
আমাগো বাংলাদেশে এমন কেউ আছে কইয়া আমার মনে নাই যে শাপলা চিনে না। হারাবিশ্বে প্রায় আশি হান জাতের শাপলা দেহা যায়, তার মধ্যে সাদা রংয়ের শাপলা অইলো আমাগো জাতীয় ফুল। সাদা অইলো পবিত্রতার চিহ্ন। তাই সাদা শাপলাই জাতীয় ফুল হওয়া উচিৎ অইছে। এই শাপলা ফুল আমাগো দেশের খালে-বিলে অহরহ ফোইট্টা থাহে।
বর্ষাকালে আগে আমাগো বাড়ির সামনে কুমে মেলা ফোটতো। তহন কুম মেলা ক্ষাই আছিলো, অনেক পানি থাকতো, লগি ঠাঁই পাইতো না। কেড়াই নাও, গয়নার নৌকা চলতো আর নৌকা বাইচ অইতো। আমরা বন্ধুরা সবাই মিল্লা হলডুগানি খেলতাম আর নৌকা বাইচ দেকতাম। অনেক মজা অইতো।
ডুবাইয়া শাপলা আর শালুক তুলতাম। শাপলার ডাঁটা ভাজি আর শালুক পুড়া এতই স্বাদ আছিলো যে আমরা রসুই ঘরেই খাওয়া শুরু কইরা দিতাম। শাপলার ভাটের খৈ আর মুয়া খাইলে হারাদিনে আর খাওয়ার কতা মনে অইতো না।
আমাগো কুমের পানি মেলা টলটলে। যহন চান্দের মনভরা জোছনার মায়াবী আলো কুমের পানিতে চুমু খায় তহন ঝলমল কইরা পানি ঝিলিক পারতে থাহে, মনে অইতো পুরা কুম খিলখিল কইরা হাসতাছে। এই হাসির মনকাড়া দৃশ্য কোনদিন ভুলবার না।
তয়, এহন মাটি ভরাট করে কুমের সৌন্দর্য আর রূপকে আরো মায়বী ও জাদুকরী করা অইছে। কুমের চার পাড় নানা জাতের বাহারি সবুজ গাছে ঘেরা। গাছে সারাদিন পাখি কিচমিচ করতেই থাহে। কুম যেন রূপের সিংহাসন নিয়ে বসে আছে। প্রকৃতি কুমকে সাজাতে গিয়ে কোনো কিছুর কমতি রাহে নাই।
তাইতো, প্রতিদিন দূরদূরান্ত থাইকা মেলা মানুষ মুগ্ধ হয়ে মন জুড়ানো কুমের অপরূপ সৌন্দর্য্যকে একনজর দেকতে আসে।
আপনারা যারা এখনো এই মনোরম চোখ ধাঁধানো দৃশ্য দেকতে ফুরসত পাননাই তারা চোখ ও মনের প্রশান্তির জন্য একটিবার ঘুরে যাবেন। আপনাদের সবার কাছে আদর ভরা নিমন্ত্রণ রইলো।
১৭টি মন্তব্য
রোকসানা খন্দকার রুকু
ভাইয়া ভাষা যেটাই হোক খুব ভালো বুঝতে পারলাম। শাপলা আর আমাদের শৈশব অতি মধুর।
শুভ কামনা রইলো।🌹🌹
সাখাওয়াত হোসেন
আপু এটা হলো আমাদের আঞ্চলিক ভাষা। আমরা যেখানেই যাইনা কেন আমাদের হৃদয় থেকে আঞ্চলিকতা হারিয়ে যায়না।
ভালো থাকবেন আপু।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
সুন্দর কথণ আর চিত্রণ প্রিয় কবি।
মনে ভরে গেলো প্রকৃতির ছোঁয়ায়।
এ যেন আমার হারানো দিনের স্মৃতি, নিমন্ত্রণ ভুলবো কেমনে।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রেখে গেলাম অন্তহীণ।
সাখাওয়াত হোসেন
নিমন্ত্রণ যখন গ্রহণ করেছেন একদিন অবশ্যই আসবেন। শুভকামনা রইলো অবিরত।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
ধন্যবাদ ভাইয়া। সুস্থ আর ভালো থাকবেন।
আলমগীর সরকার লিটন
সত্যই অপুরপ সুন্দর কবি দা
সাখাওয়াত হোসেন
অফুরান শুভেচ্ছা ওশুভকামনা রইলো।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
আরজু মুক্তা
আচ্ছা যাবো।
সাখাওয়াত হোসেন
আপু আসলে অনেক খুশি হব। আপনার আগমনের অপেক্ষায় দরজার দাঁড়িয়ে রইলাম…
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বাহ্ ! যেমন চমৎকার বর্ণনা তেমনি ছবি। চোখ জুড়ালো। শাপলার নানাবিধ ব্যবহার জানা গেল। অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
সাখাওয়াত হোসেন
মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। ভালো থাকবেন আপু। শুভেচ্ছা নিরন্তর ।
জিসান শা ইকরাম
দাওয়াত তো দিলেন, কিন্তু কোথায় যাবো? ঠিকানা তো দিলেন না 🙂
ভালো হয়েছে লেখা।
শুভ কামনা।
সাখাওয়াত হোসেন
আসবেনতো অবশ্যই ভাইয়া আমাদের গ্রামে , তারপর যাব মৈনট ভ্রমণ …
মনির হোসেন মমি
দাওয়াত গৃহীত হলো। শাপলা শলুক ঝিলের জলে মাছ ধরব। লেখাটা ভাল লাগল
সাখাওয়াত হোসেন
দারুণ বলেছেন ভাইয়া অনেকদিন মাছ ধরা হয়না।
চলে আসুন একসাথে কুমে মাছ ধরবো …
শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো অবিরত।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
সুন্দর বর্ণনা । “আপনারা যারা এখনো এই মনোরম চোখ ধাঁধানো দৃশ্য দেকতে ফুরসত পাননাই তারা চোখ ও মনের প্রশান্তির জন্য একটিবার ঘুরে যাবেন। আপনাদের সবার কাছে আদর ভরা নিমন্ত্রন রইলো”।– সবিনয়ে নিমন্ত্রণ গৃহীত হল।
সাখাওয়াত হোসেন
আশা করছি অবশ্যই আসবেন ভাইয়া। আপনার আগমমে ধন্য হব।
শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানাই অবিরাম হে সুপ্রিয়।