তেইশটা বসন্ত

প্রদীপ চক্রবর্তী ২৫ এপ্রিল ২০২১, রবিবার, ০৭:৪৮:৩৫অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৩ মন্তব্য

একলা চলি,
একলা ঘুরি।
একলা যাবো ঐ দূর পাহাড়ে,
সঙ্গে নেবো তাহারে।
আহারে, আহা!

এক বৈশাখে বোষ্টুমীর এমন গান শুনতে শুনতে গিয়েছিলাম ঐ দূর পাড়ায়।
সে পাড়ার কৃষ্ণকায় রমণীরা চুলের খোঁপায় আম্রপল্লব গুঁজে গানের তালে তালে নৃত্য করে।
বাঁজে সেথায় মাদল, বাঁজে গোকুলের বাঁশি।
ফুটেছে মধুমালতি। ফুটেছে চন্দ্রমল্লিকা।
একে একে আসে ধেয়ে মাতাল করা তীব্র সুগন্ধি।

চোখে পড়ে কেশর ঘন, তাম্রবর্ণ, তীব্রগন্ধী দেহ।
এ যেন নবযৌবনা কোন এক ষোড়শী বালিকা।
যার ললাট ভরে রক্তচন্দন।
কুমকুম আবরণে তার চন্দ্রহার।
গলায় মহুয়া ফুলের মালা।

ভরদুপুরে তার কণ্ঠে ব্রজবুলি গান।
সুরের মোহনীয়তা তাকে যেন আরও আরও উজ্জীবিত করে তুলেছে।

অথচ তাকে পাওয়ার আশায় তেইশটা বসন্ত কাটিয়ে দিলাম। এখনো তার সম্মুখে গিয়ে দাঁড়াতে পারিনি।
কখনো সে আমায় ডাকে ব্রজবুলি সুরে।
কখনো মন ভুলায় রাঙামাটির সাঁওতালি নৃত্যে।

বিকেল হলে সেতারে সুর ওঠে।
থেমে যায় দূর মাঠে রাখালিয়া বাঁশির ধ্বনি।
সন্ধ্যা হলে দেহাতি ভাষায় সেজে ওঠে কবিতার পাণ্ডুলিপি।

আমি তাকে নিয়ে কবিতা লেখব বলে গোটা সমুদ্রকে বন্ধক দেই।
ভূগোলের পাতায় যখন ক্লোরোফিলের সুখ নামে,
তখন তার কণ্ঠে বেরিয়ে আসে কবিতাপাঠের মন্ত্রমুগ্ধ উচ্চারণ।

চোখ জুড়ে মদময় নেশা।
বোরোধানের মাঠে নক্ষত্রের সাম্রাজ্য।
নিঝুম রাতে ডাকে কেউ অজানা নামে।
অথচ তাকে পাওয়ার আশায় তেইশটা বসন্ত কাটিয়ে দিলাম।

বরং তুমি পাহাড় হও!
সেখানে গড়বো আমরা একটা জীবন।
যে জীবন জোনাকির মতো,
যে জীবন পূর্ণিমার আলোকিত রাতের মতো।

ছবিঃ গুগোল।

৭১৪জন ৫৭৪জন

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ