
একটা পুতুলকে মেয়েটা তার মনের সব কথা বলতো মনের সব দু:খ গাথা বলতো
নির্জীব পুতুল ছাড়া তার কথা শোনার কেও নেই আপন মনে সে তার সঙ্গী পুতুলকে সব বলতো
তার আপনজনরা তার যে মনের যে কথা জানেনা তার জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতার কথা জানেনা অকপটে পুতুল তার সব মনের কথা জানতো
নীরব পুতুল কিছুই বলতোনা তার আনন্দ মাখা হাসি মাখা মুখে সব শুনে যেত কোন ভাবান্তর হতোনা
এই ভাবান্তর না হওয়াটা মেয়েটার ভালো লাগতো ভাব ভাবান্তর হলে
মনে জটিলতা তৈরী হবে এর চেয়ে নীরবে সব কথা শুনে যাওয়াই ভালো
মেয়েটা পুতুলকে সব কথা বলতো তার জীবনের প্রথম ভালোলাগা প্রথম প্রেম নিজের মুখের ব্রণের কারণে প্রতিজনের সমর্থন না পাওয়া নীরব প্রেমের একাই কান্না নীরব প্রেমের বিরহে কত বিনিদ্র রজনী কাটানো সবই বলতো বলতে বলতে তার অশ্রু কোন বেয়ে জল
গড়তো সেই নোনা জল তার গাল বেয়ে গড়িয়ে ঠোঁটের কাছে আসলে সে জিভ দিয়ে চেটে নিতো মনে মনে ভাবতো নোনাজলের স্বাদ অনুভূতির মতো তার জীবনটাও নোনা অনুভূতিতে ভরা
নেই কোন মধুর স্মৃতি সুখ অনুভূতি কত বসন্ত চলে গেলো কত হেমন্ত এসে গেলো তবুও তার জীবনে কোন পরিবর্তন এলোনা
আলাভুলা চেহারার কারণে তার কোন বন্ধু নেই কেও তার সাথে কথা বলেনা কেউ তার সাথে মিশেনা একলা পৃথিবীতে এসেছে সে একলাই কি চলে যাবে
মেয়ের এ দুরবস্থা দেখে বাবা মাও মেয়ের সাথে ভালো ব্যাবহার করে না একমাত্র মেয়ে কাছে গেলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়
এত অশান্তি এত কষ্ট এত জীবন নষ্ট আর ভালোলাগেনা জীবনটা এত নিকৃষ্ট
পরীক্ষায় ফেল করার কারণে বাবা সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেছে তার আজ থেকে কলেজ যাওয়া বন্ধ
কলেজ টা ছিল তার শ্রেষ্ট জায়গা সেখানে তার সাথে কেউ কথা না বললেও দিগন্ত বিস্মৃত মাঠ তার অনেক প্রিয় ছিল এ মাঠ যেন আকাশ মাটিকে এক করে দিতো ক্যাম্পাসের ভিতরে বিশাল বড় মহুয়া গাছে শালিক বকুলের সাথে তার নিজের আনমনে না বলা কত কথা বলতে ভালো লাগতো আর হয়তো সেসব হবেনা
এসব ভাবতে ভাবতে তার একমাত্র সঙ্গী পুতুলের দিকে দীর্ঘশ্বাসের মুচকি হাসি দিয়ে মেয়েটা তাকালো মনে মনে বললো
আজ তোর সাথে আমার শেষ দিন আমায় ছাড়া একলা থাকতে পারবিতো পুতুলের মুখের মুচকি হাসি যেন বললো
হ্যাঁ পারবো
মেয়েটা মনের কথনে বললো তাহলে আমি চলে যাই বলতে বলতে দাঁড়ালো একটা ব্লেড বের করলো চোখের ইশারায় পুতুলকে জিগেশ করলো কেটে ফেলবো পুতুলের মুচকি হাসি আবার যেন সম্মতি দিলো কেটে ফেলো
ব্লেড থেকে মেয়েটার হাতের রগ দুই এক বিন্দু পিছনে বাস সামনে আগিয়ে ব্লেডের একটা পোচ মারলেই রক্ত বিন্দু অঝোর ধারায় ঝরতে লাগবে
মেয়েটার চোখ বন্ধ দাঁতে দাঁত চিপা মুখের অঙ্গভঙ্গি বিকৃতিতে মুখের চামড়া গুছিয়ে গাছে এখনই সে পোচ দিবে তারই সাথে তার জীবন কাহিনী শেষ হবে দিল দিলো বলে
হঠাৎ একটা গাড়ির বের কষার ঘাসর্ঘস্বর শব্দ সেই শব্দে সে চমকে উঠলো তার হাত থেকে হাস্যউজ্জ্বল পুতুল টা পড়ে গেলো
কালো একটা মার্সিটিজব্রেচ গাড়ি এসে দাঁড়ালো সে চোখ মেলে তাকালো হাতের কব্জিতে তখনও তার ব্লেড ধরা সেই অবস্থায় সে তাকালো দেখলো কালো জুতো পড়া জুতার উপর প্যান্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে লোকটা স্যুট বুট পড়া প্যান্টের কালার টাও বোটল অ্যাস প্যান্টের রং দেখে লোকটার আভিজাত্যের প্রমান পাওয়া যায়
৫টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
মার্সিডিজ গাড়ির ব্রেক আর আগন্তুকের
আভিজাত্যের ছাপ দেখে এক বিয়োগান্তক
গল্পের পরিনতি থেকে মুক্তি মিললো।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
একটা মেয়ের একাকীত্বের অনুভূতি গুলো তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ শুভ কামনা রইলো
সঞ্জয় মালাকার
ভালো লাগলো পড়ে,
ভালো থাকবেন সব সময় /
সুরাইয়া পারভীন
এমন নির্জীব নিস্তব্ধ সঙ্গী মন্দ নয়
ভালো লিখেছেন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
মুন
Donnobad sobai ke