
বেদের মেয়ে জোৎস্না আমায় কথা দিয়েছে
আসি আসি বলে জোৎস্না ফাকি দিয়েছে…..
বেদের মেয়ে জোৎস্না নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফাকি দিয়েছিলো কিনা জানি না তবে নায়ক এ দেশের জনগণকে ফাকিঁ দেননি।সে সময় এই সিনেমাটি এতই জনপ্রিয় হয়েছিলো যে পত্রিকায় নিউজ আসে এ ছবি সিনেমা হলে দেখতে গিয়ে কোন এক গর্ভবতী মহিলা নব সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন।নায়ক হিসাবে সে স্বার্থকতা অর্জন করেছেন তার ভক্তকুল হতে।
অন্য দিকে ১৯৯৩ সালে এক সড়ক দূর্ঘটনায় তার প্রিয়তমা স্ত্রী নিহত হন।তখন হতেই সে পণ করেছিলেন-না আর এ ভাবে আমাদের যোগাযোগ ব্যাবস্থাকে চলতে দেয়া যায় না।তিনিই প্রথম যিনি সমগ্র জাতির স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টিতে ‘পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দেশ ব্যাপী ক্রম বর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনে এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে গঠন করেন “নিরাপদ সড়ক চাই” নামের একটি সংগঠন।যে সংগঠনটি বিভিন্ন সময়ে জনগনকে সচেনতা সরকারের করণীয় ইত্যাদি সম্পর্কে প্রচারনা চালিয়ে আসছে। এ ক্ষেত্রে আমি বলব দেশে আরো বড় বড় তারকাঁ ছিলো বা আছেন যারা কখনো দেশ নিয়ে এমন ভাবনা ভাবেননি কিংবা তারা তারঁ সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সাথে থাকেননি বরং তার ভাষ্য মতে “আমি তাদের কাছে পরামর্শ চেয়েছিলাম কিন্তু তারা আমাকে আকাশের তারাঁ বানিয়ে দিয়ে বলল আকাশের তারা যদি মানুষের হাতে এসে যায় তখন তারারঁ কোন মুল্য থাকে না।নায়ক বিষয়টি বুঝতে পেরে সেদিন হতে সিনেমা জগৎ ছেড়ে দিয়ে তার এ সংগঠনটি দাড় করালেন।
নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠন দিয়ে নায়ক কাঞ্চন জনগণের কাছাকাছি চলে আসলেন।দেশপ্রেমের তাগিদে তিনি তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।মাঝে মধ্যে তিনি মিডিয়ায় বেশ আলোচিত হয়ে উঠেন।গত কয়েক মাস আগে নিরাপদ সড়ক চাই ছোট ছোট স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনেও একত্মা প্রকাশ করে বেশ আলোচিত হন।
তার আরেকটি আলোচিত এবং ভাববার বিষয় হল গত কয়েক দিন আগে হযরত শাহ জালাল(রাঃ) আন্তজার্তিক বিমান বন্দরে নিরাপত্তা নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি।
০৫ মার্চ ২০১৯ মঙ্গলবার বিকেলে নভো এয়ারের একটি ফ্লাইটে তার চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে তুমুল আলোচিত খেলনা পিস্তল নিয়ে চট্টগ্রামের বিমান ছিনতাই-চেষ্টার ঘটনার আলোচনা-সমালোচনার রেশ না কাটতেই তিনি বিনা বাধায় ইয়ারপোর্টের স্ক্যানার মেশিন পার হয়ে গেলেন ।দ্বিতীয় স্ক্যানারে পিস্তলসহ ল্যাপটপের ব্যাগটি আসার আগেই তার স্বরণ হল যে তার এই ব্যাগের ভিতর হয়তো পিস্তল আছে তাই তিনি দৌড়ে নভো এয়ারের বুকিং কাউন্টারে গিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, স্ক্যানারে কর্ত কর্তাদের জানালেন যে তার ব্যাগে হয়তো তার বৈধ পিস্তল আছে।তিনি এ কথাও বলতে ভুললেন না যে তাহলে পিস্তলসহ তার এ ব্যাগটি প্রথম স্ক্যানার কি ভাবে পার হয়ে এলো যেখানে প্রথম অবস্থাতেই ধরা পড়ার কথা ছিলো?অবশ্যই সেখানে নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল।একটি দেশের প্রধান আন্তজার্তিক ইয়ারপোর্টের নিরাপত্তা যদি এই হয় তবে দেশের নিরাপত্তার অবস্থার কথা কি হতে পারে তা অনুমেয়।
পরবর্তীতে এ নিয়ে চলে পাল্টা বক্তব্য অনেকটা পিঠ বাচাতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাঈম হাসান দেশ রূপান্তরকে জানান, “দুপুর আনুমানিক একটার দিকে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন তার দুই সহযোগীসহ নভো এয়ারের একটি ফ্লাইটে চট্টগ্রামে যাচ্ছিলেন। অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের প্রথম গেট দিয়ে প্রবেশের সময় স্ক্যানার মেশিনে তিনি চেক করাননি। পরে তিনি নিজেই নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে ফিরে এসে জানান, আমার কাছে একটি লাইসেন্স করা পিস্তল রয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।”
কিন্তু কাঞ্চনের কথা হল আমি কি করেছি আর কি করিনি তার সব রেকর্ড হয়তো সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড করা আছে।সেসব রেকর্ড দেখলেই প্রমান পেয়ে যাবেন আমি কি করেছি।তার কথা হল আমি ইলিয়াস কাঞ্চন একজন সেলিব্রেটি বলে আগ্নেয়াস্ত্র সহ ইয়ারপোর্ট পার হয়ে গেলাম কিন্তু এখানে যদি অন্য কেউ বা কোন সন্ত্রাসী ঢুকে পড়ত তাহলে ভাবেন নিরাপত্তা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাড়াত?
তার কথায় যুক্তি আছে হয়তো সে অস্ত্র নিয়ে ইয়ারপোর্টে প্রবেশ করে ভুল করেছে বা অন্যায় করেছেন কিন্তু এ সব ভুল অন্যায় প্রতিরোধেতো সরকার জনগণের রক্তচোষা টাকা দিয়ে কিছু কুত্তা পোষে রেখেছেন তারা কি করল?নাকি নায়ক বলে সাত খুন মাফ!যদি বড় ধরনের সন্ত্রাসী হত?তাকেও হয়তো ছেড়ে দিত বা ছেড়ে দিচ্ছেও কেবলি অর্থের লেনদেনে নতুবা দেশের বহু দাগী এলার্টকৃত আসামীও বিদেশ চলে যায় কি করে?একজন ইলিয়াসকাঞ্চন দেখিয়ে দিল আমাদের অভ্যান্তরিন নিরাপত্তায়ও কতটা ঘাটতি আছে।
ছবি ও তথ্য
অনলাইন মিডিয়া
১৫টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, যতটা পরিচিত অভিনয়ের কারনে তার চেয়ে বেশি পরিচিত আন্তর্জাতিক মাধ্যমে নিরাপথ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। তিনি এমনই একজন সেলিব্রেটি যে চাইলেই তার জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে দেশের ক্ষমতাবান রাজনৈতিক নেতা হতে পারতেন / পারেন। অস্ত্র সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে যেভাবে নাজেহাল হতে হয়েছে তা মোটেও শোভনীয় নয়।
আমাদের দেশে ক্ষমতাবান বা সেলিব্রেটিদের যেমন তোষন-তোষামদ করা হয় তেমনি বিশ্বের আর কোথাও হয় কি না জানা নেই। এয়ারপোর্টের মতো জায়গাই যদি পর্যাপ্ত নিরাপদ বলয়ে রাখা না হয় তাহলে সাড়াদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সংকিত হবার সময় এসেছে বলে ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি।
সময়োপযোগী গুরুত্ব পূর্ন বিষয় নিয়ে লিখেছেন মমি ভাই। লেখা ভালো এবং ভাবনার উপযোগি। ভালো থাকুন, শুভ কামনা।
মনির হোসেন মমি
ধন্যাবাদ
জিসান শা ইকরাম
এই খবরটি পড়েছি পত্রিকায়, ইউটিউবে ইলিয়াস কাঞ্চনের এবং বিমানবন্দর কর্মকর্তার বক্তব্যও শুনেছি।
আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক, এই ঘটনা আমাদের চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আবার।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ ভাইয়া।
শুন্য শুন্যালয়
নায়ক হিসাবে সবসময়ই আমার অসহ্যের ছিলো। যেদিন থেকে পথে নেমেছে সত্যিকারের ফ্যান তখন থেকেই হয়েছি। এরকম স্পষ্টভাষী লোক মেলা ভার।
নিরাপত্তা নিয়ে কি বলবো, আমি আসলে বুঝতেছিনা কোন ব্যবস্থাপনা ভালো দেশে?
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ আপু
তৌহিদ
দেশের বিমানবন্দর যদি এরকম অরক্ষিত থাকে এটা বেশ বিপদজনক। আজ ইলিয়াস সাহেব না হয়ে অন্যকেউ হলে কি হত!
তবে তারও এটা করা মোটেই উচিত হয়নি। আর্মস ক্যারি করলে যতটুকু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তার সেই দ্বায়িত্ববোধ ছিলোনা। এটাকেও মানতে পারছিনা।
মনির হোসেন মমি
এটাই নায়ক সাহেবেরও কথা-ধন্যবাদ।
ব্লগার সজীব
আশার কথা নেই কোথাও। সঠিক ভাবে সবকিছু চলাটাই এখন অস্বাভাবিকতা।
মনির হোসেন মমি
এমন ভাবে নিরাশ হতে নেই।এইতো আপনার কথাই ধরুন-কতই না খুজেছিঁ আপনাকে হারিকেনের আলোয় জোনাকীর আলোয় বিজলির আলোয়-পাইনি তবে আশা ছাড়িনি…আজ মন্তব্য আপনার মন্তব্য পেয়ে মনে হল আশা মানুষকে বাচতে শেখায়..দেশের অবস্থাও তাই একদিন এ দেশ সোনার বাংলা হয়ে উঠবেই।অসংখ্য ধন্যবাদ।এলেন যখন মোগো কিছু খোরাক(লেখা)দিন।
রিতু জাহান
ইলিয়াস কাঞ্চন এ দেশে একজনই।
তার সকল কাজ আমরা সকলেই জানি। একটা নষ্ট সিস্টেমে আমরা চলেছি ও তৈরি করেছি এ কথা আমরা সরাসরি প্রকাশ এবং স্বীকার না করলেও এটাই বাস্তব।
আমি তার সে ভিডিওটি দেখেছি।
তিনি যা বলেছেন তার পুরোটাই সত্যি। ভুল করে ব্রিফকেসে পিস্তলটি রয়ে যেতেই পারে। তার মানে কি! সে অপরাধী? তার তো আসলে নাম পাবার আর কিছু নেই। সে তো এমনিতেই নামকরা শ্রদ্ধাভাজন একজন মানুষ এ দেশের।
এমন পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ মনির ভাই।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ আপনাকেও।ভাল থাকবেন।
নিতাই বাবু
এয়ারপোর্টে নিরাপত্তার ঘাটতি আছে দাদা। আর থাকাও স্বাভাবিক বলে মনে হয়! কারণ, আমরা পৃথিবীর লোভী জাতি শুধু পেতে চাই, কাউকে কিছু দিতে চাই না। তাই এয়ারপোর্টে কর্মরত কর্মচারীরা শুধু পাওয়ার ধান্ধাই বেশি থাকে। নিরাপত্তা আর চেকিং গোল্লায় যাক!
মনির হোসেন মমি
এ সব কারনেই আমরা বেশ ঝুকির মাঝে আছি দাদা।
ছাইরাছ হেলাল
কত আর অবহেলা এমন করে চলবে!