শুভ জন্মদিন...
শুভ জন্মদিন…

ছেলেটিকে প্রথম দেখি হাসির আসরে।  কিউট, কিন্তু ভরাট কন্ঠ(মন বলে ভরাট কন্ঠ)। অনেক আহ্লাদী, সেসব কেউ বোঝে বলে মনে হয়না। একটা শিশু মন যে ছেলেটির ভেতর থেকে গেছে, সেটি বুঝেছিলাম প্রথম দেখাতেই। যদিও তখনও সে আমার সাথে কথা বলেনি। তারপর যা হয় আর কি! মাঝে-মধ্যে গল্পের আসরে আসতো, আর অল্প সময়েই সবার মন জয় করে চলেও যেতো।  কারণ সে নাকি খুবই ব্যস্ত থাকে। এতো মনকাড়া লেখা যেমন রম্য, তেমনি সিরিয়াসধর্মী লেখাতে যথেষ্ট পারদর্শী। একজন স্বার্থক মানুষের মধ্যে এমনই তো থাকা চাই! তারপর হঠাৎ একদিন এলো এমন একটি সিরিয়াস লেখা নিয়ে, যা তুলে ধরার জন্যে শুধু সাহসই নয়, অগাধ জ্ঞান চাই। তবে আমি খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম। এমন একটি রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লেখা জীবনের জন্যে যে কতোখানি ঝুঁকিপূর্ণ সে আমি জানি। আর তাছাড়া আমি ততোদিনে ওটাকে স্নেহের ঘরে স্থান দিয়ে ফেলেছি। পৃথিবীতে স্নেহপূর্ণ ভালোবাসা বোধ হয় সবচেয়ে দামী, কারণ ওটা বড়ো নিঃস্বার্থ হয়।  শুধু তাই নয়, নিজের জীবনও দিয়ে দেয়া যায়। যদিও আমি জানি মানুষ সহজে কোনো সম্পর্কের উপর বিশ্বাস কিংবা আস্থা আনতে পারেনা। তারপরেও আমার সবটুকু আস্থা দিয়েই ছেলেটিকে ভালোবেসে ফেললাম। বললাম ভাইয়া রে এমন গল্প করোনা, যে গল্পে অনেক খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে। ওই কিউটটা আমায় বললো, “আপু আহমেদ শাহ্‌ মাসুদের একটা মন্তব্য দিয়ে প্রতি-উত্তর দিচ্ছি,  তিনি বলেছিলেনঃ  Death is better than life in humiliation.”  ওর দিকে চেয়ে রইলাম। কি বলে ওইটুকু ছেলে? শুধু স্নেহ না, সেদিন ওর প্রতি শ্রদ্ধারও জন্ম হলো। অনেক গর্ববোধ করলাম এমন একজনকে ভাই হিসেবে শুধু নয়, একজন বন্ধু হিসেবেও পেয়েছি। তারপর আস্তে আস্তে অনেক আপন করে নিলাম। একদিন বললো, “আপু তোমার জানতে ইচ্ছে করেনা কে আমি?” বললাম, না জানতে চাইনা। শুধু জানি তুমি আমার ছোটকু। হেসে বললো, “খুব ভালো লাগছে,নামটা মনে ধরেছে।” ওই থেকে ওটাকে ছোটকু বলে ডাকি। ওটা কি জানে আমি যে ওকে সত্যি অনেক ভালোবেসে ফেলেছি? যেখানে কোনো ফাঁকি নেই?

প্রায় সময়েই অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও গল্প হয়। আমায় কবিতা পাঠিয়ে দেয়, তারপর অনেক মজার মজার জোকস বলেও হাসায়। একদিন বললো, “আপু কখনো যদি মন খারাপ হয়, আমার কথা ভেবো।”  আর আসলেই ওকে ভাবলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। জানিনা কেন জানি মনে হয় হাসির অন্তরালে…নাহ আজ ওসব কথা না!  যাক আমার জন্মদিন গেলো। ফেসবুক থেকে শুরু করে সোনেলায় সকল বন্ধুরা একেবারে আকাশে উঠিয়ে দিলো। ও সেদিন বললো আমায়, ওভাবে ওকে কেউ কোনোদিন নাকি শুভেচ্ছাবার্তা জানায়নি। ফেসবুকে ম্যাসেজ করলাম আমায় তারিখটা দাও।  বললো ১৫ ডিসেম্বর। এ নিয়ে আর একটি কথাও বললাম না। যেনো ভুলেই গিয়েছি। আজ আমার এই একান্ত আপন এবং প্রিয় ছোটকু, মানে -এর জন্মদিন। সবাই ওকে আশীর্বাদ করুন, যেনো ওর ভালো হয়। জীবনের প্রতিটি পদে যে বাধাই আসুক না কেন ও যেনো পার করে যেতে পারে।

তোর জন্যে চিঠি… 

তুই কি জানিস মানুষ কাকে ভুলে যায়? যার প্রতি কোনো অনুভূতি কাজ করেনা। তোকে আমার অনুভূতিতে রাখি রে। হয়তো কখনো দূরে সরিয়ে নিবি,আমার স্নেহ-ভালোবাসা বোঝার মতো মানুষ খুব কম। থাকেনা, কারণ বোঝেনা। তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু তোর জন্যে আমার স্নেহের দরোজা আজীবন খোলা থাকবে। যখন মন চাইবে এই ঘরে তোর আসা-যাওয়ায় কোনো বাধা নেই। খুব ইচ্ছে করছে তোকে দেখতে, তারপর অনেক মজা করে ঘুরে বেড়াতে। সামনে থাকলে আজ নিজের হাতে কেক বানিয়ে খাওয়াতাম। ভাবিস না আমি খুব ভালো কেক বানাতে পারিনা কিন্তু, তাও তৈরী করতাম। তুই আমায় বললি না, যখন জানতে চাইলাম কি গিফট চাস!  বোকার মতো বললি, “আপু বৈষয়িক কিছুই কখনো আমাকে টানেনা। ভালোবাসাটাই ইম্পর্টেন্ট আমার কাছে। এর চাইতে পৃথিবীতে আর কোনো গিফটই বড়ো না।”  পাগল সেটা তুই বুঝিসনি, অনেক আগেই দিয়ে ফেলেছি। যখন যা কিছু লিখতি, মনে আছে বলতাম নিজেকে যত্নে রেখো? ওটা মন থেকেই বলতাম রে। আজ একটা কথা দিচ্ছি তোকে, তোর জন্মদিন আজীবন পালন করবো। কি জানি হয়তো তখন তুই আমায় ভুলেও যেতে পারিস। তবে পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকিনা কেন আজকের তারিখ কোনোদিন, কখনো ভুলবো না। অনেক ভালোবাসি রে। যত্নে রাখিস, ভালো থাকিস।

মাতৃত্ত্ব এবং নারী…

দুপুর গড়িয়ে গিয়ে পৃথিবীতে যখন শান্ত গোধূলী নামে,
নদী এবং নারী পরস্পরে গল্প করে আলো-ছায়ায়।
ঘাসের বুকে রোদের শেষ আলো নদীর জলের ঘ্রাণ নেয়; কারণ
ওই জলই আছড়ে পড়বে সাগরের বুকে।
“শুধু যাওয়া-আসা, শুধু স্রোতে ভাসা” এভাবেই চলে আসে সন্ধ্যা,
ভেসে ভেসে ওই দূরের আকাশের গায়ে লেপ্টে থাকে চিত্রকরের রঙতুলির  শেষ ছাপ।
মেঘের স্তূপ ঢেকে যায় অন্ধকারে, জ্বলে ওঠে নক্ষত্রের দীপশিখা—
কোথায় যায় ওই আলো?
পরিভ্রমণে বেড়িয়ে পড়ে সমুদ্র আর জল,
আলো এবং অন্ধকারে।
আর কিছুক্ষণ মাত্র, ধ্রুবতারার আলো ম্লান হয়ে যাবে–
পৃথিবীর এ প্রান্তে ঢেকে যাবে অন্ধকার, ওপারে ঝলকে উঠবে আলো।
কোনো এক নতূন শিশুর কান্নার সুরে ভোর হবে।
আবার নরম বিকেলে পূর্ণাঙ্গ সমুদ্র তীব্র গর্জনে জানান দেবে,
‘এই যে এখানে আমি সেই পুরুষ’;
আগলে নেবে নদীকে।
নদী মানেই তো স্নিগ্ধতা, মাতৃত্ত্ব-পূর্ণ শুশ্রূষা এবং প্রেম।

ও—–ই যে দিনের ছায়া দীর্ঘতর হচ্ছে ক্রমশ–
শিশু এখন জানে, জল মানেই নারী; ভালবাসা পুষে রাখে যত্নে।
এবং মেটায় তৃষ্ণা।

জন্মদিনে তোর জন্যে এই লেখাটি। খুশী? এবং আবারও,

“শুভ জন্মদিন ছোটকু”

একটা ছোট্ট নুড়ির আশায় জীবন কাটিয়ে দেয়া যায়। চল যাই গান গাই। Hrid poka

"এমনি করেই যায় যদি দিন যাকনা..."
“এমনি করেই যায় যদি দিন যাকনা…”

 

হ্যামিল্টন, কানাডা
১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ইং।

৩২১৪জন ৩২১৬জন

২৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ