্রের কথা। পর্ব শেষে প্রশ্ন রেখে এসেছিলাম কিছু, যেমনঃ আর কি কি গোপন তথ্য ছিল ফিলিপ মার্শালের THE BIG BAMBOOZLE বইতে? প্রিন্স বানদারের আর জর্জ বুশের ষড়যন্ত্রের আর কি কি প্রমান ছিল মার্শালের বইতে? দিবালোকের মত এইসব সত্য প্রকাশের পর কিভাবে তাঁকে হত্যা করা হয় সপরিবারে?
গত পর্বের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে, আজ চলুন সবাই মিলে, মিলাই তথ্য সুত্র, উত্তর খুঁজি পর্ব-৪ এ।
আপনারা আগের পর্বেই জেনেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ যখন নো ফ্লাই জোন, তখন প্রিন্স বানদারের অনুরোধে লাদেনের পরিবার সহ যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শতাধিক সৌদি পরিবারকে বিশেষ ফ্লাইটে করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়ে যাবার সুযোগ করে দেওয়া হয়। এ সব তথ্য সুত্র ফিলিপ মার্শাল এবং সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড নিরেট ভাবেই খুঁজে পেয়েছিলেন।
২০০৫ সালের জুনে রহস্যজনক ভাবে প্রিন্স বানদারকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যাহার করে নেয় রিয়াদ। সেই সাথে শেষ হয় প্রিন্স বানদারের ২২ বছরের কূটনীতিক জীবন। যদিও বানদার বলেছেন তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। এই সব সুত্রের উপর ভিত্তি করে তখন ধারনা করা হয় নাইন-ইলাবভেনের ঘটনায় কংগ্রেসের যৌথ তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট, প্রিন্স বানদারের কূটনৈতিক জীবন অবসানে ভূমিকা রেখেছিল। কেবল নাইন-ইলাভেনের হামলাকারীদের মদত দেওয়াই নয় ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের সৌদি দূতাবাস এবং রিগস ব্যাংকের মাধ্যমে আল কায়েদা থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী অর্থায়নের কুশিলবদের একজন ছিলেন এই প্রিন্স বানদার। যার হদিস পায় কংগ্রেসের যৌথ তদন্ত কমিশন। ধারনা করা হয় এরপর তাকে আর ওয়াশিংটনে রাখাটা নিরাপদ মনে করেনি রিয়াদ।
ছবিঃ ছিনতাইকারি পাইলট মোহাম্মদ আতা, হানি হানজৌর, জিয়াদ সামির জারাহ ও মারওয়ান আল সেহহি।
মার্শাল তার বইয়ে আরো বলেছেন, ২০০০ সালের জানুয়ারিতে লস এঞ্জেলেসের সৌদি কনস্যুল অফিসে আসেন দুই হামলাকারি-খালিদ আল মিহদার এবং নাওয়াফ আল হাযমি। কনস্যুল অফিশিয়াল ফাহাদ আল থুমাইরি তাদের সেখানে বরন করেন। পরে সান্তিয়াগোর একটি রেস্টুরেন্টে তাদের সাথে দেখা করেন সৌদি গোয়েন্দা এজেন্ট ওমর আল বায়োমি। আর তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার কাজটি করে আরেক সৌদি এজেন্ট ওসামা বাসনান। তার হাত দিয়েই জানুয়ারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় প্রিন্স বানদার ও তার স্ত্রী কয়েক কিস্তিতে হামলাকারিদের ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের চেক হস্তান্তর করে। যদিও প্রিন্সের দাবি ছিল এই টাকা বাসনানের অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার সাহায্যে দেওয়া হয়েছে। হামলাকারিদের বাসা ভাড়া থেকে শুরু করে ব্যাবস্থাপনার সব দায়িত্ব পালন করে সৌদি এজেন্ট বাসনান। একই সময় আল কায়দার মার্কিন গুরু আনোয়ার আওলাকির সাথে হামলাকারিদের বৈঠন ও পরে পার্টির আয়োজন করেছিল বাসনান। নাইন-ইলাভেন কুশীলবদের অন্যতম আওলাকির সাথে ওয়াশিংটনের সৌদি দূতাবাসেরও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। এমনকি প্রিন্স বানদারের সাথে ভিবিন্ন অনুষ্ঠানেও দেখা গেছে আওলাকিকে। কে এই আওলাকি?
নব্বয়ের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন ইয়েমেনের নাগরিক আওলাকি। ভর্তি হন কলারাডো কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ। ৯৩ সালে আফগান মুজাহিদদের সাথে রুশ বিরোধী লড়াইয়ে যোগ দিয়ে ফিরে আসেন ৯৪ সালে। আওলাকি তার কলারাডর বন্ধুদের বলেছিলেন আফগানিস্তানের মানুষের দারিদ্রের সংগ্রাম তার জীবনের লক্ষ্যকে পাল্টে দিয়েছে। তখন থেকেই আওলাকির উগ্রপন্থার সূচনা। ৯৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তিয়াগোতে ‘মসজিদ আর রিবাত আল ইসলামে’-এ ইমামতির আড়ালে উগ্রপন্থার প্রচার শুরু করেন তিনি। তুখোড় ইংরেজি জানা এবং ধর্মীয় বয়ানে সুবক্তা আওলাকির তখন দুই-তিনশো অনুসারি। নাইন-ইলাভেনের দুই ছিনতাইকারী নওয়াফ আল হাযমি এবং খালিদ আল মিহদারকে তিনিই সৌদি গোয়েন্দা এজেন্ট বায়োমি’র সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছিল। প্রসঙ্গতঃ “যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক দপ্তর পেন্টাগনে আছড়ে পড়েছিল এই দুই ছিনতাইকারির বিমান”। ২০০১ সালের জানুয়ারি থেকে ‘দার আল হিজরাহ’ মসজিদে ইমামতির মধ্যে দিয়ে ওয়াশিংটনে বসবাস শুরু করেন আওলাকি। সেটা ছিল নাইন-ইলাভেন ষড়যন্ত্রের কুশীলবদের তৎপরতা শুরুর সময়। এখানেও মসজিদ এবং কল্যানমূলক কাজে অর্থসংস্থানের আড়ালে আওলাকির বিরুদ্ধে জঙ্গী অর্থায়নের প্রমান পাওয়া গেছে। অথচ হামলার পরে হঠাৎ করে উদারপন্থী একজন মুসলিম স্কলার হিসেবে আবির্ভূত হলেন আওলাকি। বিশ্লেষকরা বলেন, সেই ট্রাজেডির পর মার্কিন মুল্লুক জুড়ে যখন মুসলিম বিরোধী ক্ষোভ, ঘৃনা, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাকি মুসলিম দুনিয়ার সেতুবন্ধনের কাজটি করানো হয়েছিল আওলাকিকে দিয়ে। হয়তো সে কারনেই টুইন টাওয়ার ধ্বসে পড়ার দিন নিউ ইয়র্ক টাইমসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আওলাকি বলেছিলেনঃ “কোন মুসলমান কোনদিন এমন কাজ করতে পারেনা। যদি কেউ করেও থাকে তবে তিনি অবশ্যই ইসলামকে বিকৃত করেছেন”। নাইন-ইলাভেনের দু’দিন পর এফবিআই চার দফায় মোট আটবার আওলাকিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আবার ছেড়েও দিয়েছে। কথিত আছে তাকে ছেটে দেওয়ার পিছনে কাজ করেছেন রিপাবলিকান দলের কয়েকজন কংগ্রেসম্যান।
ছবিঃ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক দপ্তর পেন্টাগনে হামলার জন্য দুই সন্ত্রাসীকে রিক্রুট করেছিলেন আনোয়ার আল আওলাকি যখন সে বক্তা, আর শেষ ছবিতে তার আসল রুপ।
জিজ্ঞাসাবাদে যুক্ত এক এফবিআই সদস্য পরে কংগ্রেসের তদন্ত কমিটিকে বলেছেনঃ “আমার মনে হয়েছে আওলাকি হলেন সেই মানুষ যিনি জানেন আসলে কী হয়েছে এবং কারা এর পেছনে আছে”। অথচ আওলাকি ততক্ষনে চিরতরে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন। যোগ দিয়েছেন আল কায়দায়। এবং একের পর এক যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দুনিয়ায় হামলা চালানোর ভিডিও প্রচার করে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শত্রুতে পরিনত হয়েছেন। আওলাকি হলেন প্রথম মার্কিন নাগরিক যাকে পাওয়া মাত্র হত্যার ঘোষনা দিয়েছিল সিআইএ। ২০১১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ইয়েমেনের প্রত্যন্ত এক পাহাড়ি এলাকায় সকালে নাশতা করছিলেন আল কায়েদা নেতা আওলাকি ও তার কয়েকজন অনুসারি। তাদের কয়েকগজ দূরেই পড়েছিল প্রথম মিসাইলটি। আওলাকি ও তার অনুসারিরা দৌড়ে গাড়িতে ওঠেন। চলন্ত সেই গাড়িতেই দ্বিতীয় দফা ড্রোন হামলায় তিন সহযোগিসহ মারা যান আনোয়ার আল আওলাকি। অবসান হয় এক উগ্রবাদির জীবনের ইতিহাস। তবে আওলাকির মৃত্যুর এক বছর আগে মার্কিন জনগনকে অবাক করেছিল আরেকটি খবর। আওলাকির রিক্রুট করা যে দুই ছিনতাইকারি (নওয়াফ আল হাযমি ও খালিদ আল মিহদার) বিমান নিয়ে পেন্টাগনে আছড়ে পড়েছিল, সেই পেন্টাগনেই নাইন-ইলাভেনের আগের দিন লাঞ্চের দাওয়াত পেয়েছিলেন আওলাকি। যদিও নয় বছর পর সেই ঘটনা আড় মনেই করতে পারেননি সাবেক সামরিক সচিব টমি হোয়াইট। তবে এফবিআই’র সাবেক এক এজেন্ট বলেছেনঃ “সেদিন দুপুরে আওলাকির পেন্টাগনে প্রেবেশ করা নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছিল। ব্যাপারটা অনেক দূর গড়িয়েছিল।
ছবিঃ দুই ছিনতাইকারী খালিদ মিহদার ও নওয়াফ হাযমি।
একটু আগে বলছিলাম আওলাকির রিক্রুট করা দুই চিনতাইকারি খালিদ আল মিহদার ও নওয়াফ আল হাযমির কথা। ডিসেম্বরে সান্তিয়াগোতে তাদের সাথে যোগ দেন আরো একজন। তার নাম হানি হানজৌর। বলা হয় তিনিও ছিলেন আওলাকির অনুরক্ত। এরপর ২০০০-এর জুনে ফ্লোরিডার সারাসোটায় অবস্থান নেওয়া তিন হামলাকারী, মোহাম্মদ আতা, মারওয়ান আল সেহহি আর জিয়াদ জারাহ তাদের সাথেই অবস্থান নেয় খালিদ আল মিহদার, নওয়াফ আল হাযমি ও হানি হানজৌর। একটি বাংলো বাড়িসহ অন্তত দুটি অ্যাপার্টমেন্টে তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। সেখানে অভিযান চালিয়ে আনকোরা একটি ক্রাইসলার গাড়িও এফবিআই জব্দ করেছিল। অথচ কংগ্রেসের যৌথ তদন্ত দলের সমন স্বত্বেও (Subpoena) এ ব্যাপারে কোন সাক্ষ্য দিতে রাজি হয়নি এফবিআই।
তারপর কি ঘটেছিল কিংবা আর কি কি গোপন তথ্য ছিল ফিলিপ মার্শালের THE BIG BAMBOOZLE বইতে? দিবালোকের মত এইসব সত্য প্রকাশের পর কিভাবে তাঁকে হত্যা করা হয় সপরিবারে? আমরা সবাই মিলে, মিলাবো তথ্য সুত্র, জানবো আগামী পর্ব-৫ এ।
বিঃদ্রঃ প্রচন্ড কাজের ব্যস্ততার কারনে আজকের পর্বটি পোষ্ট করতে একটু দেরি হল, তার জন্য অনেক দুঃখিত। আগামী পর্বে শেকড় অধ্যায়ের সমাপ্তি হবে, শুরু হবে সুত্র মিলাবার পরের অধ্যায়।
সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, চোখ-কান খোলা রাখুন, নিরাপদে থাকুন।
।।শুভকামনা নিরন্তর।।
আগের পর্বগুলোঃ
বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। ভূমিকা পর্ব।
বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-১।
বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-২।
বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-৩
২৭টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
হামলার আগের দিনও দাওয়াত পায়, হামলার পর মুসলিম দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সেতুবন্ধনের নায়ক আওলাকি হয়ে গেলো আল কায়েদা নেতা আর তাকে বারবার ছেড়ে দেওয়া এতেই সবকিছু পানির মত ক্লিয়ার হয়ে যায়। প্রিন্স বানদারকে সরিয়ে দেয়ার পর তার আর কোন ভূমিকা ছিলো কিনা?
ফিলিপ মার্শালের হত্যাকাণ্ড পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি।
সীমান্ত উন্মাদ
না, প্রিন্সবানদারকে সরিয়ে নেবার পর তার ব্যাপারে আর কোন তথ্য প্রমান পাওয়া যায়নি। তবে ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে আইএসএস ভেঙ্গে যখন আইএস হল এবং আলকায়দার বিভিন্ন উইং তৈরি হল বিশ্বব্যাপী, আর প্রায় ৩০ লক্ষ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন করে জঙ্গী মদদের সহযোগিতার অভিযোগ উঠে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে, তখন সবাই ধারনা করছিল যে এই নিতুন করে অর্থায়নের পিছনের কুশিলবদের একজন প্রিন্স। কারন এখনো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে জোর অবস্থান আছে তাঁর, কিন্তু এই অনুমানের কোন তথ্য প্রমান পাওয়া যায়নি। আসলে আমাদের পক্ষে সব কিছু খুঁজে বের করা অসম্ভব। সীমাবদ্ধতা আছে। বাংলাদেশের ব্যাপারে সৌদি আরবের বিমুখ আচরনের কারন নিশ্চই জানো, তবে এর জন্য দায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলো। আর আমিতো কেবল এই বিষয়ে পড়াশুনা করে যা জেনেছি তাই কেবল অনুবাদ করে কিংবা বিভিন্ন স্কলার, বিশ্বের বড় বড় অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আর্টিকেল বিশ্লেষন করে সহজ ভাবে তুলে ধরছি, সুত্রের সাথে সুত্র, তথ্যের সাথে তথ্যের। আমি যে পেশায় সেখানে আসলে আমাকে দেশের সাথে সাথে আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করতে হয়, আর যে বিষয়গুলো আমি দেখি যে আমাদের বাংলাদেশের জন্য হুমকি সরুপ, যেমন এই বিষয়টা, আমি আমার দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই সবার সাথে শেয়ার করছি, সোনেলার হয়ত অনেকেই আছেন এই বিষয়টাকে উন্মাদের প্রলাপ বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন, আবার আপনারা যারা আছেন আমার পাশে থেকে সাহস দিচ্ছেন, উৎসাহ দিচ্ছেন, সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আর একটা বিষয় হল, আমি এই লিখা পড়ে যদি একজনও সচেতন হন এই ব্যাপারটাতে তবেই আমি সার্থক, কারন সমস্ত কিছুর শুরু কিন্তু একজন থেকেই হয়। এতো কথা বলে ফেললাম বলে দুঃখিত।
ফিলিপ মার্শালের হত্যা কান্ড পর্বে এবং নাইন-ইলাভেন অধ্যায়ের সমাপ্তি আগামী পর্বেই হবে, এবং তারপর থেকে শুরু হবে যুদ্ধক্ষেত্রের নানান ঘটনার সুত্র আর প্রাপ্ত তথ্যের মেল বন্ধন পর্ব। যেখানে চমকে উঠার মত অনেক কিছুই অপেক্ষা করছে। মূলত আগামী পর্ব পর্যন্ত এই ইতিহাসের সূচনা শেষ হবে। মূল এবং সমাপিকা তো পুরুই বাকি এখনও।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাবতেই পারছিনা। আমার সত্যি এলোমেলো লাগছে সব। এমনও হতে পারে!!!
সাবধানে থাকবেন ভাইয়া। নিজেকে নিরাপদে রাখুন। -{@
সীমান্ত উন্মাদ
এখন পর্যন্ত মূলত সুচনা পর্বের শেষের আগের পার্ট গেল, মূল পর্বগুলোতো এখনও বাকি।
জী আপু অবশ্যই সাবধানে থাকবো। আমি এমন কিছুই লিখছিনা যে আমাকে মেরে ফেলবে, আমি কিন্তু আমার নিজের কোন মত বা কথা এখানে লিখছিনা।এই বিষয়ে পড়াশুনা করতে গিয়ে যা যা পেয়েছি সেই সমস্ত কিছুর একটার সাথে আরেকটা সুত্র মিলিয়েছি, অনেকটা দেখে দেখে অংক করা, আমার মতে প্রত্যেকটি মানুষ যেমন করে আমিও তাই করছি, এরা আমার দেশের প্রতি হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে, তাই সবার মত আমিও আমার দেশের মানুষকে এই সব জানাবার দায়িত্ববোধ থেকেই লিখছি আপু, একজনও যদি সচেতন হয় এতেই আমি সফল, তাই আমি প্রতিদিনই ভাবি আমিতো কাউকে গালি দিচ্ছিনা, আমার দায়িত্ব মনে করে লিখছি। আমাকে কেন মারবে? অবশ্য এরা কোন যুক্তি মানেনা। অন্ধত্বই এদের ভিত্তি। তবুও আপু সাবধানে থাকবো। দোয়া করবেন।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা নিরন্তর।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়া জানিনা কেন কি এক স্নেহ কাজ করে আপনার জন্য। আসলে আমরা মুখে বলি সত্যি নিতে জানি, কিন্তু সত্যি পাবার পর চরিত্র বদলে যায়। এরাও একরকমের সেই টাইপ মানুষ।
এরা শেষটুকু জানতে চায়না, তাদের চাওয়াটা যে আসলে কি, সে তারা নিজেরাও জানেনা। জানে কেবল মারতে। রক্তপিয়াসী ড্রাকুলা তো রক্ত খেয়ে মানুষকে ড্রাকুলা বানায়, এরা জানোয়ার এক ফোঁটা রক্তকেও ছাড় দেয়না।
সাবধানে থাকবেন এ কথা বারবার বলবো। -{@
সীমান্ত উন্মাদ
হাঁ আপু আমি জানি এবং অনুভব করি কোন একটা মায়া আমার জন্য আপনার মনে আছে। আপনি আমাকে স্নেহ করেই বলেন সাবধান থাকতে, আপু আমি সাবধানে থাকার চেষ্টা করি। আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন, আপনাদের স্নেহ আর দোয়া থাকলে আমাকে কেউ মারা তো দূরের কথা ছুঁতেও পারবেনা, কারন আমার আছে নীলাঞ্জনা আপু ওদেরতো কেউ নাই।
শুভকামনা আপনার জন্য। আপনার এই স্নেহ আর মায়াই আমাকে আরো অনেক দূর নিয়ে যাবে। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আবেগ ছলছল করছে। -{@ (3
সীমান্ত উন্মাদ
আবেগ আছে তাই আমরা বেঁচে বর্তে থাকি মানবতার আবেশ নিয়ে। অনেক অনেক শ্রদ্ধ্যা এবং ভালবাসা আপনার জন্য আপু। -{@ (3
নীলাঞ্জনা নীলা
অফুরান ভালোবাসা। -{@ (3
মোঃ মজিবর রহমান
মাথায় কাজ করছে না। কেমনে ঘটে বা ঘটায়।
সব তেল মিশে গেছে এক সাগরে
সীমান্ত উন্মাদ
জী ভাই কেমনে যে কি ঘটে বা ঘটায়, আমি সুত্রগুলো তথ্য গুলো যখন পড়ছি আর মিলাচ্ছিলাম তখন আমারও মনে হয়েছিল এযে পুরাই উল্টো গল্প জেনে মজা নিয়ে বসেছিলাম এতো দিন। ঘটনা আসলে কি বা কে এই সব ঘটনার কুশিলব। আর এই তেল প্রকৃতির সাগরে মিশেনি মিশেছে তেলের সাগরে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা পাশে থাকার জন্য।
ব্লগার সজীব
অবিশ্বাস্য লাগছে সব কিছু।কি জেনেছি এতদিন আর বাস্তবে কি হয়েছিলো।জানিনা আপনি কে,তবে সাবধানে থাকুন আপনি।এমন লেখা সবার পড়া উচিৎ।
সীমান্ত উন্মাদ
আমি যে কে সেটা আমি নিজেই জানিনা সজীব ভাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ পাশে থেকে লিখাটা পড়ে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য। শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।
জিসান শা ইকরাম
ঐ সময়ে আমার নিজস্ব বোধে যে ধারনা জন্ম নেয়, তা হচ্ছে, আমেরিকার নাগালের বাইরে এসব ঘটনা কিভাবে সম্ভব? তাদের সিকিউরিটি,সোর্স কি এতই দুর্বল? লেখার মাঝেই পেয়ে যাচ্ছি আমার ধারনার মিল।
চলুক নিয়মিত।
সীমান্ত উন্মাদ
জী মামা আসলে যারা আসলে, সমাজ, মানুষ, রাজনীতি নিয়ে ভাবেন তাদের সকলের মনেই প্রশ্নটা ছিল আছে এখনও, একটু চিন্তা করে দেখেন সিআইএ, এফবিআই, এনএসআই, সহ আমেরিকার এতো এতো ইন্টেলিজেন্স থাকতে তাদের অগোচরে এই সব হামলা করে পার পাওয়া কি সম্ভব কখনও। ঠিক আমার আপনার মত এই প্রশ্নটা উত্তর খুঁজতে গিয়ে ফিলিপ মার্শাল সহ বিশ্বের অনেক জ্ঞানীগুনি বিশ্লেষক এবং সাংবাদিকগন গবেষনা করেছেন, করে উত্তর যা পেয়েছেন তা তারা তাদের বইতে লিখেছেন। আমার মনেও যখন প্রশ্ন জাগলোঃ আসলে ধর্মের নামে যা হচ্ছে তা আসলে কি? কারন যেহেতু আমি মুসলিম পরিবারের ছেলে, তাই পবিত্র কোরআন থেকে শুরু করে ইসলাম ধর্মের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই পড়ার সুযোগ আমি পেয়েছি, সেখানে কোথাও এইভাবে ধর্মকে ব্যাখ্যা করা নাই। যা হালের জঙ্গী সংগঠন গুলো করছে, ইতিমধ্যেই আমি ভূমিকা পর্বে বলেছি যে আমি কেন এই নিয়ে পড়াশুরু করলাম। এবং যখন দেখলাম এই সব ইতিহাসের নথিপত্র লিখা মানুষগুলোকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, তখন মনে আরো প্রশ্ন জাগলো, তাই সমস্ত সুত্র জড়ো করা শুরু করলাম, অবাক হলাম, বিশ্ব রাজনীতির সবচেয়ে ক্ষমতাধর, তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশের হর্তাকর্তারা তাদের দেশের সাধারন মানুষগুলোকে বলি চড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ কিভাবে হাসিল করেছে, অবাক হলাম, ব্যাথিত হলাম। তাই ভাবলাম সোনেলার সবার সাথে শেয়ার করি, কারন একা যেনে লাভ কি কারন এই সন্ত্রাসবাদীরা আমাদের দেশের সন্ত্রাসবাদীদের সাথে জড়িয়ে হামলে পড়তে পারে যেকোন সময়। তাই একা সবাইকে সচেতন করা তো আর সম্ভব না, অন্তত সোনেলার মানুষরা যদি তাদের প্রত্যেককের গন্ডির মানুষদেরও জানান তবে উদ্দ্যেশ্য আরো সফল হয়। আর একটা ব্যাপার একদম পরিস্কার করতে চাই, আমি কিন্তু নিজের কোন কথা বা ধারনা আমার পর্বগুলোতে বলছি না, আমি যেসব বইয়ের নাম, যেসব মানুষদের কথা বলছি তাদের লিখাগুলোকে অনুবাদ এবং একজনের লিখার সাথে আরেকজনের লিখার মূল সুত্রগুলোকে মিলিয়ে সত্যটা সহজে আমাদের ভাষায় লিখার চেষ্টা করছি এবং সবাইকে জানাবার চেষ্টা করছি। তথ্য সুত্রের মেল বন্ধন এবং নিজের প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তগুলো মিলিয়ে মিলিয়ে সাজাচ্ছি লিখাগুলো। আশাকরি সোনেলার সবাই আমার সাথে এবং পাশে থাকবে সবসময়।
মামা, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, কারন আমাকে এইখানে এই লিখার সাহস অনলাইনে আমাকে আপনিই প্রথম জানিয়েছিলেন।
অনেক অনেক শুভকামনা নিরন্তর আপনার জন্য।
লীলাবতী
এসব কি জানছি আপনার লেখার মাধ্যমে।এতদিন কি জেনে এসেছি।জানা আর আসল ঘটনা সম্পুর্নই বিপরীত।
সীমান্ত উন্মাদ
এটাই জগতের নিয়ম আপু, খালি চোখে যা দেখা যায় তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধোকা এবং বিভ্রমই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা নিরন্তর আপনার জন্য।
ছাইরাছ হেলাল
ঘটনার পেছনের ঘটনা আমাদের জানা হয় না, আগ্রহ ও বোধ করি না।
তবে এবারে অনেক কিছুই জানছি, ক্রমান্বয়ে। অদ্ভুত সব যোগসূত্র।
কোথায় প্রিন্স বানদার আর কোথায় আওলাকি।
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি।
দেরি কোন ঘটনা না।
সীমান্ত উন্মাদ
জী আসলেই আমরা অনেক ব্যাপারেই আগ্রহ বোদ করি না। কারন মনে করি এসব যেনে লাভ কি!আমার মনে অনেক আগে থেকেই এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খেলেও তেমন গুরুত্ব দিতাম না, কিন্তু যখন দেখলাম এর কালো থাবা আমাদের বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে, তখন আর থামিয়ে রাখতে পারলাম না নিজেকে। কারন আমি সীমান্ত উন্মাদ এই বাংলাদেশ এবং এই দেশের মানুষ ভীষন ভালবাসি। আমি চাইনা শুধু সচেতনতার অভাবে আমার দেশে অবুঝ শিশুদের সিরিয়ার শিশুদের মত করুন পরিনতি হোক, মা হা, বাবা হারা, সন্তান হারা, স্বামী হারা, স্ত্রী হারা হোক কোন মানুষ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা আপনার জন্য সাথে এবং পাশে থাকার জন্য।
খেয়ালী মেয়ে
প্রচন্ড কাজের ব্যস্ততার মাঝেও দেখি অনেক গুছিয়ে লিখতে জানেন 🙂
লেখা পড়ে জানছি অনেক কিছুই…আরো জানতে চাই, তাই পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি 🙂
ভালো থাকুন, সর্তক থাকুন…
সীমান্ত উন্মাদ
আমি জানি না আমি কেমন লিখছি, আমি জানি খবরের অনুসন্ধান করে ঘটনার ভীতরে ঘটনা তুলে আনতে হয়। এবং তা সহজ ভাষায় যতটা সম্ভব প্রকাশ করার চেষ্টা করতে হয়। আপনাদের জানার আগ্রহই আমাকে অনুপ্রানিত করছে। সাথে থাকুন, পাশে থাকুন, এবং নিরাপদে থাকুন।
শুভকামনা নিরন্তর।
প্রজন্ম ৭১
বেশ খেটেছেন বুঝা যাচ্ছে আপনার লেখা এবং মন্তব্য থেকে।সাধারণ জনতাকে বোকা বানিয়ে রাজনীতিবিদরা কিভাবে ক্ষমতা এবং আধিপত্য বজায় রাখছে,আপনার পোষ্ট তার প্রমান।সাথে আছি।
সীমান্ত উন্মাদ
আপনারা সাথে থাকলেই আমি সাহস পাবো এগিয়ে যাবার। শুভকামনা নিরন্তর।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সরি ব্যাক্তিগত ব্যাস্ততায় কমেন্টস দিতে দেরী হয়ে গেল।আমি যতটুকু বুঝি সব অ্যামেরিকার নাটক কেবল মাত্র তেলের উপর রাজত্ব করা আর মুসলিম জাহানের ক্ষতি করাই ছিল তাদের মূল উদ্দ্যেশ্য।তারা সফলও হয়েছেন।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট যা বিশ্বে একটি স্পর্শকাতর ইতিহাসকে সম্মূখে তুলে ধরছেন।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।ভাল থকবেন প্রিয়। -{@
সীমান্ত উন্মাদ
আমি যতটুকু জানি আপনার নতুন বেবিটা অসুস্থ ছিল, আশাকরি সে এখন ভাল আছে, তাঁর এবং আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা নিরন্তর। ভাল থাকবেন সব সময়। দেরী হলেও কোণ সমস্যা নেই, জানি সব সময় পাশে থাকেন মনির ভাই।