220px-Sculpture_at_Mujibnagar_Birangana-ফোনটা আমি কোথায় পেয়েছি আর আপনার মা কোথায় আছেন তা  জানতে পারবেন না কখনোই,তবে আপনার মা এ দেশের মাটিতেই সহি সালামতেই আছেন।
-প্লিজ!প্লিজ আমার মাকে ছেড়ে দিন,
-ছেড়ে তো দিবোই, তবে আপনার যুদ্ধপরাধীর বিরুদ্ধে কর্ম কান্ডগুলোকে বন্ধ করতে হবে।বাস্ এই পর্যন্তই…মোবাইলটি  বন্ধ  করে দিলেন।সূর্য্য হেলো হেলো  বলেও আর  কোন কথা  জিজ্ঞাসাই করতে পারলেন না।
সূর্য্যের মনের আকাশের জমিনটা জলে  টল টল করছে যে কোন সময়  ফারাক্কার বাধ ভেঙ্গে প্লাবিত হতে পারে  পুরো স্বদেশ।কেননা তরুন  সমাজই যে কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে আর তা হয় বেগবান সমুদ্র স্রোতের মতো।আজ দু’দিন হলো সূর্য্যের মায়ের কোন খোজঁই প্রশাসন দিতে পারছেন না তাই সকল কর্মের মুখে তালা ঝুলিয়ে,কখনো প্রশাসনের দোয়ারে দোয়ারে কখনো বা বন্ধু বান্ধবদের কাছে ছুটে চলছেন সে,যদি মায়ের কোন খোজ পাওয়া যায়।
সূর্য্যকে  না পেয়ে সাথীরা খোজ নিতে  তার বাসায়  চলে আসেন।সে তখন আনমরা হয়ে একা বসে আছেন আর সেই মুহুর্তে রাজ্যের সকল দুঃচিন্তা মাথায় এসে ভিড় জমিয়েছে।সাথীদের দেখে কাজের বুয়াকে রুম থেকে কিছু চেয়ার নিয়ে আসতে বললেন।সবাই যার যার  আসনে বসলেন।
-আজ দুদিন হলো আপনি আসছেন না কোন অনুষ্ঠানেই,আমরা কি তাহলে রাজাকারদের ভয়ে পিছ না হবো ভাইয়া?
অন্য আরেক জন…..
-ত্যাগের ঘরে জন্ম আপনার এও জানি যুদ্ধে আপনার বাবা শহীদ হয়েছেন নানাজি নিখোজঁ ছিলেন আর মায়ের বীরত্ব গাথার কথা বলেতো শেষ করা যাবে না আর তাদের ঘরের সন্তান আপনি।
সূর্য্য তবুও নিশ্চুপ, অভি সমরও কোন কথা বলছেন না এর কোন সমাধান দিচ্ছেন না তবে কি ঋণ শোধের এখানেই সমাপ্তি নাকি দেশটা আবারও পাকিদের দখলে চলে গেল।
-অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে…মুক্তমনা লেখকদের একের পর এক হত্যা করে চলছেন এর দায় ভারও স্বীকার করছেন উগ্রপন্থী হিযবুর তাহরির অথচ তাদের কিছু সদস্য নাম মাত্র আইনে আটক আছ…এক দিন ওরাও বের হয়ে যাবে জেল থেকে  আইনের মারপ্যাচে কোন অদৃশ্য লোকের ইশারায়।আর আমরা যারা মালুর বাচচা  আছি এবার  তাদের নুনু কেটে দেশ থেকে তাড়াবে।
উপরোক্ত হঠাৎ সমরের এমন কটাক্ষ  বক্তব্যে  হতভম্ব উপস্থিত সবাই।
-সত্যিইতো আজ বর্তমান যে  সরকার এই দশ বছরের ক্ষমতার মসনদে বসা বা  টিকে থাকা তার প্রধান কারন হলো যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা শুধু বিচার  নয় ইসলামের সাইন বোর্ড নিয়ে একটি জঙ্গী গ্রুপ রাজাকার প্রধান গোলাম আজমের জামাতকে নিষিদ্ধ  করা।যার কোনটির কার্যক্রমই এখন দেখছি না  যতই দিন  যাচ্ছে  ততই জাতীয় নির্বাচন আবারো সামনে এগিয়ে  আসছে আর ততই যেন সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলতে বসেছেন।
সরকার,কি ভাবছেন!এই  দশ  বছর  ক্ষমতায় থাকার পর  জনগণ  আবারো ক্ষমতার  মসনদে বসাবেন,তাকেই!যুগের সাথে মন মানষিকতার পরিবর্তন কি হবে না?আমার মনে হয় না,এ দেশের অতীত ইতিহাস কয় না।একমাত্র নির্বাচিত এই সরকারই দীর্ঘ দশ বছর আমাদের দেশে,এই প্র্রথম।যদি  সরকার মনে  করেন আগামী  জাতীয় নির্বাচনে জয়ে আবারও যুদ্ধাপরাধীর বিচারকেও ঢাল হিসাবে নিবেন,তবে আমার  মনে হয় ভূল হবে কেননা  শুধু  মাত্র ঢাকা শহরকেই সমগ্র বাংলাদেশ ভাবা ঠিক  নয়।
এ সরকার যদি কোন কারনে বিপাকে পড়েন তবে আমাদের  মতো যারা নিজের খেয়ে বনের মহিষ  তাড়ায় তারাই সব চেয়ে বেশী আতংকে থাকবেন,বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হবেন কেননা ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতা চলে গেলে অর্থের নৌকায় পাড়ি দিবেন বৈদেশে।যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে এক মাত্র আওয়ামী লীগের শক্তিই মুক্তি যুদ্ধের কথা বলে আর বাকী সব তৈরীর পোলার বাপ হয়ে সুবিদা নিচ্ছেন।
যাক সে কথা……খালামম্মার কি খবর?উপরোক্ত কথাগুলো বলে হঠাৎ সূর্য্যকে  প্র্রশ্ন করেন সাথীদের পরিচিত একজন।
-আমাদের এই কার্যক্রম থেমে গেলে ওরা মাকে ছেড়ে দিবে।
-এ  আবার কেমন কিডন্যাপ!সারা জীবন  শুনলাম টাকা পয়সা চাওয়া  আর এখন!…
-কি ভাবে জানলেন?
-ফোন কলে,
-নম্বটি ধরেইতো  খোজ নেয়া যা্‌,
-না ওদের  কোন  নম্বর নয় আমার মায়ের নাম্বার দিয়েই ফোন দিয়েছিল ওদের একজন।
-হুম!তবে ফোন কল ট্রাকিং করে বের করা যাবে  কোথায় হতে ফোনটি করেছিল।
-সেই প্রযুক্তি আমাদের দেশে তেমন পরিপূর্ণ  ভাবে চালু হয়নি।
-পুলিশকে জানাননি?
-থানায় ডায়রী করেছি কিন্তু কোন লাভ হলো না বরং ক্ষতিই বেশী হলো মনে হচ্ছে।
-মানে?
-ওরা কোথাও কোন প্রশাসনে খবর দিতে না করেছিল নতুবা মাকে ফিরে পাবো না,
-তাহলে এখন কি  করা যায়?
-তাই ভাবছি্‌্‌্‌্‌্‌্‌,
-ঠিক আছে আমরা আমাদের ওয়েতে খুজব….তাহলে আজ উঠি… যে কোন প্রয়োজনে ফোন দিবেন আর দেখি আমরা খোজঁ করে কিছু পাই কি না।
-ঠিক আছে,্‌্‌্‌,সমর অভি থেকে যা…কথা আছে।
ওরা চলে যাবার পর সূর্য মায়ের ঘরে ঢুকে মায়ের বিছানায় বসেন,অভি সমর নীরবে তার পিছু এসে পাশের সোফায় বসেন।আজ কয়েক দিন হলো মা নেই ঘরে,মা বিহীন সূর্য্যের অন্তরে শোকের মরুভূমি।চোখে পড়ে মায়ের ফ্রেমে বাধা টেবিলে সাজানো পিতার সাহসিকতার যুদ্ধের সার্টিফিকেট,বীরঙ্গনা মায়ের মুক্তি যুদ্ধের সম্মাননার ছবি,ফ্রেমে ঝুলন্ত সার্টিফিকেট যা রক্ত ক্ষয়ি আত্ব ত্যাগের এক মাত্র শান্তনা।
এ দেশ এ দেশের নেতা নেত্রীদের ঐ সব মুক্তিযোদ্ধাদের  দেবার মতো এ কাগজের টুকরো ছাড়া আর কিছুই যে নেই অথচ মুক্তি যোদ্ধাদের স্বপ্ন ছিল কত কিছু,
,“এক লাল জামা আবদারের খুকী, তার বাবাকে ফিরে পাবেন একটি স্বাধীন দেশে,জঙ্গী বিহীন এক সর্ব মঙ্গলময় দেশে,বীরের সস্মানে মাথা উচু করে দেশ গড়ায় জীবনের বাকীটা পথ পাড়ি দিবেন,যা এখন সবি এর বিপরীত মুখী। 
-কমিশনার কি বলেছেন?
-তারা আর কি বলবেন,,,বললো বিষয়টি দেখছেন।
-মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যোগাযোগ করলে কেমন হয়?
-কি যে বলিস তোরা,সব কিছুতেই যদি তাকেই টানতে হয় তবে তাকে আর রাষ্ট্র চালাতে হবে না।এখন  কোথাও কিছুই আর বলব না…আরো একটি দিন অপেক্ষা করব।
এমনি ভাবে কত শহীদ  পরিববারে সন্তানরা এ  দেশে নাজেহাল হয়েছেন বা হচ্ছেন তার কোন নিদিষ্ট সংখ্যা নেই কিছু জানি কিছু হয়তো অজানাই থেকে যায় তাইতো যারা এ দেশে জীবিত মুক্তিযোদ্ধা আছেন তাদের আকুতি অনুভূতিগুলো অন্তরেই এক অজানা হতাশা নিয়ে হয়তো বা ভাবছেন যুদ্ধে,,,,,,
শহীদ হয়েছেন যারা তারা মরে গিয়ে যেন বেচে গেছেন আর যারা গাজী হয়ে বেচে আছেন, রাজকারদের ক্ষমতার প্রভাবের দৌরাত্বায়  দিশেহারা তারাও যেন ভাবছেন যুদ্ধে কেনো তারাও শহীদ হলেন না,তবে তো আর এমন মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ভাঙ্গনের পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না ।বেচে থেকেও না বাচার মতো এ জীবনে দেখতে হতো না,যেমনটি সাংবাদিক প্রবীর শিকদার,একজন সৎ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যাক্তি হয়েও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কাছেই কারা  বন্দীর  ষড়যন্ত্র  হওয়ার  দৃশ্য দেখতে  হয়েছে বাকী মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের ষড়যন্ত্রতো বলাই বাহুল্য।”
বড়ই আফসোস আজকের ছাত্রলীগদের  মাঝে খোজে পাওয়া যায় না সেই স্বাধীনতার যুদ্ধের পূর্বকার নিউক্লিয়াসের মতো ছাত্রলীগার।আজ  তারা  কেবল টেন্ডার বাজীতে,একে অন্যের ক্ষমতার বিরুদ্ধে কখনো আবার অতি ভক্তিতে ভিসির রাস্তা খালি করতে  শিক্ষকদের পিটায় । রাজপথে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সংঘঠনের পক্ষ থেকে তেমন কোন জোড়ালো পদক্ষেপ রাখছেন না।কোথায় সেই ছাত্রলীগ কিংবা যুদ্ধ পরবর্তী ছাত্রদল!।
দিন ফুরিয়ে সন্ধ্যার আগমন অবশ্য এই ঢাকা শহরে বিল্ডিংয়ের ছাদের উপরে না  উঠলে বুঝা যায় না সূর্য্যের অস্তিত্ব।ইট পাথরের পাকা দেয়ালে হেলান দিয়ে বেচে থাকা মানুষগুলো সূর্য্যের তাপ আলো কমে গেলে কিংবা ঘড়ির ঘন্টা দেখেই বুঝতে পারেন এই বুঝি ধরাতে রাত্রীর আগমন ঠিক তেমনি সময় স্বর্নার আগমনে সবাই  যেন চমকে গেল।কেননা সে কখনো  সূর্য্যদের বাসায় আসেনি তবে সে আসল কি ভাবে!।সূর্য্য উঠে গিয়ে জানান দেন সে তার বাড়ীতে আসবার পথটি ভূল করেননি একটুও।
-কেমন আছেন সূর্য্য ভাইয়া?
-ভালো,তা এলে কি করে?তুমিতো কখনো আমাদের বাসায় আসোনি।
-সে এক মেলা ইতিহাস সেই দুপুর থেকেই আপনাদের বাসা খোজঁ করছি আর এখন সন্ধ্যা,,,,,,,সব চেয়ে বেশী ভাল লাগছে যে আপনাদের সবাইকে একত্রে পেয়েছি….।
-হুম!খুব ভালো,তা নতুন কোন খবর আছে?
-সে খবর বলতেইতো এত কষ্ট করে এখানে আসা।
-বলো!
শুনতে উদগ্রীব সবাই…।
-মায়ের খোজঁ পেয়েছি!!!!!!!!!!!
চলবে
প্রজন্মের ঋণ শোধ ২৫তম

৫৯৭জন ৫৯৭জন
0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ