
“ তু খুদ কি খোঁজ মে নিকাল,তু কিস লিয়ে হতাশ হ্যায়,
তু চাল তেরী বাজুদ কী, সাময় কো ভি তালাশ হ্যায়!
জো তুঝছে লিপটি বেরিয়া, সামাঝ লে ইনকো বাস্ত্র তু,
ইয়ে বেডিয়া বিঘালকে, বানালে ইনকো শাস্ত্র তু।
চরিত্র যাব পবিত্র হ্যায়, তো কিউ হ্যায় এ দশা তেরি,
ইয়ে পাপিওকো হাঁক নেহি, কি লে পরীক্ষা তেরী।
জ্বালাকে ভস্ম কার উসে, জো ক্রুরতা কা জাল হ্যায়,
তু আরতি কি ল নেহি, তু ক্রোধ কি মাশাল হ্যায়।
চুনার উরাকে ধ্বাজ বানা, গগন ভি কাঁপ কাঁপায়েগা,
আগার তেরি চুনার গিরি,তো এক ভূ-কম্প আয়েগা!!”—-‘পিংক’ মুভিতে শক্তিমান অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের আবৃতি করা অসাধারণ একটি কবিতা যা শেষে রয়েছে।
করুন কাহিনীর নারী নির্ভর ২০১৬ সালের মুভি ‘পিংক’। প্রধান চরিত্র তাপসী পান্নু( মৃনাল অরোরা) যিনি একজন মডেল। অন্যদুজন চাকুরীজীবি কীর্তি কুলহারী (ফালাক)মুসলিম ও নর্থ ইষ্ট এর এনড্রিয়া। তারা একই ভাড়া বাসায় বসবাসকারী ইনডিপেনডেন্ট তিনজন বন্ধু।
মুভিতে মেয়েদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাসেজ রয়েছে। যতই পূর্ব পরিচিত হোক সে বন্ধু কিংবা তার বন্ধুদের সাথে মিশতে যাবার আগে তাদের সম্পর্কে না জেনে বুঝে মেশা উচিত না।কোন নির্জন পরিবেশ কিংবা রক শোতে তো অবশ্যই না।
স্কুল ফ্রেন্ড বিশ্ব ও তার বন্ধুদের সাথে মৃনালরা বেড়াতে যায়। তারা ড্রিংক করে, হেসে হেসে কথা বলে এতে পুরুষদল ভেবে নেয় তারা অনেক ফ্রি সো তাদের সাথে সেক্সুয়াল রিলেশানে সমস্যা নেই। মৃনালকে কৌশলে অন্যরুমে নিয়ে রেপ এটেম করে। নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে মৃনাল রাজবীরের মাথায় বোতল ছুঁড়ে মারে। রাজবীর ভীষন আহত হয়।
রাজবীর সিং ক্ষমতাধর মন্ত্রী রানজিত সিং এর ভাতিজা। আর এ কারনেই মৃনাল পুলিশ কমপ্লেইন করতে গেলে পুলিশ কৌশলে এডিয়ে যায়। উপরন্তু বোঝায় “ম্যাডাম বিষয়টি আর বাড়াবেন না তাতে আপনাদেরই ক্ষতি হবে।”
প্রতিশোধ ও থামিয়ে দিতে রাজবীরের দল মৃনালকে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং গাড়িতে রেপ করে। সাথে বলে যায়, “কাউকে কিছু বলোনা, এটা মাত্র শুরু, আবার দেখা হবে?”
রাজবীরদের কমপ্লেইনের ভিত্তিতে মৃনালকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। ৩০৭- এ এটেমড টু মার্ডার কেস দেয়। নারী পুলিশ অফিসার যিনি নারীর সহায়ক হবার কথা তিনিই মিথ্যা কেস তৈরি করেন।
মজার ব্যাপার, যে কোন নারী ঘটিত কেইস এ নারীদের পাশে নারীরাই থাকেন না। বরং নানা ভাবে অসহযোগীতা করেন। প্রতিবেশীরাও বলাবলী করে একা একা মেয়েরা থাকলে এমনই হয়।
দিপাকসায়গাল (অমিতাভ বচ্চন) একজন রিটায়ার উকিল। তিনি অসুস্থ কিন্তু প্রতিবেশী হিসেবে পাশে দাঁড়ান এবং পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও তিনি। সব উকিল না করে দিলে তিনি এ কেস লড়ার সিদ্ধান্ত নেন। এখানে যেটি প্রাধান্য পায় সেটি হল অসুস্থতা কিংবা বয়স কোন বিষয় নয়, কাউকে সাহায্য করতে সদিচ্ছাই যথেষ্ঠ। পুরো কেস অনেকটাই তার উপর নির্ভর করে।
মুভিতে অসুস্থ সমাজ আর তার অসুস্থ চিত্র ফুটে ওঠেছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীদের স্বাধীনতা দিতে পছন্দ করে না। নারী মানেই মাংস পিন্ডের শরীর যা শুধুই তাদের ভোগের বস্তু। নারীদের তাদের পোশাক, চালচলন, এক্স বয়ফ্রেন্ড, মানুষিক টর্চারসহ কোর্টে তার ভার্জিনিটির প্রশ্নসহ, দেহ ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা চালানো হয় যা অতি বিব্রতকর। আর এজন্যই অধিকাংশ রেইপ কেস পারিবারিক লজ্জা ও সম্মানের ভয়ে কোর্টে যায়ই না।
জরুরী অংশ- “ না কা মাতলাব না হোতা হ্যায়,নো মিন্স নো।”
সে যেই হোক পরিচিত, ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড, সেক্স ওয়ারকার কিংবা ঘরের বউই হোক না কেন? না তো নাই-ই। এর অর্থ আমি এসময় ইন্টারেষ্ট না। এরপরও যদি কেউ কারও দ্বারা জবরদস্তির শিকার হয় তাহলে সেটি অবশ্যই রেইপ।এর থেকে রক্ষা পাবার জন্য কেউ যে কোন পদক্ষেপ নিলে সেটি নিজের আত্মরক্ষার মাধ্যম।
আমার অসংখ্যবার দেখা মুভিটি সবার দেখা উচিত। পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী নারীদের হেনস্তা করার অপচেষ্টা ও জেন্ডার ইসু বেশ চমৎকার করেই তুলে ধরেছেন। যে কোন জটিল সমস্যায় নারীদের মানষিক শক্তিই মূল সহায়ক। আমরা মনে করি, মেয়েদের উচচশিক্ষা, দ্রুত বিয়ে না দেয়া কিংবা জিনস্ বা টি-শার্ট পড়া, তাদের দামী ফোন থাকা, বাবা- মা থেকে আলাদা বসবাস ইত্যাদি নানা কারনে ছেলেরা নষ্ট হয় আসলে তা নয়।
“ We should save a boys not a girls, because if we save a boys then a girls will save.”
পরিচালক: অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী।
মূল চরিত্র: অমিতাভ বচ্চন,তাপসী পান্নু,কীর্তি কুলহারী ও এন্দ্রিয়া তারিয়াং।
ছবি- নেট থেকে।
১৪টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
হিন্দি ছবি তো দেখি বলতে গেলে, এখন তো মনে হচ্ছে কউ তে রাখতে হবে।
তবে মেসেজ কিন্তু ক্লিয়ার।
রোকসানা খন্দকার রুকু
দেখবেন অবশ্যই। আমি লিঙ্ক দেইনি কষ্ট করে খুঁজে নিতে হবে। শুভ দুপুর ভাইয়া।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
মেয়েরা মেয়েদের সবথেকে বড় শত্রু এর চেয়ে বড় সত্য আর কিছু নেই। কোথাও মেয়েদের কে মেয়েরা সহজে সহযোগিতা তো দূরের কথা উল্টো আগুনে ঘি ঢালার মতো জ্বালিয়ে দিতে ওস্তাদ। নো মানে নো এই কথাটির মধ্যে যে এতোটা পাওয়ার থাকতে পারে, মুভির সব এটেশন কেড়ে নিতে পারে সেটা এ মুভিটি দেখলেই অনুধাবন করা যায় । সবার অভিনয় ভালো লেগেছে। সাহায্য করার ইচ্ছা থাকলে যেকোনো অবস্থাতেই করা যায়। মুভিটি আমিও দু একবার দেখেছি। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি মুভি রিভিউ দেয়ার জন্য। ভালো থাকবেন সাবধানে থাকবেন। শুভ দুপুর
রোকসানা খন্দকার রুকু
অনেক সুন্দর মন্তব্য দিলেন। আপনি ছাড়া চলেই না।
আপনাকেও শুভ দুপুর। নতুন জবের শুভকামনা আর সাবধানে যাওয়া আসা করবেন।
পপি তালুকদার
ছবিটি দেখেছি ভালো লেগেছে।ছবিটির মেসেজ হলো না মানে না কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে জবরদস্তি করা যাবে না।
অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করেছেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ও ভালোবাসা অবিরাম আপু।
হালিমা আক্তার
ছবিটি দেখেছি মনে হয় | আমাদের সমাজে মেয়েরা মেয়েদের বড় শত্রু | বিপদে সাহায্য তো করবেই না | পারলে উল্টো বিপদে ফেলবে | কেন যে এ মানুসিকতা !
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ আপু। শুভ কামনা সবসময়।
আরজু মুক্তা
ছবিটি অসাধারণ। রিভিউ ভালো হয়েছে।
মেয়েরা মেয়েদের শত্রু না পরিস্থিতির শিকার? এটা ভাবা আমাদের দরকার। এবং এই জায়গায় কাউন্সিলিং দরকার।
শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
শুভ কামনা আপনার জন্যও।
তৌহিদুল ইসলাম
মুভিটি আগে দেখেছি এবং আমার ভালো লেগেছে। সমাজের নারী বঞ্চনাকারীদের নিস্তার নেই। সচেতন হলে তারা শাস্তি পেতে বাধ্য।
নারীর কথার মুল্যায়ন করতে হবে এ মেসেজটি চমৎকারভাবে পরিচালক ফুটিয়ে তুলেছেন। আর বচ্চন সাহেবের আদালতে উপস্থাপনা এক কথায় ফাটাফাটি।
মুভি রিভিউ সুন্দর হয়েছে। শুভকামনা সবসময়।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ও শুভকামনা নিরত্তর ভাইয়া।
আশরাফুল হক মহিন
চমৎকার প্রিয় কবি অসাধারণ
শুভকামনা রইল
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাই।