
পৃথিবীতে আসার উদ্দেশ্য কী?কেন সৃষ্টিকর্তা মানুষকে পাঠিয়েছেন? আর পৃথিবীতে আপনার কাজেই বা কী? এই সবগুলোর উত্তর যদি আপনি সহজ করে বলেন, তাহলে হয়ত বলবেন-
জন্ম গ্রহণ করছি।আস্তে আস্তে বড় হব।বিয়ে করব, সংসার হবে, বাচ্চা হবে তারপর মরে যাব। কত সহজভাবেই একটা মানুষের জীবনে ধারাবাহিকতা শেষ হয়ে গেলো।
কিন্তু এর চেয়ে যে কঠিন বিষয় হলো আর্দশ ধরে রাখা। হাতের মুঠোয় আগুনের ফুলকি রাখা যেমন কঠিন তেমনেই আপনার আর্দশ ধরে পথচলা ততটুকুই কঠিন। পৃথিবীতে আসার পর আর্দশ দুইভাবে কাজে লাগাতে পারা যায় একটা ভালো দিকে,আরেকটা খারাপ দিকে।
ভালো দিকে কাজে লাগাতে হলে প্রত্যেকটা মানুষকে সৃজনশীল হতে হয়। আমি যেহেতু কবিতা লিখি তাহলে আমিও একজন সৃজনশীল ধরে নিতে পারি। এই সৃজনশীলতা কাজে লাগাতে গিয়ে অনেকের অনেক বিদ্রুপমূলক, নেতিবাচক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সেইসব প্রশ্নের সম্মুখীন হলে কখনও লজ্জায় পড়তে হয়। কখনও আমার সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা জন্ম নেয়, যা লেখালেখির ক্ষেত্রে একধরনের মানসিক টর্চার ধরা যায়।
যে প্রশ্নগুলো আমাকে আপনাকে প্রতিনিয়ত শুনতে হয় তার ধারাবাহিকতা আলোচনা করবো। যেমন-
**পরিবারের ক্ষেত্রে আমি পড়াশোনা করছি কিনা? লেখালেখির ফলে আমি ভবিষ্যত অনিশ্চিতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি কিনা?
-পড়াশোনা একটা নির্ধারিত সিলেবাস । কয়েকটা সনদের মাধ্যমেই আপনার জ্ঞান মাপা হবে এবং টাকা আয় করা হবে আসল টার্গেট। যার ফলে নিজে সুখে থাকা পরিবার সমাজকে সুখে রাখা। তাই এক কথায় আমি পড়াশোনা করছি বলেই লিখছি জানছি অনিশ্চিতার দিকে যাওয়ার প্রশ্নেই আসে না।
**লেখালেখির ক্ষেত্রে আপনার মনের অনুভূতি সহজেই প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে সময়ের সাথে সাথে। সেক্ষেত্রে আপনার বন্ধু-বান্ধব আশেপাশের মানুষগুলো প্রশ্ন করবে- আপনি প্রচুর নারী আসক্ত কিনা? অমানবিক কার্যকলাপে লিপ্ত কিনা? কবিতা নারী ভোগের হাতিয়ার কিনা?
-যৌবন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়। যে সময় আলো ফুটাতে শিখ হয়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তাঁর “আঠারো বছর” কবিতায় যৌবনের এই বয়সের ইতিবাচক , নেতিবাচক দিকগুলো ভালো ফুটিয়ে তুলে ধরেছেন। প্রত্যেকেই যদি বিবেক আর পারিবারিক আদর্শের কথা চিন্তা করে তাহলে বিপথে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। বিবেককে প্রশ্ন করলেই আপনি নিরবে ধর্ষক হবেন নাকি, মানুষ হবেন? তা বুঝে যাবেন। আমি একজন আর্দশবান গর্বিত বাবার সন্তান পরিবারিক আর্দশ কখনও আমাকে ধর্ষক হওয়ার শিক্ষা দেয় নাই। আমি এবং আমার বিবেক পরিবারের আদর্শের কাছে দায়বদ্ধ।
* সর্বশেষ যে প্রশ্নটির উত্তর আমাকে প্রতিনিয়ত শুনতে হয়, আমি কখনও প্রেম করছি কিনা? বা প্রেম করি কিনা?
-মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই নারী-পুরুষ উভয়ের প্রতি দূর্বল। সেক্ষেত্রে আমিও এর বাহিরে নই। অনেক সময় মেয়েদের প্রতি দূর্বল হয়েছি। তা কখনও বলা হয়েছে আবার কখনও বলা হয় নাই,যেহেতু আমি এডাল্ট এটাই স্বাভাবিক। আমি মনে করি যারা মুখোশ পরা অবস্থায় ধোঁয়া তুলসী পাতা বলে জাহির করতে চায় ওরাই সমাজের বেশি ক্ষতিকর। আমি প্রেম করেছি কোনো এক সময় কারো সেই প্রেম থেকে অবহেলিত হওয়ার পর কোনো মেয়ের প্রতি আর নতুন করে প্রেম করার আকর্ষণ জন্ম নিতো না । কিন্তু কবিতা লেখার ফলে অনেকেই অনেক সময় কবিতার প্রশংসা করে। তার ধারাবাহিকতায় সবার সাথে আপনি সম্বোধন করে কথা ভালো করে কথা বলতাম। তার মধ্যে সর্বশেষ একটি মেয়ে প্রায়ই সময় নক করতো প্রশংসা করতো। আমরা আপনি আপনি করে কথা বলতাম। কোনো একদিন হঠাৎ দেখা হলো তারপর ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করি। কিন্তু আমি তখনও পাত্তা দিতাম না যথেষ্ট সম্মান করতাম। তারপর কেন জানি দেখার পর আস্তে দূর্বল হয়ে গেলো আমার প্রতি। আমিও দূর্বল হয়ে যাই একসময়। কথা না বলতে চাইলে কান্না পর্যন্ত করে দিতো। তারপর কিছু পারিবারিক সমস্যা থাকার ফলে ভালোবাসি বলেও কেমন জানি একটা অনিশ্চিত থাকতে চায় অস্পর্শ ( ছদ্মনাম)। আমি জানি অস্পর্শ আমাকে অনেক ভালোবাসে এবং আমিও ভালোবাসি অনেক অনেক। আদর্শ প্রেমিক হওয়া আর লুচ্চামি করার পার্থক্য বুঝি দেখেই আমি ওকে ছাড় দিয়েছি, অস্পর্শ আমাকে ছাড় দিয়েছে। এখন আমি অস্পর্শ সেই মেয়ের অস্পর্শ প্রেমিক এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই। এখন অন্য কোনো মেয়ের প্রতি সম্মান ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা আসে না।
অবশেষে, আমার লেখা একটা অপ্রকাশিত কবিতার দুটি লাইন দিয়ে সবার সেইসব বিব্রতকর প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জীবনের আদর্শ মেনে সাহিত্যচর্চা করে এগিয়ে যেতে চাই-
“ভালোবেসে আমি কাউকে ছেড়ে আসি নাই
ভালোবেসে আমাকে সবাই ছেড়ে চলে যায়।”
নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ
৩০টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অসাধারণ একটি লেখা পড়লাম। ধন্যবাদ আরো লিখবেন
নাজমুল হুদা
অফুরন্ত ধন্যবাদ আপু 💕
সুরাইয়া পারভিন
এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম ভাই। চমৎকার উপস্থাপন করেছেন। আপনার আর অস্পর্শের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করি। লিখে যান মনে খুলে। সাহিত্য চর্চায় হোক খোঁচা মারা প্রশ্নের উত্তম হাতিয়ার
নাজমুল হুদা
অফুরন্ত ধন্যবাদ আপু 💕
এস.জেড বাবু
একটা গ্রুপে লিখতাম, প্রায়ই রোমান্টিক ধাঁচের লিখতাম সে সময়। গ্রুপের মেয়েদের নিয়ে হাজার রকমের প্রশ্ন শুনেছি।
এমনকি একদিন ইনবক্সে বিতর্ক দেখে আমার ঘরণী আট দিনের জন্য বাবা বাড়ি। যদিও সে আমার প্রতিটি লিখার প্রথম পাঠক।
এর চেয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা সোসাল মিডিয়ায় আমার। এখানে বলতে পারছি না।
যারা তেমন মন্তব্য করেন তাদের বেলায় আমার উক্তি-
ওরা চুরি করা পত্রের পাঠক- অমুক তমুকের সম্পর্ক বিশারদ, ওরা সাহিত্যের পাঠক না।
ওরা তারা- যারা রবির দেয়া এসএমএস কপি করে বিভিন্ন অকেশানে প্রেমিক/ প্রেমিকাকে পাঠায়।
আপনার নিয়মিত লিখার প্রতি শ্রদ্ধা রাখছি।
এগিয়ে যান।
সুরাইয়া পারভিন
হা হা হা হা হা
মাত্র আট দিন বাপের বাড়ি 😛😛
এস.জেড বাবু
সুরাইয়া আপু-
ওটাইতো বেষ্ট স্কোর- ও কখনো তিন দিনের বেশি থাকেনি আগে পরে।
অনন্য অর্ণব
হা হা হা 😀
বেচারী ভাবী একটা সুযোগ নিয়ে বেড়াইয়া আসলো আর কি…🤣🤣
এস.জেড বাবু
অর্ণব দা
এইটা একটা লুকানো সত্য হতে পারে।
অনন্য অর্ণব
হা হা হা 😀 সেটাই তো বলছিলাম, আর কেউ তো মনে হয় খেয়াল করে নি,
নাজমুল হুদা
প্রিয়জনকে ভালোবাসুন প্রাণভরে , সুখে দুঃখে সব কথা বলুন তাহলেই আর যাওয়ার চান্স নাই।
নিজেকে সব সময় পরিষ্কার রাখুন প্রিয়জনের সামনে।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া 💕
এস.জেড বাবু
আগে বিয়ে করেন নাজমুল ভাই,
তখন নাহয় এই দ্বিতীয় জীবনের বুদ্ধি নিবো আপনার কাছ থেকে। এমনিতেও শশুড় হতে আর অল্প সময় বাকি।
আসলে সমস্যা এটা না-
সমস্যা আপনার যা, তেমনি প্রায় প্রতিজন লিখকের।
ওরা যে যার বিবেকের দৌড় পর্যন্ত ই ভাবে এবং লিখকের সম্পর্কে বলে ফেলে, মন্তব্য করে ফেলে।
রোমান্টিক লিখেন- প্রেমে পড়লে কবে ? কার সাথে?
সেড লিখেন- বলবে ছ্যাঁকা খাইলি কবে
এমন সব প্রশ্ন।
শুভেচ্ছা ভাইজান।
নাজমুল হুদা
হা হা হা, বাবু ভাইয়া।
তাহলে আমারে কিছু দ্বিতীয় লাইফের বুদ্ধি এখন সাপ্লাই দেন।
পরে শোধ করে দিবো যখন আপনি চাইবেন।
নিতাই বাবু
আপনার মতো সবারই এরকম একটা সৎ উপলব্ধি থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। এটাই প্রকৃত মানুষের উপলব্ধি। এই পৃথিবীতে আমরা জীবের সেরা সৃষ্টির সেরা হয়ে জন্মেছি। আমাদের ধ্যান ধারনাও সেরা থাকা চাই।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
নাজমুল হুদা
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় দাদা 💕
মনির হোসেন মমি
আমি এবং আমার বিবেক পরিবারের আদর্শের কাছে দায়বদ্ধ।
জীবনের মুল কথাটাই এটা হওয়া উচিত। প্রেমে না পরলে বা প্রেম না করলে দুনিয়ার অনেক কিছুই অজানা হয়ে থাকে। জীবনকে পুরোপুরি উপভোগ্য করতে প্রেমের বিকল্প নেই।জগতের প্রায় সকল বিখ্যাত লেখকের বিহাইন ঘটনায় প্রেম কখনো কখনো প্রসিদ্ধ হবার প্রেরণা যুগিয়েছে।
খুব ভাল লেখা। শুভ কামনা রইল নাজমুল প্রিয় ভাইটি।
নাজমুল হুদা
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া 💕
তৌহিদ
আপনার লেখার বিষয়বস্তু পছন্দ হয়েছে। তবে ভার্চুয়াল জগতে কবিতা লিখে অনেকেই নারীদের নিজের জালে বন্দী করেন বলে অনেকেরই এমন নেতিবাচক ধারনা হয়েছে। নিজে ঠিক তো জগৎ ঠিক। আর পরিবার হচ্ছে সবার আগে।
নারীদের যথাযত সম্মান জানানো একজন লেখকের অবশ্য কর্তব্য।
নাজমুল হুদা
ধন্যবাদ ভাইয়া 💕
হ্যাঁ, কবিতা অনেকের জন্য সুযোগ সন্ধানের হাতিয়ার।
বন্যা লিপি
আস্তে আস্তে বড় হব।বিয়ে করব, সংসার হবে, বাচ্চা হবে তারপর মরে যাব। কত সহজভাবেই একটা মানুষের জীবনে ধারাবাহিকতা শেষ হয়ে গেলো।
কিন্তু এর চেয়ে যে কঠিন বিষয় হলো আর্দশ ধরে রাখা। হাতের মুঠোয় আগুনের ফুলকি রাখা যেমন কঠিন তেমনেই আপনার আর্দশ ধরে পথচলা ততটুকুই কঠিন। পৃথিবীতে আসার পর আর্দশ দুইভাবে কাজে লাগাতে পারা যায় একটা ভালো দিকে,আরেকটা খারাপ দিকে।
এরপর আর এ লেখা নিয়ে বলার কিছু থাকেনা। যাদের স্বভাব, তারা তাঁদের স্বভাব থেকে কখনোই বের হতে পারবেনা ভাই। শুধু নিজের কাছে জবাবদিহিতাই পারে একজন লেখককে সুজনশীল সৃষ্টিতে উৎসাহিত করতে।
আগামী ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গলময় শুভকামনা।
নাজমুল হুদা
ধন্যবাদ আপু 💕
রুমন আশরাফ
দারুণ লেখা। খুব ভাল লাগলো।
নাজমুল হুদা
ধন্যবাদ ভাইয়া 💕
অনন্য অর্ণব
চমৎকার উপস্থাপন। তবে ভাই কবিতা কি কেবলই লুচ্চামির হাতিয়ার ?
নাজমুল হুদা
কিছু কিছু মানুষের হাতিয়ার
নুর হোসেন
লেখকরা সব সময় অন্যের আক্রোশের শিকার হয়ে থাকেন যেমন কালজয়ী ডায়মন্ড হুমায়ুন আহমেদ স্যার অনেকের তোপের মুখে পড়েছিলেন!!
-প্রিয় কবি/লেখক,
প্রভু মানুষকে পৃথিবীতে পাঠান ভাল কিছু ঘটানোর জন্য;
বিবেক যেটা ভাল মনে করবে সেটাই করুন,
পিতা-মাতার সহায়তা নিন।
মনে রাখবেন “ঘেউ ঘেউ করা কুকুর কদাচিৎ কামড়ায়”
সো ডন্ট অরি বি হ্যাপেন।
অবশ্যই ভাল কিছু ঘটবে।
নাজমুল হুদা
ধন্যবাদ ভাইয়া 💕
নুর হোসেন
ভালবাসা নিবেন।
জিসান শা ইকরাম
অসাধারন একটি লেখা পড়লাম। ।
আত্মোপলব্ধি একজন মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ,
নিজেকে চিনতেই হবে।
এমন লেখা আরো চাই,
শুভ কামনা।
নাজমুল হুদা
ধন্যবাদ ভাইয়া 💕
এখন নিয়মিত ব্লগেই লিখবো ফেইসবুক বন্ধ ঘোষণা করে দিছি ।