দহনের বাতাসে উড়ে গেলো পাখি …

সাঞ্জনা চৌধুরী জুঁথী ২০ ডিসেম্বর ২০১৫, রবিবার, ০৩:৪২:০৪পূর্বাহ্ন বিবিধ ২১ মন্তব্য

একফালি তিক্ততা বেড়েই চলেছে ব্যাক্টেরিয়ার মতন.. আগামীকাল সকালের অপেক্ষা,ভোর হতেই ছুঁড়ে ফেলব অপ্রয়োজনীয় মৃত্যু ডাষ্টবিনে।পাথুরে দেয়ালে ছত্রাকও আমার চাই না। বৃথা চেষ্টা গুলো বুকশেলফে সাজায়ে রেখে কি লাভ বল ? এরচেয়ে ভালো ,শরীরের শিরা গুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে অবসর সময় পার করা ।

স্বপ্ন বুনতে গেলেই বুঝি, কোথায় যেন ভুল । হাতের উলটো পিঠে অংক কষি কিন্তু ফলাফল শূণ্য । তবে কি স্বপ্ন ভুল চোখে দেখেছিলাম? মিথ্যা আস্ফালন রেখে, আয়নার সামনে গভীর দৃষ্টি ঐ আমির সাথে । নাভি ছিঁড়ে আসে অট্টহাসি।
ধীরে ধীরে ডুবে যায় মুখোশের তলে।আজ সব কিছুর মুক্তি। বিষ দংশনে নীল ওষ্ঠাধর । ছুরির আঘাত তখনও ঝুলে আছে বুকপকেটে ।আধো বুজা চোখের দিকে তাকিয়ে আঁৎকে উঠি! কি মায়াভরা দু’টো চোখ ! অব্যক্ত কথার আত্নচিৎকারে সম্বিৎ ফিরে পায়। পাইপের মতন বহুদূর চলে গেছে অন্ধকার টানেলের শেষ প্রান্ত…..

বিদ্যুৎ ঝলকে বিস্ফোরিত আলো , সে আলোয় দেখি গতকাল। বাবার আঙ্গুল ধরে হাঁটা ছোট ছোট পা। মায়ের আদরে বোনা উলেন সোয়েটার। আমাদের লাল ইটে সাজানো বাড়িটা মনে পড়ে। গেটের দেওয়াল আঁকড়ে ধরে ঝুলত কঞ্চিলতা। ফুলের গন্ধে মৌমাছির সাথে প্রজাপতিও আসত রঙ্গিন পাখনা মেলে। ছোটবেলার দস্যিপনা , ঐ রঙ্গিন প্রজাপতিকে হারিয়ে ছূটে যেতাম ছাতিম গাছের দিকে।তখনো আমি ভালো করে চিনিনা গাছের ডা্লে দৌড়ানো কাঠবিড়ালি। চিনতাম ভালোবাসা , এই মাত্র ছেঁড়া একটা ছাতিম পাতায় যতটুকু ধরে।

জানালার ওধারে লেবুগাছটায় হলুদ কুড়ি এসেছে , হাত দিয়ে ছুঁয়ে ঘ্রাণ নিই। হাতের ছোঁয়ায় নড়েচড়ে উঠে গাছ।প্রায়ই পাতার আড়ালে বসে একটা পাখি গান গায়, পাখির হাতে সুরের নোট । পাশ দিয়ে ভেসে যায় নচিকেতার গান ।কখনও জিজ্ঞাসা করা হয়নি, পাখি তোর নাম কি ? নাম না জানা পাখিটা ভিন্ন রঙ্গের পালক নিয়ে ঘুরত।যেদিন দু’আঙ্গুলের ফাঁকে রঙ্গিন পেন্সিল ধরতে শিখলাম , সেদিন বুঝলাম।পাখি যে রঙ নিয়ে আসে তার নাম ভালোবাসা।
সেদিনের সেই অনাকাংখিত প্রহরে হারিয়ে গেল কিশোরী মনের রঙ্গিন ফ্রক। হারিয়ে গেল চঞ্চলতা।বুকের উপর হাঁচড়ে উঠে টনটনে সন্ধ্যা।দেয়ালের প্লাস্টার গড়িয়ে নামে বিকট রাত । আলোছায়ার ভিতর পেঁচিয়ে ধরে ভয় সমস্ত শরীর।

এখন সহজেই জানালার কার্নিশ ছুঁয়ে যায় হাত। ছুঁয়ে যায় বিপরিতে হেটে যাওয়া লাজুকতা। শুধু ছুঁতে পারিনি তাকে। তানপুরা থেমে যায়। জীর্ণপাতা খসে পড়ে নিঃশব্দে।
আঙ্গুলের নির্দেশের কাছে হার মানলো বাড়ন্ত শরীর। সমাজের নিয়মে বেঁধে গেল জীবনের সীমানা। নারী হবার দায়ে দন্ডিত অসহায় মেয়ে।ইচ্ছা করে থামিয়ে দিই ত্বকের নীচে বেড়ে চলা রক্ত মাংস ধমনী।

৫৯০জন ৫৯০জন
0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ