
প্রচন্ড ঝড়েও যে গাছ মচকে ভেঙ্গে পড়ে না, কিন্তু সে গাছ জানে সবার অলক্ষ্যে মাটির গভীরে কতোটা শিকড় তার নড়ে গেছে,,,
মাটি ক্ষয়ে গেলে বেরিয়ে পড়ে প্রতিটা ক্ষত।
একটি গাছ হাজারটা শিকড় নিয়ে
মাটিকে আগলে রাখার হাজারটা প্রয়াস নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কতো কতো কথার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
দুই একটি শিকড় ছিঁড়েও সে দিব্যি টিকে থাকে শতো শতো ঝড় ঝাপটা সয়ে।
গোড়ায় আগলে রাখা ঘাষ প্রচন্ড খরতাপে তার কিছু আলোছায়া নিয়ে বেঁচে থাকে।
মধ্যরাতে এ গাছটির ফাঁক গলে যে চাঁদের আলো পড়ে তার আলোয় দেখা যায় নতুন সবুজ পাতা উঁকি দিয়ে উঠছে। একপাশে শুকনো পাতা ঝরে পড়ার অপেক্ষায়।
এ ঝরা পাতায় লেখা যেনো আমারই ব্যথিত অভিমানমলিন মুখের শেষ স্মৃতিটি।
মাঝে মাঝে এমন সব পাতায় তরুনি বা কোনো বালিকার হঠাৎ পাকা গৃহিনী হয়ে ওঠার গল্প পড়ি। কতো কি চাওয়া থাকে কতো কি পাওয়া থাকে। কতো কি তীরষ্কার!!
এ পাতা ছিঁড়ে মাঝে মাঝে অকরুণ এক সুর উঠাতে ইচ্ছে করে। যে সুর শেখা হয়ে ওঠেনি সে সুর বাজবে না জানি। তবু সে সুর বেসুরেই হোক একবার এক সুর উঠাতে বড্ড ইচ্ছে করে।
হিম-নিরেট প্রাণ যা অভিমান-ক্ষোভে গুমরে উঠতে পারেনি কোনো কালে সে সুরে এক অলৌকিক শক্তি বলে অশ্রু ঝরে পড়তে দিতে ইচ্ছে করে।
হঠাৎ সংসারী হয়ে ওঠা সংসার জীবনে অভিমানোক্তির যথার্থতা কোথায়!!
সে সব অশ্রুরই বা দামই কি!!
গতানুগতিক জীবনে চাইতে নেই কিছু। দোদুল্যমান জীবনে চাওয়াগুলোও দোদুল্যমান এ পাতার মতোই। যে কোনো সময় একটু হাওয়া হোক বা না হোক নীচে সে পড়বেই। চিরচারিত এটাও গতানুগতিক নিয়ম। এ ঝরা পাতার সাথে সব স্মৃতি যদি ঝরে যেতো কতো না ভালো হতো। কিন্তু এ বৃক্ষে এক পাতা ঝরে অন্য পাতায় আবারো স্মৃতি ভাসে। কিন্তু এ সকল স্মৃতি রবীন্দ্রনাথের কথার মতো,’আপনার মাঝে আপন আমরাবতী চিরদিন গোপন বিরাজে।’ যে প্রাণ হারায় সে প্রাণ আবারো সাজে নতুন পত্রপল্লবে। সকল নির্জনতায় নিজেই মেলে ধরি সে সব স্মৃতি বিস্মৃতি।
রিতু
২১টি মন্তব্য
প্রহেলিকা
🎖🎖🎖
রিতু জাহান
দিলাম। মাত্র তিনটা!!
প্রহেলিকা
আপাতত তিনটাই চলবে। কিন্তু কথা হলো দৌড়ে এসে প্রথম মন্তব্য করলাম। এরপর লেখায় চোখ বুলালাম। কিন্তু যা লিখেছেন তাতো লেখা থাকলো না আর। লেখাটি নিয়ে বলার চেষ্টা করব কিছু।
রিতু জাহান
☺☺ধন্যবাদ
মাহমুদ আল মেহেদী
স্মৃতির শিকড় মাটির গভিরে
গিয়ে পৌঁছেছে অনেকখানিই।
রিতু জাহান
ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন সব সময়।
প্রহেলিকা
“মাটি ক্ষয়ে গেলে বেরিয়ে পড়ে প্রতিটা ক্ষত।”
অদ্ভুত সুন্দর একটি লাইন, কাব্যতাকেও হার মানায় এমন উক্তি। মাটিকে জীবনের সাদৃশ্যকরণের মাঝে যে উক্তি করেছেন তা অনেকদিন মনে থাকবে।
“হঠাৎ সংসারী হয়ে ওঠা সংসার জীবনে অভিমানোক্তির যথার্থতা কোথায়!!”
“দোদুল্যমান জীবনে চাওয়াগুলোও দোদুল্যমান এ পাতার মতোই। যে কোনো সময় একটু হাওয়া হোক বা না হোক নীচে সে পড়বেই। ”
লেখকের শক্তিমত্তা প্রকাশের জন্য আর লাইন কোট করার প্রয়োজন নেই বলেই মনে করি। খুব চমৎকার।
সৃষ্টিগুলো সার্থক হোক আপনার, মনে প্রাণে দোয়া করছি। আমি তো আগে থেকেই আপনার লেখার ভক্ত। তবে ইদানিং যা লিখছেন তা তো নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন।
রিতু জাহান
এমন মন্তব্য পেলে লিখতে ইচ্ছে করে যা ওঠে কলমের কালিতে।
কৃতজ্ঞতা জানবেন প্রিয়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
লেখায় মন্তব্যের জন্য আজকাল আমার শব্দ সংকট হচ্ছে প্রচন্ড। আসলে শব্দ ছিলোও না কখনো। এই আকালের দিনগুলোতে প্রহেলিকাকে ফলো করি। এই ছেলের প্রকাশকে হিংসে হয় আমার। যা বলতে চাই, সেগুলোই খুব সুন্দর করে বলে যায়।
লেখাটি অসম্ভব ভালো লিখেছ, কোট করলে আসলে অন্য বাক্যগুলো মলিন হবে, তাই পুরো লেখাটিকেই শতভাগ ভালো লাগায় নিচ্ছি। একদম নিংড়ে লিখেছো!
রিতু জাহান
আমারও খুব হিংসে হয়।
এমন চমৎকার গভীর সব অনুভূতি!
ফলো করি আমিও।
তোমার শব্দ সংকট হচ্ছে!! এটা বিশ্বাস করতে বলো?
ভালবাসা নিও। এমন করে উৎসাহ পেলে লিখতে ইচ্ছে করবে বৈ কি!
তৌহিদ
এতো জীবনের গল্প! পরিবারে সমাজে একসময়ের প্রয়োজন হয়ে ওঠা মানুষগুলি নিষ্পেষিত হতে থাকে এভাবেই। একটু ক্ষয়ে গেলেই দুর্বল হয়ে পরে শেকড়।
ভালো লাগলো আপু।🌹
রিতু জাহান
একদম ঠিক ধরেছেন ভাই।
এই তো জীবনের গল্প। জীবন সত্যিই অদ্ভুত এক শিক্ষা।
ধন্যবাদ জানবেন ভাই।
তৌহিদ
শুভেচ্ছা জানবেন আপু 🌹
ছাইরাছ হেলাল
গাছ আমাদের জীবনের প্রতীক, আপনি যে দৃষ্টিতে তা পর্যবেক্ষণে এনেছেন, তার চমৎকার
বর্ণনা শৈল হৃদয় নাড়িয়ে দেয়ার মত।
লিখতে থাকুন।
রিতু জাহান
ধন্যবাদ গুরুজি। চেষ্টা করে যাই। করছি।
নীলাঞ্জনা নীলা
শান্তসুন্দরী আপু পড়লাম আবারও। কী দর্শন!
তুমি কি জানো তোমার লেখার ভেতর জীবনের কারুকাজ ফুটে ওঠে? আমি পড়ি আর ভাবি, কী চমৎকার ভাবে তুমি একেকটি বিষয়কে হিরন্ময়তার স্পর্শে সাজিয়ে তোলো!
একটা ছোট্ট অনুরোধ, লেখাটার ভেতর কয়েকটি শব্দ আছে যাদেরকে ঠিক করলে দৃষ্টিনন্দন হবে।
অনেক ভালো থেকো। আমায় লেখা শিখিও তো। কিচ্ছু মাথায় আসেনা।
রিতু জাহান
তোমাকে লেখা শিখাব আমি!!
কেনো লজ্জা দিচ্ছ আপু?
আমি তোমাদের দেখে দেখেই শিখছি।
ভালো থেকো আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু তুমি অনেক ভালো লেখো। তুমি নিজেও তা বুঝতে পারছো। লিখে চলো অবিরাম।
ভালো থেকো তুমিও।
জিসান শা ইকরাম
কিছু মানুষ এমন গাছ হয়, প্রচন্ড ঝড়ের মাঝেও বুঝতে দিতে চায় না তার ক্ষত।
তার ছায়ায় থাকা মানুষ বা অন্যরা তাঁকে অবিচল অচঞ্চল হিসেবে দেখে,
আসল ক্ষতটা সে দেখাতে বা বুঝতেও দিতে চায় না অন্যকে।
ভালো লিখেছো।
রিতু জাহান
থ্যাংকু ভাইয়া।
সাবিনা ইয়াসমিন
সত্যি বলতে আমি তোমার কবিতায় মন্তব্য দিতে ভয় পাই, পাছে তোমার কবিতার অনুভূতির সাথে আমার পাঠ উপলব্ধির প্রকাশ যদি ঠিক মতো না হয় এই ভেবে। অনেক ভালো লেখো, অনেক ভালো হয়েছে বা মুগ্ধ হয়েছি, এই কথা গুলো কত আর বলা যায় বলোতো?
তোমার সম সাময়িক লেখা গুলো মিস করি রিতু। তোমাকে অগ্নি কন্যা হিসেবে দেখতে বেশি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। ঐ লেখা গুলোতে ব্যাক্তি রিতুকে চিনতে সহজ লাগে আমার। কবে থেকে নিজের স্বরুপে আসবে ঝটপট ঠিক করো, আর লেখা শুরু করো।
ভালোবাসা ❤❤