এক সময় ডিভি লটারি নিয়ে এদেশের মানুষ লুটোপুটি খেতো। হুড়োহুড়িতে ফটোস্ট্যাট মেশিনের দোকান আর ফটো ল্যাবগুলো সবসময় বুদ হয়ে থাকতো। তখন আমি পড়াশুনা করছি। সবাইকে দেখতাম প্রতিবছর আবেদনের তারিখ ঘোষনা হলেই হুমড়ি খেয়ে পড়তো আবেদন করার জন্য। হায়রে, কি অবস্থা চারদিকে! আজকাল মনে হয় সেরকম নেশা কাজ করে না মানুষের মধ্যে।
যাহোক, আমার ছিলো এ ব্যাপারে প্রচণ্ড অনাগ্রহ। প্রতি বছরই অবাক হয়ে দেখতাম মানুষের মাঝে স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় পাড়ি দেয়ার জন্য কী প্রাণান্তকর চেষ্টা। আমি কেনো যেনো এমনটা চিন্তাই করতে পারতাম না। না, খুব যে দেশপ্রীতি ছিলো তখন তা নয়, কিন্তু অবচেতন মনেই দেশের প্রতি একটা টান অনুভব করতাম। ভাবতাম, নিজের দেশ ছেড়ে ক্যামনে মানুষ অন্যদেশে যাওয়ার জন্য এমন পাগল হয়ে উঠে! মাঝেমধ্যে আত্মীয় পরিজন কারো বিদেশী ছেলের সাথে বিয়ের কথা হচ্ছে শুনেও এমনটাই মনে হতো। অথচ যাদের ঘরের কন্যাটির এমন বিদেশি ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হতো, তাদের ভাবই ছিলো অন্যরকম। যেনো টাকার খনি আর সুখের রাজ্যের ঠিকানা পেয়েছে। আর হবুবধু মেয়েগুলার মধ্যেও সে কী ভাব!! খুবই আশ্চর্য হয়ে এগুলো অবলোকন করতাম। যাক গিয়ে, ধান ভানতে শীবের গীত গেয়ে লাভ নেই।
বলছিলাম ডিভি লটারির কথা। এরপরও কেনো যেনো একবার ডিভি লটারির জন্য আবেদন করা হয়েই গিয়েছিলো। তখন সবে বিয়ে হয়েছে। ছাত্রাবস্থায় ঘরকুনো ছিলাম না। ঘরে বাইরে সমানে দাপিয়ে বেড়াতাম। যার দরুন বন্ধু বান্ধবও ছিলো প্রচুর। একটু বেশি ঘনিষ্ঠগুলো বাসায় প্রায়ই যাওয়াআসা করতো। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে আমার ছেলেমেয়ে বলে আলাদা কিছু ছিলো না। বিয়ের পরেও যখন ঢাকা চলে আসি, আমার ছোট্ট বাড়িতে, অফিসে তাদের কারো কারো আনাগোনা ছিলো খুব। কেবলই স্টুডেন্ট লাইফ ছেড়ে এসেছি। এমনিভাবে এক সন্ধ্যায় ওরা ৩/৪ জন এসেছে আমার বাসায়। গল্প, আড্ডা এর মাঝে প্রসঙ্গ ডিভি লটারি। ওদেরই একটার পাল্লায় পড়ে ফরম ফিল আপ করে জমা দেই। বাদ বাকি সব কাজ সেরেছে ওরাই। এই খবর একসময় আমার ভাইবোনদের কাছেও চলে যায়।
একদিন অফিসে পোস্টম্যান একটি খাম দিয়ে যায় আমার নামে। খামটা অন্য রকম। তখন চিঠির যুগ ছিলো আর বেশিরভাগ চিঠিই আসতো কুরিয়ারে। ডাক বিভাগের মাধ্যমেও আসতো। একটু অন্যরকম খামে করে আসা চিঠিখানি পোস্টম্যান দিতে দিতে বললো “ম্যাডাম, আমেরিকা থেকে আপনার চিঠি এসেছে।” তখনও মাথায় আসেনি যে আমি ডিভি লটারির আবেদন করেছি। অফিসে বসও উপস্থিত ছিলেন। আমেরিকা থেকে এসেছে শুনে খামের লিখা আমার আগে তিনিই পড়েন। পড়েই তিনি বললেন, তোমার তো কপাল খুলে গেছে। খুলে দেখো, আমেরিকার ইমিগ্রান্ট অফিস থেকে এসেছে। আমার খুব মনে পড়ছে, শুনে আমি স্থির হয়ে গিয়েছিলাম। ক্ষণিকের জন্য হলেও খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম। ডিভি লটারি সংক্রান্ত চিঠি বুঝতে পেরে কলিগরাই খুলে নেয় দেখার জন্য। পুরোটা পড়ে বস সহাস্যে বললেন, আমেরিকান মানুষ হয়ে যাচ্ছো তুমি। তাড়াতাড়ি বাকি কাগজগুলো যোগাড় করো। এসব কাজে দেরি করতে নেই। আমি সমানে কাঁদছি। কেউ বুঝতে পারছে না কেনো কাঁদছি। অনেকেই ভাবছে খুশিতে। পাশের অফিস থেকেও লোক চলে আসে ডিভি লটারি জিতেওয়ালীরে একনজর দেখতে। এদিকে আমি টের পাচ্ছি আমার পায়ের নিচ থেকে ক্রমশঃ মাটি সরে যাচ্ছে। আমার আকাশ অন্ধকার হয়ে আসছে। কিছুতেই মানতে পারছিলাম না, নিজের দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও আমাকে যেতে হবে। নুন-ভাত খেয়ে থাকবো, তবুও এ মাটি ছেড়ে যাবো না।
হায়! আমাকে তখন সঙ এর মতো সবাই খুব করে দেখছিলো। আহা! কি ভাগ্যটাই না মেয়েটার, ডিভি লটারি জিতে গেছে! একসময় মুখ ফস্কে আমার বেরিয়ে এলো, “না, যাবো না আমি আমার দেশ ছেড়ে।” সেদিন শরীরের প্রতিটা রক্তকণা আমার মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতে চেয়েছে। অফিসের সকলেই আমাকে বুঝাতে লাগলো, পাগলামি করো না। এ ভাগ্য সবার হয় না। খবরটা বাতাসের বেগে শাখাঅফিস থেকে হেড অফিসেও ছড়িয়ে পড়েছিলো। একসময় বাড়িতেও জানাই। যদিও বিদেশ ব্যাপারটাতে আমার পরিবারেরও অনাগ্রহ তবু তারা খুব খুশি না হলেও আমার টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন যেনো তাদের মাঝেও একটু স্বস্তিই এনে দিয়েছিলো। কিন্তু আমি? কিংকর্তব্যবিমূঢ়!!!
ঠিক, দুদিন পরে একইরকম খাম আসে আমার মেজোবোনের নামে। ব্যাপারটা কি?
তারপরই জানতে পারি, এই পুরো ঘটনার পিছনে কাজ করেছে আমার ভাই, যেটি বর্তমানে ব্যাংকে কর্মরত। সে যখন শুনেছে আমি ডিভি লটারিতে আবেদন করেছি, তখনই বাঁদরামির চিন্তাটা তার মাথায় চেপেছিলো। যে ব্যাপারটায় আমার প্রচণ্ড অনাগ্রহ, সেটাই করেছি শুনেই তার এই কর্ম। তার কারিগরিতেই আমি সেদিন নিজের আমিত্বের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলাম আর অদ্ভুতভাবে উপলব্ধি করেছিলাম ‘দেশাত্মবোধ’ কি জিনিস!
আমার সোনার বাংলা,আমি তোমায় ভালোবাসি
চিরদিন তোমার আকাশ
তোমার বাতাস
আমার প্রানে
ওমা আমার প্রানে বাজায় বাঁশি
সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোবাসি
ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রানে পাগল করে
মরি হায়
হায় রে ওমা
ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রানে পাগল করে
ওমা অগ্রানে তোর ভরা খেতে
কি দেখেছি
আমি কি দেখেছি মধুর হাসি
সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোভাসি
কি শোভা কি ছায়া গো
কি স্নেহ কি মায়া গো
কি আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে
নদীর কূলে কূলে
মা তোর মুখের বানী
আমার কানে লাগে সুধার মতো
মরি হায় , হায় রে মা তোর
মুখের বানী
আমার কানে লাগে সুধার মতো
মা তোর বদন খানি মলিন হলে
আমি নয়ন
ওমা আমি নয়ন জ্বলে ভাসি
সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোবাসি ।
স্কুল জীবনে দীর্ঘ ১০টি বছর প্রতিদিন স্কুল শুরুর আগে সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে পিটি করার সময় জাতীয় পতাকার সামনে দুহাত পায়ের সাথে চেপে ধরে দুপায়ের মাঝে চারআঙ্গুল ফাঁক রেখে সটান সামনের দিকে তাকিয়ে হেড়ে গলায় জাতীয় সঙ্গীত গাইতাম। জানতাম এটাই নিয়ম। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার নিয়ম। এই নিয়মের কারণ অনুসন্ধানেই হয়তো কোমল মনে দেশ নিয়ে কতো ছবি এঁকেছি। সম্ভবত তখন থেকেই অবচেতন মনে একটা বোধের জন্ম হয়ে গিয়েছিলো। আর সেই বোধই আমার সারা জীবন চলার পথের পাথেয়।
২০১৪ সালে তাই সেই টান থেকেই ছুটে গিয়েছিলাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে।
২৮টি মন্তব্য
সকাল স্বপ্ন
ভালো অনুভবে—-
মারজানা ফেরদৌস রুবা
(y) দেশ, আমার প্রীতি, আমার অনুভব।
ইকরাম মাহমুদ
ছোট্টবেলায় স্কুলে প্রতিদিনই গাইতাম গানটি অথচ এখন আর গাওয়া হয়না। সমবেত কণ্ঠে আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি গাওয়ার সুযোগ খুঁজছি। হোক তা বেসুরো।
দারুণ একটা কথা বলেছেন, অবচেতন মনে একটা বোধের জন্ম হয়ে গেছে আমাদের মনে। দেশপ্রেমটা এভাবেই জন্মায়।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আমার এ লিখাটার অন্তরালে আরও একটি উদ্দেশ্য লুকায়িত আছে। কিভাবে বোধের জন্ম হয় কোমল মনে বুঝেছেন তো?
আপনার, আমার নাগরিক দায়িত্ব কিন্তু আরও একটা যোগ হলো গুলশান ট্র্যাজেডির পরে। চেনা গণ্ডির ভেতরে স্কুলগুলিতে বা নিজেদের বাচ্চাদের স্কুলে বোধের জন্মটা কি প্রক্রিয়ায় হয়, একটু নজর রাখুন। সেটা দেশপ্রেমের গাঁথুনি দিয়ে, না জঙ্গীবাদের গাঁথুনি দিয়ে।
ইকরাম মাহমুদ
শুধু দায়িত্বই নয় একটা চ্যালেঞ্জেরও ইঙ্গিত দিয়ে গেল গোলশান, শোলাকিয়া।
নৈতিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে কতটা শিখছে বা গ্রহন করছে সেদিকে দৃষ্টিপাত করাও নৈতিক দায়িত্ব এখন। আপনার লেখনির মাধ্যমে এ বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি বিদ্যাপীঠে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সবাইকে সজাগ করুন। আমরা সবাই চাই আমাদের দেশটি ভালো থাকুক, তাই সবাইই স্ব স্ব ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখি।
ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
আপনার ভাইটাতো ভারী দুস্টু আপু, মজা পেলাম 🙂 এমন একটা বোধের জন্ম দেবার জন্যে ভাইটার তো ধন্যবাদ প্রাপ্যই। 🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
🙂 ভাইটা কেবল দুষ্টুই নয়, একাধারে লক্ষী, কর্তব্যপরায়ণ, দায়িত্ববান, সর্বোপরি আমার ৪৫ জন কাজিনের মধ্যে অই নাকি সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় সকলের।
রুম্পা রুমানা
ফেসবুক দেয়ালে পড়েছিলাম। এখানে মন্তব্য দিলাম । এমন বোধ জাগ্রত থাকুক সর্বদা । ভাল থাকবেন আপু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
(y) বোধ জাগ্রত থাকুক সর্বদা।
শাওন এরিক
এক নিশ্বাসে পড়ে ফেললাম, দেশের মধ্যে থেকে, দেশকে এত মমতা দিয়ে অনুভব করতে পারার মত মানুষ কতজন আছেন, আমার জানা নেই। (:
মারজানা ফেরদৌস রুবা
দেশকে ভালো না বাসলে শুধু পাওয়ার ইচ্ছা চরম স্বার্থপরতা। দেশাত্মবোধ থাকলে পাওয়া না পাওয়ার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক থাকে না।
সবাই কেবল পাওয়ার আশাতেই থাকে, তাইলে ক্যামনে হবে।
পরের কারনে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।
পরের কারনে মরনেও সুখ,
সুখ সুখ করি কেঁদো না আর,
যতই কাঁদিবে, ততই ভাবিবে
ততই বাড়িবে হৃদয় ভার।
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনী পরে,
সকলের তরে সকলে আমরা,
প্রতকে মোরা পরের তরে।
ব্লগার সজীব
আমিও কখনো দেশ থেকে অন্য কোথাও বসবাসের জন্য যাবোনা আপু। আমার দেশ আমার অহংকার, আমি এই অহংকারের মাঝেই বেঁচে থাকতে চাই। এমন একটি লেখা পোষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপু। আপনার কাছ থেকে এমন লেখাই আশা করি, অপেক্ষাও করি আপনার পোষ্টের।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হাহাহা। তাই নাকি? আপনাকেও ধন্যবাদ। আসেন ভাইবোন মিলিয়া গাই-
‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি।’ (3
ব্লগার সজীব
জি আপু, আপনার লেখার জন্য অপেক্ষা করি। আপনার লেখাগুলো একজন পারফেক্ট ব্লগারের লেখা। প্রতি সপ্তাহে বংগবন্ধুর একটি লেখা দিচ্ছেন, এর দুই তিন পরে আর একটি লেখা যদি দিতেন, আমাদের জন্য ভাল হতো। আপনার লেখা সমাজের কথা বলে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
চেষ্টা তো করি রে ভাই। অবশ্যই আরেকটু মনযোগী হওয়ার চেষ্টা করবো।
ইঞ্জা
দেশ যে কতো প্রিয় তা কিভাবে বুঝাবো, লাগাতার তিন বছর প্রায় ছিলামই বলা যায় ইতালিতে পড়াশুনার জন্য, ৬ বছর ছিলাম চায়নাতে অটোমোবাইল মেনুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রির ম্যানেজার হিসাবে কিন্তু মনে প্রাণে বাঙ্গালি বলেই চাকরী ছেড়ে দেশে চলে আসি, ইচ্ছে থাকলে দেশে, মরলে দেশে।
তা আপু আপনি কই?
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ভাই রে, নুন-ভাত খেয়ে থাকতে রাজী, তবুও দেশ ছেড়ে কোথাও না।
^:^ পাগল হয়ে যাবো।
ইঞ্জা
শুভকামনা জানবেন
মারজানা ফেরদৌস রুবা
-{@
মিষ্টি জিন
ভাই ভালই দুষ্টমি করেঁছে বোনের সাথে।
দেশে ফেরার সময়
প্লেন যখন ঢাকায় ল্যান্ড করে,মনে হঁয় দেশে না মায়ের কোলে ফিরে এসেছি। কি যে এক অনুভূতি .,,.,আবেগে আপ্লুত হই।
আমার সোনারবাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
দেশের বাইরে তেমন কোথাও যাওয়া হয়নি। একবার ইন্ডিয়া গিয়েছিলাম অসুস্থ শাশুড়ীকে নিয়ে পনের দিন থেকে দম বন্ধ হবার যোগাড়। এয়ারপোর্ট নেমেই মনে হলো শ্বাস নিতে পারছি। উফফফ!
নীলাঞ্জনা নীলা
রুবা’পু আপনার পোষ্টটা পড়ার পর অনেকক্ষণ ভাবলাম। সবচেয়ে প্রিয় গান আমার “আমার সোনার বাংলা।” খুব আফসোস করি কেন জাতীয় সঙ্গীত হলো এই গানটা? ইচ্ছে হলেই শুয়ে-বসে গাইতে পারা যায়না।
সিলেটী মেয়ে আমি, বাপি-মামনির কাছে প্রচুর বিদেশী পাত্রের বায়োডাটা আসে। সব রিফিউজ। দেশ ছেড়ে যাবোনা। বাপি-মামনিও চায়না। বিয়ে হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সাথে। কিন্তু ভাগ্য এমনই ২০০৩ সাল থেকে দেশের বাইরেই তরুণের ডক্টরেট, পোষ্ট-গ্র্যাড, রিসার্চ। মানিয়ে নিয়েছি। তবে অনেক কঠিন দেশের বাইরে থেকেও আমাদের বাঙ্গালী সংস্কার-সংস্কৃতিকে লালন-পালন এবং ধারণ করা। বাবা-মাকে ছেড়ে গিয়ে আমরা যখন নতূন সংসার পাতি, বাবা-মায়ের সুশিক্ষা কিন্তু ঠিকই ধারণ করি। তাই এখন মনে হয় দেশে থেকেও হয়তো এতো ভালোবাসতে পারতাম না।
আপনার ভাগ্য ভালো সময় এমন কোনো সময় তৈরী করেনি, যার জন্যে দেশেই থাকা হচ্ছে। এমন সময়ও যেনো না আসে কখনো, দেশই থাকুক আপনার ঘর এবং গন্তব্য।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
খুব বুঝি দেশপ্রেম যাদের বুকের ভেতরে তারা শত দূরেই থাকুক না কেনো দেশের প্রতিই মন পড়ে থাকে। আর এই বোধ যাদের সদা জাগ্রত তারা বাইরে থাকলে আরো বেশি মাত্রায় দেশকে অনুভবে ধারণ করেন।
এখনকার সময়ের দেশের বাইরে থাকা মানুষগুলোর ভাগ্য ভালো টেকনোলজি তাদের এই সুযোগ করে দিয়েছে যে, যত দূরেই থাকেন না কেনো, দেশের মানুষকেই কাছে পাচ্ছেন।
হয়তো এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে আমাকেও তাই করতে হতো।
অপার্থিব
ভার্সিটিতে ভর্তির পর আবিস্কার করেছিলাম অধিকাংশ বন্ধুরই পাশ করার পর বিদেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছা এবং বর্তমানে প্রায় এক তৃতীয়াংশই চলে গেছে। তখনই ঠিক করেছিলাম কখনো বিদেশে পার্মানেন্ট থাকবো না, দেশাত্নবোধ কিনা জানি না, নিজের দেশের মত শান্তি কোথাও পাই না।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
নিজের দেশের মত শান্তি কোথাও নেই।
মৌনতা রিতু
এমন অনুভব সবার হয় না আপু। খেয়াল করে দেখ, জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় গলাটা কেমন কাঁপে!
সুন্দর বললে আপু। সেলুট তোমাকে।
এ দেশ আমার মা। আমার তার সন্তান।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
গলা কাঁপে, চোখ ছলছল করে উঠে!
আহা! আমার সোনার বাংলা।