
জৌলুশ ও আমেজ হারিয়ে বর্তমান সাহিত্যে স্বেচ্ছাচারিতায় ভরপুর। সাহিত্যে সমাজে এখন বীরদর্পে বিরাজ করছে এক শ্রেণীর বুর্জোয়া সাহিত্য ব্যবসায়ীরা। ক্রেস্ট বাণিজ্য পুরষ্কার বিতরণ গুণীজন সম্মাননা নামক এক ধরনের ফালতু বানিজ্য। সেখানে আবার টাকার বিনিময়ে সময় দিচ্ছেন দেশের প্রতিষ্ঠিত কবি সাহিত্যকরা। তাদের ব্যবসা ও মানসিক প্রতিবন্ধীত্বের কারণে জাতীয় পুরষ্কার নির্বাচনের ক্ষেত্রে লেজুড়বৃত্তি ও যোগ্যদের বঞ্চিত করণের রেওয়াজের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাহিত্যে নিয়ে আজীবন সংগ্রাম করা শক্তিশালী লেখকেরা।
এই স্বেচ্ছাচারিতা চারদিকে ছড়িয়ে গেছে পত্রিকার সাহিত্য পাতা থেকে সংগঠনের মাইক্রোফোন সব জায়গায় এর গন্ধ বিকট ও প্রকট দুর্গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোন পথ খোলা নেই। তাই প্রকৃত লেখকেরা দূরে সরে যাচ্ছেন, হারিয়ে যাচ্ছেন ক্ষুধার্ত মেঘের আড়ালে। সামনে আসছে কৈ জাতীয় এক শ্রেণীর ধান্দাবাজ।
.সরকারি এবং বেসরকারি দু’ক্ষেত্রেই পুরষ্কার শব্দটি এখন আর সেই জৌলুশ আর কিরণ ছড়ায় না। পুরষ্কার শব্দটির প্রতি সাধারণের বিশ্বাস অথবা আস্থা কোনটাই অবশিষ্ট নেই। সুবিধাবাদী সুযোগসন্ধানী তথাকথিত লেখকরাই পুরষ্কার হাতিয়ে নিচ্ছে।
যোগ্যদের বঞ্চিত করে খয়েরখাঁদের স্থান দিয়ে তৈরি হয়েছে একধরনের দিশাহীন আবর্ত। তাই উৎসাহ ও উদ্দীপনা ও বিশ্বাস হারিয়ে তা এখন শুধুই একটি নামফলক হয়ে বসে আছে। পুরষ্কার শব্দটি উচ্চারণ করলেই এখন উচ্চারিত হয় চিল ও মুরগির গল্প, যে গল্পে মুরগি ডিম পাড়ে অতঃপর তাপ দিয়ে বাচ্চা ফোঁটায় আর চিল এসে ছোঁ মেরে বাচ্চা নিয়ে যায়। তারপর ছিড়েখুঁড়ে খায়। বিপরীত হোসেন আলীর মতো আন্তর্জাতিক মানের কথাসাহিত্যিকরা পায় প্রবন্ধে পুরষ্কার ইউসুফ শরীফের মতো সিরিয়াস কথাসাহিত্যিকরা থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে।
বর্তমান সাহিত্য নানাভাবে বিভাজিত। তাই প্রতিবাদী সাহিত্য চর্চা এখন আর হয় না। সামাজিক সমস্যা তোলে ধরার মতো “লাল সালু” অথবা “পুতুল নাচের ইতিকথা” সৃষ্টি হয় না। যা হচ্ছে তা বাসি তেলে ভাজা প্রাণহীন রসহীন নীরস সাহিত্যে ফলে সাধারণ পাঠক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সাহিত্য থেকে।
এই অবহেলা অবমূল্যায়ন বাংলা সাহিত্যের অবনতির অন্যতম কারণ। মেধাবী কবি ও সাহিত্যিকদের মূল্যায়ন এবং যোগ্যতার মানদণ্ড নির্ণয় না করার ফলে সাহিত্য অঙ্গনে তৈরি হচ্ছে একধরনের অরাজকতা। একজন সাহিত্যিক সাহিত্যের সাথে কাজ করতে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ত্যাগ ও যন্ত্রণার মোকাবেলা করে থাকে কিন্তু জীবন শেষেও যোগ্য হয়েও মূল্যায়িত না হলে তা অনেকের জন্যই ভ্রুক্ষেপ হয়ে উঠে বেদনার কারণ হয়ে উঠে। ঘর সংসারে নেমে আসে অবহেলা সৃষ্টি হয় উদাহরণ উপেক্ষা। তাই তাদের সাথে নতুন প্রজন্মের সাহিত্যিকদের মেলবন্ধন হয় না। অভিজ্ঞতা ও মেধার মিশ্রণে সৃষ্টি হয় না উৎকর্ষ সাহিত্যে।
৮টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
পুরস্কারেরতো অভাাব নাই ভাই৴৴নীল সাধু দাদার একটা ফেবুক পোস্টে পড়লাম পুরস্কারের নামে বই জমা দেয়া যেন তাদের বৈধ।পুরস্কার কারা কারা পাবেন তাও সিলেক্টটেড।মাঝ খান দিয়ে বইগুলো কৈ যায় তার খবর নাই।
যাই হোক লেখাটা প্রংসনীয়। ধন্যবাদ
দালান জাহান
কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি দাদা…
আলমগীর সরকার লিটন
এই দেশে দুরনীতি ছাড়া কিছু হয় না তবে এর মধ্যে থেকে ভালকিছু কবি সাহিত্যক পাওয়া যায় কবি দা ভাল থাকবেন
দালান জাহান
ভালো বলেছেন ভাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা
মোঃ মজিবর রহমান
পুরুষ্কার বেচে/কেনে অর্থ,পদ দেহ সবই এই বাজারে চলে। খুব বাস্তবতায় লিখা । ধন্যবাদ দালান ভাই।
দালান জাহান
পুরষ্কারে এখন আর কারও আস্থা নেই ভাই
রোকসানা খন্দকার রুকু
অকাট্য সত্য বললেন। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার তা না হলে ভালো লেখকরা , নতুনরা পিছিয়ে পড়ছে।
শুভ কামনা রইলো।
হালিমা আক্তার
সব কিছুই এখন পন্য। পুরষ্কার বাদ যাবে কেন। বেচাকেনায় যে এগিয়ে থাকবে। যশ খ্যাতি তার হাতে ধরা দিব। সাহিত্য এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। খুব সুন্দর লিখেছেন। শুভ কামনা রইলো।