
পাশের বাসার দোপাটিকে চিনো?
চিনো না?
আরেহ, ঐ যে, ঐ মেয়েটা।
হাসলেই গালে টোল পড়ত যার।
মেয়েটা হঠাৎ কথা বন্ধ করেছে!
সাথে হাসিটাও।
গভীররাতে একাই হাঁটত ছাদে।
শুনেছি প্রতিরাতেই নাকি সে কাঁদে!
একবার গল্প হয়েছিলো তার সাথে।
হাসতে হাসতেই বলে দিলো,
একটা খুন করবো!
চমকে গিয়েছিলাম খুব।
সাহস হয়নি আর কথা বলার।
তারপর থেকেই পাশ কাটিয়ে চলতাম।
তবু দেখা হলেই মুচকি একটা হাসি দিতো,
আর গালে পড়ত টোল!
মাঝেমধ্যে আটকে যেত চোখ।
সামলে নিয়ে মাথা নিচু করে হাঁটা ধরতাম!
অকারণে খুব জোরে হাঁটতাম।
তার থেকে দূরে যেতে,
নাকি নিজের কাছ থেকেই পালাতে,
জানা হয়নি কখনো।
মাঝেমধ্যে আমিও ছাদে যেতাম।
অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকতাম।
কান পেতে শুনতাম তার কান্না!
আশ্চর্যের ব্যাপার কি জানো?
একটা সময় তার কান্না না শুনলে ঘুমই আসতো না আমার!
মেয়েটার সাথে তেমন কথা হয়নি আর।
তবু তার কান্নার মায়ায় জড়িয়ে পড়েছি বারবার।
কিন্তু কেনজানি কোনোদিন জানতে ইচ্ছে করেনি
তার কান্নার কারণ!
আমার সাথে খুব ভাব জমানোর চেষ্টা করেছিল একবার।
কিসব দুঃখের কথা বলতে গিয়েও থেমে ছিলো বারবার।
তেমন কোনো আগ্রহ ছিলনা শোনার।
বিরক্ত মুখে উঠে গিয়েছি সেবার।
কষ্টের কথা কেউ সেধে বলে নাকি?
কষ্ট তো লুকাতে হয়।
আনমনে ভাবতাম আর হাসতাম।
তখন কি জানতাম?
তার হৃদয় সিন্দুকে গচ্ছিত কষ্টরূপী মণিমুক্তোর ভাগটা
দিতে চেয়েছিলো শুধু আমাকেই!
আজ হঠাৎ ঘুম থেকে উঠেই শুনতে পেলাম কাহিণী!
কিন্তু কি হলো জানো?
যখন থেকে শুনেছি, সে কথা বন্ধ করেছে,
ঠিক তখন থেকেই তার কষ্টগুলো খুব শুনতে ইচ্ছা হচ্ছে।
আর দু চোখভরে দেখতে ইচ্ছা হচ্ছে টোল পড়া হাসি!
হারানোর পরই মূল্যটা বেশি বুঝে আসে।
আর বুকের মাঝে তীব্র কষ্টটাও গেঁথে যায় তার সাথে!
আচ্ছা বলো তো, তবে কি দোপাটি সত্যিই হারিয়ে গেছে?
কি হলো?কিছু বলছো না কেনো?
নিস্তব্ধতা বড্ড অসহ্য ঠেকছে!
১৩টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
খুব সুন্দর লেখেছেন অনেক শুভেচ্ছা রইল কবি আপু
আতকিয়া ফাইরুজ রিসা
খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আপনার জন্যও শুভকামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
হারানোর পরই মূল্যটা বেশি বুঝে আসে।
আর বুকের মাঝে তীব্র কষ্টটাও গেঁথে যায় তার সাথে!
অপুর্ব ডায়ালগ।
দুক্ষের সৃতি শুনতে আমারু ভাল লাগেনা। কষ্ট বুকে থাকলেও তার মায়াবি অপুর্ব টোল পরা হাসি ঘুমের ভিতর স্বপ্নেও খুজি। মন ভরে দেখতে সাধ জাগে।
সুন্দর মুগ্ধ হয়েই পড়লাম।
আতকিয়া ফাইরুজ রিসা
মন্তব্যটিও মুগ্ধ করেছে লেখিকাকে। খুব ভালো লাগলো।
মোঃ মজিবর রহমান
ভাল লাগার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ কবি সাহেব
ফয়জুল মহী
দোপাটি কি বিবাহিত ছিলো । ঘরে হয়তো অত্যাচারী স্বামী ছিলো
আতকিয়া ফাইরুজ রিসা
সে তো কথা বলাই বন্ধ করেছে৷ নইলে জানা যেতো। বিবাহিত থাকলে তো গল্পকথক স্বামীর কথাও বলতো৷ কত বিচিত্র দুঃখ থাকে মানুষের জীবনে।
ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শুভকামনা রইলো।
নিতাই বাবু
দোপাটি মেয়েটি কি সত্যি গুম হয়েছিল, কবি? খুব জানার ইচ্ছে ছিল। অবশেষে কী এমন ঘটেছিল!
সত্যি আপনার লেখা কবিতা পড়ে ভালো লেগেছিল।
শুভকামনা থাকলো।
আতকিয়া ফাইরুজ রিসা
এই বিষয়টি আমি পাঠকের উপর ছেড়ে দিয়েছি। দোপাটির শেষ পরিণতি পাঠক নিজের মতো করে সাজিয়ে নিক৷ হয়তো সে গুম, নয়তো আত্মহত্য, নয়তো মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পাগল। যেকোনো কিছু হতে পারে।
মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা আপনার জন্যও।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অন্যরকম একটি কবিতা পড়লাম। অসাধারণ লেগেছে। দাঁত থাকতে আমরা দাঁতের মর্যাদা কেউ দেইনা । মেয়েটির বোবা কান্না হৃদয় ছুঁয়ে গেল। শুভ কামনা রইলো
আতকিয়া ফাইরুজ রিসা
খুব সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা রইল।
মনির হোসেন মমি
চমৎকার পুরো একটি নাট্যকবিতা পড়লাম।এ সব কবিতার আবৃর্তি শুনলে মন ভরে যায়। খুব ভাল লাগল।
আতকিয়া ফাইরুজ রিসা
ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল।
ধন্যবাদ অফুরান।
ভালো থাকবেন।